বছরে গড়ে ২৯ হাজার গাড়ি নামে রাস্তায়

নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেই

হাঁটা ও সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর ২২ সেপ্টেম্বর পালিত হয় বিশ^ ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস। এই বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘হাঁটা ও সাইকেলে ফিরি, বাসযোগ্য নগর গড়ি’। গতকাল বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে দিবসটি। বর্তমানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এ বছর বাইরে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। দিবসটি উপলক্ষে অনলাইনে আলোচনা সভার আয়োজন করে পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএ। কিন্তু প্রতিবছর দিবস পালিত হলেও বাস্তবে এর কার্যকারিতা দেখা যায় না। প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশের প্রাইভেট কারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে রাইট শেয়ারিং ব্যবস্থা চালু থাকায় এর সংখ্যা আরও দ্বিগুণ হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোটরসাইকেল।

সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র তথ্যমতে প্রতি বছর ঢাকা মহানগরীতে গড়ে প্রায় ২৯ হাজার নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করা হয়। তাই প্রতিনিয়ত রাস্তায় নামছে নতুন প্রাইভেট কার। এসব গাড়িগুলো পার্কিংয়র সুব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার পাশে পার্কিং করা হয়। ফলে সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড যানজট। বর্তমানে ঢাকায় চলাচলের জন্য নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩৮টি। এরমধ্যে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৩টি প্রাইভেট কার ও জিপগাড়ি ৪৮ হাজার ৮৪৫টি। এছাড়া মোটরসাইকেলও ব্যক্তিগত গাড়ির মধ্যে ধরা হয়। রাইড শিয়ারিং নীতিমালা অনুমোদনের পর রাজধানীতে বেড়ে গেছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা। ঢাকা মহানগরীতে ৭ লাখ ৪৩ হাজার ৩৪৫টি নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেল চলাচল করে বলে বিআরটিএ সূত্র জানায়। তবে ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা এখন জরুরি বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার না করে বরং সাইকেল, হাঁটা বা গণপরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে ’৭০-র দশকে ইউরোপে গাড়িমুক্ত দিবসের সূচনা হয়। একশ’ বছর পূর্বে মানুষ নগরীতে ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া চলাচল করেছে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের শহরগুলো সেভাবেই গড়ে উঠেছিল, যাতে স্বল্প দূরত্বে মানুষ চাহিদা পূরণ করতে পারতো। সে সময় হাঁটা ছিল যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে অটোমোবাইল শিল্পের উদ্ভব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরগুলোর বিস্তৃতি হতে থাকে। এরপর শুরু হয় উপ-শহর গড়ে তোলার প্রচলন। এর উদ্দেশ্য ছিল মানুষ উপ-শহরে বাস করবে আর শহরের কেন্দ্রস্থলে গিয়ে কর্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করবে। এ প্রেক্ষিতে যাতায়াত ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। শহরের পরিধি বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শহরে বেশি বেশি সড়ক অবকাঠামো বানানোর প্রচলন শুরু হয়। যা দুষ্টুচক্রের ন্যয় জ¦ালানি অপচয়, দুর্ঘটনা, যানজট, দূষণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখা দেয়। এরপর ১৯৬১ সালে লেখক ও সাংবাদিক ইয়ান জ্যাকবস তার ‘দি ডেথ অ্যান্ড লাইফ অব গ্রেট আমেরিকান সিটিস’ বইতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে প্রথম ধারণা দেন। এটি নগর পরিকল্পনায় দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপর ১৯৬২ সাল থেকে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে শুধুমাত্র পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। পরে উইরোপে এই ধারণাটির প্রসার ঘটে। ১৯৭৪ সালে সুইজারল্যান্ডে গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। ১৯৯৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সে জাতীয়ভাবে ৩৪টি শহরে গাড়িমুক্ত দিবস পালিত হয়। ২০০১ সালে ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্বর ৩৩টি দেশের প্রায় ১০০০ শহরে বিশ^ ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। বর্তমানে প্রতি বছর ৪০০০ শহরে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। ২০০৬ সাল থেকে দেশে বেসরকারি উদ্যোগে দিনটি উদযাপন করা হয়। তবে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে দিবসটি পালন শুরু হয়। এই দিবসের অঙ্গীকার অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে পরিবহন সম্বনয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র জানায়।

