১৯ বছরেও শেষ হয়নি মামলা

সাক্ষীদের কারণে মামলাটি গতিহীন : পাবলিক প্রসিকিউটর পরবর্তী তারিখ ১০ নভেম্বর

সিলেটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা ১৯ বছরেও শেষ হয়নি। ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধী দলীয় এই নেতাকে হত্যার চেষ্টা করে জঙ্গিগোষ্ঠী। ওইদিন রাতে আওয়ামী লীগের জনসভাস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের পার্শ্ববর্তী এলাকা ফাযিলচিশতে বোমা তৈরিকালে বিস্ফোরণে নিহত হয় দু’জন জঙ্গি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে সিলেটের জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইব্যুন্যালে সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মফুর আলী বলেন, সাক্ষীদের কারণে মামলাটি অনেকটা গতিহীন। আদালত থেকে সাক্ষীদের প্রতি সমন, ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হলেও তেমন কোন অগ্রগতি নেই। যারা এ কাজে ভূমিকা রাখার কথা তারাই অনেক ক্ষেত্রে নীরব।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সিআইডির তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক প্রণব কুমার রায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়াির এ মামলা জননিরাপত্তা আদালতে আসে। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত মামলার ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সর্বশেষ এ বছরের ৪ মার্চ হোটেল আল আকসার কর্মচারী সেলিম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এছাড়াও মামলাটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার সাবেক এসআই আবদুল আউয়াল চৌধুরী, অভিযোগপত্র দাখিলকারী সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক প্রণব কুমার রায়ও সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ১০ নভেম্বর এ মামলার আরেকটি সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য তারিখ রয়েছে।

এদিকে, ঘটনার পর কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ওসির আবু আল খায়ের মাতুব্বর বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করেন। এর দু’মাস আগে তিনি যখন জেলা ডিবির ওসি ছিলেন তখন জিয়া মঞ্চের নেতা ডা. আরিফ আহমদ মমতাজ রিফার মালিকানাধীন মানচুরিয়া কালার ল্যাবে অভিযান চালান। তার কাছে খবর ছিল, সেখানে বিপুল বিস্ফোরক মজুত ও সন্দেহজনক লোকজন ছিল। এরপর তার বাড়িতেই ঘটে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা। সেসময় আবু ওবায়দা ও মাসুদ আহমেদ ওরফে শাকিল নামের দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর শাকিল স্বীকার করে, কয়েক মাস আগ থেকে তারা (জঙ্গিরা) সিলেটে অবস্থান করছিল।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিলেটে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভার দিন ছিল। এর আগের দিনই তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল জঙ্গিরা। মামলার পর ওই বছরে আদালতে স্বীকারোকিমূলক জবানবন্দি দেয় মাসুদ আহমেদ ওরফে শাকিল। এছাড়া ২০০৬ সালের ৫ অক্টোবর গ্রেফতারকৃত মাওলানা আবু সাঈদ সিলেট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার কথা স্বীকার করে। জবানবন্দিতে সে বলে, ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরের মধ্যে শেখ হাসিনার শাহজালাল মাজারে যাওয়ার কথা ছিল। পরে তারা খবর পায় শেখ হাসিনা শাহপরাণ মাজারে যাবেন। দুই মাজারে ওঁৎ পেতে থাকার পর তারা জানতে পারে শেখ হাসিনা জনসভাস্থলে সরাসরি চলে যাবেন। এরপর জঙ্গিরা জনসভাস্থলের অদূরে ফাযিলচিশতে এলাকায় তাদের ভাড়া করা মেসে (রিফার বাসা) গিয়ে ওঠেন। ওই মেসে রাত ৮টার দিকে বোমাগুলো নাড়াচাড়া করার সময় বিস্ফোরণ হয়।

আরও খবর
কক্সবাজার পুলিশে একযোগে ১৩০৯ সদস্যকে বদলি
রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতি অনুসরণের নির্দেশ
জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ভাষণ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ
একদিনে ২১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৩৮৩
করোনায় ৮৮ চিকিৎসকের মৃত্যু
বরখাস্ত ওসি প্রদীপের ৭ ইন্ধনদাতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা
পিয়ারের উচ্চতা জটিলতায় এক মাস যাবত বন্ধ রয়েছে নির্র্মাণ কাজ
সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে কোন অবস্থায়ই অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না কাদের
কুড়িগ্রাম নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জে ফের বন্যা
রাজশাহীতে পদ্মায় নৌকাডুবি নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থী
ঢাকা-সিঙ্গাপুর রুটে বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে ১ অক্টোবর থেকে

