৯১ লাখ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করল ফেসবুক

বাংলাদেশ সরকারকে ৯১ লাখ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। গত আগস্টে স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ফেসবুকের এজেন্ট ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন বিক্রি করেছে। এর বিপরীতে তারা এ ভ্যাট সংগ্রহ করে। এর আগে যথাসময়ে ভ্যাট পরিশোধ না করায় এবং অস্তিত্বহীন হওয়ায় ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশে ফেসবুকের এজেন্ট এইচটিটিপুল-এর বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করেছিল। এরপর তারা ৭৭ লাখ ৬২ হাজার বকেয়া ভ্যাট ও ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ব্যক্তিগত জরিমানা জমা দেয়।

চলতি সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ ছিল ফেসবুকের এজেন্ট আয় বিবরণী (রিটার্ন) জমা দেয়ার শেষ সময়। তবে আগস্ট মাসের এ ভ্যাট তারা আগেই পরিশোধ করে। এইচটিটিপুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলজোসা জেংকো ৯১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার ভ্যাট পরিশোধের চালানসহ আগস্ট মাসের ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করেছেন। বাংলাদেশের জন্য অনুমোদিত সেলস পার্টনার হিসেবে এইচটিটিপুলকে নিযুক্ত করে গত ২২ জুন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় ফেসবুক। এইচটিটিপুলের দায়িত্ব স্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সিগুলোকে সহায়তা করা। বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুককে বাংলাদেশি মুদ্রা (টাকা) অর্থ পরিশোধও করা যায় এইচটিটিপুলের মাধ্যমে।

এর আগে নতুন অর্থবছর থেকে ফেসবুক টুইটার গুগলসহ ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাটের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব বা গুগলের মতো জনপ্রিয় মাধ্যম থেকে এখন তেমন ভ্যাট পাওয়া যায় না। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের মূসক নিবন্ধন নেই। দেশে তাদের কোন অফিসও নেই। এছাড়া এসব সাইটে অনেক বিজ্ঞাপন দেখা যায়। কিন্তু বিজ্ঞাপন থেকে কি পরিমাণ আয় হয় কিংবা বিজ্ঞাপনের অর্থ কিভাবে পরিশোধ হয় তাও জানা নেই। তবে নতুন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। আইনের ব্যতয় হলে বাংলাদেশে এসব প্রতিষ্ঠানের সাইট বন্ধ করে দেয়ার এখতিয়ার আইনে রয়েছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, নতুন ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২’ আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে মূসক নিবন্ধন নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন অথবা মূসক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। নিবন্ধন এসব প্রতিষ্ঠানের নামে হলেও মূসক এজেন্ট ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবে। তাই বিজ্ঞাপন ও তাদের আয়ের উপর মূসক এবং আয়কর পরিশোধ করবে। আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন না নিলে এনবিআর এসব প্রতিষ্ঠানের সাইট বন্ধ করে দেয়ার জন্য বিটিআরসিকে চিঠি দেবে। এসব প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে অফিস হলে মূসকের পাশাপাশি আয়করও আদায় করা যাবে।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৫ মহররম ১৪৪২, ০৬ আশ্বিন ১৪২৭

৯১ লাখ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করল ফেসবুক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

বাংলাদেশ সরকারকে ৯১ লাখ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। গত আগস্টে স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ফেসবুকের এজেন্ট ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন বিক্রি করেছে। এর বিপরীতে তারা এ ভ্যাট সংগ্রহ করে। এর আগে যথাসময়ে ভ্যাট পরিশোধ না করায় এবং অস্তিত্বহীন হওয়ায় ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশে ফেসবুকের এজেন্ট এইচটিটিপুল-এর বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করেছিল। এরপর তারা ৭৭ লাখ ৬২ হাজার বকেয়া ভ্যাট ও ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ব্যক্তিগত জরিমানা জমা দেয়।

চলতি সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ ছিল ফেসবুকের এজেন্ট আয় বিবরণী (রিটার্ন) জমা দেয়ার শেষ সময়। তবে আগস্ট মাসের এ ভ্যাট তারা আগেই পরিশোধ করে। এইচটিটিপুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলজোসা জেংকো ৯১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার ভ্যাট পরিশোধের চালানসহ আগস্ট মাসের ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করেছেন। বাংলাদেশের জন্য অনুমোদিত সেলস পার্টনার হিসেবে এইচটিটিপুলকে নিযুক্ত করে গত ২২ জুন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় ফেসবুক। এইচটিটিপুলের দায়িত্ব স্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সিগুলোকে সহায়তা করা। বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুককে বাংলাদেশি মুদ্রা (টাকা) অর্থ পরিশোধও করা যায় এইচটিটিপুলের মাধ্যমে।

এর আগে নতুন অর্থবছর থেকে ফেসবুক টুইটার গুগলসহ ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাটের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব বা গুগলের মতো জনপ্রিয় মাধ্যম থেকে এখন তেমন ভ্যাট পাওয়া যায় না। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের মূসক নিবন্ধন নেই। দেশে তাদের কোন অফিসও নেই। এছাড়া এসব সাইটে অনেক বিজ্ঞাপন দেখা যায়। কিন্তু বিজ্ঞাপন থেকে কি পরিমাণ আয় হয় কিংবা বিজ্ঞাপনের অর্থ কিভাবে পরিশোধ হয় তাও জানা নেই। তবে নতুন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। আইনের ব্যতয় হলে বাংলাদেশে এসব প্রতিষ্ঠানের সাইট বন্ধ করে দেয়ার এখতিয়ার আইনে রয়েছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, নতুন ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২’ আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে মূসক নিবন্ধন নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন অথবা মূসক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। নিবন্ধন এসব প্রতিষ্ঠানের নামে হলেও মূসক এজেন্ট ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবে। তাই বিজ্ঞাপন ও তাদের আয়ের উপর মূসক এবং আয়কর পরিশোধ করবে। আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন না নিলে এনবিআর এসব প্রতিষ্ঠানের সাইট বন্ধ করে দেয়ার জন্য বিটিআরসিকে চিঠি দেবে। এসব প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে অফিস হলে মূসকের পাশাপাশি আয়করও আদায় করা যাবে।