উপকূলের ছোঁয়ায় পাল্টে গেল প্রতিবন্ধী খুকীর জীবন

সাহেদা আক্তার চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের শামছুল হকের মেয়ে। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে সে তৃতীয়। ছোটবেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারান। এরপর দক্ষিণ খাজুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পঞ্চম শ্রেণী এবং জাফরাবাদ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় হতে এসএসসি পরীক্ষা দেন। বাবার অসুস্থততা এবং মৃত্যুর পর আর্থিক অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখা থামাতে হয়। পরবর্তীতে সেলাই কাজ শিখে অভাব মোচনের চেষ্টায় লিপ্ত হন।

কিন্তু অর্থাভাবে সেলাই মেশিন কিনতে পারছিল না বলে মন খারাপ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন উপকূল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত সমাজভিত্তিক প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কর্মসূচি থেকে একটি সেলাই মেশিন পেয়ে তার অর্থনৈতিক সংকট কাটতে শুরু করে। এরপর ওই সংস্থার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম হালিশহরে শ্যামলী আবাসিক এলাকায় একটি ছোট্ট বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে বাসাকেন্দ্রিক সেলাই কাজ শুরু করেন। অল্পদিনেই তার কাজের বেশ প্রসার হয়। সেলাই কাজের পাশাপাশি বেকার মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণও দিতে থাকেন।

শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে চ্যলেঞ্জ করে নিজেকে আর্থিকভাবে এবং সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সে নিরলস কাজ করে যেতে থাকে। ইতোমধ্যে উপকূল সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় হ্যান্ডিক্যাপ্ট ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে একটি কৃত্রিম পা সংযোজন করে কিছুটা স্বাভাবিক চলাফেরার সুযোগ পায়। বর্তমানে সে খুব সুনামের সঙ্গে সেলাই কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং সাহেদা বর্তমানে অনেক সচ্ছল। নিজের আয় থেকে তার মাকেও সহায়তা করছে। জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় মহিলাবিষয়ক অধিদফতর কর্তৃক দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে সফলতা অর্জকারী নারী ক্যাটাগরিতে মিরসরাই উপজেলা পর্যায়ে এবং চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন।

শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ১০ রবিউস সানি ১৪৪২

চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা

উপকূলের ছোঁয়ায় পাল্টে গেল প্রতিবন্ধী খুকীর জীবন

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

সাহেদা আক্তার চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের শামছুল হকের মেয়ে। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে সে তৃতীয়। ছোটবেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারান। এরপর দক্ষিণ খাজুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পঞ্চম শ্রেণী এবং জাফরাবাদ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় হতে এসএসসি পরীক্ষা দেন। বাবার অসুস্থততা এবং মৃত্যুর পর আর্থিক অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখা থামাতে হয়। পরবর্তীতে সেলাই কাজ শিখে অভাব মোচনের চেষ্টায় লিপ্ত হন।

কিন্তু অর্থাভাবে সেলাই মেশিন কিনতে পারছিল না বলে মন খারাপ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন উপকূল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত সমাজভিত্তিক প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কর্মসূচি থেকে একটি সেলাই মেশিন পেয়ে তার অর্থনৈতিক সংকট কাটতে শুরু করে। এরপর ওই সংস্থার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম হালিশহরে শ্যামলী আবাসিক এলাকায় একটি ছোট্ট বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে বাসাকেন্দ্রিক সেলাই কাজ শুরু করেন। অল্পদিনেই তার কাজের বেশ প্রসার হয়। সেলাই কাজের পাশাপাশি বেকার মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণও দিতে থাকেন।

শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে চ্যলেঞ্জ করে নিজেকে আর্থিকভাবে এবং সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সে নিরলস কাজ করে যেতে থাকে। ইতোমধ্যে উপকূল সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় হ্যান্ডিক্যাপ্ট ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে একটি কৃত্রিম পা সংযোজন করে কিছুটা স্বাভাবিক চলাফেরার সুযোগ পায়। বর্তমানে সে খুব সুনামের সঙ্গে সেলাই কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং সাহেদা বর্তমানে অনেক সচ্ছল। নিজের আয় থেকে তার মাকেও সহায়তা করছে। জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় মহিলাবিষয়ক অধিদফতর কর্তৃক দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে সফলতা অর্জকারী নারী ক্যাটাগরিতে মিরসরাই উপজেলা পর্যায়ে এবং চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন।