সম্মেলনের ১০ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি

শুদ্ধি অভিযান চালানোর দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের

রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া আলটিমেটাম ও সময় বেঁধে দেবার পরেও রংপুর মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকাই এখনও তৈরি করেনি।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগে বেশকিছু নারী কর্মীসহ হঠাৎ করে দলে আগমন বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের অংশ গ্রহণ দলের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দল ক্ষমতায় আসার পর যাদের মাঠে দেখা গেছে তাদের অতীত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। দলের প্রকৃত নেতা কর্মীরা সুবিধাবাদীদের দাপটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাদের কোনঠাসা না করে রাখা হয়েছে। এজন্য মহানগর আওয়ামী লীগে তৃণমূল পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে সুবিধাবাদ অন্য দল করাদের বাদ দিয়ে ত্যাগী দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছাত্রলীগ করা দলের জন্য নির্যাতিত হওয়া এমন নেতা কর্মীদের মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে স্থান দেবার দাবি তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের। একইভাবে জেলা আওয়ামী লীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আগে বিভিন্ন পদ পদবী ব্যবহার করে যারা সুবিধা নেবার চেষ্টা করছেন তাদের পরিবর্তে দলের ত্যাগী অতীতে দলের জন্য যার আত্মত্যাগ এসব বিবেচনায় নেবার দাবি উঠেছে তৃণমূল পর্যায় থেকে।

উল্লেখ্য গত বছরের ২৮ নভেম্বর রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন এক সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশেষ অতিথি ছিলেন, যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক কোষাধ্যাক্ষ আশিকুর রহমানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। সন্ধ্যার পরে টাউন হলে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদকে সভাপতি ও রেজাউল করিম রাজুকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের একই স্থানে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সর্ব সম্মতি ক্রমে শাফিয়ার রহমানকে সভাপতি ও তুষার কান্তি মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর দশ মাস অতিবাহিত হবার পরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেছেন কাউন্সিলের পর পরেই কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করে তালিকা প্রদান করা হয়। যেহেতু কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদন পায়নি সে কারনে আমরা কিছুই বলতে পারছি না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির যে তালিকা দেয়া হয়েছে সেখানে অনেক প্রবীন ত্যাগি দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ নেতাদের যোগ্য জায়গায় স্থান দেয়া হয়নি। অনেককে আবার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। ফলে ওই তালিকা দেয়া নামগুলো পর্যালোচনা করার প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন।

এদিকে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাফিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সোমবার বিকেলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে দেয়া হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিগত মহানগর কমিটিতে যারা যেসব পদে ছিলেন তাদের মধ্যে যারা অ্যাকটিভ তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন করা হবে। সেই সঙ্গে সাবেক ছাত্র নেতা এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের যারা নির্বাচিত কাউন্সিলর আছেন তাদেরকেও মূল্যায়ন করা হবে।

অন্যদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও প্রস্তুত করা হয়নি তবে দ্রুতই কমিটি করে জমা দেয়া হবে।

অন্যদিকে আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নওশাদ হোসেন বলেন দলের পরিক্ষিত নেতা কর্মীদের পরিবর্তে যদি শাহেদ, পাপিয়া ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ ছাত্রলীগের সভাপতি যারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক এমন ব্যাক্তিদের দলে পদ পদবী দেয়া হয় তাহলে তাহবে দলের জন্য বুমেরাং। তিনি বলেন এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অনেককে দেখা যাচ্ছে দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে এরা দল ক্ষমতায় আসার আগে কোথায় ছিল? সুবিধাবাদী দলের পদ পদবী ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা কামানো ব্যক্তিদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এ জন্য তিনি মহানগর আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন।

আরও খবর
খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া অনুমোদন
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন আইনের খসড়া অনুমোদন
আলোকিত রাজশাহীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চল : বিনামূল্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের উদ্যোগ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নেবে
৩ জেলা ৯ উপজেলা ও ৬১ ইউপি নির্বাচনে আ’লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
করোনা সংক্রমণ কমলে ১৬ অক্টোবর খুলবে সিনেমা হল তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বহুমাত্রিক কাদের
চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা : ১৪ জন গ্রেফতার
সড়ক দুর্ঘটনায় পিআইবি কর্মকর্তাসহ নিহত ৩
শিবচর আইসোলেশন কেন্দ্র কার্যকর ভূমিকা রাখছে
যশোরে স্কুলের এমপিও বাতিলের জন্য এমপির ডিও লেটার জালিয়াতি
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ফের জেগে উঠেছে ক্যাম্পাস
সাভারে তরুণী গণধর্ষণের শিকার ৬ যুবক গ্রেফতার