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৭ মহররম ১৪৪২, ০৮ আশ্বিন ১৪২৭

সিলেটে শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা

১৯ বছরেও শেষ হয়নি মামলা

সাক্ষীদের কারণে মামলাটি গতিহীন : পাবলিক প্রসিকিউটর পরবর্তী তারিখ ১০ নভেম্বর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক | বিশেষ প্রতিনিধি

সিলেটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা ১৯ বছরেও শেষ হয়নি। ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধী দলীয় এই নেতাকে হত্যার চেষ্টা করে জঙ্গিগোষ্ঠী। ওইদিন রাতে আওয়ামী লীগের জনসভাস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের পার্শ্ববর্তী এলাকা ফাযিলচিশতে বোমা তৈরিকালে বিস্ফোরণে নিহত হয় দু’জন জঙ্গি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে সিলেটের জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইব্যুন্যালে সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মফুর আলী বলেন, সাক্ষীদের কারণে মামলাটি অনেকটা গতিহীন। আদালত থেকে সাক্ষীদের প্রতি সমন, ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হলেও তেমন কোন অগ্রগতি নেই। যারা এ কাজে ভূমিকা রাখার কথা তারাই অনেক ক্ষেত্রে নীরব।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সিআইডির তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক প্রণব কুমার রায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়াির এ মামলা জননিরাপত্তা আদালতে আসে। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত মামলার ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সর্বশেষ এ বছরের ৪ মার্চ হোটেল আল আকসার কর্মচারী সেলিম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এছাড়াও মামলাটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার সাবেক এসআই আবদুল আউয়াল চৌধুরী, অভিযোগপত্র দাখিলকারী সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক প্রণব কুমার রায়ও সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ১০ নভেম্বর এ মামলার আরেকটি সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য তারিখ রয়েছে।

এদিকে, ঘটনার পর কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ওসির আবু আল খায়ের মাতুব্বর বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করেন। এর দু’মাস আগে তিনি যখন জেলা ডিবির ওসি ছিলেন তখন জিয়া মঞ্চের নেতা ডা. আরিফ আহমদ মমতাজ রিফার মালিকানাধীন মানচুরিয়া কালার ল্যাবে অভিযান চালান। তার কাছে খবর ছিল, সেখানে বিপুল বিস্ফোরক মজুত ও সন্দেহজনক লোকজন ছিল। এরপর তার বাড়িতেই ঘটে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা। সেসময় আবু ওবায়দা ও মাসুদ আহমেদ ওরফে শাকিল নামের দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর শাকিল স্বীকার করে, কয়েক মাস আগ থেকে তারা (জঙ্গিরা) সিলেটে অবস্থান করছিল।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিলেটে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভার দিন ছিল। এর আগের দিনই তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল জঙ্গিরা। মামলার পর ওই বছরে আদালতে স্বীকারোকিমূলক জবানবন্দি দেয় মাসুদ আহমেদ ওরফে শাকিল। এছাড়া ২০০৬ সালের ৫ অক্টোবর গ্রেফতারকৃত মাওলানা আবু সাঈদ সিলেট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার কথা স্বীকার করে। জবানবন্দিতে সে বলে, ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরের মধ্যে শেখ হাসিনার শাহজালাল মাজারে যাওয়ার কথা ছিল। পরে তারা খবর পায় শেখ হাসিনা শাহপরাণ মাজারে যাবেন। দুই মাজারে ওঁৎ পেতে থাকার পর তারা জানতে পারে শেখ হাসিনা জনসভাস্থলে সরাসরি চলে যাবেন। এরপর জঙ্গিরা জনসভাস্থলের অদূরে ফাযিলচিশতে এলাকায় তাদের ভাড়া করা মেসে (রিফার বাসা) গিয়ে ওঠেন। ওই মেসে রাত ৮টার দিকে বোমাগুলো নাড়াচাড়া করার সময় বিস্ফোরণ হয়।