অনুমোদনের দু’বছর পরও কাজ শুরু হয়নি

অর্থ ছাড়ের জটিলতায় বাড়ছে ব্যয় ও সময় 

অনুমোদনের পর প্রায় দুই বছর অতিক্রম হলেও আলোর মুখ দেখেনি খুলনা-দর্শনা ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। ভারতের দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি)’র অধীনে খুলনা-দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইন নির্মাণে প্রকল্প নেয়া হয় ২০১৮ সালে। ওই বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়। ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৫০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারত ঋণ সহায়তা দিবে ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বাকি ৮১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব ফান্ড থেকে ব্যয় হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ বছর। ২ বছর অতিক্রম হলেও প্রকল্পের কাজ শুরু তো দূরের কথা এখন পর্যন্ত সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু করা হয়নি। ভারতের দ্বিতীয় এলওসি’র কিছু কঠিন শর্ত থাকায় প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে সময় বেশি গেছে। তাই বরাদ্দকৃত এডিপি’র বিপরীত অর্থ অবমুক্ত না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা ও সমস্যার সম্মুখীন হবে। প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বেড়ে যেতে পারে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাতাহ মাসুদুর রহমান সংবাদকে বলেন, ভারতের দ্বিতীয় এলওসি’র কিছু কঠিন শর্ত থাকায় প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে সময় বেশি গেছে। এছাড়া পরামর্শ নিয়োগসহ প্রকল্পের আনুসাঙ্গিক কাজের জন্য ভারতের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেজন্য আমাদের দুই দেশের মধ্যে বেশকিছু চিঠি চালাচালি করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক সময় চলে গেছে। এখন এটা পর্যায় চলে এসেছি। আশা করা যায়, আগামী বছর পরামর্শ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু করা যাবে। এরপর জমি অধিগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগে কিছু সময় যাবে।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত ৪১৩ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে মাত্র ১১০ কিলোমিটার ডাবল লাইন রয়েছে। বাকি ৩০৩ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন। এই ৩০৩ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার এবং ঈশ্বরদী থেকে টঙ্গী ১৭৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে খুলনা-দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইন নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে সিঙ্গেল লাইনের কারণে অপর প্রান্ত থেকে আসা ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্টেশনের অতিরিক্ত কয়েকটি অনির্ধারিত স্থানে ট্রেনের যাত্রাবিরতি করতে হয়। এতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। বর্তমানে ট্রেনে খুলনা থেকে ঢাকা যেতে প্রায় ১১ ঘণ্টা সময় লাগে। ডাবল লাইন হলে সময় দুই-তিন ঘণ্টা কম লাগবে। লাইনের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ট্রেন পরিচালনা আরও উন্নত হবে। স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ট্রেন পরিচালনা করা যাবে। পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য জ্বালানি তেল পরিবহন এবং দ্রুত ও নিরাপদ রেল সেবা নিশ্চিতকরণ করা যাবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব বৃদ্ধি হবে। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জরুরিভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য হরিয়ান, ভেড়ামাড়া, সান্তাহার, বঙ্গবন্ধু ব্রিজ ওয়েস্ট, আমনুরা, ফরিদপুর, ঠাকুরগাঁও ও রংপুরে তেলভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ রেললাইনটি নির্মাণ হলে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে এবং সেচসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্রুত ও সহজে তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ডাবল রেললাইন নির্মাণ না করা পর্যন্ত আমাদের ট্রেনের যে স্বাভাবিক পরিবহন তা পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সব লাইনই ডাবল। খুলনা থেকে দর্শনা পর্যন্ত ডাবল রেললাইন নির্মাণে মন্ত্রণালয় আন্তরিক। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকার সঙ্গে খুলনার রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খুলনা-দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ সেকশনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ১৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার লুপ নতুন ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। একটি মেজর ও ৯টি মাইনর ব্রিজ, ১৪৩টি আরসিসি বক্স কালভার্ট, সাতটি স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ৯টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন, ২৫টি প্লাটফর্ম, বিদ্যমান ১২টি স্টেশনের প্লাটফর্ম পুনর্বাসন, ১৭টি ফুট ওভারব্রিজ এবং ১৮টি রেলওয়ে স্টেশনে সিবিআই ইন্টারলকিং সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। প্রকল্প অনুমোদনের পর ২০১৮ সালের ১০ মার্চ প্রথমবার পরামর্শ নিয়োগের জন্য ইওআই নোটিস প্রকাশ করা হয়। যা ওই বছর ২৬ জুলাই উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান যোগ্য হওয়ায় ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট তা বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতিতে ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর দ্বিতীয়বার ইওআই নোটিস প্রকাশ করা হয়। যা ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর ৩টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতির জন্য প্রেরণ করা হয়। কিন্তু এক্সিম ব্যাংক তা সম্মতি না দিয়ে পুনরায় ইওআই নোটিশ করতে বলে। এরপর ২০১৯ সালের ২৩ মে খসড়া ইওআই নোটিশ ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতির জন্য প্রেরণ করা হয়। বিভিন্ন দফায় আলোচনা ও পত্র যোগাযোগের পর ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক ইওআই নোটিস সম্মতি দেয়া হয়। পরে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি পুনরায় ইওআই নোটিস প্রকাশিত হয়। যা গত ৮ মার্চ উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর ৫টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকে পাঠানো হলে গত ৩১ আগস্ট তা সম্মতি পাওয়া যায়। এরপর পরামর্শ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করা যায় আগামী বছরের মধ্যে পরামর্শ নিয়োগ ও ফিজিবিলিটি স্টাডি কাজ শেষ করা হবে।

