বিতরণ হলো না ৪ মাসেও

করোনায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি অব্যাহত রাখতে পিকেএসএফ, পল্লী সঞ্চয়, কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণ ঘোষণা করে সরকার। এই ঘোষণার পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও কোন ঋণ ছাড় হয়নি (১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, ঋণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে তারা যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঋণ দেননি। অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাতে ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত করছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ পরিচালনা করার কোন সক্ষমতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নেই। এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সাধারণ গ্রাহক ঋণ পায় না। সরকারের টাকা তারা এমন জায়গায় খরচ করে, যেন তা আর ফেরত না আসে। এতে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিন্তু জনগণ উপকৃত হবে না।

জানা গেছে, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েক দফায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এরমধ্যে কর্মসৃজন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা বরাদ্দ করা হয়। এই ২ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনকে ৫০০ কোটি করে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন গত ১৪ এপ্রিল। ঘোষণার পর প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও এই কোন ঋণ ছাড় করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এ চার প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করা হলে তারা বিভিন্ন অজুহাতে ঋণ ছাড়ে ধীরগতির কথা জানান।

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর সংবাদকে বলেন, ‘তারা কিছুই দিতে পারবে না। এসব ঋণ বিতরণের ক্যাপাসিটি তাদের নেই। এদের নামমাত্রই ব্যাংক বলা হয়। তবে ব্যাংকের কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে তারা পারে না। সরকার এসব ব্যাংকে টাকা না দিয়ে অন্য ব্যাংকে দিতে পারত। কারণ তারা যে কাজ করতে পারবে না, সে কাজের জন্য সরকার তাদের নির্বাচন করেছে। হ্যাঁ, কিছু ঋণ তো তারা দিবেই। তবে তাদের দিবে যারা ঘুষ দিতে পারবে। আর যারা ঘুষ নিয়ে ঋণ নিবে, তারা সেই ঋণ ফেরত দিবে না। এসব ব্যাংকের কোন যোগ্যতা নেই ঋণ পরিচালনা করা, কাস্টমারের ডাটাবেজ তৈরি করা, কাস্টমারকে চেনা, তাদের সঙ্গে রিলেশান তৈরি করা। তবে সরকার সৎ উদ্দেশ্যে তাদের দিয়ে কাজ উদ্ধার করতে চাচ্ছে। কিন্তু সেটা হবে না। তারা সেটা করবে না।’

গত ১৪ এপ্রিল প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা প্রবাসী রয়েছেন, তারাই আমাদের রেমিট্যান্স পাঠান। তাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নামে আরেকটি ব্যাংক আমি প্রতিষ্ঠা করি। এই ব্যাংকে এর আগে ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। আরও অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকা দেব। আমরা জানি, এখন প্রবাসে কাজের পরিধিটা সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। সেখানে বহু মানুষ কাজ হারাচ্ছেন। অনেকেই দেশে ফিরে আসছেন। তারা আমার দেশের নাগরিক। তারা কোথাও কষ্ট করুক তা আমরা চাই না। তারা ফিরে আসতে চাইলে ফিরে আসুক। কিন্তু এখানে এসে তারা যেন কিছু কাজ করে খেতে পারেন।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক : প্রধানন্ত্রীর এই ঘোষণার পর প্রায় চার মাস পা হলেও এখনও ঋণ বিতরণ হয়নি। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব জাবিন সংবাদকে বলেন, ‘প্যাকেজের পুরোটা আমরা পায়নি। ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রবাসীরা দেশে ছিলেন না। তাই ব্যাংকে ঋণ নেয়ার প্রসেস সম্পর্কে অনেকেই জানে না। আমরা প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার প্রবাসীকে নিয়ে কাউন্সিলিং করেছি। কিভাবে ঋণ নিতে হবে, কোন কোন খাতে ঋণ পাবেন এই কাউন্সিলিংয়ে সে বিষয়ে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন প্রবাসী ঋণের জন্য আবেদন করেছেন। তার মধ্যে ১৫ থেকে ২০টা আবেদন নিয়ে কাজ শুরু করেছি। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো ছাড় করতে পারব।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতা লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি হাজারও প্রবাসী জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে তারা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার কথা বললেও, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্মকর্তারা আমাদের ওপর কঠিন শর্ত আরোপ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বেকার অবস্থায় দেশে থাকার কারণে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে, খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তাই আমরা সরকারের কাছে কিছু দাবি উপস্থাপন করছি। সহজ শর্তে ঋণ দেয়া এবং প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের শর্তে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। আবেদনকারীর পাসপোর্টের (পাসপোর্টের বহির্গমন ও আগমনী সিলযুক্ত পাতাসহ) সত্যায়িত ফটোকপির সঙ্গে বিএমইটি’র স্মার্ট কার্ড বা চাকরিরত দেশের আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি বা বৈধ পথে বিদেশ গমনের প্রমাণপত্র বা বিদেশে চাকরির চুক্তিপত্র বা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে জমা দিতে হবে ‘ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মী’ এই মর্মে সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের প্রত্যয়নপত্র। ঋণ আবেদনকারীকে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ‘ঋণখেলাপি নন বলে’ হলফনামা দাখিল করতে হবে। তবে অন্যকোন সংস্থা, ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে ঋণখেলাপি ব্যক্তি এই ঋণ পাবেন না। সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে ‘সহজামানত’ রাখতে হবে না। তবে এর ঊর্ধ্বে হলে দেড়গুণ সমপরিমাণ সহজামানত জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর বৈধ ব্যবসা বা প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে শুরু করার পর আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর জামানতের জন্য গ্যারান্টিকৃত সম্পত্তি নিজ নামে বা পিতার নামে থাকতে হবে। ঋণ পরিশোধে সক্ষম ন্যূনতম একজনকে গ্যারান্টার হিসেবে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর পিতা, মাতা, স্বামী বা স্ত্রী, ভাই, বোন বা নিকটতম আত্মীয়-স্বজনের বাইরে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ‘সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিকেও’ গ্যারান্টার হিসেবে রাখা হবে। এসব জটিল শর্তের কারণে অনেকে ঋণ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবি মির্জা মো. আজিজুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘এখানে সমস্যা দুই দিক থেকেই আছে। যেমন, যেসব ব্যাংক ঋণ দিবে তারাও এতোটা সক্ষম না। তারা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে ঋণ দিবে এমন মেন্টালিটিও তাদের নেই। আর যেসব গ্রাহক ঋণ নিবে তারাও ব্যাংকিং নিয়ম সম্পর্কে সচেতন না। এই দুই কারণে এসব ঋণগুলো বিতরণে এতো ধীরগতি। শুধু এটাই না, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণও এখন পর্যন্ত খুবই কম পরিমাণে ছাড় হয়েছে।’

কর্মসংস্থান ব্যাংক : কর্মসংস্থান ব্যাংকের প্রতিও তাগিদ দিয়ে প্রণোদনা ঘোষণার দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যুবক শ্রেণীকে যেন বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে না হয়, সেজন্য একটা বিশেষ ব্যাংক করে দিয়েছিলাম, কর্মসংস্থান ব্যাংক। একজন যুবক তিনি শিক্ষিত হোন আর অশিক্ষিত হোন বেকার হলেই জামানত ছাড়াই স্বল্পসুদে ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন এ ব্যাংক থেকে। এ ব্যাংকের ঋণ আরও বৃদ্ধি করার জন্য সরকার বিশেষ আমানত দিচ্ছে।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কোন ঋণ বিতরণ হয়নি এই ব্যাংকের।

এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মসংস্থান ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘প্রণোদনার ৫০০ কোটি টাকা পাওয়া কথা ছিল। প্রথমবার আমরা ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছি। সরকারের অনুমোদিত সবগুলো খাতে আমরা অর্থায়ন করছি। এগুলোর মধ্যে বেশি যেসব খাতে ঋণ দেই সেগুলো হলোÑ গরু মোটাতাজা করণ, দুগ্ধখামার, মৎস চাষ, নার্সারি, পোল্ট্রি। অর্থাৎ গ্রামের বেকার যুবকরা যেসব কাজগুলোতে সংশ্লিষ্ট হয় এবং যেসব খাতে সরকারি নিষেধজ্ঞা নেই সেসব খাতে আমরা অর্থায়ন করি। আমরা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ দেই। তবে ঋণ নিতে হলে একজন গ্যারান্টার লাগবেই। আমরা একজন নরমাল গ্যারান্টার রাখি ঋণের জন্য। সেই ব্যক্তি যেন সেই ঋণটি পরিশোধ করতে সমর্থ হয়।’ তবে এখন পর্যন্ত কয়জন বেকারকে বা কত টাকা ঋণ ছাড় হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা মাত্রই কাজ শুরু করেছি। এই বিষয়ে কোন তথ্য এখন আমাদের নেই।’

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক : প্রণোদণা ঘোষণার দিন প্রধামন্ত্রী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কথাও উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য আমরা ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সেখানেও আমরা একটা ব্যাংক তৈরি করে দিয়েছি। এটা (কার্যক্রম) প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে। আর ভবিষ্যতে যেন এটা প্রকল্পে না চলে। তারা এখানে সমিতি বা সমবায় করবে আর নিজের ব্যবসা নিজে চালাতে পারবে। প্রকল্প থেকে তারা ধীরে ধীরে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। তাদের সঞ্চয় ব্যাংকে থাকবে। ব্যাংকের মালিক তারা। তারা এখান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে। সে কথা চিন্তা করেই আমরা এ ব্যাংকটা করেছি।’

তবে চার মাস পেরিয়ে গেলেও এই ব্যাংকও কোন ঋণ বিতরণ করতে পরেনি। এই ব্যাংকের ঋণ বিতরণের তথ্য নেই বলে জানান কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ১৫ সেপ্টম্বর সংবাদকে বলেন, ‘গত এক মাস আগে আমরা ২৫০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছি। তারপর সেই ঋণের প্রডাক্ট তৈরি করে এক সপ্তাহ হলো বিভিন্ন শাখায় পাঠিয়েছি। এখনও ঋণ বিতরণ শুরু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে বলতে পারব না। হয়তো এক সপ্তাহ পর আমাদের কাছে প্রতিবেদন আসবে তখন বলতে পারবো।’

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) : এভাবে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনকেও ৫০০ কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান কোন ঋণ গ্রাহকের কাছে বিরতণ করতে পারেনি বলে জানা যায়। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিকেএসএফ-এর একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, ‘আমরা গত এক মাস আগে ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছি। সেই টাকা দিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। তবে কত টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে এমন কোন প্রতিবেদন এখনও আমাদের কাছে আসেনি। আমরা কাজ শুরু করেছি মাত্র।’

এ প্রসঙ্গে জানতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি না থাকায় এই বিষয়ে তিনি কথা বলতে পারবেন না বলে সংবাদকে জানান।

আরও খবর
রাজশাহীর একমাত্র করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল বন্ধ
হেরে গেলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার ট্রাম্পের
দেশে করোনায় একদিনে মৃত্যু ২৮ শনাক্ত ১৫৪০
ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করতে মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
যেভাবে কাটার রাসেলের উত্থান
ওয়াসার এমডির নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট
অনুমোদনের দু’বছর পরও কাজ শুরু হয়নি
পাপিয়া দম্পতির যাবজ্জীবন চায় রাষ্ট্রপক্ষ
৩৪ ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি
ড্রাইভার মালেক বিদেশেও বিপুল অর্থ পাচার করেছে
মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৬ মহররম ১৪৪২, ০৭ আশ্বিন ১৪২৭

প্রণোদনার ২ হাজার কোটি টাকা

বিতরণ হলো না ৪ মাসেও

রেজাউল করিম

করোনায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি অব্যাহত রাখতে পিকেএসএফ, পল্লী সঞ্চয়, কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণ ঘোষণা করে সরকার। এই ঘোষণার পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও কোন ঋণ ছাড় হয়নি (১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, ঋণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে তারা যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঋণ দেননি। অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাতে ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত করছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ পরিচালনা করার কোন সক্ষমতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নেই। এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সাধারণ গ্রাহক ঋণ পায় না। সরকারের টাকা তারা এমন জায়গায় খরচ করে, যেন তা আর ফেরত না আসে। এতে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিন্তু জনগণ উপকৃত হবে না।

জানা গেছে, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েক দফায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এরমধ্যে কর্মসৃজন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা বরাদ্দ করা হয়। এই ২ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনকে ৫০০ কোটি করে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন গত ১৪ এপ্রিল। ঘোষণার পর প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও এই কোন ঋণ ছাড় করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এ চার প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করা হলে তারা বিভিন্ন অজুহাতে ঋণ ছাড়ে ধীরগতির কথা জানান।

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর সংবাদকে বলেন, ‘তারা কিছুই দিতে পারবে না। এসব ঋণ বিতরণের ক্যাপাসিটি তাদের নেই। এদের নামমাত্রই ব্যাংক বলা হয়। তবে ব্যাংকের কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে তারা পারে না। সরকার এসব ব্যাংকে টাকা না দিয়ে অন্য ব্যাংকে দিতে পারত। কারণ তারা যে কাজ করতে পারবে না, সে কাজের জন্য সরকার তাদের নির্বাচন করেছে। হ্যাঁ, কিছু ঋণ তো তারা দিবেই। তবে তাদের দিবে যারা ঘুষ দিতে পারবে। আর যারা ঘুষ নিয়ে ঋণ নিবে, তারা সেই ঋণ ফেরত দিবে না। এসব ব্যাংকের কোন যোগ্যতা নেই ঋণ পরিচালনা করা, কাস্টমারের ডাটাবেজ তৈরি করা, কাস্টমারকে চেনা, তাদের সঙ্গে রিলেশান তৈরি করা। তবে সরকার সৎ উদ্দেশ্যে তাদের দিয়ে কাজ উদ্ধার করতে চাচ্ছে। কিন্তু সেটা হবে না। তারা সেটা করবে না।’

গত ১৪ এপ্রিল প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা প্রবাসী রয়েছেন, তারাই আমাদের রেমিট্যান্স পাঠান। তাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নামে আরেকটি ব্যাংক আমি প্রতিষ্ঠা করি। এই ব্যাংকে এর আগে ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। আরও অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকা দেব। আমরা জানি, এখন প্রবাসে কাজের পরিধিটা সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। সেখানে বহু মানুষ কাজ হারাচ্ছেন। অনেকেই দেশে ফিরে আসছেন। তারা আমার দেশের নাগরিক। তারা কোথাও কষ্ট করুক তা আমরা চাই না। তারা ফিরে আসতে চাইলে ফিরে আসুক। কিন্তু এখানে এসে তারা যেন কিছু কাজ করে খেতে পারেন।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক : প্রধানন্ত্রীর এই ঘোষণার পর প্রায় চার মাস পা হলেও এখনও ঋণ বিতরণ হয়নি। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব জাবিন সংবাদকে বলেন, ‘প্যাকেজের পুরোটা আমরা পায়নি। ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রবাসীরা দেশে ছিলেন না। তাই ব্যাংকে ঋণ নেয়ার প্রসেস সম্পর্কে অনেকেই জানে না। আমরা প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার প্রবাসীকে নিয়ে কাউন্সিলিং করেছি। কিভাবে ঋণ নিতে হবে, কোন কোন খাতে ঋণ পাবেন এই কাউন্সিলিংয়ে সে বিষয়ে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন প্রবাসী ঋণের জন্য আবেদন করেছেন। তার মধ্যে ১৫ থেকে ২০টা আবেদন নিয়ে কাজ শুরু করেছি। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো ছাড় করতে পারব।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতা লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি হাজারও প্রবাসী জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে তারা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার কথা বললেও, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্মকর্তারা আমাদের ওপর কঠিন শর্ত আরোপ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বেকার অবস্থায় দেশে থাকার কারণে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে, খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তাই আমরা সরকারের কাছে কিছু দাবি উপস্থাপন করছি। সহজ শর্তে ঋণ দেয়া এবং প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের শর্তে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। আবেদনকারীর পাসপোর্টের (পাসপোর্টের বহির্গমন ও আগমনী সিলযুক্ত পাতাসহ) সত্যায়িত ফটোকপির সঙ্গে বিএমইটি’র স্মার্ট কার্ড বা চাকরিরত দেশের আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি বা বৈধ পথে বিদেশ গমনের প্রমাণপত্র বা বিদেশে চাকরির চুক্তিপত্র বা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে জমা দিতে হবে ‘ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মী’ এই মর্মে সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের প্রত্যয়নপত্র। ঋণ আবেদনকারীকে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ‘ঋণখেলাপি নন বলে’ হলফনামা দাখিল করতে হবে। তবে অন্যকোন সংস্থা, ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে ঋণখেলাপি ব্যক্তি এই ঋণ পাবেন না। সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে ‘সহজামানত’ রাখতে হবে না। তবে এর ঊর্ধ্বে হলে দেড়গুণ সমপরিমাণ সহজামানত জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর বৈধ ব্যবসা বা প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে শুরু করার পর আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর জামানতের জন্য গ্যারান্টিকৃত সম্পত্তি নিজ নামে বা পিতার নামে থাকতে হবে। ঋণ পরিশোধে সক্ষম ন্যূনতম একজনকে গ্যারান্টার হিসেবে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর পিতা, মাতা, স্বামী বা স্ত্রী, ভাই, বোন বা নিকটতম আত্মীয়-স্বজনের বাইরে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ‘সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিকেও’ গ্যারান্টার হিসেবে রাখা হবে। এসব জটিল শর্তের কারণে অনেকে ঋণ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবি মির্জা মো. আজিজুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘এখানে সমস্যা দুই দিক থেকেই আছে। যেমন, যেসব ব্যাংক ঋণ দিবে তারাও এতোটা সক্ষম না। তারা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে ঋণ দিবে এমন মেন্টালিটিও তাদের নেই। আর যেসব গ্রাহক ঋণ নিবে তারাও ব্যাংকিং নিয়ম সম্পর্কে সচেতন না। এই দুই কারণে এসব ঋণগুলো বিতরণে এতো ধীরগতি। শুধু এটাই না, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণও এখন পর্যন্ত খুবই কম পরিমাণে ছাড় হয়েছে।’

কর্মসংস্থান ব্যাংক : কর্মসংস্থান ব্যাংকের প্রতিও তাগিদ দিয়ে প্রণোদনা ঘোষণার দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যুবক শ্রেণীকে যেন বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে না হয়, সেজন্য একটা বিশেষ ব্যাংক করে দিয়েছিলাম, কর্মসংস্থান ব্যাংক। একজন যুবক তিনি শিক্ষিত হোন আর অশিক্ষিত হোন বেকার হলেই জামানত ছাড়াই স্বল্পসুদে ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন এ ব্যাংক থেকে। এ ব্যাংকের ঋণ আরও বৃদ্ধি করার জন্য সরকার বিশেষ আমানত দিচ্ছে।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কোন ঋণ বিতরণ হয়নি এই ব্যাংকের।

এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মসংস্থান ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘প্রণোদনার ৫০০ কোটি টাকা পাওয়া কথা ছিল। প্রথমবার আমরা ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছি। সরকারের অনুমোদিত সবগুলো খাতে আমরা অর্থায়ন করছি। এগুলোর মধ্যে বেশি যেসব খাতে ঋণ দেই সেগুলো হলোÑ গরু মোটাতাজা করণ, দুগ্ধখামার, মৎস চাষ, নার্সারি, পোল্ট্রি। অর্থাৎ গ্রামের বেকার যুবকরা যেসব কাজগুলোতে সংশ্লিষ্ট হয় এবং যেসব খাতে সরকারি নিষেধজ্ঞা নেই সেসব খাতে আমরা অর্থায়ন করি। আমরা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ দেই। তবে ঋণ নিতে হলে একজন গ্যারান্টার লাগবেই। আমরা একজন নরমাল গ্যারান্টার রাখি ঋণের জন্য। সেই ব্যক্তি যেন সেই ঋণটি পরিশোধ করতে সমর্থ হয়।’ তবে এখন পর্যন্ত কয়জন বেকারকে বা কত টাকা ঋণ ছাড় হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা মাত্রই কাজ শুরু করেছি। এই বিষয়ে কোন তথ্য এখন আমাদের নেই।’

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক : প্রণোদণা ঘোষণার দিন প্রধামন্ত্রী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কথাও উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য আমরা ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সেখানেও আমরা একটা ব্যাংক তৈরি করে দিয়েছি। এটা (কার্যক্রম) প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে। আর ভবিষ্যতে যেন এটা প্রকল্পে না চলে। তারা এখানে সমিতি বা সমবায় করবে আর নিজের ব্যবসা নিজে চালাতে পারবে। প্রকল্প থেকে তারা ধীরে ধীরে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। তাদের সঞ্চয় ব্যাংকে থাকবে। ব্যাংকের মালিক তারা। তারা এখান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে। সে কথা চিন্তা করেই আমরা এ ব্যাংকটা করেছি।’

তবে চার মাস পেরিয়ে গেলেও এই ব্যাংকও কোন ঋণ বিতরণ করতে পরেনি। এই ব্যাংকের ঋণ বিতরণের তথ্য নেই বলে জানান কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ১৫ সেপ্টম্বর সংবাদকে বলেন, ‘গত এক মাস আগে আমরা ২৫০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছি। তারপর সেই ঋণের প্রডাক্ট তৈরি করে এক সপ্তাহ হলো বিভিন্ন শাখায় পাঠিয়েছি। এখনও ঋণ বিতরণ শুরু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে বলতে পারব না। হয়তো এক সপ্তাহ পর আমাদের কাছে প্রতিবেদন আসবে তখন বলতে পারবো।’

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) : এভাবে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনকেও ৫০০ কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান কোন ঋণ গ্রাহকের কাছে বিরতণ করতে পারেনি বলে জানা যায়। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিকেএসএফ-এর একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, ‘আমরা গত এক মাস আগে ২৫০ কোটি টাকা পেয়েছি। সেই টাকা দিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। তবে কত টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে এমন কোন প্রতিবেদন এখনও আমাদের কাছে আসেনি। আমরা কাজ শুরু করেছি মাত্র।’

এ প্রসঙ্গে জানতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি না থাকায় এই বিষয়ে তিনি কথা বলতে পারবেন না বলে সংবাদকে জানান।