যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রতিবেদন

হেরে গেলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার ট্রাম্পের

প্রসিডেন্ট ট্রাম্প আসন্ন নির্বাচনে হেরে গেলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন নির্বাচনের ফলাফল সুপ্রিম কোর্টে শেষ হতে পারে, কেননা তিনি ফের পোস্ট ভোটের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কোনভাবে নভেম্বরের নির্বচনী ফলাফলকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বলে রিপোর্ট করেছে দ্যা আটলান্টিক।

সংবাদ মাধ্যমটির রিপোর্ট অনুসারে এমন একটি পরিস্থিতির কথা বলা হচ্ছে, যেখানে ট্রাম্প যদি ২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে যান তিনি এটা অস্বীকার করবেন। যদিও নির্বাচকমণ্ডলী জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নিয়োজিত হন। রিপাবলিকান পার্টির সূত্র মোতাবেক বলা হচ্ছে তারা এমন একটি পথ খুজছেন যে বিষয়ে সংবিধানে কিছু বলা নেই। দ্যা আটলান্টিক এর সংবাদ সূত্র বলছে ট্রাম্প চাচ্ছেন এমন একটি পরিকল্পনা করতে চান যার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফলকে উপেক্ষা করা (এড়িয়ে যাওয়া) যায়। তিনি তার অনুগত নির্বাচকমণ্ডলীকে নিয়োগ দিতে চান ওই সব নির্বাচনী এলাকাগুলোতে যেখানে রিপাবলিকান দল আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ট। এটি মূলত বিদ্যমান আইনসভার ক্ষমতা বলে করা হবে। এর মাধ্যমে জনগণ যেসব নির্বাচকমণ্ডলীকে নির্বাচিত করবে তারা ট্রাম্পকেই নির্বাচিত করবে। ইতোমধ্যে ৫৩৮ জন নির্বাচকমণ্ডলীর নিয়োগের সময়ও এগিয়ে এসেছে।

ট্রাম্পের এমন মনোভাবই প্রকাশ করেন, গতকাল প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকানদের কোভিড-১৯ সুরক্ষা প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে অনেক রাজ্য মেল-ইন ভোটকে উৎসাহ দিচ্ছে। রিপাবলিকান এ পদপ্রার্থী বলেন, ব্যালট নিয়ে খুব জোরালোভাবে অভিযোগ করছি আমি, ব্যালটগুলো একটি বিপর্যয়। সাংবাদিকদের মন্তব্য করেছিলেন- ‘লোকেরা দাঙ্গা করছে’, মি. ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করে বলেন, ‘ব্যালট থেকে মুক্তি দিন এবং আপনাদের খুব শান্তির ব্যবস্থা হবে, তখন সেখানেও ক্ষমতা স্থানান্তর হবে না। একটি ধারাবাহিকতা থাকতে হবে।’ তিনি জনপ্রিয় ত্রিশ লাখ ভোটে হেরেছিলেন, এমন এক ফলাফল বিপর্যয়ে তিনি এখনও প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে। রিপাবলিকান সিনেটর মিট রমনি, যিনি মাঝে মধ্যে রাষ্ট্রপতির সমালোচনা করার কারণে তার দলে বিরলতা সৃষ্টি করেছেন, তিনি বুধবার টুইট বার্তায় জানান ‘গণতন্ত্রের মৌলিক ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ রূপান্তরে কোন রাষ্ট্রপতি যে এই সংবিধানিক গ্যারান্টিটিকে সম্মান করবেন না এমন কোন পরামর্শই অভাবনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য।

অন্যদিকে ডেলাওয়ারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন বলেন, ক্ষমতার উত্তরণ সম্পর্কে মি. ট্রাম্পের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’ ছিল। ডেমোক্র্যাট দল আরও জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার হোয়াইট হাউজ থেকে অন্যায়কারীদের বের করে দেয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি সক্ষম।’ বাইডেন নিজেই রক্ষণশীলদের দ্বারা আগস্টে নির্বাচন নিয়ে অশান্তি পোষণ করার অভিযোগ করেন। গত মাসে, মিসেস ক্লিনটন নির্বাচনের রাতে নিকট দৌড়ে কোন পরিস্থিতিতে পরাজয় স্বীকার না করার জন্য এ মুহূর্তে মি. বাইডেনকে অনুরোধ জানান। রিপাবলিকানরা অনুপস্থিত ভোটারদের জড়িত করার চেষ্টা করবে এবং ফলাফলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আইনজীবীদের একটি বাহিনীকে জড়িত করবে। ভাইরাস নিয়ে জনস্বাস্থ্যের উদ্বেগের কারণে এবার ডাক ভোটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের কমিশনার এলেন ওয়েইনট্রাব বলেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কোনও ভিত্তি নেই যে মেইলে ভোট দেয়ার ফলে জালিয়াতি হয়। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির রাজনৈতিক বিজ্ঞানী চার্লস স্টুয়ার্টের গবেষণা অনুসারে ডাক ব্যালটগুলো নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইম।

