একদিনে মৃত্যু আরও ৪০, নতুন শনাক্ত ১৭০৫

করোনায় মৃত্যু ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই শনাক্ত সাড়ে ৩ লাখ ছাড়ালো

দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ৮ মার্চ থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৯৭৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জনের। করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা দিন দিন ভারি হচ্ছে। কবে করোনা থেকে মুক্তি মিলবে তা নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন মানুষ। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যাংকার, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর আগের পরিসংখ্যানকে পেছনে ফেলে নতুন রেকর্ড গড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। কোনভাবেই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না।

প্রতিদিনের মতো গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানিয়েছে, দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছুঁইছুঁই। ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে ৪০ জনের প্রাণ। ফলে এখন দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ হাজার ৯৭৯ জনে। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন ও নারী ১৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৭০৫ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জনে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৯৯টি করোনা পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫৩টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৩টি। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করোনা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৫২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭১৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃত্যু হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু পর ২০ এপ্রিল ১০০ জনের মৃত্যু হয়, ৯ মে ২০০ জনের মৃত্যু হয়, ২৫ মে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়, ১০ জুন ১০০০ জনের মৃত্যু হয়, ২১ জুন এক হাজার ৫০০ জনের মৃত্যু হয়, ৩ জুলাই ২ হাজার জনের মৃত্যু হয়, ১৭ জুলাই ২ হাজার ৫০০ মৃত্যু হয়, ২৮ জুলাই তিন হাজার জনের মৃত্যু হয়, ১২ আগস্ট পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়ায় এবং সর্বশেষ গতকাল ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭৯।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল, সঠিক সময়ে যথাযথভাবে সেগুলো গ্রহণ করা যায়নি। এ কারণে করোনা প্রতিরোধে পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা অব্যবস্থাপনা। এতে করে সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, করোনা আতঙ্কে রাজধানীর মানুষ থেকে বিভাগীয় ও শহরাঞ্চলের নাগরিকরাও। করোনা নিয়ে ভয়, উদ্বেগ, মানসিক চাপ, আতঙ্ক মানুষের মনে। চলমান অথবা আসন্ন বিপদকে কেন্দ্র করে মানুষের মনে দুই ধরনের ভয় উৎপন্ন হয়। একটি হলো যৌক্তিক ভয়, অন্যটি হলো অযৌক্তিক ভয়। যৌক্তিক ভয় আমাদের মন ও শরীরকে করোনা মোকাবিলা প্রস্তুত করবে। অন্যদিকে অযৌক্তিক ভয় আমাদের ভেতর নেতিবাচক আবেগ ও আচরণ তৈরি করবে। মন ও শরীরকে দুর্বল করে ফেলবে। অধিক জনসংখ্যার প্রভাব এবং অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী সংবাদকে বলেন, করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসিনতার কারণে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। প্রথম কথা টেস্টের ব্যবস্থা করতে পারত। এখন ৫২টি ল্যাবে পরীক্ষা করছেন, এটা আগে করলেন না কেন? তিন মাস সময় পেলেন, ৬৪ জেলায় ৬৪টি ল্যাব বসালেন না কেন? দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার মেশিন ছিল, এগুলো কাজে লাগালেন না কেন? তারা তা জাতির এই ক্রান্তিকালে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল। এখন একেকটি মেশিন (আরটিপিসিআর) তিন গুণ দামে কিনছেন। আবার ২০২০ সালে এসে ২০০৯ সালের মেশিন কিনছেন। এই পুরোনো মডেলের মেশিনে ভালো ফল পাচ্ছেন না। তখন যদি আধুনিক মেশিন কিনতেন, কম দামেই কিনতে পারতেন। আবার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় পেতেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সঠিক সময়ে পরিস্থিতি অনুধাবন করে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এখন আমরা সবাই মিলে এর মাসুল দিচ্ছি। চীনে সংক্রমণের পর যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল স্বাস্থ্য বিভাগ তা গ্রহণ করেনি।

চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বলেন, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে বলা যায়, তারা করোনার পেছনে ছুটছেন। এভাবে পেছনে ছুটে তো কাউকে প্রতিরোধ করা যায় না। প্রতিরোধ করতে হলে আগে ছুটতে হবে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত ও পাকিস্তানে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে মোট মৃত্যু ৮৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, পাকিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষের। বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় দিক থেকে ১৫তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ২৮তম অবস্থানে।

image
আরও খবর
দ্বিতীয় ঢেউ রোধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার
জাতিসংঘের ভার্চুয়াল অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন আজ
ঢাকা-সৌদি ফ্লাইট বাতিল প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ
স্বাস্থ্যের আরও ৪৫ কোটিপতির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামছে দুদক
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
অস্ত্র ও জাল টাকার মামলায় স্বাস্থ্যের ড্রাইভার মালেক রিমান্ডে
আট বছরের শিশু মামলার আসামি আসকের নিন্দা
করোনা : দেশে এন্টিজেন টেস্টের অনুমোদন
চিকিৎসক সংকটে বন্ধ গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড
কোভিড-১৯ পরামর্শক কমিটি ও স্বাস্থ্যের ডিজির বৈঠক
পিয়াজের খুচরা বাজার স্থিতিশীল
৪৮ বছর পর গঠিত হচ্ছে পানিসম্পদ অধিদফতর
হতাহত পরিবারের ছয় দাবি : তিতাসের ৮ জনের জামিন

