যেভাবে কাটার রাসেলের উত্থান

রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় বসবাসকারী কিশোর মাহবুবুল ইসলাম ওরফে রাসেল ওরফে কাটার রাসেল আলিয়া মাদ্রাসায় দাখিল পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এরপর উত্তরা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়। সে এখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্র অবস্থায় উত্তরা এলাকার কিশোর গ্যাং দি বস গ্রুপের সদস্য হয়। দি বস গ্রুপটি হৃদয় গ্যাং গ্রুপ হিসেবে উত্তরা এলাকায় বেশ পরিচিত। এ গ্রুপের মোট সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ১২ জন। উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি কিশোর গ্রুপ রয়েছে। এরমধ্যে দি বস গ্রুপের কাটার রাসেল এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক। তার অপরাধের প্রতিবাদ করলে বা স্বার্থ্যরে ব্যাঘাত ঘটলে মারপিট থেকে শুরু করে পায়ের রগ কাটা পর্যন্ত সবই করে। কিশোর বয়সেই কাটার রাসেল গত ২৭ আগস্ট একজনকে হত্যা করেছেন। অবশেষে একটি হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি হিসেবে কাটার রাসেল র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মাহবুবুল ইসলাম ওরফে কাটার রাসেল বলে, প্রথমে হৃদয় গ্যাং গ্রপের সঙ্গে তার পরিচয় এবং তাদের সঙ্গে উঠাবসার সুবাদে ছোটখাট ঝামেলা হলেই সে প্রতিপক্ষকে পায়ের রগ কাটার হুমকি দেয় বলে তার সমবয়সীরা সবাই তাকে কাটার রাসেল নামে ডাকতে শুরু করেছে। এখন সে এলাকায় কাটার রাসেল নামেই পরিচিত। ইতোমধ্যে তার হাতে অনেকেই নির্যাতন ও আহত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ আগস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরখান রাজাবাড়ি খ্রিস্টানপাড়া রোডের ডাক্তার বাড়ি মোড়ে কিশোর গ্যাং দি বসের হৃদয় ও রাসেলসহ বেশ কয়েকজন সদস্য আড্ডা দিচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটি রিকশার চাকা থেকে কাঁদা ছিটকে হৃদয়ের গায়ে লাগলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রিকশাচালককে মারধর করতে থাকে। রিকশাচালককে মারধর করতে দেখে কলেজ ছাত্র সোহাগ এগিয়ে যায়। তাদের থামাতে চেষ্টা করে। এতে হৃদয় ও রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ের তাদের গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের টেলিফোনে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সবাই মিলে কলেজ ছাত্র সোহাগের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে রাসেল ওরফে কাটা রাসেল সোহাগের পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এরপর সবাই পালিয়ে যায়। সোহাগ গুরুতর অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রিকশাচালক, রিকশার আরোহী ও আশপাশের লোকজন সোহাগকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতেই তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত কাটার রাসেলের আগেও একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের গ্রুপে ১০ থেকে ১২ সদস্য রয়েছে। তারমধ্যে রাসেল ও হৃদয় বেপরোয়া। তাদের ভয়ে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

দি বস গ্রুপের আরেক সদস্য হলো হৃদয়। সে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এখন উত্তরা এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করে। তার সঙ্গে এলাকার আরও উঠতি বয়সের কিশোরদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তারা একটি কিশোর গ্যাং প্রতিষ্ঠা করে। এ গ্রুপের সদস্য নাদিম, সানি, মেহেদী, সাদ সার্ব্বিরসহ অনেকেই রয়েছে।

গ্যাং দি বস গ্রুপ নিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, উঠতি বয়সের ছেলেদের মধ্যে ক্ষমতার বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং কালচার গড়ে উঠেছে। কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা এক গ্রুপের সঙ্গে অন্য গ্রুপের মারামারি করা। আর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করার জন্য উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দল বেধে ঘুরে বেড়ানো, শব্দ করে মোটরসাইকেল চালানো, পথচারীকে উত্ত্যক্ত করে। এছাড়াও ছোটখাট বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর ছড়াও হওয়া থেকে মারামারি করে তারা। নিজের গ্রুপের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য এলাকায় প্রায় কোন্দলে লিপ্ত হয়। আতঙ্কে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের এড়িয়ে চলে। এড়িয়ে চলাকে তারা ক্ষমতা হিসেবে ভাবে। আর ঘটনার কেউ প্রতিবাদ করলে মারপিট থেকে হত্যা করতেও তারা দ্বিধাবোধ করে না।

র‌্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, রাজধানীর উত্তরাসহ আশপাশ এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের ১০ থেকে ১১টি গ্রুপ আছে। প্রতিটি গ্রুপে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জন সদস্য রয়েছে। এসব গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