নির্বাচনী কর্মকর্তারা ও বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের অভিযোগ খারিজ করে বলছেন এ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি বা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন প্রায় সম্ভব নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও এ প্রক্রিয়া নিয়মিত ব্যবহার করেছেন। সর্বশেষ জনমত জরিপে জানানো হয়েছে, জাতীয়ভাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন এখনও বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় এগিয়ে রয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতেও দুই প্রার্থীর অবস্থান খুব কাছাকাছি। ফলে এবারের নির্বাচনের ফলাফলে চলবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তুমুল পর্যায়ের, ডাকে ভোটও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে লুইভিলে বিক্ষোভ

২ পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ

এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে ৬ মাস আগে পরিচালিত অভিযানে কৃষ্ণাঙ্গ নারী ব্রেওনা টেইলরের মৃত্যুর ঘটনায় কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ না আনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ‘কেনটাকির লুইভিল। বুধবার রাতে শহরটির বিভিন্ন অংশে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর প্রতিবাদের মধ্যেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দুই কর্মকর্তার অবস্থাই আশঙ্কামুক্ত; এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লুইভিলের পুলিশপ্রধান রবার্ট শ্রোয়েডার।

ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে পুলিশ সদস্যদের অভিযুক্ত করা হবে কিনা, এ বিষয়ক সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই শহরটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার সেখানে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছেÑ সহিংসতার জবাব কখনোই সহিংসতা হতে পারে না। আমরা এখন ওই দুই কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কথা ভাবছি। আমি সবার প্রতি অনুরোধ করছিÑ দয়া করে বাড়ি ফিরে যান, বলে জানিয়েছেন কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি। বুধবার ২৬ বছর বয়সী ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে শুধু এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সামান্য অপরাধের অভিযোগ আনার পর লুইভিলের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন বলে জানায় গণমাধ্যম। কোথাও কোথাও তারা পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন।

ব্রেওনার আত্মীয়স্বজন এবং পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা মার্চে ব্রেওনার ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার দাবি জানিয়েছিলেন গত বুধবার।

বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ পর্যালোচনার পর গ্র্যান্ড জুরি অ্যানি ও’কনেল শুধু ব্রেট হ্যানকিনসনের বিরুদ্ধে হালকা অপরাধের অভিযোগ এনেছেন, বাকি দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই আনা হয়নি। এফবিআই খতিয়ে দেখছে এবং গ্র্যান্ড জুরি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সিদ্ধান্তের আগেই কর্মকর্তারা চলতি মাসে ব্রেওনার পরিবারকে এক কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার একটি সমঝোতায় সম্মত হয়েছিলেন।

গ্র্যান্ড জুরির এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প কেনটাকির রিপাবলিকান অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশংসা করেন। কেনটাকির ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ডি অনুরোধ জানিয়েছে বেশিরভাগ বিক্ষোভকারীদের বাড়ি ফিরে যেতে।

তথ্যমতে লুইভিলে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছেন ট্রাম্প।

সংবাদ মাধ্যমকে কেনটাকির গভর্নর জানায়- ‘আমার মনে হয়, যত বেশি তথ্য প্রকাশিত হবে জনগণ তত সচেতন হবে ও ব্যাপারটা অনুধাবন করবে, এটি করা দরকার।’ মেয়র গ্রেগ ফিশার রাত ৯টা থেকে পরদিন ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছেন। ৩ নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যস্ততার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে লুইভিলে বিক্ষোভে ক্ষিপ্ত জনগণকে নিয়ন্ত্রণে আনার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের পছন্দের নারী বিচারক নিয়োগ দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন গতকাল

ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে জনগণের মনে ক্ষোভ থাকা তিনি নির্বাচনী অস্থিরতায় তুমুল ব্যস্ত

ব্যালট পদ্ধতির ভোটকে ট্রাম্প বারংবার বন্ধ করে মেইলে ভোট শুরুর প্রচলন করতে চাচ্ছে

image
আরও খবর
বিতরণ হলো না ৪ মাসেও
রাজশাহীর একমাত্র করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল বন্ধ
দেশে করোনায় একদিনে মৃত্যু ২৮ শনাক্ত ১৫৪০
ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করতে মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
যেভাবে কাটার রাসেলের উত্থান
ওয়াসার এমডির নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট
অনুমোদনের দু’বছর পরও কাজ শুরু হয়নি
পাপিয়া দম্পতির যাবজ্জীবন চায় রাষ্ট্রপক্ষ
৩৪ ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি
ড্রাইভার মালেক বিদেশেও বিপুল অর্থ পাচার করেছে
মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৬ মহররম ১৪৪২, ০৭ আশ্বিন ১৪২৭

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রতিবেদন

হেরে গেলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার ট্রাম্পের

সংবাদ ডেস্ক |

image

প্রসিডেন্ট ট্রাম্প আসন্ন নির্বাচনে হেরে গেলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন নির্বাচনের ফলাফল সুপ্রিম কোর্টে শেষ হতে পারে, কেননা তিনি ফের পোস্ট ভোটের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কোনভাবে নভেম্বরের নির্বচনী ফলাফলকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বলে রিপোর্ট করেছে দ্যা আটলান্টিক।

সংবাদ মাধ্যমটির রিপোর্ট অনুসারে এমন একটি পরিস্থিতির কথা বলা হচ্ছে, যেখানে ট্রাম্প যদি ২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে যান তিনি এটা অস্বীকার করবেন। যদিও নির্বাচকমণ্ডলী জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নিয়োজিত হন। রিপাবলিকান পার্টির সূত্র মোতাবেক বলা হচ্ছে তারা এমন একটি পথ খুজছেন যে বিষয়ে সংবিধানে কিছু বলা নেই। দ্যা আটলান্টিক এর সংবাদ সূত্র বলছে ট্রাম্প চাচ্ছেন এমন একটি পরিকল্পনা করতে চান যার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফলকে উপেক্ষা করা (এড়িয়ে যাওয়া) যায়। তিনি তার অনুগত নির্বাচকমণ্ডলীকে নিয়োগ দিতে চান ওই সব নির্বাচনী এলাকাগুলোতে যেখানে রিপাবলিকান দল আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ট। এটি মূলত বিদ্যমান আইনসভার ক্ষমতা বলে করা হবে। এর মাধ্যমে জনগণ যেসব নির্বাচকমণ্ডলীকে নির্বাচিত করবে তারা ট্রাম্পকেই নির্বাচিত করবে। ইতোমধ্যে ৫৩৮ জন নির্বাচকমণ্ডলীর নিয়োগের সময়ও এগিয়ে এসেছে।

ট্রাম্পের এমন মনোভাবই প্রকাশ করেন, গতকাল প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকানদের কোভিড-১৯ সুরক্ষা প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে অনেক রাজ্য মেল-ইন ভোটকে উৎসাহ দিচ্ছে। রিপাবলিকান এ পদপ্রার্থী বলেন, ব্যালট নিয়ে খুব জোরালোভাবে অভিযোগ করছি আমি, ব্যালটগুলো একটি বিপর্যয়। সাংবাদিকদের মন্তব্য করেছিলেন- ‘লোকেরা দাঙ্গা করছে’, মি. ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করে বলেন, ‘ব্যালট থেকে মুক্তি দিন এবং আপনাদের খুব শান্তির ব্যবস্থা হবে, তখন সেখানেও ক্ষমতা স্থানান্তর হবে না। একটি ধারাবাহিকতা থাকতে হবে।’ তিনি জনপ্রিয় ত্রিশ লাখ ভোটে হেরেছিলেন, এমন এক ফলাফল বিপর্যয়ে তিনি এখনও প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে। রিপাবলিকান সিনেটর মিট রমনি, যিনি মাঝে মধ্যে রাষ্ট্রপতির সমালোচনা করার কারণে তার দলে বিরলতা সৃষ্টি করেছেন, তিনি বুধবার টুইট বার্তায় জানান ‘গণতন্ত্রের মৌলিক ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ রূপান্তরে কোন রাষ্ট্রপতি যে এই সংবিধানিক গ্যারান্টিটিকে সম্মান করবেন না এমন কোন পরামর্শই অভাবনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য।

অন্যদিকে ডেলাওয়ারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন বলেন, ক্ষমতার উত্তরণ সম্পর্কে মি. ট্রাম্পের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’ ছিল। ডেমোক্র্যাট দল আরও জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার হোয়াইট হাউজ থেকে অন্যায়কারীদের বের করে দেয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি সক্ষম।’ বাইডেন নিজেই রক্ষণশীলদের দ্বারা আগস্টে নির্বাচন নিয়ে অশান্তি পোষণ করার অভিযোগ করেন। গত মাসে, মিসেস ক্লিনটন নির্বাচনের রাতে নিকট দৌড়ে কোন পরিস্থিতিতে পরাজয় স্বীকার না করার জন্য এ মুহূর্তে মি. বাইডেনকে অনুরোধ জানান। রিপাবলিকানরা অনুপস্থিত ভোটারদের জড়িত করার চেষ্টা করবে এবং ফলাফলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আইনজীবীদের একটি বাহিনীকে জড়িত করবে। ভাইরাস নিয়ে জনস্বাস্থ্যের উদ্বেগের কারণে এবার ডাক ভোটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের কমিশনার এলেন ওয়েইনট্রাব বলেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কোনও ভিত্তি নেই যে মেইলে ভোট দেয়ার ফলে জালিয়াতি হয়। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির রাজনৈতিক বিজ্ঞানী চার্লস স্টুয়ার্টের গবেষণা অনুসারে ডাক ব্যালটগুলো নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইম।

নির্বাচনী কর্মকর্তারা ও বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের অভিযোগ খারিজ করে বলছেন এ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি বা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন প্রায় সম্ভব নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও এ প্রক্রিয়া নিয়মিত ব্যবহার করেছেন। সর্বশেষ জনমত জরিপে জানানো হয়েছে, জাতীয়ভাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন এখনও বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় এগিয়ে রয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতেও দুই প্রার্থীর অবস্থান খুব কাছাকাছি। ফলে এবারের নির্বাচনের ফলাফলে চলবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তুমুল পর্যায়ের, ডাকে ভোটও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে লুইভিলে বিক্ষোভ

২ পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ

এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে ৬ মাস আগে পরিচালিত অভিযানে কৃষ্ণাঙ্গ নারী ব্রেওনা টেইলরের মৃত্যুর ঘটনায় কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ না আনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ‘কেনটাকির লুইভিল। বুধবার রাতে শহরটির বিভিন্ন অংশে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর প্রতিবাদের মধ্যেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দুই কর্মকর্তার অবস্থাই আশঙ্কামুক্ত; এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লুইভিলের পুলিশপ্রধান রবার্ট শ্রোয়েডার।

ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে পুলিশ সদস্যদের অভিযুক্ত করা হবে কিনা, এ বিষয়ক সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই শহরটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার সেখানে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছেÑ সহিংসতার জবাব কখনোই সহিংসতা হতে পারে না। আমরা এখন ওই দুই কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কথা ভাবছি। আমি সবার প্রতি অনুরোধ করছিÑ দয়া করে বাড়ি ফিরে যান, বলে জানিয়েছেন কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি। বুধবার ২৬ বছর বয়সী ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে শুধু এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সামান্য অপরাধের অভিযোগ আনার পর লুইভিলের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন বলে জানায় গণমাধ্যম। কোথাও কোথাও তারা পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন।

ব্রেওনার আত্মীয়স্বজন এবং পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা মার্চে ব্রেওনার ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার দাবি জানিয়েছিলেন গত বুধবার।

বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ পর্যালোচনার পর গ্র্যান্ড জুরি অ্যানি ও’কনেল শুধু ব্রেট হ্যানকিনসনের বিরুদ্ধে হালকা অপরাধের অভিযোগ এনেছেন, বাকি দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই আনা হয়নি। এফবিআই খতিয়ে দেখছে এবং গ্র্যান্ড জুরি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সিদ্ধান্তের আগেই কর্মকর্তারা চলতি মাসে ব্রেওনার পরিবারকে এক কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার একটি সমঝোতায় সম্মত হয়েছিলেন।

গ্র্যান্ড জুরির এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প কেনটাকির রিপাবলিকান অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশংসা করেন। কেনটাকির ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ডি অনুরোধ জানিয়েছে বেশিরভাগ বিক্ষোভকারীদের বাড়ি ফিরে যেতে।

তথ্যমতে লুইভিলে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছেন ট্রাম্প।

সংবাদ মাধ্যমকে কেনটাকির গভর্নর জানায়- ‘আমার মনে হয়, যত বেশি তথ্য প্রকাশিত হবে জনগণ তত সচেতন হবে ও ব্যাপারটা অনুধাবন করবে, এটি করা দরকার।’ মেয়র গ্রেগ ফিশার রাত ৯টা থেকে পরদিন ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছেন। ৩ নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যস্ততার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে লুইভিলে বিক্ষোভে ক্ষিপ্ত জনগণকে নিয়ন্ত্রণে আনার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের পছন্দের নারী বিচারক নিয়োগ দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন গতকাল

ব্রেওনা টেইলর হত্যাকাণ্ডে জনগণের মনে ক্ষোভ থাকা তিনি নির্বাচনী অস্থিরতায় তুমুল ব্যস্ত

ব্যালট পদ্ধতির ভোটকে ট্রাম্প বারংবার বন্ধ করে মেইলে ভোট শুরুর প্রচলন করতে চাচ্ছে