‘তথ্য অধিকার, সংকটে হাতিয়ার’

প্রসঙ্গ : স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ - মরতুজা আহমদ - প্রধান তথ্য কমিশনার

‘তথ্য অধিকার সংকটে হাতিয়ার’-২০২০ সালে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালনের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে। এবার এমন সময় দিবসটি পালিত হচ্ছে যখন সারাবিশ^ করোনাভাইরাস মহামারীতে আক্রান্ত। বলাবাহুল্য, করোনা সংকট উত্তরণে ইউনেস্কোর অনুসরণে আমাদের এবারের প্রতিপাদ্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যম-িত ও সময়োপযোগী। উল্লেখ্য, অবাধ তথ্য প্রবাহ রচনা, তথ্যে সার্বজনীন প্রবেশাধিকার, তথ্য অধিকার সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাই দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য।

তথ্য অধিকার মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, বৈষম্য দূরীকরণ, সুশাসন তথা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়িত্বশীলতা আনয়ন, দুর্নীতি হ্রাস, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। চিকিৎসাসহ সংবিধানে বর্ণিত সব মৌলিক অধিকার পূরণে সর্বাগ্রে প্রয়োজন জনগণের তথ্যে আবশ্যিক অভিগমন। তথ্য অধিকার রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে জনগণের প্রতি সংবেদনশীল করে তুলে, আস্থার সম্পর্ক স্থাপন করে।

করোনাকালে বিশ^বাসী উপলব্ধি করেছে, সঠিক ও সময়োচিত তথ্য কিভাবে মানুষের জীবন মৃত্যুর নিয়ামক হতে পারে। করোনার ভয়াল থাবা থেকে জীবনকে নিরাপদ রাখতে, স্বাস্থ্যবিধি জানতে, বুঝতে এবং তা মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলতে- এ সংক্রান্ত জরুরি ও সাধারণ তথ্যাদি জনগণের জন্য সহজ ও বোধগম্য করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি যেমন মাস্ক পরিধান, সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণে অবাধ তথ্য প্রবাহ ও তথ্যে অভিগমনের গুরুত্ব অপরিসীম। আপনজনকে হারিয়ে আমরা বুঝেছি, আক্রান্ত ব্যক্তিকে কত তাড়াতাড়ি চিকিৎসার আওতায় আনা ও দ্রুত সর্বোচ্চ চিকিৎসা প্রদান নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল। তার দ্বারা অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার পর আমাদের বোধগম্য হয়েছে সঠিক সময়ে তথ্য পেলে, জানলে এবং তা পালন করলে ব্যাপকভাবে তাদের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব ছিল। এখনও আমরা অনেকেই বিশ^ব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের খবর রাখি না। এজন্য এ সংকটে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন জরুরি সেবা ও স্বাস্থ্যবিধির সব তথ্য জনগণের কাছে অবারিত করা ও রাখা, এগুলো পালনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করা এবং এ ধারা অব্যাহত রাখা। হাসপাতালে তো বটেই, ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিনামূল্যে বা কম মূল্যে করোনা চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে যাচ্ছে-এ তথ্য ভোক্তভোগীর কাছে আছে কি? অজানা ভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসহ অপরাপর মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে, আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে টেকসই কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নে, জনগণের জন্য গৃহীত প্রণোদনা ও সহায়তার বিভিন্ন প্যাকেজের তথ্য তাদের কাছে অবারিতকরণে, ঘোষিত সুবিধাদিতে প্রকৃত উপকারভোগীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে সঠিক ও সময়োচিত তথ্য প্রদানের বিয়য়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ও সময়োচিত চিকিৎসা গ্রহণ ও প্রদানে, নমুনা পরীক্ষায়, মানসম্মত চিকিৎসাসামগ্রীর সময়োচিত এবং যথাযথ সরবরাহ ও ব্যবহারে এক কথায় চলমান ও সব ভবিষ্যত কর্মকা-ের তথ্যে জনগণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা ও অব্যাহত রাখা একান্ত আবশ্যক। এতে সংকটে মানুষের শুধু জীবন রক্ষাই সহজ হবে না, জনস্বাস্থ্য নিরাপদ থাকবে, অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। অন্যদিকে সব কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে, দুর্নীতি হ্রাস পাবে, সুশাসন বজায় থাকবে, সংকট মোকাবিলায় রাষ্ট্র ও জনগণের আস্থার সম্পর্ক সমুন্নত থাকবে। তাছাড়া গুজব, ভুল-বানোয়াট তথ্য জনগণকে বিভ্রান্ত করবে না। সংকট উত্তরণ ত্বরান্বিত হবে, উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে। জনগণ করোনা পরিবেশেই জীবনকে নিরাপদ রাখার জন্য সহনশীলতা (জবংরষরবহপব) তৈরি করে করোনার প্রতিঘাতকে মোকাবিলা করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সচেষ্ট হবে। তাই তথ্য অধিকার জনগণের ঘুরে দাঁড়াতে আশা জাগানিয়ার এক মহাঔষধ।

বাংলাদেশে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর বিধানমতে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের আবশ্যিক অধিকার রয়েছে। নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে। অন্যথায় শাস্তি, জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়েছে। তবে নাগরিকের তথ্য চেয়ে পেতে আইনের কাঠামো পদ্ধতি অনুসরণে কিছুটা সময়সাপেক্ষ বিধায় আইনের ৬ ধারায় প্রত্যেক কর্তৃপক্ষকে বাধ্যতামূলক ও স্বপ্রণোদিতভাবে তার গৃহীত সিদ্ধান্ত, কার্যক্রম কিংবা সম্পাদিত বা প্রস্তাবিত কর্মকা-ের সব তথ্য নাগরিকের কাছে সহজলভ্য হয় সেভাবে সূচিবদ্ধ করে প্রচার ও প্রকাশ করবে। এভাবে তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে কোন কর্তৃপক্ষ তথ্য গোপন করতে বা উহার সহজলভ্যতাকে সংকুচিত করতে পারবে না। গুরুত্বপূর্ণ কোন নীতি প্রণয়ন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা অবশ্যই প্রকাশ করবে এবং এর সমর্থনে যুক্তি ও কারণ ব্যাখ্যা করবে, প্রণীত প্রতিবেদন ও প্রকাশনা সর্বসাধারণের জন্য পরিদর্শন ও সরবরাহ সহজলভ্য করতে হবে, জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়দি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অথবা অন্য কোন পন্থায় প্রচার ও প্রকাশ করবে। কর্তৃপক্ষের বাধ্যতামূলক অনুসরণের জন্য এ বিষয়ে প্রণীত তথ্য অধিকার (তথ্য প্রকাশ ও প্রচার) প্রবিধানমালা ২০১০ এ কি কি তথ্য কিভাবে কত দিনের মধ্যে কোন কোন মাধ্যমে প্রকাশ করবে তার সুস্পষ্ট বিধান বর্ণিত আছে। কর্তৃপক্ষের নোটিস বোর্ড, প্রত্যেক অফিস/তথ্য প্রদান ইউনিটে অনুলিপি প্রেরণ, ওয়েবসাইট, গণমাধ্যম ইত্যাদিতে নিয়মিত ও সময়মত প্রকাশ ও প্রচার করতে হবে। প্রবিধানমালায় সংযুক্ত তফসিল ১ ও ২ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জনবান্ধব, সময়োপযোগী, আবশ্যকীয়ভাবে অনুসরণীয়। উদাহরণস্বরূপ তফসিল ১ এর ৯ অনুচ্ছেদে সামাজিক নিরাপত্তা, দারিদ্র্যবিমোচন, স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়নের পদ্ধতি এবং এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী ও বরাদ্ধকৃত অর্থ বা সম্পদের পরিমাণের বিবরণ প্রকাশ ও প্রচারের সর্বোচ্চ সময় ও মাধ্যমের সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যা করোনা বা যে কোন সংকটে তো বটেই সব সময়ই ভুক্তভোগী ছাড়াও সবারই প্রত্যাশিত।

