ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

প্রতিবাদ বিক্ষোভ : নুরসহ ৭ জনকে আটক করে মুচলেকা দিয়ে ছাড়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় নেতার নামে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের এক স্নাতকোত্তর শ্রেণীর এক ছাত্রী রোববার রাতে মামলাটি করেন বলে লালবাগ থানার ওসি কেএম আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছেন। মামলার পর গতকাল রাতে টিএসসিতে প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়। সেখান থেকে মিছিল করাকালীন সময়ে মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশ সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ৭ জনকে আটক করে। তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তারা। এর আগে গতকাল রাতে ঢাকা অপরাধ তথ্য ও গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তাদের আটক করে। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন, গতকাল ভিপি নুরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়। গতকাল সন্ধার পর ভিপি নুরের নেতৃত্বে মামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করে। মিছিলটি তোফখানা রোড থেকে শাহবাগের দিকে যায়। আইনশৃঙ্খলা অবনিতর আশঙ্কায় পুলিশ মিছিলে বাধা হয়। পরে মিছিল থেকে ভিপি নুরসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। তালিকায় সহযোগী আসামি হিসেবে ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮) ও সাইফুল ইসলাম (২৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) ও কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল্লাহ হিল বাকির (২৩) নাম রয়েছে।

ওসি কেএম আশরাফ বলেন, একই বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও পাঁচজনকে সহযোগী হিসেবে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর তিন নম্বরে। মামলায় ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে লালবাগের নবাবগঞ্জ এলাকায়।

এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান আল মামুন বলেন, মামলার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। যে অভিযোগের কথা বললেন, এমন কোন কিছু আমাদের দ্বারা হয়নি। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আমরা প্রতিবাদ জানাব।

মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ওই ছাত্রী নিজেও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ঘনিষ্টতা তৈরির পর বিভিন্ন সময় হাসান আল মামুনের সঙ্গে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে কথোপকথন হয়, যেখানে ‘শারীরিক সম্পর্কের’ ইঙ্গিত দেয়া হয়। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে ওই ছাত্রীকে মামুন লালবাগের নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ রোডে তার বাসায় যেতে বলে। ওই ছাত্রীর ভাষ্য, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ১২ জানুয়ারি মামুন তার বন্ধু সোহাগের সঙ্গে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরপর মামুনকে বিয়ের কথা বললে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে ২০ জুন নুরুল হক নুরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। নুর তখন ‘মীমাংসার আশ্বাস’ দিলেও পরে অবস্থান পাল্টে তাকে ‘বাড়াবাড়ি করতে’ নিষেধ করেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই ছাত্রীকে উদ্ধৃত করে এজাহারে বলা হয়েছে, নুর বলছে, আমি যদি বাড়াবাড়ি করি, তাহলে তাদের ভক্তদের দিয়ে আমার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট করাবে এবং আমাকে পতিতা বলে প্রচার করবে। ইতোমধ্যে মামলার আসামি সাইফুল ‘কুৎসা রটিয়েছে’ এবং নাজমুল ও বাকি ম্যাসেঞ্জারে তাকে উত্ত্যক্ত করে ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত’ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলায় দেরির কারণ তুলে ধরে ওই ছাত্রী এজহারে বলেছেন, আমি শারীরিক মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করতে বিলম্ব হওয়ায় থানায় এসে এজাহার দিতে বিলম্ব হয়েছে।

ধর্ষণ মামলার বিষয়ে যা বললেন নুর :

ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, যিনি মামলা করেছেন তার সঙ্গে আমার কোনদিন দেখা হয়নি। দুই মাস আগে আমাকে ফোন দিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন যে কোন এক ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল, যেটি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সে জন্য আমাকে ভূমিকা রাখতে বলা হয়। এরপর ফোন দেবে বলে আর কোন যোগাযোগ করেননি। নুর বলেন, মামলার বাদী এক সময়ে ওই ছেলেটির পরিচয় দেয় আমাকে এবং বলে আমরা যেন ছেলেটিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করি। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে জানি ছেলেটির নাম নাজমুল সে আমাদের সংগঠনের কোন দায়িত্বে নেই। তবে সে আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকত। তাই আমি অভিযোগকারীকে বলেছি সেতো আমাদের সংগঠনের কেউ না, পদেও নেই।

এরপর মেয়েটি বলে নাজমুলসহ আরও একজনকে বহিষ্কার করতে হবে, যে হচ্ছে আমাদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। কিন্তু আমি তাকে বলি সে তো আমাদের আহ্বায়ক। আমি আহ্বায়ককে কিভাবে বহিষ্কার করব। আপনার সমস্যা মনে হলে আমি আইনগত সহযোগিতা করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে অভিযোগে সহযোগিতা করব। কিন্তু শেষে তিনি আর যোগাযোগ রাখেননি।

নুর বলেন, আমি মনে করি মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা। আর মেয়েটির বাড়ি ময়মনসিংহে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন নেতা মেয়েটিকে টাকা পয়সা দিয়ে মামলা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল :

এদিকে, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। গতকাল সন্ধ্যায় তারা এই বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

image
আরও খবর
দ্বিতীয় ঢেউ রোধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার
জাতিসংঘের ভার্চুয়াল অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন আজ
ঢাকা-সৌদি ফ্লাইট বাতিল প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ
স্বাস্থ্যের আরও ৪৫ কোটিপতির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামছে দুদক
অস্ত্র ও জাল টাকার মামলায় স্বাস্থ্যের ড্রাইভার মালেক রিমান্ডে
আট বছরের শিশু মামলার আসামি আসকের নিন্দা
করোনা : দেশে এন্টিজেন টেস্টের অনুমোদন
করোনায় মৃত্যু ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই শনাক্ত সাড়ে ৩ লাখ ছাড়ালো
চিকিৎসক সংকটে বন্ধ গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড
কোভিড-১৯ পরামর্শক কমিটি ও স্বাস্থ্যের ডিজির বৈঠক
পিয়াজের খুচরা বাজার স্থিতিশীল
৪৮ বছর পর গঠিত হচ্ছে পানিসম্পদ অধিদফতর
হতাহত পরিবারের ছয় দাবি : তিতাসের ৮ জনের জামিন

