জুট অ্যাসোসিয়েশন ও শিপার্স কাউন্সিলের সংবাদ সম্মেলন

কাঁচা পাট রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ না করার আহ্বান

কাঁচা পাট রপ্তানিতে শুল্কারোপ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন ও শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ। গতকাল এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটি জানায়, একটি মহল দেশে কাঁচাপাটের সংকট দেখিয়ে রপ্তানির উপর প্রতি টনে ২৫০ মার্কিন ডলার রপ্তানি শুল্ক আরোপের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করেছেন এবং কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া কাঁচা পাট রপ্তানির উপর নতুন করে রপ্তানি শুল্ক আরোপ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, শিপার্স কাউন্সিল অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও জুট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষার্থে যেখানে আমাদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, সেখানে কোন পক্ষের নিজস্ব সুবিধার জন্য অন্য একটি সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে রপ্তানি ব্যাহত করার প্রস্তাব দুঃখজনক। কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হলে শুধুমাত্র কাঁচা পাট রপ্তানিকারকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, লাখ লাখ কৃষক, শ্রমিকও সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই কাঁচা পাট রপ্তানি প্রক্রিয়ায় উৎপাদনকারী চাষি থেকে ভোক্তা পর্যন্ত কোটির ও বেশি লোকের কর্মসংস্থান সম্পৃক্ত। কাঁচা পাট রপ্তানির উপর রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হলে বা কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হলে কাঁচা পাটের বাজারে ধস নামবে। ফলে কোটিরও বেশি কৃষক পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আগামীতে পাট চাষে উৎসাহ হারাবে। আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাট ক্রয়ের পর গোডাউনে আমদানি করে বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেডিং করার লক্ষ্যে যাচাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রেডে বিভক্ত করি। তারপর পাটের গোড়া কেটে শক্তিশালী হাইড্রোলিক প্রেস মেশিনের মাধ্যমে তা ১৮২.২৫ কেজি বেল ওজনে পরিণত করে বৈদেশিক ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী লট তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করি। এই রপ্তানি কার্যক্রমের প্রতিটি বিভাগের সঙ্গে অসংখ্য শ্রমিক সম্পৃক্ত এবং ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী এই কাঁচা পাট রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হলে এই খাত সংশ্লিষ্ট লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১৯৮৪ সাল হতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ৪ বার কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধের কারণে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাটের অভাবে বিদেশের অনেক জুট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বৈদেশিক বাজার ২৮-৩০ লাখ বেল হতে ৮-৯ লাখ বেলে সংকুচিত হয়েছে। নতুন করে রপ্তানি শুল্ক আরোপিত হলে আমাদের এখন যতটুকু কাঁচাপাটের আন্তর্জাতিক বাজার আছে, তাও আর থাকবে না। ফলে শত বছরের রপ্তানি বাণিজ্যে নিয়োজিত কাঁচা পাট রপ্তানি খাত একেবারেই ধ্বংস হয়ে যাবে। চলতি অর্থবছরে পাট অধিদফতর কর্তৃক ৯২.৩৮ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদিত হতে পারে বলে প্রকাশ করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৪.১৪ লাখ বেল। আর বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি জুটমিলগুলো তাদের মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ পুরাতন কাঁচা পাট তাদের নিজস্ব সরবরাহকারীদের পাওনা টাকার পরিবর্তে ফেরত দেয়ায় সেই পাটও বাজারে চলে আসছে। আমাদের জানা মতে, সরকারি জুট মিলগুলো বন্ধের আগে দেশের অভ্যন্তরীণ কাঁচা পাটের চাহিদা ছিল প্রায় ৫৫ লাখ বেল, এরমধ্যে সরকারি জুট মিলগুলোর চাহিদা ছিল প্রায় ১৩ লাখ বেল। কিন্তু সরকারি জুট মিলগুলো বন্ধের কারণে তাদের এই ১৩ লাখ বেল কাঁচা পাটের চাহিদা এ বছর থাকছে না। তাই চলতি বছর দেশে লাখ-লাখ বেল কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। এই উদ্বৃত্ত কাঁচা পাট হতে আমরা বর্তমানে মাত্র ৮-৯ লাখ বেল কাঁচা পাট বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। তাই আমাদের রপ্তানির পরও দেশে বিপুল পরিমাণ কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থাকবে। ১৯৮৪-১৯৮৫, ২০০৯-২০১০, ২০১৫-২০১৬ ও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ করায় পাটের বাজারে ধস নামে। রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমাদের ক্রয়কৃত মজুদ কাঁচা পাট রপ্তানি করতে না পারায় ক্রয়মূলের অর্ধেকের চেয়েও কম মূল্যে কাঁচা পাট বিক্রয় করতে বাধ্য হয়ে আমরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ি এবং সর্বশান্ত হয়ে পড়ি। এভাবে বার-বার কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় আমরা অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়েছি। বিশাল এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না পেরে সারাদেশের শতাধিক ব্যবসায়ী এখনও ব্যবসায় ফিরে আসতে পারেননি।

