দেশে মাদকের প্রবেশ পথ কক্সবাজার। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে অনেকের নানা অপরাধ স্থল। তাদের সঙ্গে দেশি মাদক ব্যবসায়ীদের যোগসাজশ চক্র নানা কৌশলে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর দিয়ে দেশে ইয়াবার চালান নিয়ে আসে। এছাড়াও আসে অবৈধ অস্ত্র এসব নিয়ে দীর্ঘদিন টেকনাফসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে বন্দুকযুদ্ধ (ক্রসফায়ার) ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ টেকনাফ থানা এলাকায় একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার জড় উঠে। এজন্য টেকনাফ থানার আলোচিত ওসি প্রদীপসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নানা ঘটনার প্রেক্ষাপটে পর্যটন জেলা কক্সবাজারকে নিরাপদ রাখতে ও পুলিশকে আরও সেবামুখী করেতে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরে ফিরে কক্সবাজারে থাকা পুলিশের ইন্সপেক্টরদের গণবদলি করেছে। জনস্বার্থে ৩৪ জন ইন্সপেক্টর বদলি করা হয়েছে। গত ২৩ সেপ্টম্বর পুলিশ সদর দফতর থেকে এ আদেশ জারি করা হয়। বদলিকৃত ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে পুরো পোশাকে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামের নির্ধারিত বিফ্রিংয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রথমে একযোগে ৩৪ জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এরপর সাব-ইন্সপেক্টরসহ অন্যান্য পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের অনত্র বদলি করা হবে। এর আগে জেলার এসপিকে বদলি করা হয়েছে।
কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকে চেলেঞ্জ হিসেবে নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আনতে যা করার দরকার সবই করা হবে।
চট্রগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ৩৪ জন ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। নতুনভাবে সাধারণ মানুষের আস্থা আর্জনে এবং পেশাদারিত্বের মনোভাব নিয়ে যাতে কাজ করে তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই কক্সবাজারে পরিবর্তন আসবে। পরিস্থিতির উন্নন হবে বলে এ ডিআইজি আশাবাদী। তিনি পুলিশ হেডকোটার্সের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে ক্লিনিক কক্সবাজার ও নিরাপদ কক্সবাজার গড়ার জন্য সব কিছুই করবেন বলে জানান।
অপর দিকে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় বা ওই এলাকায় যারা ঘুরেফিরের বছরের পর বছর চাকরি করেছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের অজান্তে বাড়তি লাভের জন্য ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকসহ অপরাধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছিল। এ বদলির কারণে তাদের আর সেই সুযোগ থাকবে না। স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে কক্সবাজারে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা কোন কোনভাবে অপরাধীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। এ সব কারণে পুরো কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবনতি ঘটেছে। সবাইকে একযোগে বদলির কারণে হয়ত নতুন করে যারা আসবেন তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। এতে মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রবনতা কমবে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা আশাবাদী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে এ পদক্ষেপে টেকনাফসহ কক্সবাজারের অন্যান্য এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি। তাদের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি।
শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৬ মহররম ১৪৪২, ০৭ আশ্বিন ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
দেশে মাদকের প্রবেশ পথ কক্সবাজার। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে অনেকের নানা অপরাধ স্থল। তাদের সঙ্গে দেশি মাদক ব্যবসায়ীদের যোগসাজশ চক্র নানা কৌশলে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর দিয়ে দেশে ইয়াবার চালান নিয়ে আসে। এছাড়াও আসে অবৈধ অস্ত্র এসব নিয়ে দীর্ঘদিন টেকনাফসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে বন্দুকযুদ্ধ (ক্রসফায়ার) ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ টেকনাফ থানা এলাকায় একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার জড় উঠে। এজন্য টেকনাফ থানার আলোচিত ওসি প্রদীপসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নানা ঘটনার প্রেক্ষাপটে পর্যটন জেলা কক্সবাজারকে নিরাপদ রাখতে ও পুলিশকে আরও সেবামুখী করেতে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরে ফিরে কক্সবাজারে থাকা পুলিশের ইন্সপেক্টরদের গণবদলি করেছে। জনস্বার্থে ৩৪ জন ইন্সপেক্টর বদলি করা হয়েছে। গত ২৩ সেপ্টম্বর পুলিশ সদর দফতর থেকে এ আদেশ জারি করা হয়। বদলিকৃত ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে পুরো পোশাকে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামের নির্ধারিত বিফ্রিংয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রথমে একযোগে ৩৪ জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এরপর সাব-ইন্সপেক্টরসহ অন্যান্য পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের অনত্র বদলি করা হবে। এর আগে জেলার এসপিকে বদলি করা হয়েছে।
কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকে চেলেঞ্জ হিসেবে নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আনতে যা করার দরকার সবই করা হবে।
চট্রগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ৩৪ জন ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। নতুনভাবে সাধারণ মানুষের আস্থা আর্জনে এবং পেশাদারিত্বের মনোভাব নিয়ে যাতে কাজ করে তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই কক্সবাজারে পরিবর্তন আসবে। পরিস্থিতির উন্নন হবে বলে এ ডিআইজি আশাবাদী। তিনি পুলিশ হেডকোটার্সের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে ক্লিনিক কক্সবাজার ও নিরাপদ কক্সবাজার গড়ার জন্য সব কিছুই করবেন বলে জানান।
অপর দিকে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় বা ওই এলাকায় যারা ঘুরেফিরের বছরের পর বছর চাকরি করেছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের অজান্তে বাড়তি লাভের জন্য ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকসহ অপরাধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছিল। এ বদলির কারণে তাদের আর সেই সুযোগ থাকবে না। স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে কক্সবাজারে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা কোন কোনভাবে অপরাধীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। এ সব কারণে পুরো কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবনতি ঘটেছে। সবাইকে একযোগে বদলির কারণে হয়ত নতুন করে যারা আসবেন তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। এতে মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রবনতা কমবে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা আশাবাদী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে এ পদক্ষেপে টেকনাফসহ কক্সবাজারের অন্যান্য এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি। তাদের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি।