গোবিন্দগঞ্জে বিএডিসি’র খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিএডিসি’র খাল খনন কাজে ব্যাপক অনিয়মে একদিকে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে, অন্যদিকে প্রকল্প এলাকার কৃষকদের উপকারের স্থলে অনেক জায়গায় কৃষকের ক্ষতিই হয়েছে।

জানা গেছে, ভূগর্ভ থেকে পানির চাপ কমিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সারাদেশে খাল খননের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়, গাইবান্ধা বিএডিসি’র সেচ বিভাগের বাস্তবায়নে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গজারিয়াখাল ৬ কিলো ৭০০ মিটার পুনর্খনন কাজ হাতে নেয়া হয়। এই খাল খননে ৩টি লটে এস জামান এন্টারপ্রাইজও এন.আর ট্রেডার্স নামে ২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিলটে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫ টাকা করে কার্যাদেশ দেয় হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি সংসদ সদস্য প্রকৌশলী আলহাজ মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এ খনন কাজের উদ্বোধন করেন।

স্থানীয় কৃষকেরা অভিযোগ করেন, স্কাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে ঠিকাদার দিনে রাতে নিজের ইচ্ছেমতো খনন কাজ করেছে। খালের কোথাও কোথাও এক পাশ নামে মাত্র খনন করা হয়েছে। খননের মাটি দিয়ে পাড় বেঁধে না দেয়ায় বর্ষায় খালের পানি উপচে আশপাশের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার মাস্তা গ্রামের কৃষক আব্দুস জাহেদুল ইসলাম (৫৫) আমজাদ হোসেন (৫০) সামছুল হকসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার ইচ্ছেমতো কাজ করেছে- পাড় বান্দেনি, একপাশ খুড়ে মানুষের জমি বেড় করে দিয়েছে। আগে যা আছিল এখনও তাই আছে। কোন অফিসার দেখতে এখানে আসেনি।

এ ব্যাপারে বিএডিসি’র (ক্ষুদ্রসেচ) রিজিয়ন গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস জামান এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ হয়নি। তাই তিনি তাদের কোন তথ্য দিতে পারছেন না। তবে তার পক্ষে কাজ করা গাইবান্ধার ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি আরও বলেন, কোন কোন জায়গায় বালু মাটি হওয়ার কারণে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে হয়তো পাড় ধসে গেছে। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে ডিজাইন ও এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়ার পর অর্থ ছাড় করা হবে। এরপরও ১ বৎসরের জন্য সিকিউরিটি মানি জমা থাকবে, যা দিয়ে কাজ খারাপ হলে আবার ঠিক করে নেয়া হবে। এ বিষয়ে বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) এস. এম. শহীদুল আলম মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জনগণের সুবিধার্থে খাল খননের কাজ সঠিকভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে কোথাও পাড়ের মাটি ধসে গিয়ে থাকলে বা অন্য কোন অনিয়ম হলে তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানতের টাকা দিয়ে ডিজাইন ও স্টিমেট অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়া হবে।

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৮ মহররম ১৪৪২, ০৯ আশ্বিন ১৪২৭

গোবিন্দগঞ্জে বিএডিসি’র খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধি, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা)

image

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিএডিসি’র খাল খনন কাজে ব্যাপক অনিয়মে একদিকে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে, অন্যদিকে প্রকল্প এলাকার কৃষকদের উপকারের স্থলে অনেক জায়গায় কৃষকের ক্ষতিই হয়েছে।

জানা গেছে, ভূগর্ভ থেকে পানির চাপ কমিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সারাদেশে খাল খননের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়, গাইবান্ধা বিএডিসি’র সেচ বিভাগের বাস্তবায়নে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গজারিয়াখাল ৬ কিলো ৭০০ মিটার পুনর্খনন কাজ হাতে নেয়া হয়। এই খাল খননে ৩টি লটে এস জামান এন্টারপ্রাইজও এন.আর ট্রেডার্স নামে ২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিলটে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫ টাকা করে কার্যাদেশ দেয় হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি সংসদ সদস্য প্রকৌশলী আলহাজ মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এ খনন কাজের উদ্বোধন করেন।

স্থানীয় কৃষকেরা অভিযোগ করেন, স্কাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে ঠিকাদার দিনে রাতে নিজের ইচ্ছেমতো খনন কাজ করেছে। খালের কোথাও কোথাও এক পাশ নামে মাত্র খনন করা হয়েছে। খননের মাটি দিয়ে পাড় বেঁধে না দেয়ায় বর্ষায় খালের পানি উপচে আশপাশের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার মাস্তা গ্রামের কৃষক আব্দুস জাহেদুল ইসলাম (৫৫) আমজাদ হোসেন (৫০) সামছুল হকসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার ইচ্ছেমতো কাজ করেছে- পাড় বান্দেনি, একপাশ খুড়ে মানুষের জমি বেড় করে দিয়েছে। আগে যা আছিল এখনও তাই আছে। কোন অফিসার দেখতে এখানে আসেনি।

এ ব্যাপারে বিএডিসি’র (ক্ষুদ্রসেচ) রিজিয়ন গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস জামান এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ হয়নি। তাই তিনি তাদের কোন তথ্য দিতে পারছেন না। তবে তার পক্ষে কাজ করা গাইবান্ধার ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি আরও বলেন, কোন কোন জায়গায় বালু মাটি হওয়ার কারণে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে হয়তো পাড় ধসে গেছে। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে ডিজাইন ও এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়ার পর অর্থ ছাড় করা হবে। এরপরও ১ বৎসরের জন্য সিকিউরিটি মানি জমা থাকবে, যা দিয়ে কাজ খারাপ হলে আবার ঠিক করে নেয়া হবে। এ বিষয়ে বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) এস. এম. শহীদুল আলম মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জনগণের সুবিধার্থে খাল খননের কাজ সঠিকভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে কোথাও পাড়ের মাটি ধসে গিয়ে থাকলে বা অন্য কোন অনিয়ম হলে তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানতের টাকা দিয়ে ডিজাইন ও স্টিমেট অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়া হবে।