এ সম্পর্কে একজন মনোরোগ বিদ্যা বিশেষজ্ঞ বলেন, কিশোরদের মধ্যে নানা কারণে অপরাধ প্রবণতা দেখা দিতে পারে। এরমধ্যে কেউ বংশগতভাবে অপরাধী হতে পারে। আবার কেউ পরিবেশগতভাবে হতে পারে। আবার কেউ কৌতুহল বসত অপরাধে জড়াতে পারে। অনেকেই হিরোইজম বা কিশোর বয়সে প্রভাব তৈরি করতে কিশোর গ্যাং গ্রুপে জড়িয়ে পড়ে। আবার কেউ রোমান্টিসিজম বা কামনা থেকে কিশোর বয়সে প্রভাব বিস্তার করতে গ্যাং গ্রুপ তৈরি করে। কোন কোন কিশোর টিভি, কম্পিউটারে ছবি দেখে মনোভাবের পরিবর্তন ঘটনায়। এছাড়াও অনেক কিশোর নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিজের বিবেক লোপ পায়। আবার নেশাগ্রস্ত হলে তার চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতাসহ সবই খারাপ হতে থাকে। এর প্রভাবে সে অপরাধী হয়ে উঠে। এভাবে কিশোররা গ্যাং গ্রুপসহ অপরাধ প্রবণতায় আসক্ত হয়ে উঠে। এরজন্য অনেক সময় পরিবারে পিতামাতার বেশি রেস্টিকশান বা বিধিনিষেধ আরোপের কারণে সমস্যা হয় বলে মনোরোগ বিদ্যা বিশেষজ্ঞ মতামত ব্যক্ত করেন।

মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকতা বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর কিশোররা এখন অনলাইনে বা ফেসবুকে গ্রুপ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। কোন ঝামেলা হলে এক গ্যাং আরেক গ্যাং এর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে। এভাবে এ চক্র প্রথমে উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানা এলাকায় গ্যাং তৈরি করছে। এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং রয়েছে। তারা পাড়া মহল্লায় আড্ডা দেয় এবং আধিপত্য বিস্তারে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

আরও খবর
বিতরণ হলো না ৪ মাসেও
রাজশাহীর একমাত্র করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল বন্ধ
হেরে গেলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার ট্রাম্পের
দেশে করোনায় একদিনে মৃত্যু ২৮ শনাক্ত ১৫৪০
ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করতে মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
ওয়াসার এমডির নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট
অনুমোদনের দু’বছর পরও কাজ শুরু হয়নি
পাপিয়া দম্পতির যাবজ্জীবন চায় রাষ্ট্রপক্ষ
৩৪ ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি
ড্রাইভার মালেক বিদেশেও বিপুল অর্থ পাচার করেছে
মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৬ মহররম ১৪৪২, ০৭ আশ্বিন ১৪২৭

কিশোর গ্যাংক ‘দি বস’

যেভাবে কাটার রাসেলের উত্থান

বাকী বিল্লাহ

রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় বসবাসকারী কিশোর মাহবুবুল ইসলাম ওরফে রাসেল ওরফে কাটার রাসেল আলিয়া মাদ্রাসায় দাখিল পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এরপর উত্তরা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়। সে এখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্র অবস্থায় উত্তরা এলাকার কিশোর গ্যাং দি বস গ্রুপের সদস্য হয়। দি বস গ্রুপটি হৃদয় গ্যাং গ্রুপ হিসেবে উত্তরা এলাকায় বেশ পরিচিত। এ গ্রুপের মোট সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ১২ জন। উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি কিশোর গ্রুপ রয়েছে। এরমধ্যে দি বস গ্রুপের কাটার রাসেল এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক। তার অপরাধের প্রতিবাদ করলে বা স্বার্থ্যরে ব্যাঘাত ঘটলে মারপিট থেকে শুরু করে পায়ের রগ কাটা পর্যন্ত সবই করে। কিশোর বয়সেই কাটার রাসেল গত ২৭ আগস্ট একজনকে হত্যা করেছেন। অবশেষে একটি হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি হিসেবে কাটার রাসেল র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মাহবুবুল ইসলাম ওরফে কাটার রাসেল বলে, প্রথমে হৃদয় গ্যাং গ্রপের সঙ্গে তার পরিচয় এবং তাদের সঙ্গে উঠাবসার সুবাদে ছোটখাট ঝামেলা হলেই সে প্রতিপক্ষকে পায়ের রগ কাটার হুমকি দেয় বলে তার সমবয়সীরা সবাই তাকে কাটার রাসেল নামে ডাকতে শুরু করেছে। এখন সে এলাকায় কাটার রাসেল নামেই পরিচিত। ইতোমধ্যে তার হাতে অনেকেই নির্যাতন ও আহত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ আগস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরখান রাজাবাড়ি খ্রিস্টানপাড়া রোডের ডাক্তার বাড়ি মোড়ে কিশোর গ্যাং দি বসের হৃদয় ও রাসেলসহ বেশ কয়েকজন সদস্য আড্ডা দিচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটি রিকশার চাকা থেকে কাঁদা ছিটকে হৃদয়ের গায়ে লাগলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রিকশাচালককে মারধর করতে থাকে। রিকশাচালককে মারধর করতে দেখে কলেজ ছাত্র সোহাগ এগিয়ে যায়। তাদের থামাতে চেষ্টা করে। এতে হৃদয় ও রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ের তাদের গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের টেলিফোনে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সবাই মিলে কলেজ ছাত্র সোহাগের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে রাসেল ওরফে কাটা রাসেল সোহাগের পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এরপর সবাই পালিয়ে যায়। সোহাগ গুরুতর অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রিকশাচালক, রিকশার আরোহী ও আশপাশের লোকজন সোহাগকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতেই তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত কাটার রাসেলের আগেও একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের গ্রুপে ১০ থেকে ১২ সদস্য রয়েছে। তারমধ্যে রাসেল ও হৃদয় বেপরোয়া। তাদের ভয়ে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