সন্দেহ নেই, করোনা সংকটকালে বাংলাদেশ এমনকি পাশর্^বর্তী দেশসমূহসহ বিশে^র প্রায় সব দেশেই নাগরিকের আবেদন করে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রটি কিছুটা সংকুচিত হয়েছে। বিশে^র কোন কোন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণাসহ লকডাউন ইত্যাদি কারণে নাগরিকের তথ্য প্রাপ্তি ব্যাহত হয়েছে। করোনা সংকটে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিধানটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে নাগরিকের পক্ষে শারীরিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করা, এজন্য কয়েকটি ধাপ পার করে তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা কঠিন কাজ, স্বাস্থ্যবিধিসম্মতও নহে। অবশ্য বিকল্প হিসাবে অনলাইনে তথ্য প্রদান ও শুনানি বা সিদ্ধান্ত প্রদানের বিষয়টি জোরদার হয়েছে। বাংলাদেশের আইনটি যথেষ্ট অনলাইন বান্ধব। দেশে ইন্টারনেটসহ ডিজিটাল ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশেও তথ্যের আবেদন গ্রহণ, তথ্য প্রদান, শুনানি ও সিদ্ধান্ত অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে। তথাপি আমাদের এ বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য এখনও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এ সব বিবেচনায় সংকট উত্তরণে জনগণের প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রদানের বিষয়টি সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, সমাজসেবাসহ সব কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছায় তথ্য প্রদানে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এ সংকটকালে রাষ্ট্রের সব কর্তৃপক্ষই তার বিস্তৃত ও সঠিক তথ্য (প্রয়োজনে ডাটাসহ) বিশেষত : স্বাস্থ্য, জীবনরক্ষা ও জীবনকে নিরাপদে রাখার জরুরি তথ্য, স্বেচ্ছা প্রণোদিতভাবে সময়োচিত প্রকাশ ও প্রচার করে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন, স্বস্তি দিতে পারেন। সংকটকালে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যে সব সুবিধাভোগী, সুযোগসন্ধানী, ধান্ধাবাজ, ধড়িবাজ দুর্নীতি, আত্মসাৎ, তছরুপ, চুরি, ডাকাতি, জবরদখল ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানান অনৈতিক কর্মে লিপ্ত হন-তা তারা যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন তথ্যে জনগণের আইনি অধিকার নিশ্চিত হলে এসব অপকর্মের সুযোগ স্বয়ংক্রয়ভাবেই তিরোহিত হয়, সময়ের আবর্তে তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়। কর্তৃপক্ষও তার স্বচ্ছতা প্রমাণের সুযোগ পায়, সুশাসন প্রতিষ্ঠার সদিচ্ছা প্রতিভাত হয়, অনিয়ম দূরীভূত হয়, দুর্নীতি হ্রাসে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সংকট মুহূর্তে এগুলোর প্রয়োজনীয়তা বেশি অনুভূত হয়। এ প্রয়োজন মেটাতে তথ্য প্রবাহ হবে অবারিত যা হবে মূলত: স্থানীয় ভাষায়, হবে সহজলভ্য, বোধগম্য, প্রবেশগম্য এবং সহজলভ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। তথ্য হবে মানসম্মত, সঠিক ও উপযুক্ত, কর্তৃপক্ষের থাকবে সংরক্ষিত তথ্যের সর্বোচ্চ প্রকাশের ইতিবাচক মানসিকতা। এতে কর্তৃপক্ষের প্রতি জনগণের একাত্বতা তৈরি হয়। স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে প্রেস করফারেন্স, প্রেস ব্রিফিং, প্রেস নোট, ওয়েবসাইট, ভিডিও কনফারেন্স ইত্যাদি।

সংকট মোকাবিলায় অবাধ তথ্য প্রবাহ রচনার মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করার লক্ষ্যে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী সম্মুখ যোদ্ধাদের নিয়ে স্বয়ং সারাদেশে নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে জনজীবন রক্ষায় ও জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তায়, আর্থসামাজিক উন্নয়নে একদিকে যেমন জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করার প্রয়াস নিয়েছেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরূদ্ধারে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন, প্রণোদনা ও সহায়তা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন, এগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন অন্যদিকে সব কর্তৃপক্ষকে জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল রাখতে সচেষ্ট হয়েছেন যা সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে, দেশ-বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি জানান, করোনা ভ্যাকসিনের জন্য সব দেশেই আবেদন করা হয়েছে, প্রয়োজনীয় বাজেটের সংস্থান রাখা হয়েছে, যেখানে আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই নেয়া হবে। মহান সংসদে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর প্রদানসহ এহেন বক্তব্য সারাদেশে তথ্যের অবাধ প্রবাহ রচনা করে, জনগণকে সংকটে স্বস্তি দেয়, আশ্বস্ত করে, আশার আলো দেখায়।

স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রদানের আরেকটি বাধ্যতামূলক মাধ্যম কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটের তথ্য ও নির্দেশিকা সংকট উত্তরণে পথ দেখায়। তবে ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ থাকতে হবে, হতে হবে সহজলভ্য ও ব্যবহার উপযোগী। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটের মতো জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য কার্যালয়ের ওয়েবসাইটেও করোনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাদির একটি কর্নার থাকা জনস্বাস্থ্যের খাতিরে সমীচীন হবে।