বিশ^ব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কাঁচা পাট রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় আমরা আবারও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে সব ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানি খাতের জন্য বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা পাট রপ্তানি খাত এই আর্থিক প্রণোদনা হতে বঞ্চিত হয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, আমরা স্বাধীনতাত্তোর কাল হতে কাঁচা পাট বিদেশে রপ্তানি করে হাজার-হাজার কোটি টাকার শতভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছি। কিন্তু আমরা কখনও রপ্তানির বিপরীতে সাবসিডি পাইনি। রপ্তানি বাণিজ্যে নিয়োজিত বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কাঁচা পাট রপ্তানি খাতকে সচল রাখতে সরকারের কাছে আমাদের দাবি, কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ না করা এবং রপ্তানির উপর কোনরকম শুল্ক আরোপ না করা। বার-বার রপ্তানি বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা পাট রপ্তানিকারকদের ব্যবসায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ। করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিখাতসমূহের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা সুবিধায় কাঁচা পাট রপ্তানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করা। কাঁচা পাট রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি সাবসিডি প্রদান।

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

জুট অ্যাসোসিয়েশন ও শিপার্স কাউন্সিলের সংবাদ সম্মেলন

কাঁচা পাট রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ না করার আহ্বান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

কাঁচা পাট রপ্তানিতে শুল্কারোপ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন ও শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ। গতকাল এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটি জানায়, একটি মহল দেশে কাঁচাপাটের সংকট দেখিয়ে রপ্তানির উপর প্রতি টনে ২৫০ মার্কিন ডলার রপ্তানি শুল্ক আরোপের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করেছেন এবং কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া কাঁচা পাট রপ্তানির উপর নতুন করে রপ্তানি শুল্ক আরোপ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, শিপার্স কাউন্সিল অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও জুট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষার্থে যেখানে আমাদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, সেখানে কোন পক্ষের নিজস্ব সুবিধার জন্য অন্য একটি সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে রপ্তানি ব্যাহত করার প্রস্তাব দুঃখজনক। কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হলে শুধুমাত্র কাঁচা পাট রপ্তানিকারকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, লাখ লাখ কৃষক, শ্রমিকও সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই কাঁচা পাট রপ্তানি প্রক্রিয়ায় উৎপাদনকারী চাষি থেকে ভোক্তা পর্যন্ত কোটির ও বেশি লোকের কর্মসংস্থান সম্পৃক্ত। কাঁচা পাট রপ্তানির উপর রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হলে বা কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হলে কাঁচা পাটের বাজারে ধস নামবে। ফলে কোটিরও বেশি কৃষক পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আগামীতে পাট চাষে উৎসাহ হারাবে। আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাট ক্রয়ের পর গোডাউনে আমদানি করে বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেডিং করার লক্ষ্যে যাচাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রেডে বিভক্ত করি। তারপর পাটের গোড়া কেটে শক্তিশালী হাইড্রোলিক প্রেস মেশিনের মাধ্যমে তা ১৮২.২৫ কেজি বেল ওজনে পরিণত করে বৈদেশিক ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী লট তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করি। এই রপ্তানি কার্যক্রমের প্রতিটি বিভাগের সঙ্গে অসংখ্য শ্রমিক সম্পৃক্ত এবং ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী এই কাঁচা পাট রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হলে এই খাত সংশ্লিষ্ট লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১৯৮৪ সাল হতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ৪ বার কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধের কারণে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাটের অভাবে বিদেশের অনেক জুট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বৈদেশিক বাজার ২৮-৩০ লাখ বেল হতে ৮-৯ লাখ বেলে সংকুচিত হয়েছে। নতুন করে রপ্তানি শুল্ক আরোপিত হলে আমাদের এখন যতটুকু কাঁচাপাটের আন্তর্জাতিক বাজার আছে, তাও আর থাকবে না। ফলে শত বছরের রপ্তানি বাণিজ্যে নিয়োজিত কাঁচা পাট রপ্তানি খাত একেবারেই ধ্বংস হয়ে যাবে। চলতি অর্থবছরে পাট অধিদফতর কর্তৃক ৯২.৩৮ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদিত হতে পারে বলে প্রকাশ করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৪.১৪ লাখ বেল। আর বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি জুটমিলগুলো তাদের মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ পুরাতন কাঁচা পাট তাদের নিজস্ব সরবরাহকারীদের পাওনা টাকার পরিবর্তে ফেরত দেয়ায় সেই পাটও বাজারে চলে আসছে। আমাদের জানা মতে, সরকারি জুট মিলগুলো বন্ধের আগে দেশের অভ্যন্তরীণ কাঁচা পাটের চাহিদা ছিল প্রায় ৫৫ লাখ বেল, এরমধ্যে সরকারি জুট মিলগুলোর চাহিদা ছিল প্রায় ১৩ লাখ বেল। কিন্তু সরকারি জুট মিলগুলো বন্ধের কারণে তাদের এই ১৩ লাখ বেল কাঁচা পাটের চাহিদা এ বছর থাকছে না। তাই চলতি বছর দেশে লাখ-লাখ বেল কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। এই উদ্বৃত্ত কাঁচা পাট হতে আমরা বর্তমানে মাত্র ৮-৯ লাখ বেল কাঁচা পাট বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। তাই আমাদের রপ্তানির পরও দেশে বিপুল পরিমাণ কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থাকবে। ১৯৮৪-১৯৮৫, ২০০৯-২০১০, ২০১৫-২০১৬ ও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ করায় পাটের বাজারে ধস নামে। রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমাদের ক্রয়কৃত মজুদ কাঁচা পাট রপ্তানি করতে না পারায় ক্রয়মূলের অর্ধেকের চেয়েও কম মূল্যে কাঁচা পাট বিক্রয় করতে বাধ্য হয়ে আমরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ি এবং সর্বশান্ত হয়ে পড়ি। এভাবে বার-বার কাঁচা পাট রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় আমরা অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়েছি। বিশাল এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না পেরে সারাদেশের শতাধিক ব্যবসায়ী এখনও ব্যবসায় ফিরে আসতে পারেননি।

বিশ^ব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কাঁচা পাট রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় আমরা আবারও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে সব ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানি খাতের জন্য বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা পাট রপ্তানি খাত এই আর্থিক প্রণোদনা হতে বঞ্চিত হয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, আমরা স্বাধীনতাত্তোর কাল হতে কাঁচা পাট বিদেশে রপ্তানি করে হাজার-হাজার কোটি টাকার শতভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছি। কিন্তু আমরা কখনও রপ্তানির বিপরীতে সাবসিডি পাইনি। রপ্তানি বাণিজ্যে নিয়োজিত বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কাঁচা পাট রপ্তানি খাতকে সচল রাখতে সরকারের কাছে আমাদের দাবি, কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ না করা এবং রপ্তানির উপর কোনরকম শুল্ক আরোপ না করা। বার-বার রপ্তানি বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা পাট রপ্তানিকারকদের ব্যবসায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ। করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিখাতসমূহের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা সুবিধায় কাঁচা পাট রপ্তানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করা। কাঁচা পাট রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি সাবসিডি প্রদান।