গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সারওয়ার জাহানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে । সম্প্রতি উপ-পরিচালক রাজশাহী বরাবর করা ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সালাউদ্দিনের লিখিত অভিযোগে তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা জানান। তিনি জানান, করোনাকালে সিএইচসিপি ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বরাদ্দের সুরক্ষা সামগ্রী লোপাট এবং করোনা রোগী ভর্তি না করেও হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাত, ভেষজ গাছ কেটে বাগান তৈরি, হোম কোয়ারেন্টিনে সুস্থ হওয়া করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে থোক বরাদ্দের টাকা আত্মসাত,বরাদ্দকৃত ছয়শ পিপিই বিক্রি, এসি মেরামতের নামে কোটেশন দেখিয়ে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও জঙ্গি মামলার আসামি ও নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে বরখাস্তকৃত দুই উপ-সহকারিকে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে আইন লঙ্ঘণ করে টাকার বিনিময়ে স্বপদে বহাল, সরকারি গাড়ির অপব্যবহার, স্টাফদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগে বদলি, হুমকি-ধামকি, টেন্ডার ছাড়াই আম বিক্রি ও পুকুর লিজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগও উঠে আসে। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সারওয়ার জাহান সরকারিভাবে নিজ অফিস কক্ষ ও বাসভবনে এসি ব্যবহারের অনুমতি না থাকলেও হাসপাতালের ওটি, এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি রুম থেকে ৫টি এসি খুলে নিজ অফিস কক্ষ, বাসভবন, ডাক্তারদের রেস্টরুম ও আরএমও’র রুমে এসব এসি স্থাপন করেন। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকেই তার স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেকে জড়িয়েছেন একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে। আর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন বঞ্চিত সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক এবং এলাকাবাসী। জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর বাজারের ইউনুস আলী মাস্টার কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সহকারীদের সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই করোনাকালে শিশুদের টিকা প্রদান করতে দেখেন এলাকাবাসী। একই চিত্র উপজেলার ৩৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের। সিএইচসিপি সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন জানান, করোনাকালে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী (বরাদ্দকৃত ৫টি পিপিই, ১০টি মাস্ক, ২০টি গ্লোভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার) বার বার চাওয়া হলেও তিনি দেননি। গোমস্তাপুর উপজেলা সিএইচসিপি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহম্মেদ রুশদি বলেন, আমরা চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত। ডা. সারওয়ার জাহান তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন সকল কার্যক্রমই সিভিল সার্জনকে জানানো হয় এবং তার নির্দেশেই আমি এ সকল কাজ করেছি। তিনি বলেন, যেহেতু আমার বিরুদ্ধে তারা যেসব অভিযোগ করেছে তা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছেন, সেজন্য আমি আর এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইনা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান,তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে খুব শীঘ্রই এসব বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

প্রতিনিধি, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সারওয়ার জাহানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে । সম্প্রতি উপ-পরিচালক রাজশাহী বরাবর করা ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সালাউদ্দিনের লিখিত অভিযোগে তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা জানান। তিনি জানান, করোনাকালে সিএইচসিপি ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বরাদ্দের সুরক্ষা সামগ্রী লোপাট এবং করোনা রোগী ভর্তি না করেও হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাত, ভেষজ গাছ কেটে বাগান তৈরি, হোম কোয়ারেন্টিনে সুস্থ হওয়া করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে থোক বরাদ্দের টাকা আত্মসাত,বরাদ্দকৃত ছয়শ পিপিই বিক্রি, এসি মেরামতের নামে কোটেশন দেখিয়ে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও জঙ্গি মামলার আসামি ও নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে বরখাস্তকৃত দুই উপ-সহকারিকে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে আইন লঙ্ঘণ করে টাকার বিনিময়ে স্বপদে বহাল, সরকারি গাড়ির অপব্যবহার, স্টাফদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগে বদলি, হুমকি-ধামকি, টেন্ডার ছাড়াই আম বিক্রি ও পুকুর লিজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগও উঠে আসে। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সারওয়ার জাহান সরকারিভাবে নিজ অফিস কক্ষ ও বাসভবনে এসি ব্যবহারের অনুমতি না থাকলেও হাসপাতালের ওটি, এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি রুম থেকে ৫টি এসি খুলে নিজ অফিস কক্ষ, বাসভবন, ডাক্তারদের রেস্টরুম ও আরএমও’র রুমে এসব এসি স্থাপন করেন। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকেই তার স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেকে জড়িয়েছেন একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে। আর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন বঞ্চিত সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক এবং এলাকাবাসী। জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর বাজারের ইউনুস আলী মাস্টার কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সহকারীদের সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই করোনাকালে শিশুদের টিকা প্রদান করতে দেখেন এলাকাবাসী। একই চিত্র উপজেলার ৩৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের। সিএইচসিপি সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন জানান, করোনাকালে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী (বরাদ্দকৃত ৫টি পিপিই, ১০টি মাস্ক, ২০টি গ্লোভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার) বার বার চাওয়া হলেও তিনি দেননি। গোমস্তাপুর উপজেলা সিএইচসিপি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহম্মেদ রুশদি বলেন, আমরা চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত। ডা. সারওয়ার জাহান তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন সকল কার্যক্রমই সিভিল সার্জনকে জানানো হয় এবং তার নির্দেশেই আমি এ সকল কাজ করেছি। তিনি বলেন, যেহেতু আমার বিরুদ্ধে তারা যেসব অভিযোগ করেছে তা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছেন, সেজন্য আমি আর এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইনা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান,তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে খুব শীঘ্রই এসব বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।