অস্থির বাজার

অস্বস্তি কাটছে না পিয়াজের দামে, বাড়ছে চালেও

ক্রেতাদের আক্ষেপ : করোনায় কমেছে আয়, বাড়ছে খরচ

বিগত কয়েক মাস ধরেই বাজারে অধিক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। এরমধ্যে গত সপ্তাহ থেকে অস্বস্তিতে ফেলেছে পিয়াজের দাম। আদার দামও ১৫ দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন আবার নতুন করে বেড়েছে চালের দাম। কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেশি দিয়েই ক্রেতাদের চাল কিনতে হচ্ছে। করোনার মধ্যে বাড়তি দামে বাজার করায় কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, করোনায় তাদের আয় কমেছে, কিন্তু খরচ বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর বাসাবো, খিলগাঁও, মালিবাগসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, ক’দিন ধরে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। আর বস্তায় বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে রশিদের মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে যা দাম বাড়ার আগে ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। তবে ৫৫ টাকায় কিছুটা নিম্ন মানের মিনিকেটও পাওয়া যায় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের, যা আগে ছিল ৫২ টাকা। এছাড়া বর্তমানে আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চালের দাম পড়ছে ২৭৫০ থেকে ২৮০০ টাকা, আটাশ ২৪০০ টাকা ও নাজিরশাইল ২৩০০ থেকে থেকে ৩০০০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমান সময়টা চালের চলতি মৌসুমের শেষ দিকে। এই সময়ে ধানের সরবরাহ কমে যায়। এতে চালের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেড়ে যায়। বিসমিল্লাহ রাইস এজেন্সির মালিক বেল্লাল হোসেন নেয়াজি বলেন, কেজিতে সব ধরনের চালের দাম অন্তত দুই টাকা বেড়েছে। চালের দাম বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। চাল আমদানি না করলে আর দাম কমবে না। এদিকে খুচরা বাজারে দেশি পিয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে, তবে ১৫ দিন আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় আদা বিক্রি হয়েছিল। আর পাইকারি বাজারে দেশি পিয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও ভারতীয় পিয়াজ ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

পিয়াজ আর আদার অস্বস্তির মধ্যেই বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজারে স্বল্প পরিমাণে শীতকালীন আগাম সবজি এলেও দামে তুলনামূলক কয়েক গুণ বেশি। এরমধ্যে শিম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা স্বাভাবিক অবস্থায় ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতি পিচ বাধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুল কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা কেজিতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির মধ্যে বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা ও গাজর ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া শশার দাম বেড়ে ১২০ টাকা ও কাঁচামরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা হালিতে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় সবজির সরবরাহ অনেক কমেছে। বাজার স্বাভাবিক হতে আরও দু’মাস সময় লাগবে। তবে শীতে সবজির সরবরাহ কমবে না বলেও ধারণা করছেন তারা। আর ক্রেতারা বলছেন, করোনার মধ্যে তাদের আয়-উপার্জন কমেছে। কিন্তু প্রতিদিনেই তাদের দৈনন্দিন খরচ বাড়ছে। বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। এতে বাজার করতে এসে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন তারা।

এদিকে ২ টাকা বেড়ে প্রতি হালি লাল মুরগির ডিম ৩৮-৪০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিম ৫০-৫৫ টাকায়, হাসের ডিম ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে মুরগির দাম। গতকাল প্রতিকেজি ব্রয়লার ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লেয়ার ২২০-২৩০ টাকায়, পাকিস্তানি মুরগি ২৩০-২৪০ টাকায়, গরুর মাংস ৫৫০-৫৮০ টাকায়, খাসির মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে আগের মতোই স্বস্তি দিচ্ছে মাছের দামে। রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল (আকারভেদে) ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, মলা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, নদীর টেংরা (বড়) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, বাইলা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

image
আরও খবর
বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা দেনা-পাওনার ঊর্ধ্বে : রীভা
আকামা-ভিসা থাকলে সবাই সৌদি যেতে পারবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রবাসীদের এনআইডি সরবরাহে ‘ফি’ নির্ধারণ হতে পারে
বসুন্ধরা কোভিড হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা
পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে বিএনপির দহরম-মহরম বহু পুরনো : তথ্যমন্ত্রী
সিরিয়াল ধর্ষক আলী হোসেনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি
রংপুরে চলছে কিন্ডারগার্টেন স্কুল, ক্যাডেট ও মাদ্রাসার নিয়মিত পাঠদান
ছাত্রলীগ নেতার হাত-পায়ের রগ কেটে দিল শিবির
উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রচারণায় আ’লীগের হামলার অভিযোগ বিএনপির
প্রকৃত জেলেরা বিতাড়িত অমৎস্যজীবীদের দখলে জলমহাল
বেওয়ারিশ কুকুর নিধন বন্ধের দাবি বাপার
ছাত্রলীগ নেতার হাত-পায়ের রগ কেটে দিল শিবির
বখাটে মিজানুরের বাবা-মা আটক
নীলা হত্যার বিচার ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের দাবি

