আত্মহত্যাই কি সমাধান?

আমরা প্রায়ই পারিবারিক টানাপড়েন, প্রেমে ব্যর্থতার হতাশা কিংবা আর্থিক অসচ্ছলতায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মানুষের আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার গল্প শুনি। আত্মহত্যাটাই কি হতাশা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ? স্বেচ্ছায় মরণকে বরণ করে নেয়ার আগে মানুষগুলো হয়ত নিজেকে এই স্বার্থপর পৃথিবী থেকে মুক্তি দিতে পারে, কিন্তু নিজের পরিবারের কথা কি তারা একটুও ভাবে না?

ছোট্ট একটা জীবন, অথচ আমাদের পাওয়ার আকাক্সক্ষা বিশাল। সেই আকাক্সক্ষা যখন আর পূরণ হয় না, তখন স্বাভাবিকভাবেই হতাশা ঘিরে ধরে। নিজেকে বড্ড একা লাগা শুরু হয় তখন থেকেই, এই একাকিত্ব আর না পাওয়ার কষ্টটা একটা মানুষকে শেষ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

জীবনে না পাওয়ার হাজারটা গল্প থাকবে। ব্যর্থতা আর হতাশার দিনে ‘আপন’ বলে পরিচয় দেয়া অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নেবে। পাশের বাসার আন্টি কিংবা উপরতলার আংকেল খোঁচা দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবে না। এসব নিয়ে যদি আপনি বিন্দুমাত্রও চিন্তা করেন সেটাই বরং বোকামি। কে কি বললো সেটা নিয়ে ভাবলে সাফল্যের পথটা অধরাই থেকে যাবে।

মৃত্যু কখনোই ঠিক সমাধান দেয় না। জীবনের পরীক্ষাটায় কমবেশি সবাইকে বোধহয় ব্যর্থতার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। স্বপ্নের কিংবা মানসিক মৃত্যুটা অনেকের নীরবেই ঘটে যায়। কিন্তু জীবনের ছোট ছোট পরীক্ষাগুলোয় ব্যর্থতার গ্লানির দায় নিয়ে জীবনটাকেই শেষ করে দেয়া কিংবা টেনশনটা খুব বেশি করার পরিণতি মৃত্যু হবেÑ এটা কখনোই কাম্য নয়।

আপনার আশেপাশের মানুষগুলোর দিকে একটু তাকান। শুধু সাফল্যের খবরে তাদের অভিনন্দন না জানিয়ে ব্যর্থতার দিনগুলোয় একটু সহানুভূতির হাত বাড়ান। ‘চিন্তা করো না। সব ঠিক হয়ে যাবে।’ বিশ্বাস করুন, হতাশা ঘিরে থাকা মানুষগুলো শুধু এটুক শুনতে পেলেই খারাপ সময়টা কাটিয়ে উঠার জন্য মনে জোর পায়। কিন্তু স্বার্থ্যরে স্র্র্রোতে গা ভাসানো এই সমাজটায় এটুক বলার মানুষই খুঁজে পাওয়া দায় আজকাল।

সব কষ্ট, ব্যর্থতা কিংবা আকাক্সিক্ষত স্বপ্নের মৃত্যু সহ্য করার মানসিকতায় বাঁচতে শিখতে হয়। ব্যর্থতা থেকেই নিতে হয় শিক্ষা। দেখতে হয় নতুন স্বপ্ন, থাকতে হয় সেটা পূরণ করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

স্বপ্ন বেঁচে থাক। বিশ্বাস অটুট থাকুক সৃষ্টিকতার ওপর। প্রত্যাশাটা এতটুকুই।

তানভীর মাহতাব আবীর

শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৪ মহররম ১৪৪২, ০৫ আশ্বিন ১৪২৭

আত্মহত্যাই কি সমাধান?

আমরা প্রায়ই পারিবারিক টানাপড়েন, প্রেমে ব্যর্থতার হতাশা কিংবা আর্থিক অসচ্ছলতায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মানুষের আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার গল্প শুনি। আত্মহত্যাটাই কি হতাশা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ? স্বেচ্ছায় মরণকে বরণ করে নেয়ার আগে মানুষগুলো হয়ত নিজেকে এই স্বার্থপর পৃথিবী থেকে মুক্তি দিতে পারে, কিন্তু নিজের পরিবারের কথা কি তারা একটুও ভাবে না?

ছোট্ট একটা জীবন, অথচ আমাদের পাওয়ার আকাক্সক্ষা বিশাল। সেই আকাক্সক্ষা যখন আর পূরণ হয় না, তখন স্বাভাবিকভাবেই হতাশা ঘিরে ধরে। নিজেকে বড্ড একা লাগা শুরু হয় তখন থেকেই, এই একাকিত্ব আর না পাওয়ার কষ্টটা একটা মানুষকে শেষ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

জীবনে না পাওয়ার হাজারটা গল্প থাকবে। ব্যর্থতা আর হতাশার দিনে ‘আপন’ বলে পরিচয় দেয়া অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নেবে। পাশের বাসার আন্টি কিংবা উপরতলার আংকেল খোঁচা দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবে না। এসব নিয়ে যদি আপনি বিন্দুমাত্রও চিন্তা করেন সেটাই বরং বোকামি। কে কি বললো সেটা নিয়ে ভাবলে সাফল্যের পথটা অধরাই থেকে যাবে।

মৃত্যু কখনোই ঠিক সমাধান দেয় না। জীবনের পরীক্ষাটায় কমবেশি সবাইকে বোধহয় ব্যর্থতার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। স্বপ্নের কিংবা মানসিক মৃত্যুটা অনেকের নীরবেই ঘটে যায়। কিন্তু জীবনের ছোট ছোট পরীক্ষাগুলোয় ব্যর্থতার গ্লানির দায় নিয়ে জীবনটাকেই শেষ করে দেয়া কিংবা টেনশনটা খুব বেশি করার পরিণতি মৃত্যু হবেÑ এটা কখনোই কাম্য নয়।

আপনার আশেপাশের মানুষগুলোর দিকে একটু তাকান। শুধু সাফল্যের খবরে তাদের অভিনন্দন না জানিয়ে ব্যর্থতার দিনগুলোয় একটু সহানুভূতির হাত বাড়ান। ‘চিন্তা করো না। সব ঠিক হয়ে যাবে।’ বিশ্বাস করুন, হতাশা ঘিরে থাকা মানুষগুলো শুধু এটুক শুনতে পেলেই খারাপ সময়টা কাটিয়ে উঠার জন্য মনে জোর পায়। কিন্তু স্বার্থ্যরে স্র্র্রোতে গা ভাসানো এই সমাজটায় এটুক বলার মানুষই খুঁজে পাওয়া দায় আজকাল।

সব কষ্ট, ব্যর্থতা কিংবা আকাক্সিক্ষত স্বপ্নের মৃত্যু সহ্য করার মানসিকতায় বাঁচতে শিখতে হয়। ব্যর্থতা থেকেই নিতে হয় শিক্ষা। দেখতে হয় নতুন স্বপ্ন, থাকতে হয় সেটা পূরণ করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

স্বপ্ন বেঁচে থাক। বিশ্বাস অটুট থাকুক সৃষ্টিকতার ওপর। প্রত্যাশাটা এতটুকুই।

তানভীর মাহতাব আবীর

শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।