পিয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে

বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের কোন রাষ্ট্রে লাখ লাখ টন অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্য গুদামে মজুদ থাকার পর এভাবে বিদুৎগতিতে দাম বাড়ে বলে আমার জানা নেই। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ টন পিয়াজ দেশে মজুদ আছে, যা দিয়ে দেশের তিন মাসের চাহিদা অনায়াসে মেটানো সম্ভব। এ তিন মাসের মধ্যে ভারতের বিকল্প বিভিন্ন সূত্র থেকে ধীরস্থিরে দর কষাকষি করে প্রতিযোগিতামূলক দামে পিয়াজ আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখা আহামরি কোন কঠিন কাজ নয়। কিন্তু সে সুযোগ এক শ্রেণীর কালোবাজারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটনামদারি দুর্বৃত্ত ছেড়ে দেবে সে কথা মনে করে সরকার যদি যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয় তা হলে কখনো এ সরকারের পক্ষে দেশের কোটি কোটি মানুষের কষ্টার্জিত রোজগারের টাকা কালোবাজারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নামধারী দুর্বৃত্তদের রাক্ষুসে থাবা থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

শুধু পিয়াজ বা নিত্যপণ্য নয়। এরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শেয়ারবাজার, সরকারি সব উন্নয়নমূলক কাজসহ সব জায়গায় সিন্ডিকেট গড়ে তুলে মনোপলি গরিব মানুষের টাকা লুটপাট করে দেশের বাইরে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে।

দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এবং সরকার যৌথ উদ্যোগে যে কোন নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিলে তা সহজেই সমাধান করতে পারে। নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেবে সে পণ্যে আমদানি শুল্ক, ভ্যাটসহ সব সরকারি কর সংকট চলাকালীন সময় সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে হবে। সরকারকে এবং ব্যবসায়ী কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সভা করে যে নিত্য পণ্যের সংকট দেখা দেবে সে পণ্য যতটুকু মজুদ রয়েছে সে পণ্যের দাম যাতে না বাড়ে সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা করে তা সংকট চলাকালীন সময় সব ব্যবসায়ীদের নজরদারিতে রাখবেন। কেউ সংগঠনের সিদ্ধান্ত না মানলে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।

বর্তমানে দেশে ঘাটতি প্রায় পাঁচ লাখ টন পিয়াজের চাহিদা পূরণে আমদানির কোন বিকল্প নেই। তাই আমদানি একমুখী না হয়ে বহুমুখী সূত্র থেকে আমদানির আগাম ব্যবস্থা করে রাখতে হবে, যাতে চাহিদার অনুপাতে সরবরাহে কোন প্রকারের ঘাটতি না পড়ে। বর্তমান সংকট সমাধানে দেশের সব আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ীর গুদাম সরকারি সব গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রাতের অন্ধকারে নদী বা সাগরে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি পিয়াজ ফেলে দিয়ে সংকটকে আরও জটিল করে দশগুণ বেশি দামে তারা যদি ৪০ শতাংশ বিক্রি করে তবু ও লাভ কয়েকগুণ থাকবে। গত বছর এরা পিয়াজে দশগুণ লাভ করে মজা পেয়ে গেছে এবার তারা সে পথে হাঁটবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। গত বছর পিয়াজের দাম তিনশ’ টাকায় উঠেছিল। এবার করোনা মহামারী বিরাজমান অবস্থায় বিভিন্ন সংস্থার জরিপ থেকে জানা যায় প্রায় সাড়ে নয় কোটি মানুষ চরম আর্থিক সংকটে দিন অতিবাহিত করছে। শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারী সংকটে এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে ফায়দা লোটার চেয়ে জঘন্য কাজকে সরকার জনগণের সহযোগিতায় কঠোরহস্তে দমন করা একান্ত অপরিহার্য।

আব্বাস উদ্দিন আহমদ

ধোপাদিঘীর দক্ষিণপাড়,

সিলেট ৩১০০

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৮ মহররম ১৪৪২, ০৯ আশ্বিন ১৪২৭

