২৬ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা বরখাস্ত ডিএমপি কমিশনার

শর্ষের মধ্যেই ভূত! মাদক নিমূলে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতাধিক সদস্যের ডোপ টেস্ট করে ২৬ জনের পজেটিভ মিলেছে। ওই ২৬ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা রীতিমতো মাদকে আসক্ত। ডোপ টেস্টে তাদের মাদক সেবনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডোপ টেস্টে মাদকে পজেটিভ হওয়া এ ২৬ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা সবাই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্য। ডিএমপির বিভিন্ন থানা এলাকায় তারা কর্মরত। মাদক নির্মূলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মাদকে আসক্ত এসব পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।

গতকাল ডিএমপির মিরপুর ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, মাদকের বিষয়ে আমরা সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যকে ডোপ টেস্ট করিয়েছি। এর মধ্যে ২৬ জন সদস্যের পজেটিভ পেয়েছি। এই ২৬ জনকে চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আমাদের বিশ্বাস এভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলে বাকিদের জন্য সুস্পষ্ট মেসেজ যাবে যে আমরা কাউকে ছাড় দিব না। আমাদের এই উদ্যোগের ফলে অনেকে ভালো হয়েছে এবং এ রাস্তা থেকে (মাদকে আসক্ত হওয়ার পথ থেকে) ফিরে এসেছে। পুলিশ সদস্য যারা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে বা মাদক ব্যবসায়ীকে সহযোগিতা করছে সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোন রকম শিথিলতা দেখানো হচ্ছে না। কমিশনার বলেন, একজন সাধারণ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ঠিক সেভাবে মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ‘ডোপ টেস্ট’ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিটের শতাধিক পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন পুলিশ সদস্য মাদকাসক্ত বলে প্রমাণ পেয়ে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের মধ্যে সার্জেন্ট একজন, এসআই ৪ জন, এএসআই ৩ জন, নায়েক একজন ও কনস্টেবল ১৭ জন। ডিএমপি সূত্র জানায়, সম্প্রতি ডিএমপির হেডকোয়ার্টার্স থেকে প্রত্যেকটি ইউনিট ও ক্রাইম বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের উপ-কমিশনারদের চিঠি দিয়ে সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত সদস্যদের তালিকা করতে বলা হয়। বিভিন্ন ইউনিট ও বিভাগের উপ-কমিশনাররা তালিকা পাঠালে তা যাচই-বাছাই করে ১০০ জনের সন্দেহভাজন একটি তালিকা তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সন্দেহভাজনদের ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ডেকে এনে প্রত্যেকের ডোপ টেস্ট করানো হয়। ডোপ টেস্টে ২৬ জনের পজেটিভ পাওয়ায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ডোপ টেস্টে মাদকাসক্ত ধরা পড়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে। ডোপ টেস্টে ধরা পড়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশির ভাগই ডিএমপির বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিল। তাদের প্রত্যেকেই প্রাথমিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর ডিএমপির প্রত্যেকটি ইউনিট ও বিভাগে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সব সদস্যদের বলেছি। তাদের বলেছি কেউ যদি মাদকাসক্ত হয় তারা যেন আমার কাছে আসে, তাদের মাদকাসক্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। কিন্তু স্বেচ্ছায় কেউ সাড়া দিয়ে আসেনি। এজন্য ডিএমপি থেকে উদ্যোগ নিয়ে ডোপ টেস্ট করানো হচ্ছে। প্রথম দফায় একশ’ জনের ডোপ টেস্ট করানো হয়েছে। এক মাস পর আবারও বড় আকারে এই প্রক্রিয়া চালানো হবে। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ সন্দেহভাজন হলে তাদেরও ডোপ টেস্ট করানো হবে। আমি এক মাস সময় নিচ্ছি। কারণ কেউ যদি মাদকাসক্ত হয়েও থাকে, সে যেন নিজে নিজে উদ্যোগ নিয়ে মাদক থেকে বের হয়ে আসে। কিন্তু ডোপ টেস্ট করে ধরা পড়লে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

