প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নারী-পুরুষ কোটা বৈষম্যেরই প্রতিচ্ছবি

খবরের পাতায় সংবাদ ছাপানো হয়েছে ‘প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে থাকছে না কোটা’। বেশ আগ্রহভরে বিস্তারিত পড়তে গিয়ে দেখলাম লেখা রয়েছেÑ ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পুরুষ ও ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা রয়েছে বহালতবিয়তে। মূলত, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৩ বিধি ৭(ক) অনুযায়ী কোন একটি উপজেলার মোট পদের ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা নির্ধারিত থাকে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, এ কি বৈষম্যের প্রতিচ্ছবি নয়?

সংবিধানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুবিধাদানের বিধান থাকায় প্রতিবন্ধী ও উপজাতীয়দের জন্য কোটা থাকাটা অযৌক্তিক নয়। কিন্তু সমাজের সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা কি বৈষম্যের নতুন মাত্রা হিসেবে সংযোজিত হয়নি?

প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে মাত্র ২০ জন সাধারণ পুরুষ চাকরি প্রত্যাশী নিয়োগ পাবে, অথচ এই ২০ আসনের বিপরীতেই থাকে সর্বোচ্চ প্রার্থী। এই অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা অব্যবস্থাপনারই নামান্তর নয় কী? সমাজে নারীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার বিপক্ষে নই। তবে পোষ্য কোটা বাদ দিয়ে যদি নারী-পুরুষ কোটার অনুপাতে তাকাই তবে জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠে বৈষম্যের প্রতিচ্ছবি।

দেশে বেকারত্বের জালে ফেঁসে যখন তারুণ্যের অপমৃত্যু ঘটছে, তখন এহেন বৈষম্যমূলক নীতি যুবসমাজের জন্য হতাশাজনক। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নিজ নিজ যোগ্যতাবলে আত্ম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া নাগরিক অধিকার। নিজ যোগ্যতাবলে যদি নারী ৬০ শতাংশেরও বেশি, কিংবা পোষ্যরা ২০ শতাংশেরও বেশি নিয়োগ পেতে পারে তবে সমস্যা কোথায়?

আরাফাত হোসেন ভূঁইয়া

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও

বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৪ মহররম ১৪৪২, ০৫ আশ্বিন ১৪২৭

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নারী-পুরুষ কোটা বৈষম্যেরই প্রতিচ্ছবি

খবরের পাতায় সংবাদ ছাপানো হয়েছে ‘প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে থাকছে না কোটা’। বেশ আগ্রহভরে বিস্তারিত পড়তে গিয়ে দেখলাম লেখা রয়েছেÑ ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পুরুষ ও ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা রয়েছে বহালতবিয়তে। মূলত, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৩ বিধি ৭(ক) অনুযায়ী কোন একটি উপজেলার মোট পদের ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা নির্ধারিত থাকে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, এ কি বৈষম্যের প্রতিচ্ছবি নয়?

সংবিধানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুবিধাদানের বিধান থাকায় প্রতিবন্ধী ও উপজাতীয়দের জন্য কোটা থাকাটা অযৌক্তিক নয়। কিন্তু সমাজের সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা কি বৈষম্যের নতুন মাত্রা হিসেবে সংযোজিত হয়নি?

প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে মাত্র ২০ জন সাধারণ পুরুষ চাকরি প্রত্যাশী নিয়োগ পাবে, অথচ এই ২০ আসনের বিপরীতেই থাকে সর্বোচ্চ প্রার্থী। এই অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা অব্যবস্থাপনারই নামান্তর নয় কী? সমাজে নারীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার বিপক্ষে নই। তবে পোষ্য কোটা বাদ দিয়ে যদি নারী-পুরুষ কোটার অনুপাতে তাকাই তবে জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠে বৈষম্যের প্রতিচ্ছবি।

দেশে বেকারত্বের জালে ফেঁসে যখন তারুণ্যের অপমৃত্যু ঘটছে, তখন এহেন বৈষম্যমূলক নীতি যুবসমাজের জন্য হতাশাজনক। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নিজ নিজ যোগ্যতাবলে আত্ম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া নাগরিক অধিকার। নিজ যোগ্যতাবলে যদি নারী ৬০ শতাংশেরও বেশি, কিংবা পোষ্যরা ২০ শতাংশেরও বেশি নিয়োগ পেতে পারে তবে সমস্যা কোথায়?

আরাফাত হোসেন ভূঁইয়া

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও