সাত মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এতদিন কারাগারে থেকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সে মুক্তি পান।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, জামিনের কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর তারা কাজলকে মুক্তি দেন। কাজলের ছেলে মনোরম পলক গণমাধ্যমকে বলেন, বাবা বাসায় ফিরেছেন। তবে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ও দুর্বল। এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন।
যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িতদের’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গত ৯ মার্চ ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। একই ঘটনায় পরে আরও দুটি মামলা হয় ঢাকার হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায়। সবগুলো মামলাই আসামির তালিকায় কাজলের নাম ছিল।
এক সময় দৈনিক সমকাল ও বণিক বার্তায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কাজল ‘পক্ষকাল’ নামের একটি পাক্ষিক পত্রিকা সম্পাদনা করছিলেন। মামলা হওয়ার পরদিন ১০ মার্চ বকশিবাজারের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরদিন কাজলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী চকবাজার থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। ১৮ মার্চ কাজলের সন্ধান চেয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন ছেলে মনোরম পলক। এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে অজ্ঞাতনামা কেউ তাকে ‘অপহরণ’ করেছে।
এক সময়ের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা কাজলের সন্ধান দাবিতে তার পুরনো রাজনৈতিক সহকর্মী, স্বজন ও সাংবাদিকদের আন্দোলনের মধ্যে কাজলের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ওই ফুটেজে কাজলকে একটি জায়গায় রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে পাশের কোথাও যেতে দেখা যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান তিনি। এর মধ্যে তার ওই মোটরসাইকেল ঘিরে কয়েকজনকে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়। প্রায় দুই মাস পর গত ২ মে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে কাজলকে গ্রেফতার করার কথা জানায় বিজিবি। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়।
যশোর থেকে ঢাকায় আনার পর ২৩ জুন কাজলকে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। হাকিম আদালত সেদিন কাজলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে। এরপর গত ২৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতও কাজলের জামিন আবেদন নাকচ করলে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনে গত ২৪ নভেম্বর এবং এরপর ১২ ডিসেম্বর অন্য দুই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান কাজল। সেই জামিনের কাগজ নিম্ন আদালত হয়ে কারাগারে পৌঁছলে গতকাল তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ১০ রবিউস সানি ১৪৪২
সাত মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এতদিন কারাগারে থেকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সে মুক্তি পান।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, জামিনের কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর তারা কাজলকে মুক্তি দেন। কাজলের ছেলে মনোরম পলক গণমাধ্যমকে বলেন, বাবা বাসায় ফিরেছেন। তবে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ও দুর্বল। এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন।
যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িতদের’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গত ৯ মার্চ ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। একই ঘটনায় পরে আরও দুটি মামলা হয় ঢাকার হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায়। সবগুলো মামলাই আসামির তালিকায় কাজলের নাম ছিল।
এক সময় দৈনিক সমকাল ও বণিক বার্তায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কাজল ‘পক্ষকাল’ নামের একটি পাক্ষিক পত্রিকা সম্পাদনা করছিলেন। মামলা হওয়ার পরদিন ১০ মার্চ বকশিবাজারের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরদিন কাজলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী চকবাজার থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। ১৮ মার্চ কাজলের সন্ধান চেয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন ছেলে মনোরম পলক। এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে অজ্ঞাতনামা কেউ তাকে ‘অপহরণ’ করেছে।
এক সময়ের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা কাজলের সন্ধান দাবিতে তার পুরনো রাজনৈতিক সহকর্মী, স্বজন ও সাংবাদিকদের আন্দোলনের মধ্যে কাজলের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ওই ফুটেজে কাজলকে একটি জায়গায় রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে পাশের কোথাও যেতে দেখা যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান তিনি। এর মধ্যে তার ওই মোটরসাইকেল ঘিরে কয়েকজনকে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়। প্রায় দুই মাস পর গত ২ মে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে কাজলকে গ্রেফতার করার কথা জানায় বিজিবি। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়।
যশোর থেকে ঢাকায় আনার পর ২৩ জুন কাজলকে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। হাকিম আদালত সেদিন কাজলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে। এরপর গত ২৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতও কাজলের জামিন আবেদন নাকচ করলে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনে গত ২৪ নভেম্বর এবং এরপর ১২ ডিসেম্বর অন্য দুই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান কাজল। সেই জামিনের কাগজ নিম্ন আদালত হয়ে কারাগারে পৌঁছলে গতকাল তাকে মুক্তি দেয়া হয়।