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৯ মহররম ১৪৪২, ১০ আশ্বিন ১৪২৭

‘তথ্য অধিকার, সংকটে হাতিয়ার’

প্রসঙ্গ : স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ - মরতুজা আহমদ - প্রধান তথ্য কমিশনার

‘তথ্য অধিকার সংকটে হাতিয়ার’-২০২০ সালে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালনের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে। এবার এমন সময় দিবসটি পালিত হচ্ছে যখন সারাবিশ^ করোনাভাইরাস মহামারীতে আক্রান্ত। বলাবাহুল্য, করোনা সংকট উত্তরণে ইউনেস্কোর অনুসরণে আমাদের এবারের প্রতিপাদ্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যম-িত ও সময়োপযোগী। উল্লেখ্য, অবাধ তথ্য প্রবাহ রচনা, তথ্যে সার্বজনীন প্রবেশাধিকার, তথ্য অধিকার সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাই দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য।

তথ্য অধিকার মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, বৈষম্য দূরীকরণ, সুশাসন তথা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়িত্বশীলতা আনয়ন, দুর্নীতি হ্রাস, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। চিকিৎসাসহ সংবিধানে বর্ণিত সব মৌলিক অধিকার পূরণে সর্বাগ্রে প্রয়োজন জনগণের তথ্যে আবশ্যিক অভিগমন। তথ্য অধিকার রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে জনগণের প্রতি সংবেদনশীল করে তুলে, আস্থার সম্পর্ক স্থাপন করে।

করোনাকালে বিশ^বাসী উপলব্ধি করেছে, সঠিক ও সময়োচিত তথ্য কিভাবে মানুষের জীবন মৃত্যুর নিয়ামক হতে পারে। করোনার ভয়াল থাবা থেকে জীবনকে নিরাপদ রাখতে, স্বাস্থ্যবিধি জানতে, বুঝতে এবং তা মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলতে- এ সংক্রান্ত জরুরি ও সাধারণ তথ্যাদি জনগণের জন্য সহজ ও বোধগম্য করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি যেমন মাস্ক পরিধান, সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণে অবাধ তথ্য প্রবাহ ও তথ্যে অভিগমনের গুরুত্ব অপরিসীম। আপনজনকে হারিয়ে আমরা বুঝেছি, আক্রান্ত ব্যক্তিকে কত তাড়াতাড়ি চিকিৎসার আওতায় আনা ও দ্রুত সর্বোচ্চ চিকিৎসা প্রদান নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল। তার দ্বারা অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার পর আমাদের বোধগম্য হয়েছে সঠিক সময়ে তথ্য পেলে, জানলে এবং তা পালন করলে ব্যাপকভাবে তাদের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব ছিল। এখনও আমরা অনেকেই বিশ^ব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের খবর রাখি না। এজন্য এ সংকটে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন জরুরি সেবা ও স্বাস্থ্যবিধির সব তথ্য জনগণের কাছে অবারিত করা ও রাখা, এগুলো পালনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করা এবং এ ধারা অব্যাহত রাখা। হাসপাতালে তো বটেই, ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিনামূল্যে বা কম মূল্যে করোনা চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে যাচ্ছে-এ তথ্য ভোক্তভোগীর কাছে আছে কি? অজানা ভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসহ অপরাপর মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে, আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে টেকসই কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নে, জনগণের জন্য গৃহীত প্রণোদনা ও সহায়তার বিভিন্ন প্যাকেজের তথ্য তাদের কাছে অবারিতকরণে, ঘোষিত সুবিধাদিতে প্রকৃত উপকারভোগীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে সঠিক ও সময়োচিত তথ্য প্রদানের বিয়য়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ও সময়োচিত চিকিৎসা গ্রহণ ও প্রদানে, নমুনা পরীক্ষায়, মানসম্মত চিকিৎসাসামগ্রীর সময়োচিত এবং যথাযথ সরবরাহ ও ব্যবহারে এক কথায় চলমান ও সব ভবিষ্যত কর্মকা-ের তথ্যে জনগণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা ও অব্যাহত রাখা একান্ত আবশ্যক। এতে সংকটে মানুষের শুধু জীবন রক্ষাই সহজ হবে না, জনস্বাস্থ্য নিরাপদ থাকবে, অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। অন্যদিকে সব কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে, দুর্নীতি হ্রাস পাবে, সুশাসন বজায় থাকবে, সংকট মোকাবিলায় রাষ্ট্র ও জনগণের আস্থার সম্পর্ক সমুন্নত থাকবে। তাছাড়া গুজব, ভুল-বানোয়াট তথ্য জনগণকে বিভ্রান্ত করবে না। সংকট উত্তরণ ত্বরান্বিত হবে, উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে। জনগণ করোনা পরিবেশেই জীবনকে নিরাপদ রাখার জন্য সহনশীলতা (জবংরষরবহপব) তৈরি করে করোনার প্রতিঘাতকে মোকাবিলা করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সচেষ্ট হবে। তাই তথ্য অধিকার জনগণের ঘুরে দাঁড়াতে আশা জাগানিয়ার এক মহাঔষধ।