আরও খবর
বিতরণ হলো না ৪ মাসেও
রাজশাহীর একমাত্র করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল বন্ধ
হেরে গেলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার ট্রাম্পের
দেশে করোনায় একদিনে মৃত্যু ২৮ শনাক্ত ১৫৪০
ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করতে মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
যেভাবে কাটার রাসেলের উত্থান
ওয়াসার এমডির নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট
পাপিয়া দম্পতির যাবজ্জীবন চায় রাষ্ট্রপক্ষ
৩৪ ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি
ড্রাইভার মালেক বিদেশেও বিপুল অর্থ পাচার করেছে
মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৬ মহররম ১৪৪২, ০৭ আশ্বিন ১৪২৭

খুলনা-দর্শনা ডাবল রেলপথ নির্মাণ

অনুমোদনের দু’বছর পরও কাজ শুরু হয়নি

অর্থ ছাড়ের জটিলতায় বাড়ছে ব্যয় ও সময় 

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

অনুমোদনের পর প্রায় দুই বছর অতিক্রম হলেও আলোর মুখ দেখেনি খুলনা-দর্শনা ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। ভারতের দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি)’র অধীনে খুলনা-দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইন নির্মাণে প্রকল্প নেয়া হয় ২০১৮ সালে। ওই বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়। ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৫০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারত ঋণ সহায়তা দিবে ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বাকি ৮১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব ফান্ড থেকে ব্যয় হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ বছর। ২ বছর অতিক্রম হলেও প্রকল্পের কাজ শুরু তো দূরের কথা এখন পর্যন্ত সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু করা হয়নি। ভারতের দ্বিতীয় এলওসি’র কিছু কঠিন শর্ত থাকায় প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে সময় বেশি গেছে। তাই বরাদ্দকৃত এডিপি’র বিপরীত অর্থ অবমুক্ত না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা ও সমস্যার সম্মুখীন হবে। প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বেড়ে যেতে পারে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাতাহ মাসুদুর রহমান সংবাদকে বলেন, ভারতের দ্বিতীয় এলওসি’র কিছু কঠিন শর্ত থাকায় প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে সময় বেশি গেছে। এছাড়া পরামর্শ নিয়োগসহ প্রকল্পের আনুসাঙ্গিক কাজের জন্য ভারতের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেজন্য আমাদের দুই দেশের মধ্যে বেশকিছু চিঠি চালাচালি করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক সময় চলে গেছে। এখন এটা পর্যায় চলে এসেছি। আশা করা যায়, আগামী বছর পরামর্শ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু করা যাবে। এরপর জমি অধিগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগে কিছু সময় যাবে।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত ৪১৩ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে মাত্র ১১০ কিলোমিটার ডাবল লাইন রয়েছে। বাকি ৩০৩ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন। এই ৩০৩ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার এবং ঈশ্বরদী থেকে টঙ্গী ১৭৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে খুলনা-দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইন নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে সিঙ্গেল লাইনের কারণে অপর প্রান্ত থেকে আসা ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্টেশনের অতিরিক্ত কয়েকটি অনির্ধারিত