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

রংপুর জেলা ও মহানগর আ’লীগ

সম্মেলনের ১০ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি

শুদ্ধি অভিযান চালানোর দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া আলটিমেটাম ও সময় বেঁধে দেবার পরেও রংপুর মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকাই এখনও তৈরি করেনি।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগে বেশকিছু নারী কর্মীসহ হঠাৎ করে দলে আগমন বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের অংশ গ্রহণ দলের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দল ক্ষমতায় আসার পর যাদের মাঠে দেখা গেছে তাদের অতীত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। দলের প্রকৃত নেতা কর্মীরা সুবিধাবাদীদের দাপটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাদের কোনঠাসা না করে রাখা হয়েছে। এজন্য মহানগর আওয়ামী লীগে তৃণমূল পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে সুবিধাবাদ অন্য দল করাদের বাদ দিয়ে ত্যাগী দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছাত্রলীগ করা দলের জন্য নির্যাতিত হওয়া এমন নেতা কর্মীদের মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে স্থান দেবার দাবি তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের। একইভাবে জেলা আওয়ামী লীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আগে বিভিন্ন পদ পদবী ব্যবহার করে যারা সুবিধা নেবার চেষ্টা করছেন তাদের পরিবর্তে দলের ত্যাগী অতীতে দলের জন্য যার আত্মত্যাগ এসব বিবেচনায় নেবার দাবি উঠেছে তৃণমূল পর্যায় থেকে।

উল্লেখ্য গত বছরের ২৮ নভেম্বর রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন এক সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশেষ অতিথি ছিলেন, যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক কোষাধ্যাক্ষ আশিকুর রহমানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। সন্ধ্যার পরে টাউন হলে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদকে সভাপতি ও রেজাউল করিম রাজুকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের একই স্থানে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সর্ব সম্মতি ক্রমে শাফিয়ার রহমানকে সভাপতি ও তুষার কান্তি মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর দশ মাস অতিবাহিত হবার পরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেছেন কাউন্সিলের পর পরেই কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করে তালিকা প্রদান করা হয়। যেহেতু কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদন পায়নি সে কারনে আমরা কিছুই বলতে পারছি না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির যে তালিকা দেয়া হয়েছে সেখানে অনেক প্রবীন ত্যাগি দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ নেতাদের যোগ্য জায়গায় স্থান দেয়া হয়নি। অনেককে আবার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। ফলে ওই তালিকা দেয়া নামগুলো পর্যালোচনা করার প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন।

এদিকে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাফিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সোমবার বিকেলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে দেয়া হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিগত মহানগর কমিটিতে যারা যেসব পদে ছিলেন তাদের মধ্যে যারা অ্যাকটিভ তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন করা হবে। সেই সঙ্গে সাবেক ছাত্র নেতা এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের যারা নির্বাচিত কাউন্সিলর আছেন তাদেরকেও মূল্যায়ন করা হবে।

অন্যদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও প্রস্তুত করা হয়নি তবে দ্রুতই কমিটি করে জমা দেয়া হবে।

অন্যদিকে আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নওশাদ হোসেন বলেন দলের পরিক্ষিত নেতা কর্মীদের পরিবর্তে যদি শাহেদ, পাপিয়া ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ ছাত্রলীগের সভাপতি যারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক এমন ব্যাক্তিদের দলে পদ পদবী দেয়া হয় তাহলে তাহবে দলের জন্য বুমেরাং। তিনি বলেন এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অনেককে দেখা যাচ্ছে দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে এরা দল ক্ষমতায় আসার আগে কোথায় ছিল? সুবিধাবাদী দলের পদ পদবী ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা কামানো ব্যক্তিদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এ জন্য তিনি মহানগর আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন।