রংপুর মেডিকেল কলেজের পিয়ন কোটিপতি!

রংপুর মেডিকেল কলেজের পিয়ন গোলাম মোস্তফা গোলাপ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একই কর্মস্থলে আছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ট্রান্সকিপ্ট সার্টিফিকেট, প্রত্যায়নপত্র আগাম প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এখন কোটি পতি। বিভাগীয় নগরী তার দৃষ্টিনন্দন বাড়িসহ ৬টি প্লটের মালিক এছাড়াও রংপুর ও ময়মনসিংহে ৩০ বিঘা জমিসহ ব্যাংকে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ দুদকে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে কলেজের কর্মচারীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজের পিয়ন গোলাপ চাকরি জীবনে প্রবেশ করেই ইতোপূর্বে যারাই কলেজের অধ্যাক্ষ পদে ছিলেন সবাইকে বিভিন্ন কৌশলে ম্যানেজ করে শিক্ষার্থী শাখায় তার জায়গা পাকা পোক্ত করেছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রংপুর মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্ট শাখায় পিয়ন হিসেবে কাজ করলেও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তার হেফাজতে থাকে। ওই শাখায় একজন অফিস সহকারী থাকলেও পিয়ন গোলাপ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পুরো স্টুডেন্ট শাখার কার্যালয় তার দখলে রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের এমনকি ইনটার্ন ডাক্তারদের জিম্মি করে জন প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গেও রয়েছে তার সখ্যতা তাদের সহায়তায় বিভিন্ন তদবির করেও হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

লিখিত অভিযোগে আরও জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেবার জন্য যেসব চিকিৎসক লেখাপড়া করছেন তাদের আগাম প্রশ্নপত্র সরবরাহ খাতার মূল সিট বাদ দিয়ে ভেতরের কাগজ সরবরাহ করেও হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও স্বাস্থ্য খাতের কথিত এক ডনের আশির্বাদ কেউই স্টুডেন্ট শাখা থেকে সরাতে পারেনি। এছাড়াও অধ্যাক্ষ হিসেবে ইতোপূর্বে যারাই কলেজে এর আগে এসেছিলেন সবাইকেই বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করেই স্টুডেন্ট শাখার সব কর্মকা- পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় কৌশলে ম্যানেজ করে কোটিপতি হয়েছেন। সেই সঙ্গে এর আগের সব অধ্যাক্ষকে ম্যানজে করে সার্বক্ষণিক তার তাবেদারি করে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোণঠাসা করে রেখেছিলেন। তবে বর্তমান অধ্যাক্ষ অধ্যাপক ডা. নুরন্নবী লাইজু স্টুডেন্ট শাখার পিয়ন হিসেবে কাজ করার জন্য দোতলায় অবস্থিত কার্যালয়ে তাকে সরিয়ে দিয়েছেন বলে কর্মচারীরা জানিয়েছেন।

এছাড়াও পিয়ন গোলাপের কাছে জিম্মি শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার অপকর্ম প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছেন। ফেসবুকে এসব শিক্ষার্থীদের দেয়া স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে গেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে পিয়ন গোলাপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে অনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোটিপতি নন তার তেমন কোন সম্পদ নেই একটি মহল ঈর্ষাণীত হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তবে অভিযোগকারীরা জরুরিভিত্তিতে পিয়ন গোলাপের সম্পদ বিবরণী তলব করে তদন্ত করে শাস্তি দাবি করেছেন।

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৯ মহররম ১৪৪২, ১০ আশ্বিন ১৪২৭

রংপুর মেডিকেল কলেজের পিয়ন কোটিপতি!

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

রংপুর মেডিকেল কলেজের পিয়ন গোলাম মোস্তফা গোলাপ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একই কর্মস্থলে আছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ট্রান্সকিপ্ট সার্টিফিকেট, প্রত্যায়নপত্র আগাম প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এখন কোটি পতি। বিভাগীয় নগরী তার দৃষ্টিনন্দন বাড়িসহ ৬টি প্লটের মালিক এছাড়াও রংপুর ও ময়মনসিংহে ৩০ বিঘা জমিসহ ব্যাংকে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ দুদকে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে কলেজের কর্মচারীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজের পিয়ন গোলাপ চাকরি জীবনে প্রবেশ করেই ইতোপূর্বে যারাই কলেজের অধ্যাক্ষ পদে ছিলেন সবাইকে বিভিন্ন কৌশলে ম্যানেজ করে শিক্ষার্থী শাখায় তার জায়গা পাকা পোক্ত করেছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রংপুর মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্ট শাখায় পিয়ন হিসেবে কাজ করলেও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তার হেফাজতে থাকে। ওই শাখায় একজন অফিস সহকারী থাকলেও পিয়ন গোলাপ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পুরো স্টুডেন্ট শাখার কার্যালয় তার দখলে রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের এমনকি ইনটার্ন ডাক্তারদের জিম্মি করে জন প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গেও রয়েছে তার সখ্যতা তাদের সহায়তায় বিভিন্ন তদবির করেও হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

লিখিত অভিযোগে আরও জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেবার জন্য যেসব চিকিৎসক লেখাপড়া করছেন তাদের আগাম প্রশ্নপত্র সরবরাহ খাতার মূল সিট বাদ দিয়ে ভেতরের কাগজ সরবরাহ করেও হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও স্বাস্থ্য খাতের কথিত এক ডনের আশির্বাদ কেউই স্টুডেন্ট শাখা থেকে সরাতে পারেনি। এছাড়াও অধ্যাক্ষ হিসেবে ইতোপূর্বে যারাই কলেজে এর আগে এসেছিলেন সবাইকেই বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করেই স্টুডেন্ট শাখার সব কর্মকা- পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় কৌশলে ম্যানেজ করে কোটিপতি হয়েছেন। সেই সঙ্গে এর আগের সব অধ্যাক্ষকে ম্যানজে করে সার্বক্ষণিক তার তাবেদারি করে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোণঠাসা করে রেখেছিলেন। তবে বর্তমান অধ্যাক্ষ অধ্যাপক ডা. নুরন্নবী লাইজু স্টুডেন্ট শাখার পিয়ন হিসেবে কাজ করার জন্য দোতলায় অবস্থিত কার্যালয়ে তাকে সরিয়ে দিয়েছেন বলে কর্মচারীরা জানিয়েছেন।

এছাড়াও পিয়ন গোলাপের কাছে জিম্মি শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার অপকর্ম প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছেন। ফেসবুকে এসব শিক্ষার্থীদের দেয়া স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে গেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে পিয়ন গোলাপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে অনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোটিপতি নন তার তেমন কোন সম্পদ নেই একটি মহল ঈর্ষাণীত হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তবে অভিযোগকারীরা জরুরিভিত্তিতে পিয়ন গোলাপের সম্পদ বিবরণী তলব করে তদন্ত করে শাস্তি দাবি করেছেন।