হড়াইয়ে বাঁশ-জালের বাঁধে মাছ শিকার : হুমকিতে চাষাবাদ !

স্থানীয় কৃষকের সুবিধার্থে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা ব?্যয় করে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ডহর পাঁচুরিয়ার হড়াই নদীর জলাশয়টি পুনর্খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

খনন শেষ হলে সম্প্রতি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে এ নদীতে বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। যা বড় হলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে আমিষের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু তা ভোগ করছে কিছু সংখ?্যক প্রভাবশালী মহল। এ নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষক ফসল ফলাবে সরকারের চিন্তা চেতনার মধ্যে এটাও ছিল। কিন্তু কৃষিখাতে ব্যবহার তো দূরের কথা এর কাছে না যেতে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে জানায় অনেকেই।

এ ঘটনায় সরকারের বিভিন্ন দফতরে ভুক্তভোগী মোকছেদ শেখ, মোয়াজ্জেম দেওয়ান, আব্দুর রউফ মিয়া ও আকবর শেখ বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বঙ্কুর গ্রামের মজিবর রহমান ওরফে মজিবর চৌকিদার, লোকমান ম-ল ও আটদাপুনিয়া গ্রামের বজলু ম-ল ও কাশেম ম-লের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। খুব শীঘ্রই নদীটি দখলমুক্ত করে বাঁধ অপসারণ করা না হলে কৃষিখাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।

কয়েক কিলোমিটার এ হড়াই নদীর দুই পাশে অগণিত কৃষি পরিবার ও কৃষি জমি রয়েছে। এ নদীতে রয়েছে স্লুইচ গেইট যা শুষ্ক মৌসুমে আটকে রেখে জমিতে সেচের কাজ করছে কৃষকরা। এ বছরের বন্যায় বেশ পানি হয়ে তলিয়ে গেছে। শত শত বিঘা জমির এখনই যদি পানি সরে না যায় তাহলে এ এলাকায় পিয়াজের চাষ ব?্যাহত হবে।

ডহরপাঁচুরিয়া এলাকার কিছু সংখ্যক প্রভাবশালী জাল এবং পলিথিন দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকে দিয়েছে। মাঠ থেকে পানি বের হতে পারছে না। কৃষকগণ বলতে গেলে বাঁধদাতারা বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেয় বলে তারা জানান।

হড়াই নদীর দুইপাশে বন?্যার পানি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেয়াজ, রসুন, কালীজিরা, মেথি, ধনিয়াসহ বিভিন্ন প্রকার মসলা জাতীয় ফসলের চাষ করা হয়। এবার প্রভাবশালীদের বাঁধের কারণে এখন পর্যন্ত পানি সড়ছে না। ফলে ফসল চাষে ব?্যহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বলতে গেলেই প্রাণনাশের হুমকি।

এ নিয়ে একটি বাঁধের মালিক ও বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ মো. মজিবর রহমান শেখ বলেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমি এই বাঁধটি নির্মাণ করেছি। যদি কেউ সরিয়ে দিতে বলে আমি সরিয়ে দেব। তবে কারও সঙ্গে হুমকি ধামকি দেয়া হয়নি। অপর বাঁধটির কোন মালিকগণকে পাওয়া যায়নি।

প্রশাসনের নিকট এই এলাকার কৃষকদের দাবি দুই এক দিনের মধ্যে বাঁধ অপসারণ করে পানি নিষ্কাশণের ব্যবস্থা না করলে এ মাঠে পিয়াজ, রসুন, কালজিরা, ধনিয়াসহ কোন ফসলের চাষ করা সম্ভব হবে না।

বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. রবিউল হক বলেন, এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। এখন তিনি যে নির্দেশনা দিবেন তার ওপর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৫ মহররম ১৪৪২, ০৬ আশ্বিন ১৪২৭

হড়াইয়ে বাঁশ-জালের বাঁধে মাছ শিকার : হুমকিতে চাষাবাদ !

প্রতিনিধি, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)

image

স্থানীয় কৃষকের সুবিধার্থে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা ব?্যয় করে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ডহর পাঁচুরিয়ার হড়াই নদীর জলাশয়টি পুনর্খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

খনন শেষ হলে সম্প্রতি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে এ নদীতে বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। যা বড় হলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে আমিষের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু তা ভোগ করছে কিছু সংখ?্যক প্রভাবশালী মহল। এ নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষক ফসল ফলাবে সরকারের চিন্তা চেতনার মধ্যে এটাও ছিল। কিন্তু কৃষিখাতে ব্যবহার তো দূরের কথা এর কাছে না যেতে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে জানায় অনেকেই।

এ ঘটনায় সরকারের বিভিন্ন দফতরে ভুক্তভোগী মোকছেদ শেখ, মোয়াজ্জেম দেওয়ান, আব্দুর রউফ মিয়া ও আকবর শেখ বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বঙ্কুর গ্রামের মজিবর রহমান ওরফে মজিবর চৌকিদার, লোকমান ম-ল ও আটদাপুনিয়া গ্রামের বজলু ম-ল ও কাশেম ম-লের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। খুব শীঘ্রই নদীটি দখলমুক্ত করে বাঁধ অপসারণ করা না হলে কৃষিখাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।

কয়েক কিলোমিটার এ হড়াই নদীর দুই পাশে অগণিত কৃষি পরিবার ও কৃষি জমি রয়েছে। এ নদীতে রয়েছে স্লুইচ গেইট যা শুষ্ক মৌসুমে আটকে রেখে জমিতে সেচের কাজ করছে কৃষকরা। এ বছরের বন্যায় বেশ পানি হয়ে তলিয়ে গেছে। শত শত বিঘা জমির এখনই যদি পানি সরে না যায় তাহলে এ এলাকায় পিয়াজের চাষ ব?্যাহত হবে।

ডহরপাঁচুরিয়া এলাকার কিছু সংখ্যক প্রভাবশালী জাল এবং পলিথিন দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকে দিয়েছে। মাঠ থেকে পানি বের হতে পারছে না। কৃষকগণ বলতে গেলে বাঁধদাতারা বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেয় বলে তারা জানান।

হড়াই নদীর দুইপাশে বন?্যার পানি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেয়াজ, রসুন, কালীজিরা, মেথি, ধনিয়াসহ বিভিন্ন প্রকার মসলা জাতীয় ফসলের চাষ করা হয়। এবার প্রভাবশালীদের বাঁধের কারণে এখন পর্যন্ত পানি সড়ছে না। ফলে ফসল চাষে ব?্যহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বলতে গেলেই প্রাণনাশের হুমকি।

এ নিয়ে একটি বাঁধের মালিক ও বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ মো. মজিবর রহমান শেখ বলেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমি এই বাঁধটি নির্মাণ করেছি। যদি কেউ সরিয়ে দিতে বলে আমি সরিয়ে দেব। তবে কারও সঙ্গে হুমকি ধামকি দেয়া হয়নি। অপর বাঁধটির কোন মালিকগণকে পাওয়া যায়নি।

প্রশাসনের নিকট এই এলাকার কৃষকদের দাবি দুই এক দিনের মধ্যে বাঁধ অপসারণ করে পানি নিষ্কাশণের ব্যবস্থা না করলে এ মাঠে পিয়াজ, রসুন, কালজিরা, ধনিয়াসহ কোন ফসলের চাষ করা সম্ভব হবে না।

বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. রবিউল হক বলেন, এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। এখন তিনি যে নির্দেশনা দিবেন তার ওপর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।