বাংলাদেশে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর বিধানমতে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের আবশ্যিক অধিকার রয়েছে। নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে। অন্যথায় শাস্তি, জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়েছে। তবে নাগরিকের তথ্য চেয়ে পেতে আইনের কাঠামো পদ্ধতি অনুসরণে কিছুটা সময়সাপেক্ষ বিধায় আইনের ৬ ধারায় প্রত্যেক কর্তৃপক্ষকে বাধ্যতামূলক ও স্বপ্রণোদিতভাবে তার গৃহীত সিদ্ধান্ত, কার্যক্রম কিংবা সম্পাদিত বা প্রস্তাবিত কর্মকা-ের সব তথ্য নাগরিকের কাছে সহজলভ্য হয় সেভাবে সূচিবদ্ধ করে প্রচার ও প্রকাশ করবে। এভাবে তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে কোন কর্তৃপক্ষ তথ্য গোপন করতে বা উহার সহজলভ্যতাকে সংকুচিত করতে পারবে না। গুরুত্বপূর্ণ কোন নীতি প্রণয়ন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা অবশ্যই প্রকাশ করবে এবং এর সমর্থনে যুক্তি ও কারণ ব্যাখ্যা করবে, প্রণীত প্রতিবেদন ও প্রকাশনা সর্বসাধারণের জন্য পরিদর্শন ও সরবরাহ সহজলভ্য করতে হবে, জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়দি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অথবা অন্য কোন পন্থায় প্রচার ও প্রকাশ করবে। কর্তৃপক্ষের বাধ্যতামূলক অনুসরণের জন্য এ বিষয়ে প্রণীত তথ্য অধিকার (তথ্য প্রকাশ ও প্রচার) প্রবিধানমালা ২০১০ এ কি কি তথ্য কিভাবে কত দিনের মধ্যে কোন কোন মাধ্যমে প্রকাশ করবে তার সুস্পষ্ট বিধান বর্ণিত আছে। কর্তৃপক্ষের নোটিস বোর্ড, প্রত্যেক অফিস/তথ্য প্রদান ইউনিটে অনুলিপি প্রেরণ, ওয়েবসাইট, গণমাধ্যম ইত্যাদিতে নিয়মিত ও সময়মত প্রকাশ ও প্রচার করতে হবে। প্রবিধানমালায় সংযুক্ত তফসিল ১ ও ২ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জনবান্ধব, সময়োপযোগী, আবশ্যকীয়ভাবে অনুসরণীয়। উদাহরণস্বরূপ তফসিল ১ এর ৯ অনুচ্ছেদে সামাজিক নিরাপত্তা, দারিদ্র্যবিমোচন, স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়নের পদ্ধতি এবং এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী ও বরাদ্ধকৃত অর্থ বা সম্পদের পরিমাণের বিবরণ প্রকাশ ও প্রচারের সর্বোচ্চ সময় ও মাধ্যমের সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যা করোনা বা যে কোন সংকটে তো বটেই সব সময়ই ভুক্তভোগী ছাড়াও সবারই প্রত্যাশিত।

সন্দেহ নেই, করোনা সংকটকালে বাংলাদেশ এমনকি পাশর্^বর্তী দেশসমূহসহ বিশে^র প্রায় সব দেশেই নাগরিকের আবেদন করে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রটি কিছুটা সংকুচিত হয়েছে। বিশে^র কোন কোন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণাসহ লকডাউন ইত্যাদি কারণে নাগরিকের তথ্য প্রাপ্তি ব্যাহত হয়েছে। করোনা সংকটে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিধানটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে নাগরিকের পক্ষে শারীরিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করা, এজন্য কয়েকটি ধাপ পার করে তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা কঠিন কাজ, স্বাস্থ্যবিধিসম্মতও নহে। অবশ্য বিকল্প হিসাবে অনলাইনে তথ্য প্রদান ও শুনানি বা সিদ্ধান্ত প্রদানের বিষয়টি জোরদার হয়েছে। বাংলাদেশের আইনটি যথেষ্ট অনলাইন বান্ধব। দেশে ইন্টারনেটসহ ডিজিটাল ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশেও তথ্যের আবেদন গ্রহণ, তথ্য প্রদান, শুনানি ও সিদ্ধান্ত অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে। তথাপি আমাদের এ বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য এখনও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এ সব বিবেচনায় সংকট উত্তরণে জনগণের প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রদানের বিষয়টি সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, সমাজসেবাসহ সব কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছায় তথ্য প্রদানে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এ সংকটকালে রাষ্ট্রের সব কর্তৃপক্ষই তার বিস্তৃত ও সঠিক তথ্য (প্রয়োজনে ডাটাসহ) বিশেষত : স্বাস্থ্য, জীবনরক্ষা ও জীবনকে নিরাপদে রাখার জরুরি তথ্য, স্বেচ্ছা প্রণোদিতভাবে সময়োচিত প্রকাশ ও প্রচার করে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন, স্বস্তি দিতে পারেন। সংকটকালে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যে সব সুবিধাভোগী, সুযোগসন্ধানী, ধান্ধাবাজ, ধড়িবাজ দুর্নীতি, আত্মসাৎ, তছরুপ, চুরি, ডাকাতি, জবরদখল ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানান অনৈতিক কর্মে লিপ্ত হন-তা তারা যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন তথ্যে জনগণের আইনি অধিকার নিশ্চিত হলে এসব অপকর্মের সুযোগ স্বয়ংক্রয়ভাবেই তিরোহিত হয়, সময়ের আবর্তে তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়। কর্তৃপক্ষও তার স্বচ্ছতা প্রমাণের সুযোগ পায়, সুশাসন প্রতিষ্ঠার সদিচ্ছা প্রতিভাত হয়, অনিয়ম দূরীভূত হয়, দুর্নীতি হ্রাসে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সংকট মুহূর্তে এগুলোর প্রয়োজনীয়তা বেশি অনুভূত হয়। এ প্রয়োজন মেটাতে তথ্য প্রবাহ হবে অবারিত যা হবে মূলত: স্থানীয় ভাষায়, হবে সহজলভ্য, বোধগম্য, প্রবেশগম্য এবং সহজলভ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। তথ্য হবে মানসম্মত, সঠিক ও উপযুক্ত, কর্তৃপক্ষের থাকবে সংরক্ষিত তথ্যের সর্বোচ্চ প্রকাশের ইতিবাচক মানসিকতা। এতে কর্তৃপক্ষের প্রতি জনগণের একাত্বতা তৈরি হয়। স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে প্রেস করফারেন্স, প্রেস ব্রিফিং, প্রেস নোট, ওয়েবসাইট, ভিডিও কনফারেন্স ইত্যাদি।

সংকট মোকাবিলায় অবাধ তথ্য প্রবাহ রচনার মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করার লক্ষ্যে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী সম্মুখ যোদ্ধাদের নিয়ে স্বয়ং সারাদেশে নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে জনজীবন রক্ষায় ও জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তায়, আর্থসামাজিক উন্নয়নে একদিকে যেমন জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করার প্রয়াস নিয়েছেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরূদ্ধারে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন, প্রণোদনা ও সহায়তা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন, এগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন অন্যদিকে সব কর্তৃপক্ষকে জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল রাখতে সচেষ্ট হয়েছেন যা সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে, দেশ-বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি জানান, করোনা ভ্যাকসিনের জন্য সব দেশেই আবেদন করা হয়েছে, প্রয়োজনীয় বাজেটের সংস্থান রাখা হয়েছে, যেখানে আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই নেয়া হবে। মহান সংসদে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর প্রদানসহ এহেন বক্তব্য সারাদেশে তথ্যের অবাধ প্রবাহ রচনা করে, জনগণকে সংকটে স্বস্তি দেয়, আশ্বস্ত করে, আশার আলো দেখায়।

স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রদানের আরেকটি বাধ্যতামূলক মাধ্যম কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটের তথ্য ও নির্দেশিকা সংকট উত্তরণে পথ দেখায়। তবে ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ থাকতে হবে, হতে হবে সহজলভ্য ও ব্যবহার উপযোগী। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটের মতো জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য কার্যালয়ের ওয়েবসাইটেও করোনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাদির একটি কর্নার থাকা জনস্বাস্থ্যের খাতিরে সমীচীন হবে।