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

একদিনে মৃত্যু আরও ৪০, নতুন শনাক্ত ১৭০৫

করোনায় মৃত্যু ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই শনাক্ত সাড়ে ৩ লাখ ছাড়ালো

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ৮ মার্চ থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৯৭৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জনের। করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা দিন দিন ভারি হচ্ছে। কবে করোনা থেকে মুক্তি মিলবে তা নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন মানুষ। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যাংকার, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর আগের পরিসংখ্যানকে পেছনে ফেলে নতুন রেকর্ড গড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। কোনভাবেই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না।

প্রতিদিনের মতো গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানিয়েছে, দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছুঁইছুঁই। ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে ৪০ জনের প্রাণ। ফলে এখন দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ হাজার ৯৭৯ জনে। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন ও নারী ১৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৭০৫ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জনে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৯৯টি করোনা পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫৩টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৩টি। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করোনা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৫২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭১৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃত্যু হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু পর ২০ এপ্রিল ১০০ জনের মৃত্যু হয়, ৯ মে ২০০ জনের মৃত্যু হয়, ২৫ মে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়, ১০ জুন ১০০০ জনের মৃত্যু হয়, ২১ জুন এক হাজার ৫০০ জনের মৃত্যু হয়, ৩ জুলাই ২ হাজার জনের মৃত্যু হয়, ১৭ জুলাই ২ হাজার ৫০০ মৃত্যু হয়, ২৮ জুলাই তিন হাজার জনের মৃত্যু হয়, ১২ আগস্ট পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়ায় এবং সর্বশেষ গতকাল ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭৯।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল, সঠিক সময়ে যথাযথভাবে সেগুলো গ্রহণ করা যায়নি। এ কারণে করোনা প্রতিরোধে পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা অব্যবস্থাপনা। এতে করে সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, করোনা আতঙ্কে রাজধানীর মানুষ থেকে বিভাগীয় ও শহরাঞ্চলের নাগরিকরাও। করোনা নিয়ে ভয়, উদ্বেগ, মানসিক চাপ, আতঙ্ক মানুষের মনে। চলমান অথবা আসন্ন বিপদকে কেন্দ্র করে মানুষের মনে দুই ধরনের ভয় উৎপন্ন হয়। একটি হলো যৌক্তিক ভয়, অন্যটি হলো অযৌক্তিক ভয়। যৌক্তিক ভয় আমাদের মন ও শরীরকে করোনা মোকাবিলা প্রস্তুত করবে। অন্যদিকে অযৌক্তিক ভয় আমাদের ভেতর নেতিবাচক আবেগ ও আচরণ তৈরি করবে। মন ও শরীরকে দুর্বল করে ফেলবে। অধিক জনসংখ্যার প্রভাব এবং অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী সংবাদকে বলেন, করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসিনতার কারণে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। প্রথম কথা টেস্টের ব্যবস্থা করতে পারত। এখন ৫২টি ল্যাবে পরীক্ষা করছেন, এটা আগে করলেন না কেন? তিন মাস সময় পেলেন, ৬৪ জেলায় ৬৪টি ল্যাব বসালেন না কেন? দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার মেশিন ছিল, এগুলো কাজে লাগালেন না কেন? তারা তা জাতির এই ক্রান্তিকালে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল। এখন একেকটি মেশিন (আরটিপিসিআর) তিন গুণ দামে কিনছেন। আবার ২০২০ সালে এসে ২০০৯ সালের মেশিন কিনছেন। এই পুরোনো মডেলের মেশিনে ভালো ফল পাচ্ছেন না। তখন যদি আধুনিক মেশিন কিনতেন, কম দামেই কিনতে পারতেন। আবার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় পেতেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সঠিক সময়ে পরিস্থিতি অনুধাবন করে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এখন আমরা সবাই মিলে এর মাসুল দিচ্ছি। চীনে সংক্রমণের পর যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল স্বাস্থ্য বিভাগ তা গ্রহণ করেনি।

চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বলেন, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে বলা যায়, তারা করোনার পেছনে ছুটছেন। এভাবে পেছনে ছুটে তো কাউকে প্রতিরোধ করা যায় না। প্রতিরোধ করতে হলে আগে ছুটতে হবে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত ও পাকিস্তানে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে মোট মৃত্যু ৮৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, পাকিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষের। বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় দিক থেকে ১৫তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ২৮তম অবস্থানে।