আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের ভেতর নারী বন্দীদের জন্য পৃথক আরেকটি কারাগার নির্মাণ করেছে কারা অধিদফতর। নতুন এই কারাগারটির নাম মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার ঢাকা। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই কারাগারটি আজ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে নারী বন্দীদের জন্য গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার রয়েছে। এটি নারীদের জন্য প্রথম পৃথক কারাগার। এখন কেরানীগঞ্জের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারটি হবে দ্বিতীয়। এখানে বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্ত নারী বন্দীদের রাখা হবে। ফলে ঢাকা বা দক্ষিণাঞ্চলের বন্দীদের আর কাশিমপুরে নিতে হবে না। নতুন এই কারাগারটি পরিচালনা করবেন কারা অধিদফতরের নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কারাসূত্র জানায়, এ কারাগারে রয়েছে বিশাল মাঠ, ফুলের বাগান ও গ্রন্থাগার। এসব সুযোগ-সুবিধা বন্দীদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পুরুষ বন্দীদের কেরানীগঞ্জের কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তখন নারী বন্দীদের কাশিমপুরের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এখন কাশিমপুর কারাগারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি বন্দী বাস করছেন। তাই কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের (১৯৪ একর জমি) আওতায় নারীদের জন্য পৃথকভাবে ওই মহিলা কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে। গত মার্চে কারাগারটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও করোনার কারণে তা চালু করা হয়নি। আজ কারাগারটি উদ্বোধন হলেও আপাতত সেখানে বন্দী রাখা হবে না। করোনার প্রকোপ কমলে ক্রমান্বয়ে সেখানে বন্দীদের আনা হবে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব-উত্তর কোণে রয়েছে নবনির্মিত মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার। কারাগারের উত্তর পাশে রয়েছে নান্দনিক নকশার চারতলার একটি ভবন। নাম বেগম রোকেয়া বন্দী ব্যারাক। এই ব্যারাকে ১৬টি ওয়ার্ডে ৩০০ জন বন্দী একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। দক্ষিণ পাশে রয়েছে পুকুরসংলগ্ন আরেকটি ভবন। নাম ইলা মিত্র সেন ভবন। এখানে ২৮টি কক্ষ রয়েছে। এর পাশেই রয়েছে সুলতানা রাজিয়া ডিভিশনাল ভবন। সেখানে ১০ জন ভিআইপি বন্দী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পাশেই ডা. কাদম্বিনী মেডিকেল কারা হাসাপতাল। এছাড়া কারাগারের ভেতর বিশাল মাঠ পেরিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে মানসিক রোগীদের জন্য মেন্টাল ওয়ার্ড, ওয়াশিং প্লান্ট, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গ্রন্থাগার। পশ্চিম ব্লকে রয়েছে প্রীতিলতা কিশোরী ভবন। এই ভবনে ১৮ বছরের কম বয়সের কিশোরী বন্দীদের প্রাথমিকভাবে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত মার্চে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্মাণকাজ শেষে তা কারা অধিদফতরকে বুঝিয়ে দেন প্রকল্প পরিচালক জুহুরুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের প্রায় ৩০ একর জায়গায় নারী বন্দীদের জন্য ওই কারাগারটি নির্মাণ করা হয়। সেখানে নারীদের জন্য আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। রয়েছে বিশাল মাঠ, লেক, ফুলের বাগান ও গ্রন্থাগার। এসব সুযোগ-সুবিধা বন্দীদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে বলে আশা করি। মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সার্বিক কর্মকা- তদারকি করছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, এই কারাগারটি উদ্বোধনের পর কাশিমপুরসহ দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে নারী বন্দীদের কেরানীগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। এতে নারী বন্দীদের আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে।
রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ , ১২ পৌষ ১৪২৭, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের ভেতর নারী বন্দীদের জন্য পৃথক আরেকটি কারাগার নির্মাণ করেছে কারা অধিদফতর। নতুন এই কারাগারটির নাম মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার ঢাকা। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই কারাগারটি আজ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে নারী বন্দীদের জন্য গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার রয়েছে। এটি নারীদের জন্য প্রথম পৃথক কারাগার। এখন কেরানীগঞ্জের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারটি হবে দ্বিতীয়। এখানে বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্ত নারী বন্দীদের রাখা হবে। ফলে ঢাকা বা দক্ষিণাঞ্চলের বন্দীদের আর কাশিমপুরে নিতে হবে না। নতুন এই কারাগারটি পরিচালনা করবেন কারা অধিদফতরের নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কারাসূত্র জানায়, এ কারাগারে রয়েছে বিশাল মাঠ, ফুলের বাগান ও গ্রন্থাগার। এসব সুযোগ-সুবিধা বন্দীদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পুরুষ বন্দীদের কেরানীগঞ্জের কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তখন নারী বন্দীদের কাশিমপুরের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এখন কাশিমপুর কারাগারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি বন্দী বাস করছেন। তাই কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের (১৯৪ একর জমি) আওতায় নারীদের জন্য পৃথকভাবে ওই মহিলা কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে। গত মার্চে কারাগারটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও করোনার কারণে তা চালু করা হয়নি। আজ কারাগারটি উদ্বোধন হলেও আপাতত সেখানে বন্দী রাখা হবে না। করোনার প্রকোপ কমলে ক্রমান্বয়ে সেখানে বন্দীদের আনা হবে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব-উত্তর কোণে রয়েছে নবনির্মিত মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার। কারাগারের উত্তর পাশে রয়েছে নান্দনিক নকশার চারতলার একটি ভবন। নাম বেগম রোকেয়া বন্দী ব্যারাক। এই ব্যারাকে ১৬টি ওয়ার্ডে ৩০০ জন বন্দী একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। দক্ষিণ পাশে রয়েছে পুকুরসংলগ্ন আরেকটি ভবন। নাম ইলা মিত্র সেন ভবন। এখানে ২৮টি কক্ষ রয়েছে। এর পাশেই রয়েছে সুলতানা রাজিয়া ডিভিশনাল ভবন। সেখানে ১০ জন ভিআইপি বন্দী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পাশেই ডা. কাদম্বিনী মেডিকেল কারা হাসাপতাল। এছাড়া কারাগারের ভেতর বিশাল মাঠ পেরিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে মানসিক রোগীদের জন্য মেন্টাল ওয়ার্ড, ওয়াশিং প্লান্ট, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গ্রন্থাগার। পশ্চিম ব্লকে রয়েছে প্রীতিলতা কিশোরী ভবন। এই ভবনে ১৮ বছরের কম বয়সের কিশোরী বন্দীদের প্রাথমিকভাবে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত মার্চে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্মাণকাজ শেষে তা কারা অধিদফতরকে বুঝিয়ে দেন প্রকল্প পরিচালক জুহুরুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের প্রায় ৩০ একর জায়গায় নারী বন্দীদের জন্য ওই কারাগারটি নির্মাণ করা হয়। সেখানে নারীদের জন্য আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। রয়েছে বিশাল মাঠ, লেক, ফুলের বাগান ও গ্রন্থাগার। এসব সুযোগ-সুবিধা বন্দীদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে বলে আশা করি। মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সার্বিক কর্মকা- তদারকি করছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, এই কারাগারটি উদ্বোধনের পর কাশিমপুরসহ দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে নারী বন্দীদের কেরানীগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। এতে নারী বন্দীদের আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে।