দুর্গম উপজেলা রাঙ্গাবালীতেও পল্লীবিদ্যুৎ

দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা আরইবি’র আওতাধীন গ্রিডভুক্ত ৪৬১টি উপজেলা এবং অফগ্রিডে ১টি উপজেলাসহ (পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলা) মোট ১০৫৯টি গ্রাম রয়েছে। আরইবি তার ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে গ্রিডভুক্ত ৪৬১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে ২৮৮টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করেন এবং অবশিষ্ট ১৭৩টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া অফগ্রিড এলাকার মোট ১০৫৯টি গ্রামে (অফগ্রিড রাঙ্গাবালী উপজেলাসহ) শতভাগ বিদ্যুতায়ন মুজিববর্ষেই (ডিসেম্বর, ২০২০) সম্পন্ন হবে।

অফগ্রিড অঞ্চল বলতে মূলত বোঝায় দূর্গম চর, দ্বীপ ও উপকূলীয় ভূ-সীমানাকে, যেগুলো বছরের বেশিরভাগ সময়ই মূল ভূ-ভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। পল্লী বিদ্যুতের শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমে এই অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করায় বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে যাচ্ছে এই প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক। ফলশ্রুতিতে, বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র অফগ্রিড উপজেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালিতেও। ওই ১০৫৯টি গ্রামে ৩টি ধাপে এ বিদ্যুতায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে যার মধ্যে ১ম ধাপের ৬৪৬টি গ্রাম তুলনামূলকভাবে কম প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। ৩৫টি স্থানে কম/বেশি ২ কিলোমিটার পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা নদী অতিক্রম করে গ্রামসমূহ গ্রিড লাইনে বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব। চলমান প্রকল্পে লাইন ও উপকেন্দ্র নির্মাণের সংস্থান বৃদ্ধি এবং আরইবি অর্থায়নে সাবমেরিন ক্যাবল ক্রয়পূর্বক গ্রামসমূহের ১.৫৫ লাখ গ্রাহককে গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।

২য় ধাপের ৩৮৪টি গ্রাম দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। ৫০টি স্থানে সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা নদী অতিক্রম করে গ্রামসমূহ গ্রিড লাইনে বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব। এসব নদী/চরের প্রশস্ততা তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের স্পেসিফিকেশন হালনাগাদকপূর্বক গ্রামসমূহের ৯০ হাজার গ্রাহককে গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে চলছে। ৩য় ধাপের অন্তর্ভুক্ত অবশিষ্ট ২৯টি গ্রাম অতি প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। অধিকাংশ গ্রামেই স্থায়ী জনবসতি নেই। কেবলমাত্র শুষ্ক মৌসুমে বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ বসবাস করায় গ্রাহক ঘনত্ব অত্যন্ত কম। ওই ২৯টি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার গ্রাহকের জন্য সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের কার্যব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মুজিববর্ষেই বিদ্যুতায়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে। তবে বাংলাদেশের জলবায়ুর ওপর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভরশীল। এমতাবস্থায়, আশা করা যাচ্ছে বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই অফগ্রিড এলাকার গ্রামগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ মুজিববর্ষেই আলোকিত হবে সমগ্র বাংলাদেশ।

আরইবি বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছে। আবাসিক সংযোগের পাশাপাশি আরইবি জুন-২০২০ পর্যন্ত প্রায় ১.৮০ লাখ ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা, ১৩ হাজার ৫০০টি মাঝারি শিল্প কারখানা, ৩৭৫টি বৃহৎ শিল্প কারখানা, ৮টি ইপিজেড ও ৩.৬০ লাখ সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছে। ফলশ্রুতিতে, দেশের প্রায় ১৪ কোটি জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকল্পে সংস্থাটি ৫ দশমিক ৩০ লাখ কি.মি. বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং ১০৭০টি সাবস্টেশন নির্মাণ করেছে। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’, এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশের অগ্রসর এবং অনগ্রসর সব পর্যায়ের জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনার মাধ্যমে দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আরইবি ভূমিকা রাখছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ , ১২ পৌষ ১৪২৭, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