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৭ মহররম ১৪৪২, ০৮ আশ্বিন ১৪২৭

অস্থির বাজার

অস্বস্তি কাটছে না পিয়াজের দামে, বাড়ছে চালেও

ক্রেতাদের আক্ষেপ : করোনায় কমেছে আয়, বাড়ছে খরচ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

বিগত কয়েক মাস ধরেই বাজারে অধিক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। এরমধ্যে গত সপ্তাহ থেকে অস্বস্তিতে ফেলেছে পিয়াজের দাম। আদার দামও ১৫ দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন আবার নতুন করে বেড়েছে চালের দাম। কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেশি দিয়েই ক্রেতাদের চাল কিনতে হচ্ছে। করোনার মধ্যে বাড়তি দামে বাজার করায় কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, করোনায় তাদের আয় কমেছে, কিন্তু খরচ বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর বাসাবো, খিলগাঁও, মালিবাগসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, ক’দিন ধরে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। আর বস্তায় বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে রশিদের মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে যা দাম বাড়ার আগে ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। তবে ৫৫ টাকায় কিছুটা নিম্ন মানের মিনিকেটও পাওয়া যায় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের, যা আগে ছিল ৫২ টাকা। এছাড়া বর্তমানে আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চালের দাম পড়ছে ২৭৫০ থেকে ২৮০০ টাকা, আটাশ ২৪০০ টাকা ও নাজিরশাইল ২৩০০ থেকে থেকে ৩০০০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমান সময়টা চালের চলতি মৌসুমের শেষ দিকে। এই সময়ে ধানের সরবরাহ কমে যায়। এতে চালের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেড়ে যায়। বিসমিল্লাহ রাইস এজেন্সির মালিক বেল্লাল হোসেন নেয়াজি বলেন, কেজিতে সব ধরনের চালের দাম অন্তত দুই টাকা বেড়েছে। চালের দাম বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। চাল আমদানি না করলে আর দাম কমবে না। এদিকে খুচরা বাজারে দেশি পিয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে, তবে ১৫ দিন আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় আদা বিক্রি হয়েছিল। আর পাইকারি বাজারে দেশি পিয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও ভারতীয় পিয়াজ ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

পিয়াজ আর আদার অস্বস্তির মধ্যেই বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজারে স্বল্প পরিমাণে শীতকালীন আগাম সবজি এলেও দামে তুলনামূলক কয়েক গুণ বেশি। এরমধ্যে শিম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা স্বাভাবিক অবস্থায় ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতি পিচ বাধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুল কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা কেজিতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির মধ্যে বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা ও গাজর ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া শশার দাম বেড়ে ১২০ টাকা ও কাঁচামরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা হালিতে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় সবজির সরবরাহ অনেক কমেছে। বাজার স্বাভাবিক হতে আরও দু’মাস সময় লাগবে। তবে শীতে সবজির সরবরাহ কমবে না বলেও ধারণা করছেন তারা। আর ক্রেতারা বলছেন, করোনার মধ্যে তাদের আয়-উপার্জন কমেছে। কিন্তু প্রতিদিনেই তাদের দৈনন্দিন খরচ বাড়ছে। বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। এতে বাজার করতে এসে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন তারা।

এদিকে ২ টাকা বেড়ে প্রতি হালি লাল মুরগির ডিম ৩৮-৪০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিম ৫০-৫৫ টাকায়, হাসের ডিম ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে মুরগির দাম। গতকাল প্রতিকেজি ব্রয়লার ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লেয়ার ২২০-২৩০ টাকায়, পাকিস্তানি মুরগি ২৩০-২৪০ টাকায়, গরুর মাংস ৫৫০-৫৮০ টাকায়, খাসির মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে আগের মতোই স্বস্তি দিচ্ছে মাছের দামে। রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল (আকারভেদে) ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, মলা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, নদীর টেংরা (বড়) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, বাইলা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।