পিয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে

বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের কোন রাষ্ট্রে লাখ লাখ টন অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্য গুদামে মজুদ থাকার পর এভাবে বিদুৎগতিতে দাম বাড়ে বলে আমার জানা নেই। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ টন পিয়াজ দেশে মজুদ আছে, যা দিয়ে দেশের তিন মাসের চাহিদা অনায়াসে মেটানো সম্ভব। এ তিন মাসের মধ্যে ভারতের বিকল্প বিভিন্ন সূত্র থেকে ধীরস্থিরে দর কষাকষি করে প্রতিযোগিতামূলক দামে পিয়াজ আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখা আহামরি কোন কঠিন কাজ নয়। কিন্তু সে সুযোগ এক শ্রেণীর কালোবাজারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটনামদারি দুর্বৃত্ত ছেড়ে দেবে সে কথা মনে করে সরকার যদি যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয় তা হলে কখনো এ সরকারের পক্ষে দেশের কোটি কোটি মানুষের কষ্টার্জিত রোজগারের টাকা কালোবাজারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নামধারী দুর্বৃত্তদের রাক্ষুসে থাবা থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

শুধু পিয়াজ বা নিত্যপণ্য নয়। এরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শেয়ারবাজার, সরকারি সব উন্নয়নমূলক কাজসহ সব জায়গায় সিন্ডিকেট গড়ে তুলে মনোপলি গরিব মানুষের টাকা লুটপাট করে দেশের বাইরে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে।

দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এবং সরকার যৌথ উদ্যোগে যে কোন নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিলে তা সহজেই সমাধান করতে পারে। নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেবে সে পণ্যে আমদানি শুল্ক, ভ্যাটসহ সব সরকারি কর সংকট চলাকালীন সময় সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে হবে। সরকারকে এবং ব্যবসায়ী কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সভা করে যে নিত্য পণ্যের সংকট দেখা দেবে সে পণ্য যতটুকু মজুদ রয়েছে সে পণ্যের দাম যাতে না বাড়ে সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা করে তা সংকট চলাকালীন সময় সব ব্যবসায়ীদের নজরদারিতে রাখবেন। কেউ সংগঠনের সিদ্ধান্ত না মানলে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।

বর্তমানে দেশে ঘাটতি প্রায় পাঁচ লাখ টন পিয়াজের চাহিদা পূরণে আমদানির কোন বিকল্প নেই। তাই আমদানি একমুখী না হয়ে বহুমুখী সূত্র থেকে আমদানির আগাম ব্যবস্থা করে রাখতে হবে, যাতে চাহিদার অনুপাতে সরবরাহে কোন প্রকারের ঘাটতি না পড়ে। বর্তমান সংকট সমাধানে দেশের সব আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ীর গুদাম সরকারি সব গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রাতের অন্ধকারে নদী বা সাগরে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি পিয়াজ ফেলে দিয়ে সংকটকে আরও জটিল করে দশগুণ বেশি দামে তারা যদি ৪০ শতাংশ বিক্রি করে তবু ও লাভ কয়েকগুণ থাকবে। গত বছর এরা পিয়াজে দশগুণ লাভ করে মজা পেয়ে গেছে এবার তারা সে পথে হাঁটবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। গত বছর পিয়াজের দাম তিনশ’ টাকায় উঠেছিল। এবার করোনা মহামারী বিরাজমান অবস্থায় বিভিন্ন সংস্থার জরিপ থেকে জানা যায় প্রায় সাড়ে নয় কোটি মানুষ চরম আর্থিক সংকটে দিন অতিবাহিত করছে। শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারী সংকটে এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে ফায়দা লোটার চেয়ে জঘন্য কাজকে সরকার জনগণের সহযোগিতায় কঠোরহস্তে দমন করা একান্ত অপরিহার্য।

আব্বাস উদ্দিন আহমদ

ধোপাদিঘীর দক্ষিণপাড়,

সিলেট ৩১০০