ঢাকার সাভারে স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যার বিচারসহ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ।
গত ২০ সেপ্টেম্বর সাভার পৌরসভার দক্ষিণপাড়ায় কিশোরী নীলা রায়কে (১৪) হত্যা করা হয়। হত্যার অভিযোগ উঠেছে মিজানুর রহমান নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। মিজান প্রায় দেড় বছর ধরে নীলাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অস্ত্রের মুখে নীলা রায়ের ভাইয়ের সামনে থেকে নীলাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান মিজান। রাত ৮টার দিকে পৌরসভার দক্ষিণপাড়া এলাকায় মিজানদের পরিত্যক্ত একটি বাড়ি থেকে নীলার গলায়, পেটে, মুখে ও ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা লাশ পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সাভারের কিশোরী নীলা হত্যা, সিলেটের জালালাবাদ, দিনাজপুর সদর, পঞ্চগড়ের অটোয়ারীতে কিশোরীকে গণধর্ষণ ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নাবালিকা শ্রাবন্তী দত্ত অপহরণের প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ।
এ বিষয়ে মানববন্ধনে হিন্দু পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর শিকদার দীপু বলেন, ছাত্রী নীলা রায়কে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। একই সঙ্গে, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও প্রকৃত দোষীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। আর হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটিসহ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদভাবে বসবাস করতে পারে সেদিকে সরকারকে দৃঢ় দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করছি। সাভারে স্কুলছাত্রী নীলা রায়কে হত্যার প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। মিথ্যা ধর্মীয় উস্কানিমূলক মামলা দিয়ে দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদারকে হয়রানি না করারও দাবি জানাই।’
মুখপাত্র সুমন কুমার রায় বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর, মঠ, মন্দির ভাঙচুর, শ্মশান বেদখল, দেশত্যাগে ভয়ভীতি প্রদর্শনের আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় মিথ্যা মামলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসিয়ে যে চলমান নির্যাতন চলছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ সংগঠনের সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এসব ঘটনা আমাদের দিনদিন আতঙ্কিত করে তুলছে। আর এসব ঘটনা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে তার কারণ একটাই, সঠিক বিচার না হওয়া। যদি সরকার এসব সুষ্ঠু বিচার করে তাহলে অপরাধীরা কখনই এসব কাজ করার সাহস পাবে না। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা এসব ঘটনা অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এবং সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্থা করবেন।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। এছাড়া আরও সংগঠনের সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেত্রী পূরবী মজুমদার, জয়ন্তী রায়, ইতি সরকার লাকী, শ্যামলী মুখার্জি প্রমুখ।
শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৭ মহররম ১৪৪২, ০৮ আশ্বিন ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
ঢাকার সাভারে স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যার বিচারসহ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ।
গত ২০ সেপ্টেম্বর সাভার পৌরসভার দক্ষিণপাড়ায় কিশোরী নীলা রায়কে (১৪) হত্যা করা হয়। হত্যার অভিযোগ উঠেছে মিজানুর রহমান নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। মিজান প্রায় দেড় বছর ধরে নীলাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অস্ত্রের মুখে নীলা রায়ের ভাইয়ের সামনে থেকে নীলাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান মিজান। রাত ৮টার দিকে পৌরসভার দক্ষিণপাড়া এলাকায় মিজানদের পরিত্যক্ত একটি বাড়ি থেকে নীলার গলায়, পেটে, মুখে ও ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা লাশ পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সাভারের কিশোরী নীলা হত্যা, সিলেটের জালালাবাদ, দিনাজপুর সদর, পঞ্চগড়ের অটোয়ারীতে কিশোরীকে গণধর্ষণ ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নাবালিকা শ্রাবন্তী দত্ত অপহরণের প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ।
এ বিষয়ে মানববন্ধনে হিন্দু পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর শিকদার দীপু বলেন, ছাত্রী নীলা রায়কে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। একই সঙ্গে, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও প্রকৃত দোষীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। আর হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটিসহ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদভাবে বসবাস করতে পারে সেদিকে সরকারকে দৃঢ় দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করছি। সাভারে স্কুলছাত্রী নীলা রায়কে হত্যার প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। মিথ্যা ধর্মীয় উস্কানিমূলক মামলা দিয়ে দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদারকে হয়রানি না করারও দাবি জানাই।’
মুখপাত্র সুমন কুমার রায় বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর, মঠ, মন্দির ভাঙচুর, শ্মশান বেদখল, দেশত্যাগে ভয়ভীতি প্রদর্শনের আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় মিথ্যা মামলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসিয়ে যে চলমান নির্যাতন চলছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ সংগঠনের সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এসব ঘটনা আমাদের দিনদিন আতঙ্কিত করে তুলছে। আর এসব ঘটনা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে তার কারণ একটাই, সঠিক বিচার না হওয়া। যদি সরকার এসব সুষ্ঠু বিচার করে তাহলে অপরাধীরা কখনই এসব কাজ করার সাহস পাবে না। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা এসব ঘটনা অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এবং সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্থা করবেন।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। এছাড়া আরও সংগঠনের সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেত্রী পূরবী মজুমদার, জয়ন্তী রায়, ইতি সরকার লাকী, শ্যামলী মুখার্জি প্রমুখ।