ডিএমপি সূত্র জানায়, ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অনেকেই নিজেরা মাদকাসক্ত হওয়ার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে আর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকে বলে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। যা পুলিশের জন্য রীতিমতো বিব্রতকর। যেখানে পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্ট ঘোষণা করে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করতে কাজ করে যাচ্ছে এবং মাদকের পাচার ও ব্যবহার প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে সেখানে কতিপয় পুলিশ সদস্যদের মাদকে আসক্তি পুরো কার্যক্রমে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। কোন পুলিশের সদস্যদের ব্যক্তিগত অপরাধ তো পুরো বাহিনী নিতে পারে না। এ জন্য ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্সের পক্ষ থেকে মাদকে আসক্তদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। মাদক সংক্রান্ত অপরাধে কোন পুলিশ সদস্য জড়িয়ে পড়লে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের নির্দেশনায় পুলিশকে মাদকমুক্ত করার এই কর্মকা- শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে রেঞ্জ পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিটে সন্দেহভাজনদের ডোপ টেস্ট করা হবে। সূত্র জানায়, ডিএমপি কমিশনারের এই উদ্যোগের ফলে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যারা প্রাথমিক পর্যায়ের মাদকাসক্ত ছিল তাদের অনেকেই মাদক থেকে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু এখনও অনেকেই গোপনে মাদক সেবন করে থাকে। ডিএমপি কমিশনারের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স এনালাইসিস ডিভিশন-আইএডি’র মাধ্যমেও সেইসব মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের তালিকা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তাদের প্রত্যেকেরই ডোপ টেস্ট করা হবে।

ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী ইউনিট প্রধানরা সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করতে পাঠিয়েছিল। আমি আমার বিভাগ থেকেও কয়েকজন পাঠিয়েছিলাম। পুলিশের সদস্য যারাই মাদকাসক্ত হবে তাদের বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৮ মহররম ১৪৪২, ০৯ আশ্বিন ১৪২৭

ডোপ টেস্টে মাদক পজেটিভ

২৬ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা বরখাস্ত ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

শর্ষের মধ্যেই ভূত! মাদক নিমূলে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতাধিক সদস্যের ডোপ টেস্ট করে ২৬ জনের পজেটিভ মিলেছে। ওই ২৬ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা রীতিমতো মাদকে আসক্ত। ডোপ টেস্টে তাদের মাদক সেবনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডোপ টেস্টে মাদকে পজেটিভ হওয়া এ ২৬ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা সবাই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্য। ডিএমপির বিভিন্ন থানা এলাকায় তারা কর্মরত। মাদক নির্মূলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মাদকে আসক্ত এসব পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।

গতকাল ডিএমপির মিরপুর ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, মাদকের বিষয়ে আমরা সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যকে ডোপ টেস্ট করিয়েছি। এর মধ্যে ২৬ জন সদস্যের পজেটিভ পেয়েছি। এই ২৬ জনকে চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আমাদের বিশ্বাস এভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলে বাকিদের জন্য সুস্পষ্ট মেসেজ যাবে যে আমরা কাউকে ছাড় দিব না। আমাদের এই উদ্যোগের ফলে অনেকে ভালো হয়েছে এবং এ রাস্তা থেকে (মাদকে আসক্ত হওয়ার পথ থেকে) ফিরে এসেছে। পুলিশ সদস্য যারা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে বা মাদক ব্যবসায়ীকে সহযোগিতা করছে সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোন রকম শিথিলতা দেখানো হচ্ছে না। কমিশনার বলেন, একজন সাধারণ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ঠিক সেভাবে মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ‘ডোপ টেস্ট’ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিটের শতাধিক পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন পুলিশ সদস্য মাদকাসক্ত বলে প্রমাণ পেয়ে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের মধ্যে সার্জেন্ট একজন, এসআই ৪ জন, এএসআই ৩ জন, নায়েক একজন ও কনস্টেবল ১৭ জন। ডিএমপি সূত্র জানায়, সম্প্রতি ডিএমপির হেডকোয়ার্টার্স থেকে প্রত্যেকটি ইউনিট ও ক্রাইম বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের উপ-কমিশনারদের চিঠি দিয়ে সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত সদস্যদের তালিকা করতে বলা হয়। বিভিন্ন ইউনিট ও বিভাগের উপ-কমিশনাররা তালিকা পাঠালে তা যাচই-বাছাই করে ১০০ জনের সন্দেহভাজন একটি তালিকা তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সন্দেহভাজনদের ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ডেকে এনে প্রত্যেকের ডোপ টেস্ট করানো হয়। ডোপ টেস্টে ২৬ জনের পজেটিভ পাওয়ায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ডোপ টেস্টে মাদকাসক্ত ধরা পড়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে। ডোপ টেস্টে ধরা পড়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশির ভাগই ডিএমপির বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিল। তাদের প্রত্যেকেই প্রাথমিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর ডিএমপির প্রত্যেকটি ইউনিট ও বিভাগে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সব সদস্যদের বলেছি। তাদের বলেছি কেউ যদি মাদকাসক্ত হয় তারা যেন আমার কাছে আসে, তাদের মাদকাসক্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। কিন্তু স্বেচ্ছায় কেউ সাড়া দিয়ে আসেনি। এজন্য ডিএমপি থেকে উদ্যোগ নিয়ে ডোপ টেস্ট করানো হচ্ছে। প্রথম দফায় একশ’ জনের ডোপ টেস্ট করানো হয়েছে। এক মাস পর আবারও বড় আকারে এই প্রক্রিয়া চালানো হবে। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ সন্দেহভাজন হলে তাদেরও ডোপ টেস্ট করানো হবে। আমি এক মাস সময় নিচ্ছি। কারণ কেউ যদি মাদকাসক্ত হয়েও থাকে, সে যেন নিজে নিজে উদ্যোগ নিয়ে মাদক থেকে বের হয়ে আসে। কিন্তু ডোপ টেস্ট করে ধরা পড়লে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

ডিএমপি সূত্র জানায়, ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অনেকেই নিজেরা মাদকাসক্ত হওয়ার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে আর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকে বলে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। যা পুলিশের জন্য রীতিমতো বিব্রতকর। যেখানে পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্ট ঘোষণা করে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করতে কাজ করে যাচ্ছে এবং মাদকের পাচার ও ব্যবহার প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে সেখানে কতিপয় পুলিশ সদস্যদের মাদকে আসক্তি পুরো কার্যক্রমে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। কোন পুলিশের সদস্যদের ব্যক্তিগত অপরাধ তো পুরো বাহিনী নিতে পারে না। এ জন্য ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্সের পক্ষ থেকে মাদকে আসক্তদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। মাদক সংক্রান্ত অপরাধে কোন পুলিশ সদস্য জড়িয়ে পড়লে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের নির্দেশনায় পুলিশকে মাদকমুক্ত করার এই কর্মকা- শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে রেঞ্জ পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিটে সন্দেহভাজনদের ডোপ টেস্ট করা হবে। সূত্র জানায়, ডিএমপি কমিশনারের এই উদ্যোগের ফলে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যারা প্রাথমিক পর্যায়ের মাদকাসক্ত ছিল তাদের অনেকেই মাদক থেকে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু এখনও অনেকেই গোপনে মাদক সেবন করে থাকে। ডিএমপি কমিশনারের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স এনালাইসিস ডিভিশন-আইএডি’র মাধ্যমেও সেইসব মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের তালিকা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তাদের প্রত্যেকেরই ডোপ টেস্ট করা হবে।

ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী ইউনিট প্রধানরা সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করতে পাঠিয়েছিল। আমি আমার বিভাগ থেকেও কয়েকজন পাঠিয়েছিলাম। পুলিশের সদস্য যারাই মাদকাসক্ত হবে তাদের বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না।