কিন্তু মেগাসিটি ঢাকা শহরে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। সে অনুপাতে রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ বা বিকল্প রাস্তা নির্মাণ হয়নি। বিগত কয়েক বছরে রাজধানীতে নতুন এক কিলোমিটার রাস্তাও নির্মাণ হয়নি। একটি শহরের জন্য মোট আয়তনের ২২ থেকে ২৫ ভাগ রাস্তা থাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ঢাকা শহরে রয়েছে মাত্র আট ভাগ। রাজধানীর এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে এক ঘণ্টার স্থলে তিন থেকে চার ঘণ্টার দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পথচারীকে। রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সেগুলো এখনও ফাইলেই রয়ে গেছে। অন্যদিকে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও সেগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সারাদেশে চলাচলকারী যানবাহনের অর্ধেকের বেশি চলাচল করছে রাজধানীতে। যানজট নিরসনে ঢাকার বিপণিবিতানগুলোয় সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে সপ্তাহে নির্দিষ্ট এক দিন বন্ধ রাখা হয়। তাতেও যানজট নিরসনে সুফল বয়ে আনেনি। যানজট নিরসনে অফিস ও স্কুলের সময়সূচি পরিবর্তন করেও কাজ হয়নি। ২০০৯ সাল থেকে নতুন অফিস ও স্কুল সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। তাতেও যানজট নিরসনে কোন প্রভাব পড়েনি। যানজট নিরসনে সরকারের সর্বশেষ পরিকল্পনার মধ্যে ছিল রিকশার পাশাপাশি প্রাইভেট কার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা। সেটা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামছুল হক সংবাদকে বলেন, রাজধানীতে যানজট নিরসনে সড়কগুলোতে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। সড়কগুলোতে প্রাইভেট কারের টোল আদায়ের জন্য টোল প্লাজা তৈরি করতে হবে। সেখানে যানবাহনের চাপের কারণে তৈরি হবে যানজট তাই। অনেক চিন্তা করা হলে তা বাস্তায়ন করা সম্ভব হয় না।

বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৪ মহররম ১৪৪২, ০৫ আশ্বিন ১৪২৭

রাজধানীতে যানজটের প্রধান কারণ ব্যক্তিগত গাড়ি

বছরে গড়ে ২৯ হাজার গাড়ি নামে রাস্তায়

নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেই

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

হাঁটা ও সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর ২২ সেপ্টেম্বর পালিত হয় বিশ^ ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস। এই বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘হাঁটা ও সাইকেলে ফিরি, বাসযোগ্য নগর গড়ি’। গতকাল বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে দিবসটি। বর্তমানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এ বছর বাইরে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। দিবসটি উপলক্ষে অনলাইনে আলোচনা সভার আয়োজন করে পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএ। কিন্তু প্রতিবছর দিবস পালিত হলেও বাস্তবে এর কার্যকারিতা দেখা যায় না। প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশের প্রাইভেট কারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে রাইট শেয়ারিং ব্যবস্থা চালু থাকায় এর সংখ্যা আরও দ্বিগুণ হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোটরসাইকেল।

সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র তথ্যমতে প্রতি বছর ঢাকা মহানগরীতে গড়ে প্রায় ২৯ হাজার নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করা হয়। তাই প্রতিনিয়ত রাস্তায় নামছে নতুন প্রাইভেট কার। এসব গাড়িগুলো পার্কিংয়র সুব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার পাশে পার্কিং করা হয়। ফলে সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড যানজট। বর্তমানে ঢাকায় চলাচলের জন্য নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩৮টি। এরমধ্যে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৩টি প্রাইভেট কার ও জিপগাড়ি ৪৮ হাজার ৮৪৫টি। এছাড়া মোটরসাইকেলও ব্যক্তিগত গাড়ির মধ্যে ধরা হয়। রাইড শিয়ারিং নীতিমালা অনুমোদনের পর রাজধানীতে বেড়ে গেছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা। ঢাকা মহানগরীতে ৭ লাখ ৪৩ হাজার ৩৪৫টি নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেল চলাচল করে বলে বিআরটিএ সূত্র জানায়। তবে ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা এখন জরুরি বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার না করে বরং সাইকেল, হাঁটা বা গণপরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে ’৭০-র দশকে ইউরোপে গাড়িমুক্ত দিবসের সূচনা হয়। একশ’ বছর পূর্বে মানুষ নগরীতে ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া চলাচল করেছে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের শহরগুলো সেভাবেই গড়ে উঠেছিল, যাতে স্বল্প দূরত্বে মানুষ চাহিদা পূরণ করতে পারতো। সে সময় হাঁটা ছিল যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে অটোমোবাইল শিল্পের উদ্ভব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরগুলোর বিস্তৃতি হতে থাকে। এরপর শুরু হয় উপ-শহর গড়ে তোলার প্রচলন। এর উদ্দেশ্য ছিল মানুষ উপ-শহরে বাস করবে আর শহরের কেন্দ্রস্থলে গিয়ে কর্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করবে। এ প্রেক্ষিতে যাতায়াত ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। শহরের পরিধি বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শহরে বেশি বেশি সড়ক অবকাঠামো বানানোর প্রচলন শুরু হয়। যা দুষ্টুচক্রের ন্যয় জ¦ালানি অপচয়, দুর্ঘটনা, যানজট, দূষণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখা দেয়। এরপর ১৯৬১ সালে লেখক ও সাংবাদিক ইয়ান জ্যাকবস তার ‘দি ডেথ অ্যান্ড লাইফ অব গ্রেট আমেরিকান সিটিস’ বইতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে প্রথম ধারণা দেন। এটি নগর পরিকল্পনায় দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপর ১৯৬২ সাল থেকে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে শুধুমাত্র পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। পরে উইরোপে এই ধারণাটির প্রসার ঘটে। ১৯৭৪ সালে সুইজারল্যান্ডে গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। ১৯৯৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সে জাতীয়ভাবে ৩৪টি শহরে গাড়িমুক্ত দিবস পালিত হয়। ২০০১ সালে ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্বর ৩৩টি দেশের প্রায় ১০০০ শহরে বিশ^ ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। বর্তমানে প্রতি বছর ৪০০০ শহরে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। ২০০৬ সাল থেকে দেশে বেসরকারি উদ্যোগে দিনটি উদযাপন করা হয়। তবে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে দিবসটি পালন শুরু হয়। এই দিবসের অঙ্গীকার অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে পরিবহন সম্বনয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র জানায়।

কিন্তু মেগাসিটি ঢাকা শহরে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। সে অনুপাতে রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ বা বিকল্প রাস্তা নির্মাণ হয়নি। বিগত কয়েক বছরে রাজধানীতে নতুন এক কিলোমিটার রাস্তাও নির্মাণ হয়নি। একটি শহরের জন্য মোট আয়তনের ২২ থেকে ২৫ ভাগ রাস্তা থাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ঢাকা শহরে রয়েছে মাত্র আট ভাগ। রাজধানীর এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে এক ঘণ্টার স্থলে তিন থেকে চার ঘণ্টার দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পথচারীকে। রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সেগুলো এখনও ফাইলেই রয়ে গেছে। অন্যদিকে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও সেগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সারাদেশে চলাচলকারী যানবাহনের অর্ধেকের বেশি চলাচল করছে রাজধানীতে। যানজট নিরসনে ঢাকার বিপণিবিতানগুলোয় সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে সপ্তাহে নির্দিষ্ট এক দিন বন্ধ রাখা হয়। তাতেও যানজট নিরসনে সুফল বয়ে আনেনি। যানজট নিরসনে অফিস ও স্কুলের সময়সূচি পরিবর্তন করেও কাজ হয়নি। ২০০৯ সাল থেকে নতুন অফিস ও স্কুল সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। তাতেও যানজট নিরসনে কোন প্রভাব পড়েনি। যানজট নিরসনে সরকারের সর্বশেষ পরিকল্পনার মধ্যে ছিল রিকশার পাশাপাশি প্রাইভেট কার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা। সেটা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামছুল হক সংবাদকে বলেন, রাজধানীতে যানজট নিরসনে সড়কগুলোতে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। সড়কগুলোতে প্রাইভেট কারের টোল আদায়ের জন্য টোল প্লাজা তৈরি করতে হবে। সেখানে যানবাহনের চাপের কারণে তৈরি হবে যানজট তাই। অনেক চিন্তা করা হলে তা বাস্তায়ন করা সম্ভব হয় না।