দুর্গম উপজেলা রাঙ্গাবালীতেও পল্লীবিদ্যুৎ

দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা আরইবি’র আওতাধীন গ্রিডভুক্ত ৪৬১টি উপজেলা এবং অফগ্রিডে ১টি উপজেলাসহ (পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলা) মোট ১০৫৯টি গ্রাম রয়েছে। আরইবি তার ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে গ্রিডভুক্ত ৪৬১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে ২৮৮টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করেন এবং অবশিষ্ট ১৭৩টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া অফগ্রিড এলাকার মোট ১০৫৯টি গ্রামে (অফগ্রিড রাঙ্গাবালী উপজেলাসহ) শতভাগ বিদ্যুতায়ন মুজিববর্ষেই (ডিসেম্বর, ২০২০) সম্পন্ন হবে।

অফগ্রিড অঞ্চল বলতে মূলত বোঝায় দূর্গম চর, দ্বীপ ও উপকূলীয় ভূ-সীমানাকে, যেগুলো বছরের বেশিরভাগ সময়ই মূল ভূ-ভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। পল্লী বিদ্যুতের শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমে এই অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করায় বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে যাচ্ছে এই প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক। ফলশ্রুতিতে, বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র অফগ্রিড উপজেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালিতেও। ওই ১০৫৯টি গ্রামে ৩টি ধাপে এ বিদ্যুতায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে যার মধ্যে ১ম ধাপের ৬৪৬টি গ্রাম তুলনামূলকভাবে কম প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। ৩৫টি স্থানে কম/বেশি ২ কিলোমিটার পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা নদী অতিক্রম করে গ্রামসমূহ গ্রিড লাইনে বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব। চলমান প্রকল্পে লাইন ও উপকেন্দ্র নির্মাণের সংস্থান বৃদ্ধি এবং আরইবি অর্থায়নে সাবমেরিন ক্যাবল ক্রয়পূর্বক গ্রামসমূহের ১.৫৫ লাখ গ্রাহককে গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।

২য় ধাপের ৩৮৪টি গ্রাম দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। ৫০টি স্থানে সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা নদী অতিক্রম করে গ্রামসমূহ গ্রিড লাইনে বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব। এসব নদী/চরের প্রশস্ততা তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের স্পেসিফিকেশন হালনাগাদকপূর্বক গ্রামসমূহের ৯০ হাজার গ্রাহককে গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে চলছে। ৩য় ধাপের অন্তর্ভুক্ত অবশিষ্ট ২৯টি গ্রাম অতি প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। অধিকাংশ গ্রামেই স্থায়ী জনবসতি নেই। কেবলমাত্র শুষ্ক মৌসুমে বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ বসবাস করায় গ্রাহক ঘনত্ব অত্যন্ত কম। ওই ২৯টি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার গ্রাহকের জন্য সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের কার্যব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মুজিববর্ষেই বিদ্যুতায়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে। তবে বাংলাদেশের জলবায়ুর ওপর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভরশীল। এমতাবস্থায়, আশা করা যাচ্ছে বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই অফগ্রিড এলাকার গ্রামগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ মুজিববর্ষেই আলোকিত হবে সমগ্র বাংলাদেশ।

আরইবি বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছে। আবাসিক সংযোগের পাশাপাশি আরইবি জুন-২০২০ পর্যন্ত প্রায় ১.৮০ লাখ ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা, ১৩ হাজার ৫০০টি মাঝারি শিল্প কারখানা, ৩৭৫টি বৃহৎ শিল্প কারখানা, ৮টি ইপিজেড ও ৩.৬০ লাখ সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছে। ফলশ্রুতিতে, দেশের প্রায় ১৪ কোটি জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকল্পে সংস্থাটি ৫ দশমিক ৩০ লাখ কি.মি. বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং ১০৭০টি সাবস্টেশন নির্মাণ করেছে। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’, এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশের অগ্রসর এবং অনগ্রসর সব পর্যায়ের জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনার মাধ্যমে দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আরইবি ভূমিকা রাখছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।