প্রকল্পের আওতায় পণ্য-দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে যাতে অস্বাভাবিক বাজার মূল্য দেখানো না হয়, সে জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিবদের কাছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর এ নির্দেশনা পাঠানো হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং অধীন সংস্থাগুলোর বিভিন্ন প্রকল্পের পণ্য-দ্রব্য ক্রয় ও ব্যবহারে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। এসব বিষয় সরকারকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। সেই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ নির্দেশনা এলো।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন অধিদফতর ও সংস্থার অধীনে নানা কেনাকাটা ও সেবা ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়া (ওটিএম) বাদ দিয়ে সরাসরি পণ্য ক্রয়ে ডিরেক্ট প্রক্রিকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম) অনুসরণ করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় বিশেষ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনাকাটায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি অর্থ ব্যয় দেখানো হয়, যা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলে নানা রকম প্রশ্ন উঠছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর বাজেটে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরে প্রকল্প গ্রহণের জন্য ‘অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য সংরক্ষিত-সাধারণত থোক বরাদ্দ’ খাতে এবং প্রক্ষেপণের অর্থবছরে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় সংশ্লিষ্ট অর্থবছরসমূহে সিলিং (ব্যয়সীমা) বহিভূর্তভাবে প্রকল্প গ্রহণ করছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ের সঙ্গে চলমান প্রকল্পের বরাদ্দ সামঞ্জস্যতা থাকছে না। এছাড়া সিলিংবহির্ভূত প্রকল্প গ্রহণ করায় সব প্রকল্পে প্রয়োজন অনুযায়ী বরাদ্দ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রকল্পের অধীনে প্রাক্কলিত ব্যয়ের বাইরে বেশি অর্থ খরচ করা সরকারের সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের বাইরে প্রকল্প গ্রহণ করাও সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় দেখিয়ে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে ছয়টি বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে।
ছয়টি বিষয় হলোÑ মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে তাদের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত সিলিংয়ের মধ্যে থেকে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে প্রকল্পে আবশ্যিকভাবে বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অধিকতর সচেতনতা অবলম্বন করা, যাতে কোন পণ্য-দ্রব্যের অস্বাভাবিক বাজারমূল্য প্রদর্শিত না হয়। জি-টু-জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে গৃহীত প্রকল্পে জিওবি অর্থে পরামর্শক নিয়োগের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রকল্প বাছাই/অনুমোদনের সময় বিষয়গুলোতে অধিকতর সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে আগেই অর্থ বিভাগের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে।
বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৪ মহররম ১৪৪২, ০৫ আশ্বিন ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
প্রকল্পের আওতায় পণ্য-দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে যাতে অস্বাভাবিক বাজার মূল্য দেখানো না হয়, সে জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিবদের কাছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর এ নির্দেশনা পাঠানো হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং অধীন সংস্থাগুলোর বিভিন্ন প্রকল্পের পণ্য-দ্রব্য ক্রয় ও ব্যবহারে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। এসব বিষয় সরকারকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। সেই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ নির্দেশনা এলো।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন অধিদফতর ও সংস্থার অধীনে নানা কেনাকাটা ও সেবা ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়া (ওটিএম) বাদ দিয়ে সরাসরি পণ্য ক্রয়ে ডিরেক্ট প্রক্রিকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম) অনুসরণ করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় বিশেষ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনাকাটায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি অর্থ ব্যয় দেখানো হয়, যা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলে নানা রকম প্রশ্ন উঠছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর বাজেটে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরে প্রকল্প গ্রহণের জন্য ‘অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য সংরক্ষিত-সাধারণত থোক বরাদ্দ’ খাতে এবং প্রক্ষেপণের অর্থবছরে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় সংশ্লিষ্ট অর্থবছরসমূহে সিলিং (ব্যয়সীমা) বহিভূর্তভাবে প্রকল্প গ্রহণ করছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ের সঙ্গে চলমান প্রকল্পের বরাদ্দ সামঞ্জস্যতা থাকছে না। এছাড়া সিলিংবহির্ভূত প্রকল্প গ্রহণ করায় সব প্রকল্পে প্রয়োজন অনুযায়ী বরাদ্দ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রকল্পের অধীনে প্রাক্কলিত ব্যয়ের বাইরে বেশি অর্থ খরচ করা সরকারের সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের বাইরে প্রকল্প গ্রহণ করাও সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় দেখিয়ে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে ছয়টি বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে।
ছয়টি বিষয় হলোÑ মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে তাদের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত সিলিংয়ের মধ্যে থেকে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে প্রকল্পে আবশ্যিকভাবে বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অধিকতর সচেতনতা অবলম্বন করা, যাতে কোন পণ্য-দ্রব্যের অস্বাভাবিক বাজারমূল্য প্রদর্শিত না হয়। জি-টু-জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে গৃহীত প্রকল্পে জিওবি অর্থে পরামর্শক নিয়োগের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রকল্প বাছাই/অনুমোদনের সময় বিষয়গুলোতে অধিকতর সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে আগেই অর্থ বিভাগের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে।