শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ফের জেগে উঠেছে ক্যাম্পাস

রাজধানীর সদরঘাটে অবস্থিত প্রাচীন বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে এসেছে নতুন আমেজ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পদচারণায় নিস্তব্ধতা কেটে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে ক্যাম্পাসে। বিগত ছয় মাস ধরে করোনাভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও এখন ভিন্ন আঙ্গিকে ফুটে উঠেছে ক্যাম্পাস।

দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঢাকায় চলে এসেছে তাদের পার্টটাইম জব, টিউশনি, চাকরির পড়াশোনার জন্যে। দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম জব, টিউশনি না থাকার ফলে আর্থিক সংকটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। মেস ভাড়া ও পারিবারিকভাবে আর্থিক খরচে হিমশিম খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস পুরোপুরিভাবে না খোলায় করোনা পূর্ববর্তী সময়ের মতো করে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিতে পারছে না। এছাড়া ব্যক্তিগত কাজে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে, নিজ নিজ বিভাগে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, শান্ত চত্বর, বটতলা, কাঁঠালতলা, বিজ্ঞান অনুষদ, কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও নতুন একাডেমিক চত্বরে জমেছে শিক্ষার্থীদের আড্ডা। ক্যাম্পাসে রাতের বেলা লাল নীল আলোর মাঝে আমেজ নিয়ে শিক্ষার্থীরা গল্প, গান নিয়ে মেতে উঠে। দীর্ঘদিন জবির পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে কিশোর, শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম নেই, নেই শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা, হৈচৈ। কিন্তু সেখানেও ফিরেছে সংশ্লিষ্টদের কার্যক্রম।

অন্যদিকে অনলাইন ক্লাসে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গাণিতিক, ব্যবহারিক ক্লাসসমূহতে শিক্ষার্থীদের বুঝতে সমস্যা হয় বিভিন্ন কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোর প্রাণকেন্দ্র ক্যাম্পাসের অবকাশ ভবন। সেখানে অফলাইনে বিতর্ক চর্চা না চললেও অনলাইনে চলছে বির্তক চর্চা। অন্যান্য সংগঠন উদীচী, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ, বাঁধন (রক্তদাতা সংগঠন), রোভার স্কাউট কোথাও চলমান নেই সাংগঠনিক কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানাদি। সংগঠনগুলোর কিছুসংখ্যক কর্মী প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে আনাগোনা করলেও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না, অপেক্ষা ক্যাম্পাস খোলার। ফলে ক্যাম্পাসের সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোতে এসেছে স্থবিরতা। এতে করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে শিক্ষার্থীদের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই চ্যালেজ্ঞ মোকাবিলার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলো শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির (জেএনইউডিএস) সভাপতি জুনাইদ হোসাইন ইমন বলেন, ক্লাবে আমরা একসঙ্গে বসে আনন্দের সঙ্গে যেভাবে বিতর্কের প্রস্তুতি নিতে পারি ওই অনুভূতি বা আনন্দটা অনলাইনে অনুপস্থিত। মুখোমুখি বসে বিতর্ক চর্চা এবং অনেকগুলা শ্রোতার সামনে বসে কথা বলার মধ্যে যে আত্মবিশ্বাসটা আসে সে আত্মবিশ্বাস অনলাইন বিতর্কে পাই না। করোনার মধ্যে স্বাভাবিক বিতর্ক চর্চায় ব্যাহত হওয়ায় অনলাইনে বিতর্ক চর্চার বিকল্প মাধ্যম তৈরি হয়েছে। জেএনইউডিএস ডিস্কোর্ড অ্যাপের মাধ্যমে তাদের বিতর্ক চর্চা অব্যাহত রেখেছে। তবে এতে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের যে সমস্ত বিতার্কিকদের বাড়ি প্রান্তিক পর্যায়ে তারা ইন্টারনেট সমস্যার কারণে আমাদের সঙ্গে অনলাইন বিতর্কে অংশ নিতে পারছে না। আবার যাদের এলাকায় নেটওয়ার্ক সংযোগ ভালো কিন্তু মোবাইল বা ল্যাপটপ না থাকার কারণে তারা এই যুক্তিচর্চা থেকে পিছিয়ে পড়ছে। যেখানে বিতার্কিকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।

আরও খবর
খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া অনুমোদন
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন আইনের খসড়া অনুমোদন
আলোকিত রাজশাহীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চল : বিনামূল্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের উদ্যোগ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নেবে
৩ জেলা ৯ উপজেলা ও ৬১ ইউপি নির্বাচনে আ’লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
করোনা সংক্রমণ কমলে ১৬ অক্টোবর খুলবে সিনেমা হল তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বহুমাত্রিক কাদের
চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা : ১৪ জন গ্রেফতার
সম্মেলনের ১০ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি
সড়ক দুর্ঘটনায় পিআইবি কর্মকর্তাসহ নিহত ৩
শিবচর আইসোলেশন কেন্দ্র কার্যকর ভূমিকা রাখছে
যশোরে স্কুলের এমপিও বাতিলের জন্য এমপির ডিও লেটার জালিয়াতি
সাভারে তরুণী গণধর্ষণের শিকার ৬ যুবক গ্রেফতার

