করোনায় আরও ৩৭ প্রাণহানি শনাক্ত ১৬৬৬

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ হাজার ৪৪ জনে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৬৬৬ জন। এখন পর্যন্ত মোট তিন লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ জন পজেটিভ শনাক্ত হলেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর এসব তথ্য জানায়।

একদিনে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৩ হাজার ৯৭৭টি। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ১৫০টি। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ১৬৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ দুই লাখ ৬২ হাজার ৯৫৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, শনাক্ত বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি ১০০ নমুনায় ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ হয়েছে ৭৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং মারা গেছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে তিন জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুই জন এবং ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন।

বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচ জন, রাজশাহী বিভাগে দুই জন, বরিশালে একজন, খুলনা বিভাগে পাঁচ জন এবং সিলেটে এক জন। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৫ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন দুই জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ তিন হাজার ৯১৪ জন এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১৩০ জন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৬২ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ১৮১ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪১১ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬৩ হাজার ৬৩৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৮১৬ জনকে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে এক হাজার ৩৯৩ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ২৫৮ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন চার লাখ ৮০ হাজার ৮৪৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৩৮৫ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ হাজার ৫৩৮ জন।

জানা গেছে, পাঁচ হাজার ৪৪ জনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন। ঢাকার পরেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ এরপর খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, বরিশাল এবং সর্বোনিম্ন ময়মনসিংহ বিভাগে মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। আর প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১৮ মার্চ। দেশে প্রথম মৃত্যু পর ২০ এপ্রিল ১০০ মৃত্যু হয়, ৯ মে ২০০ মৃত্যু হয়, ২৫ মে ৫০০ মৃত্যু হয়, ১০ জুন এক হাজার মৃত্যু হয়, ২১ জুন দেড় হাজার মৃত্যু হয়, ৩ জুলাই দুই হাজার মৃত্যু হয়, ১৭ জুলাই দুই হাজার ৫০০ মৃত্যু হয়, ২৮ জুলাই তিন হাজার মৃত্যু হয়, ১২ আগস্ট সাড়ে তিন হাজার মৃত্যু হয়। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার হয় এবং সর্বশেষ ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ৪৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের দিকে ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী সংক্রমিত হওয়ার প্রায় তিন মাস পর জুন এসে এক লাখ মানুষ করোনা সংক্রমিত হন। জুলাই মাসে ২ লাখ করোনা সংক্রমণ ছাড়িয়ে যায়, ২৬ আগস্ট ৩ লাখ করোনা মানুষ সংক্রমিত হন এবং সর্বোশেষ ২১ সেপ্টেম্বর সাড়ে তিন লাখ করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায়।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিশ্বে মোট মৃতের সংখ্যা ৯ লাখ ৭১ হাজার পেরিয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত ও পাকিস্তানে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে মোট মৃত্যু ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, পাকিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষের।

বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ১৬ লাখ ছাড়িয়েছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় দিক থেকে ১৫তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ২৮তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মুনীর বলেন, করোনা সম্পর্কে মানুষের নলেজ রয়েছে, কিন্তু তার প্র্যাক্টিস নেই। আমরা করোনাকালে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে পারিনি, ভলান্টিয়ার গ্রুপ তৈরি করতে পারিনি। সেটা করতে পারলে জনগণের মধ্যে আরও সচেতনতা তৈরি হতো।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৫ মহররম ১৪৪২, ০৬ আশ্বিন ১৪২৭

করোনায় আরও ৩৭ প্রাণহানি শনাক্ত ১৬৬৬

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ হাজার ৪৪ জনে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৬৬৬ জন। এখন পর্যন্ত মোট তিন লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ জন পজেটিভ শনাক্ত হলেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর এসব তথ্য জানায়।

একদিনে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৩ হাজার ৯৭৭টি। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ১৫০টি। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ১৬৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ দুই লাখ ৬২ হাজার ৯৫৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, শনাক্ত বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি ১০০ নমুনায় ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ হয়েছে ৭৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং মারা গেছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে তিন জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুই জন এবং ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন।

বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচ জন, রাজশাহী বিভাগে দুই জন, বরিশালে একজন, খুলনা বিভাগে পাঁচ জন এবং সিলেটে এক জন। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৫ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন দুই জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ তিন হাজার ৯১৪ জন এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১৩০ জন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৬২ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ১৮১ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪১১ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬৩ হাজার ৬৩৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৮১৬ জনকে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে এক হাজার ৩৯৩ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ২৫৮ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন চার লাখ ৮০ হাজার ৮৪৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৩৮৫ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ হাজার ৫৩৮ জন।

জানা গেছে, পাঁচ হাজার ৪৪ জনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন। ঢাকার পরেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ এরপর খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, বরিশাল এবং সর্বোনিম্ন ময়মনসিংহ বিভাগে মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। আর প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১৮ মার্চ। দেশে প্রথম মৃত্যু পর ২০ এপ্রিল ১০০ মৃত্যু হয়, ৯ মে ২০০ মৃত্যু হয়, ২৫ মে ৫০০ মৃত্যু হয়, ১০ জুন এক হাজার মৃত্যু হয়, ২১ জুন দেড় হাজার মৃত্যু হয়, ৩ জুলাই দুই হাজার মৃত্যু হয়, ১৭ জুলাই দুই হাজার ৫০০ মৃত্যু হয়, ২৮ জুলাই তিন হাজার মৃত্যু হয়, ১২ আগস্ট সাড়ে তিন হাজার মৃত্যু হয়। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার হয় এবং সর্বশেষ ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ৪৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের দিকে ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী সংক্রমিত হওয়ার প্রায় তিন মাস পর জুন এসে এক লাখ মানুষ করোনা সংক্রমিত হন। জুলাই মাসে ২ লাখ করোনা সংক্রমণ ছাড়িয়ে যায়, ২৬ আগস্ট ৩ লাখ করোনা মানুষ সংক্রমিত হন এবং সর্বোশেষ ২১ সেপ্টেম্বর সাড়ে তিন লাখ করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায়।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিশ্বে মোট মৃতের সংখ্যা ৯ লাখ ৭১ হাজার পেরিয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত ও পাকিস্তানে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে মোট মৃত্যু ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, পাকিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষের।

বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ১৬ লাখ ছাড়িয়েছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় দিক থেকে ১৫তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ২৮তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মুনীর বলেন, করোনা সম্পর্কে মানুষের নলেজ রয়েছে, কিন্তু তার প্র্যাক্টিস নেই। আমরা করোনাকালে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে পারিনি, ভলান্টিয়ার গ্রুপ তৈরি করতে পারিনি। সেটা করতে পারলে জনগণের মধ্যে আরও সচেতনতা তৈরি হতো।