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

প্রতিবাদ বিক্ষোভ : নুরসহ ৭ জনকে আটক করে মুচলেকা দিয়ে ছাড়

প্রতিনিধি, ঢাবি

image

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় নেতার নামে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের এক স্নাতকোত্তর শ্রেণীর এক ছাত্রী রোববার রাতে মামলাটি করেন বলে লালবাগ থানার ওসি কেএম আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছেন। মামলার পর গতকাল রাতে টিএসসিতে প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়। সেখান থেকে মিছিল করাকালীন সময়ে মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশ সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ৭ জনকে আটক করে। তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তারা। এর আগে গতকাল রাতে ঢাকা অপরাধ তথ্য ও গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তাদের আটক করে। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন, গতকাল ভিপি নুরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়। গতকাল সন্ধার পর ভিপি নুরের নেতৃত্বে মামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করে। মিছিলটি তোফখানা রোড থেকে শাহবাগের দিকে যায়। আইনশৃঙ্খলা অবনিতর আশঙ্কায় পুলিশ মিছিলে বাধা হয়। পরে মিছিল থেকে ভিপি নুরসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। তালিকায় সহযোগী আসামি হিসেবে ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮) ও সাইফুল ইসলাম (২৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) ও কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল্লাহ হিল বাকির (২৩) নাম রয়েছে।

ওসি কেএম আশরাফ বলেন, একই বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও পাঁচজনকে সহযোগী হিসেবে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর তিন নম্বরে। মামলায় ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে লালবাগের নবাবগঞ্জ এলাকায়।

এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান আল মামুন বলেন, মামলার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। যে অভিযোগের কথা বললেন, এমন কোন কিছু আমাদের দ্বারা হয়নি। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আমরা প্রতিবাদ জানাব।

মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ওই ছাত্রী নিজেও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ঘনিষ্টতা তৈরির পর বিভিন্ন সময় হাসান আল মামুনের সঙ্গে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে কথোপকথন হয়, যেখানে ‘শারীরিক সম্পর্কের’ ইঙ্গিত দেয়া হয়। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে ওই ছাত্রীকে মামুন লালবাগের নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ রোডে তার বাসায় যেতে বলে। ওই ছাত্রীর ভাষ্য, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ১২ জানুয়ারি মামুন তার বন্ধু সোহাগের সঙ্গে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরপর মামুনকে বিয়ের কথা বললে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে ২০ জুন নুরুল হক নুরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। নুর তখন ‘মীমাংসার আশ্বাস’ দিলেও পরে অবস্থান পাল্টে তাকে ‘বাড়াবাড়ি করতে’ নিষেধ করেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই ছাত্রীকে উদ্ধৃত করে এজাহারে বলা হয়েছে, নুর বলছে, আমি যদি বাড়াবাড়ি করি, তাহলে তাদের ভক্তদের দিয়ে আমার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট করাবে এবং আমাকে পতিতা বলে প্রচার করবে। ইতোমধ্যে মামলার আসামি সাইফুল ‘কুৎসা রটিয়েছে’ এবং নাজমুল ও বাকি ম্যাসেঞ্জারে তাকে উত্ত্যক্ত করে ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত’ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলায় দেরির কারণ তুলে ধরে ওই ছাত্রী এজহারে বলেছেন, আমি শারীরিক মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করতে বিলম্ব হওয়ায় থানায় এসে এজাহার দিতে বিলম্ব হয়েছে।

ধর্ষণ মামলার বিষয়ে যা বললেন নুর :

ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, যিনি মামলা করেছেন তার সঙ্গে আমার কোনদিন দেখা হয়নি। দুই মাস আগে আমাকে ফোন দিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন যে কোন এক ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল, যেটি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সে জন্য আমাকে ভূমিকা রাখতে বলা হয়। এরপর ফোন দেবে বলে আর কোন যোগাযোগ করেননি। নুর বলেন, মামলার বাদী এক সময়ে ওই ছেলেটির পরিচয় দেয় আমাকে এবং বলে আমরা যেন ছেলেটিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করি। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে জানি ছেলেটির নাম নাজমুল সে আমাদের সংগঠনের কোন দায়িত্বে নেই। তবে সে আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকত। তাই আমি অভিযোগকারীকে বলেছি সেতো আমাদের সংগঠনের কেউ না, পদেও নেই।

এরপর মেয়েটি বলে নাজমুলসহ আরও একজনকে বহিষ্কার করতে হবে, যে হচ্ছে আমাদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। কিন্তু আমি তাকে বলি সে তো আমাদের আহ্বায়ক। আমি আহ্বায়ককে কিভাবে বহিষ্কার করব। আপনার সমস্যা মনে হলে আমি আইনগত সহযোগিতা করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে অভিযোগে সহযোগিতা করব। কিন্তু শেষে তিনি আর যোগাযোগ রাখেননি।

নুর বলেন, আমি মনে করি মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা। আর মেয়েটির বাড়ি ময়মনসিংহে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন নেতা মেয়েটিকে টাকা পয়সা দিয়ে মামলা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল :

এদিকে, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। গতকাল সন্ধ্যায় তারা এই বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।