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ফের জেগে উঠেছে ক্যাম্পাস

মাহমুদ তানজীদ, জবি

রাজধানীর সদরঘাটে অবস্থিত প্রাচীন বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে এসেছে নতুন আমেজ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পদচারণায় নিস্তব্ধতা কেটে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে ক্যাম্পাসে। বিগত ছয় মাস ধরে করোনাভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও এখন ভিন্ন আঙ্গিকে ফুটে উঠেছে ক্যাম্পাস।

দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঢাকায় চলে এসেছে তাদের পার্টটাইম জব, টিউশনি, চাকরির পড়াশোনার জন্যে। দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম জব, টিউশনি না থাকার ফলে আর্থিক সংকটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। মেস ভাড়া ও পারিবারিকভাবে আর্থিক খরচে হিমশিম খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস পুরোপুরিভাবে না খোলায় করোনা পূর্ববর্তী সময়ের মতো করে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিতে পারছে না। এছাড়া ব্যক্তিগত কাজে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে, নিজ নিজ বিভাগে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, শান্ত চত্বর, বটতলা, কাঁঠালতলা, বিজ্ঞান অনুষদ, কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও নতুন একাডেমিক চত্বরে জমেছে শিক্ষার্থীদের আড্ডা। ক্যাম্পাসে রাতের বেলা লাল নীল আলোর মাঝে আমেজ নিয়ে শিক্ষার্থীরা গল্প, গান নিয়ে মেতে উঠে। দীর্ঘদিন জবির পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে কিশোর, শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম নেই, নেই শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা, হৈচৈ। কিন্তু সেখানেও ফিরেছে সংশ্লিষ্টদের কার্যক্রম।

অন্যদিকে অনলাইন ক্লাসে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গাণিতিক, ব্যবহারিক ক্লাসসমূহতে শিক্ষার্থীদের বুঝতে সমস্যা হয় বিভিন্ন কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোর প্রাণকেন্দ্র ক্যাম্পাসের অবকাশ ভবন। সেখানে অফলাইনে বিতর্ক চর্চা না চললেও অনলাইনে চলছে বির্তক চর্চা। অন্যান্য সংগঠন উদীচী, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ, বাঁধন (রক্তদাতা সংগঠন), রোভার স্কাউট কোথাও চলমান নেই সাংগঠনিক কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানাদি। সংগঠনগুলোর কিছুসংখ্যক কর্মী প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে আনাগোনা করলেও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না, অপেক্ষা ক্যাম্পাস খোলার। ফলে ক্যাম্পাসের সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোতে এসেছে স্থবিরতা। এতে করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে শিক্ষার্থীদের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই চ্যালেজ্ঞ মোকাবিলার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলো শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির (জেএনইউডিএস) সভাপতি জুনাইদ হোসাইন ইমন বলেন, ক্লাবে আমরা একসঙ্গে বসে আনন্দের সঙ্গে যেভাবে বিতর্কের প্রস্তুতি নিতে পারি ওই অনুভূতি বা আনন্দটা অনলাইনে অনুপস্থিত। মুখোমুখি বসে বিতর্ক চর্চা এবং অনেকগুলা শ্রোতার সামনে বসে কথা বলার মধ্যে যে আত্মবিশ্বাসটা আসে সে আত্মবিশ্বাস অনলাইন বিতর্কে পাই না। করোনার মধ্যে স্বাভাবিক বিতর্ক চর্চায় ব্যাহত হওয়ায় অনলাইনে বিতর্ক চর্চার বিকল্প মাধ্যম তৈরি হয়েছে। জেএনইউডিএস ডিস্কোর্ড অ্যাপের মাধ্যমে তাদের বিতর্ক চর্চা অব্যাহত রেখেছে। তবে এতে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের যে সমস্ত বিতার্কিকদের বাড়ি প্রান্তিক পর্যায়ে তারা ইন্টারনেট সমস্যার কারণে আমাদের সঙ্গে অনলাইন বিতর্কে অংশ নিতে পারছে না। আবার যাদের এলাকায় নেটওয়ার্ক সংযোগ ভালো কিন্তু মোবাইল বা ল্যাপটপ না থাকার কারণে তারা এই যুক্তিচর্চা থেকে পিছিয়ে পড়ছে। যেখানে বিতার্কিকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।