দি বস গ্রুপের আরেক সদস্য হলো হৃদয়। সে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এখন উত্তরা এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করে। তার সঙ্গে এলাকার আরও উঠতি বয়সের কিশোরদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তারা একটি কিশোর গ্যাং প্রতিষ্ঠা করে। এ গ্রুপের সদস্য নাদিম, সানি, মেহেদী, সাদ সার্ব্বিরসহ অনেকেই রয়েছে।

গ্যাং দি বস গ্রুপ নিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, উঠতি বয়সের ছেলেদের মধ্যে ক্ষমতার বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং কালচার গড়ে উঠেছে। কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা এক গ্রুপের সঙ্গে অন্য গ্রুপের মারামারি করা। আর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করার জন্য উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দল বেধে ঘুরে বেড়ানো, শব্দ করে মোটরসাইকেল চালানো, পথচারীকে উত্ত্যক্ত করে। এছাড়াও ছোটখাট বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর ছড়াও হওয়া থেকে মারামারি করে তারা। নিজের গ্রুপের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য এলাকায় প্রায় কোন্দলে লিপ্ত হয়। আতঙ্কে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের এড়িয়ে চলে। এড়িয়ে চলাকে তারা ক্ষমতা হিসেবে ভাবে। আর ঘটনার কেউ প্রতিবাদ করলে মারপিট থেকে হত্যা করতেও তারা দ্বিধাবোধ করে না।

র‌্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, রাজধানীর উত্তরাসহ আশপাশ এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের ১০ থেকে ১১টি গ্রুপ আছে। প্রতিটি গ্রুপে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জন সদস্য রয়েছে। এসব গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

এ সম্পর্কে একজন মনোরোগ বিদ্যা বিশেষজ্ঞ বলেন, কিশোরদের মধ্যে নানা কারণে অপরাধ প্রবণতা দেখা দিতে পারে। এরমধ্যে কেউ বংশগতভাবে অপরাধী হতে পারে। আবার কেউ পরিবেশগতভাবে হতে পারে। আবার কেউ কৌতুহল বসত অপরাধে জড়াতে পারে। অনেকেই হিরোইজম বা কিশোর বয়সে প্রভাব তৈরি করতে কিশোর গ্যাং গ্রুপে জড়িয়ে পড়ে। আবার কেউ রোমান্টিসিজম বা কামনা থেকে কিশোর বয়সে প্রভাব বিস্তার করতে গ্যাং গ্রুপ তৈরি করে। কোন কোন কিশোর টিভি, কম্পিউটারে ছবি দেখে মনোভাবের পরিবর্তন ঘটনায়। এছাড়াও অনেক কিশোর নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিজের বিবেক লোপ পায়। আবার নেশাগ্রস্ত হলে তার চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতাসহ সবই খারাপ হতে থাকে। এর প্রভাবে সে অপরাধী হয়ে উঠে। এভাবে কিশোররা গ্যাং গ্রুপসহ অপরাধ প্রবণতায় আসক্ত হয়ে উঠে। এরজন্য অনেক সময় পরিবারে পিতামাতার বেশি রেস্টিকশান বা বিধিনিষেধ আরোপের কারণে সমস্যা হয় বলে মনোরোগ বিদ্যা বিশেষজ্ঞ মতামত ব্যক্ত করেন।

মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকতা বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর কিশোররা এখন অনলাইনে বা ফেসবুকে গ্রুপ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। কোন ঝামেলা হলে এক গ্যাং আরেক গ্যাং এর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে। এভাবে এ চক্র প্রথমে উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানা এলাকায় গ্যাং তৈরি করছে। এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং রয়েছে। তারা পাড়া মহল্লায় আড্ডা দেয় এবং আধিপত্য বিস্তারে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।