পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি সই

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে ভিড়তে পারবে সাড়ে ১৮ মিটার গভীরতার জাহাজ

দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী ও ধলঘাট এলাকায়। প্রায় ১৩০০ একর জায়গায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিবে জাইকা। বাকি ৪ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা দিবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সরকার। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি গত ১০ মার্চ একনেক সভায় অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৬ ডিসেম্বরে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। নির্মাণ সম্পন্ন হলে মাতারবাড়ী বন্দরে ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। প্রথম ধাপের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৬ সাল। দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত হবে তিনটি কনটেইনার টার্মিনাল। এভাবে পর্যায়ক্রমে বন্দরে টার্মিনাল সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাপানের নিপ্পন কোয়ে যৌথ কোম্পানি এবং জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড যৌথ কোম্পানি দু’টিকে প্রকল্পটির পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাপানের এই দুটি পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক জাফর আলম এবং জাপানের নিপ্পন কোয়ের প্রতিনিধি নাওকি কুডো প্রকৌশলগত বিষয়ের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (বন্দর সংযোগ সড়ক অংশ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের (আরএইচডি) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক মো. সাদেকুল ইসলাম এবং জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি শুনজি ইউশিহারা সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এ সময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌ-সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়া, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইকি ইয়ামায়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার আরও বেশি শক্তিশালী হবে। সুনীল অর্থনীতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে মাতারবাড়ী বন্দর নতুন উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাবে।’ নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্র সম্পদ ও বঙ্গোপসাগরের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মাতারবাড়ী বন্দর সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। মাতারবাড়ী বন্দরের বাস্তবায়ন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে হবে।’

প্রকল্প সূত্র জানায়, নিপ্পন কোয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকল্পের যাবতীয় ডিজাইন ব্যয় নির্ধারণ, টেন্ডার ডকুমেন্টস তৈরি এবং অবকাঠামোগত নির্মাণের বিষয়গুলো মনিটরিং এবং তদারকি করা হবে। পরবর্তীতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ থেকে শুরু করে বন্দর চালু করে দেয়ার বিষয়টি সমন্বয় করবে। বন্দর চালু হওয়ার এক বছর পর্যন্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাপোর্ট দেবে। এজন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিকে ২৩৪ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পের (বন্দর সংযোগ সড়ক অংশ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের কার্যক্রম সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান করবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিকে ৪৬৬ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। বন্দর এলাকায় ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে দুইলেন সড়ক নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে চারলেন সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী ও ধলঘাট ইউনিয়নের কিছু এলাকায় বন্দরটি নির্মিত হবে। নির্মাণ সম্পন্ন হলে মাতারবাড়ী বন্দরে ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং প্রায় ৮ হাজার টিইইউ’স কন্টেইনার (বিশ ফুট দৈর্ঘের কন্টেইনার) নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে মাতারবাড়ী বন্দরে। ফলে সামগ্রিক পরিবহন ব্যয় হ্রাস পাবে আনুমানিক ১৫ শতাংশ। মাতারবাড়ী বন্দর সড়ক, রেল ও নদীপথ দিয়ে সংযুক্ত থাকবে। বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি সুপরিকল্পিত কানেক্টিভিটি গড়ে উঠবে। যার ফলে যেকোন পণ্য সহজে এবং কম খরচেই পৌঁছে যাবে আমদানি-রপ্তানিকারকেদের দোরগোড়ায়। এ বন্দর দিয়ে কয়লা, লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি), অপরিশোধিত তেল ও তেল পণ্য, সিমেন্ট, ক্লিঙ্কার, সার, খাদ্যশস্য, স্টিলপণ্য এবং স্ক্র্যাপ লোহা আমদানি সহজতর হবে। কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গভীর সমুদ্রবন্দরের সুযোগ তৈরি হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাতারবাড়ী বন্দর দেশের গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব ঘুচিয়ে দিতে যাচ্ছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নৌ-মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে মাতারবাড়ী বন্দরের প্রকল্প পরিচালক মো. জাফর আলম সংবাদকে বলেন, ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পে নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালে। বন্দরটি জাপানের কাশিমা বন্দরের আদলে তৈরি করা হচ্ছে। ১৯৬২ সালে কাশিমা বন্দরের যখন নির্মাণকাজ শুরু হয়, তখন সেখানে ছিল ধানখেত। তবে বন্দর নির্মাণের পর সেটি ব্যবসাবাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বিশ্বের বড় বড় ব্যবসাকেন্দ্র গড়ে উঠেছে বন্দর ঘিরেই। মাতারবাড়ী বন্দর ঘিরে এই অঞ্চলের ব্যবসাবাণিজ্য গড়ে উঠবে।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৫ মহররম ১৪৪২, ০৬ আশ্বিন ১৪২৭

পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি সই

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে ভিড়তে পারবে সাড়ে ১৮ মিটার গভীরতার জাহাজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী ও ধলঘাট এলাকায়। প্রায় ১৩০০ একর জায়গায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিবে জাইকা। বাকি ৪ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা দিবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সরকার। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি গত ১০ মার্চ একনেক সভায় অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৬ ডিসেম্বরে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। নির্মাণ সম্পন্ন হলে মাতারবাড়ী বন্দরে ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। প্রথম ধাপের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৬ সাল। দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত হবে তিনটি কনটেইনার টার্মিনাল। এভাবে পর্যায়ক্রমে বন্দরে টার্মিনাল সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাপানের নিপ্পন কোয়ে যৌথ কোম্পানি এবং জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড যৌথ কোম্পানি দু’টিকে প্রকল্পটির পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাপানের এই দুটি পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক জাফর আলম এবং জাপানের নিপ্পন কোয়ের প্রতিনিধি নাওকি কুডো প্রকৌশলগত বিষয়ের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (বন্দর সংযোগ সড়ক অংশ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের (আরএইচডি) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক মো. সাদেকুল ইসলাম এবং জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি শুনজি ইউশিহারা সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এ সময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌ-সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়া, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইকি ইয়ামায়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার আরও বেশি শক্তিশালী হবে। সুনীল অর্থনীতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে মাতারবাড়ী বন্দর নতুন উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাবে।’ নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্র সম্পদ ও বঙ্গোপসাগরের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মাতারবাড়ী বন্দর সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। মাতারবাড়ী বন্দরের বাস্তবায়ন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে হবে।’

প্রকল্প সূত্র জানায়, নিপ্পন কোয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকল্পের যাবতীয় ডিজাইন ব্যয় নির্ধারণ, টেন্ডার ডকুমেন্টস তৈরি এবং অবকাঠামোগত নির্মাণের বিষয়গুলো মনিটরিং এবং তদারকি করা হবে। পরবর্তীতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ থেকে শুরু করে বন্দর চালু করে দেয়ার বিষয়টি সমন্বয় করবে। বন্দর চালু হওয়ার এক বছর পর্যন্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাপোর্ট দেবে। এজন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিকে ২৩৪ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পের (বন্দর সংযোগ সড়ক অংশ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের কার্যক্রম সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান করবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিকে ৪৬৬ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। বন্দর এলাকায় ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে দুইলেন সড়ক নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে চারলেন সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী ও ধলঘাট ইউনিয়নের কিছু এলাকায় বন্দরটি নির্মিত হবে। নির্মাণ সম্পন্ন হলে মাতারবাড়ী বন্দরে ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং প্রায় ৮ হাজার টিইইউ’স কন্টেইনার (বিশ ফুট দৈর্ঘের কন্টেইনার) নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে মাতারবাড়ী বন্দরে। ফলে সামগ্রিক পরিবহন ব্যয় হ্রাস পাবে আনুমানিক ১৫ শতাংশ। মাতারবাড়ী বন্দর সড়ক, রেল ও নদীপথ দিয়ে সংযুক্ত থাকবে। বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি সুপরিকল্পিত কানেক্টিভিটি গড়ে উঠবে। যার ফলে যেকোন পণ্য সহজে এবং কম খরচেই পৌঁছে যাবে আমদানি-রপ্তানিকারকেদের দোরগোড়ায়। এ বন্দর দিয়ে কয়লা, লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি), অপরিশোধিত তেল ও তেল পণ্য, সিমেন্ট, ক্লিঙ্কার, সার, খাদ্যশস্য, স্টিলপণ্য এবং স্ক্র্যাপ লোহা আমদানি সহজতর হবে। কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গভীর সমুদ্রবন্দরের সুযোগ তৈরি হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাতারবাড়ী বন্দর দেশের গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব ঘুচিয়ে দিতে যাচ্ছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নৌ-মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে মাতারবাড়ী বন্দরের প্রকল্প পরিচালক মো. জাফর আলম সংবাদকে বলেন, ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পে নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালে। বন্দরটি জাপানের কাশিমা বন্দরের আদলে তৈরি করা হচ্ছে। ১৯৬২ সালে কাশিমা বন্দরের যখন নির্মাণকাজ শুরু হয়, তখন সেখানে ছিল ধানখেত। তবে বন্দর নির্মাণের পর সেটি ব্যবসাবাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বিশ্বের বড় বড় ব্যবসাকেন্দ্র গড়ে উঠেছে বন্দর ঘিরেই। মাতারবাড়ী বন্দর ঘিরে এই অঞ্চলের ব্যবসাবাণিজ্য গড়ে উঠবে।