স্থানে ট্রেনের যাত্রাবিরতি করতে হয়। এতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। বর্তমানে ট্রেনে খুলনা থেকে ঢাকা যেতে প্রায় ১১ ঘণ্টা সময় লাগে। ডাবল লাইন হলে সময় দুই-তিন ঘণ্টা কম লাগবে। লাইনের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ট্রেন পরিচালনা আরও উন্নত হবে। স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ট্রেন পরিচালনা করা যাবে। পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য জ্বালানি তেল পরিবহন এবং দ্রুত ও নিরাপদ রেল সেবা নিশ্চিতকরণ করা যাবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব বৃদ্ধি হবে। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জরুরিভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য হরিয়ান, ভেড়ামাড়া, সান্তাহার, বঙ্গবন্ধু ব্রিজ ওয়েস্ট, আমনুরা, ফরিদপুর, ঠাকুরগাঁও ও রংপুরে তেলভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ রেললাইনটি নির্মাণ হলে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে এবং সেচসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্রুত ও সহজে তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ডাবল রেললাইন নির্মাণ না করা পর্যন্ত আমাদের ট্রেনের যে স্বাভাবিক পরিবহন তা পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সব লাইনই ডাবল। খুলনা থেকে দর্শনা পর্যন্ত ডাবল রেললাইন নির্মাণে মন্ত্রণালয় আন্তরিক। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকার সঙ্গে খুলনার রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খুলনা-দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ সেকশনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ১৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার লুপ নতুন ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। একটি মেজর ও ৯টি মাইনর ব্রিজ, ১৪৩টি আরসিসি বক্স কালভার্ট, সাতটি স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ৯টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন, ২৫টি প্লাটফর্ম, বিদ্যমান ১২টি স্টেশনের প্লাটফর্ম পুনর্বাসন, ১৭টি ফুট ওভারব্রিজ এবং ১৮টি রেলওয়ে স্টেশনে সিবিআই ইন্টারলকিং সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। প্রকল্প অনুমোদনের পর ২০১৮ সালের ১০ মার্চ প্রথমবার পরামর্শ নিয়োগের জন্য ইওআই নোটিস প্রকাশ করা হয়। যা ওই বছর ২৬ জুলাই উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান যোগ্য হওয়ায় ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট তা বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতিতে ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর দ্বিতীয়বার ইওআই নোটিস প্রকাশ করা হয়। যা ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর ৩টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতির জন্য প্রেরণ করা হয়। কিন্তু এক্সিম ব্যাংক তা সম্মতি না দিয়ে পুনরায় ইওআই নোটিশ করতে বলে। এরপর ২০১৯ সালের ২৩ মে খসড়া ইওআই নোটিশ ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতির জন্য প্রেরণ করা হয়। বিভিন্ন দফায় আলোচনা ও পত্র যোগাযোগের পর ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক ইওআই নোটিস সম্মতি দেয়া হয়। পরে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি পুনরায় ইওআই নোটিস প্রকাশিত হয়। যা গত ৮ মার্চ উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর ৫টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকে পাঠানো হলে গত ৩১ আগস্ট তা সম্মতি পাওয়া যায়। এরপর পরামর্শ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করা যায় আগামী বছরের মধ্যে পরামর্শ নিয়োগ ও ফিজিবিলিটি স্টাডি কাজ শেষ করা হবে।