বিকাশ একাউন্ট আপডেট দেয়ার নামে জালিয়াতি

সারাদেশে প্রতারক চক্র তৈরি করেছে নেটওয়ার্ক হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা

প্রতারণার মাধ্যমে পার্সোনাল বিকাশ ও এজেন্ট বিকাশের মালিকদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। বিকাশ একাউন্ট আপডেট দেয়ার নামে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছর ধরে তারা গ্রুপ করে বিকাশ প্রতারণা করছে। করোনা মহামারীর মধ্যে এ প্রতারক চক্র বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ইউনিট আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত তিন বিকাশ প্রতারককে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে ভয়াবহ কাহিনী। তারা বিকাশ এজেন্টসহ অর্ধশতের বেশি ব্যক্তির ১৫ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ বিকাশ এজেন্টের ৬৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিম সূত্র জানায়, মামলার বাদী রায়হান আলীর ব্যবহৃত (বিকাশ এজেন্ট) একাউন্ট নং-০১৮১০-০১৭৪৪৮তে মোবাইল নং-০১৮৮৮-০১৭৯১১ থেকে ফোন আসে। বাদী ফোন রিসিভ করলে অপর প্রান্ত থেকে বিকাশ অফিসের পরিচয় দিয়ে বলে যে, আপনার বিকাশ একাউন্ট নম্বর আপডেট করতে হবে। বাদী বিকাশের নতুন ব্যবসায়ী হওয়ায় এবং এতো কিছু বুঝে ওঠতে না পারায় ফোনটা কেটে দেয়। তারপর মোবাইল নং-০১৮৩৬-৪৪৯২৫২, ০১৩১২-৭২৮৮৮৫, ০১৮২৩-৮০৮৩৩২ ও ০১৩০৬-৪০০৯৮২ থেকে বাদী ব্যবহৃত পার্সোনাল একাউন্ট নাম্বার ০১৭৬৮-৭৫২৭১৯তে কয়েক মিনিট পরপর ফোন আসলে বাদী তাদের ফোন রিসিভ করলে তারা বলে যে, আপনার একাউন্ট অপডেট করার জন্য ম্যাসেজ প্রেরণ করেছি। বাদী ম্যাসেজ দেখে তাদের বিকাশ অফিসের বিকাশ প্রতিনিধি বিশ^াস করে তার পিন নম্বর দিয়ে দেয় লটারি জেতার, বাড়ি বা গাড়ি জেতার, মোবাইলে ভুল করে টাকা গিয়াছে বলে ভুয়া বিকাশের ম্যাসেজ দিয়ে, বিকাশ একাউন্ট আপডেট করতে হবে, বিকাশ একাউন্ট আপডেট না করলে আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হবে ইত্যাদি এভাবে সর্বমোট= ৬৬,০০০/- (ছেষট্টি হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয়।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের গত ২৪ ডিসেম্বর সোয়া ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমি পল্লী আবাসিক এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে ১. মো. রুবেল মাতুব্বর (৩৩), ২. পারভেজ কবিরাজ (২০) ও ৩. মিরাজুল ইসলাম (২৪)কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছে থেকে ১৫টি মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন কোম্পানির ২০টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের এ চক্রটি দেশব্যাপী বিস্তৃত। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে ২ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে।

ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহর নেতৃতে অভিযান চালানো হয়।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিকাশ প্রতারক চক্র সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফরিদপুরে তাদের ১৫ থেকে ২০টি গ্রুপ রয়েছে। শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এলাকায়ও গ্রুপ রয়েছে। গ্রেফতারকৃত ৩ প্রতারক গত দুই বছর ধরে ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

আরও খবর
বিএনপির রাজনীতি কচ্ছপের মতো কাদের
তথ্য ও প্রযুক্তির সুফল অর্থনীতির চালিকাশক্তি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবি
বিমানের ড্যাশ ৮-৪০০ ধ্রুবতারা উড়োজাহাজের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
রাষ্ট্রপতির শিল্পোন্নয়ন পুরস্কার পাচ্ছে ১৯ প্রতিষ্ঠান
পুলিশের ডিআইজি হলেন ১১ কর্মকর্তা
পুলিশে মাদকাসক্তের কোন স্থান নেই আইজিপি
সরকারি চাকরিতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে ডোপ টেস্টের নির্দেশ
মামলায় সাক্ষ্য দিলেন আরও দু’জন
কুমিল্লায় জলাবদ্ধতা নিরূপণে ড্রোন
দিন বদলায়, চরের মানুষের জীবন বদলায় না
৬০ কার্যদিবসের মামলা ৭ বছরেও শেষ হয় না বিলস

সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ , ১৩ পৌষ ১৪২৭, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

বিকাশ একাউন্ট আপডেট দেয়ার নামে জালিয়াতি

সারাদেশে প্রতারক চক্র তৈরি করেছে নেটওয়ার্ক হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা

বাকী বিল্লাহ

প্রতারণার মাধ্যমে পার্সোনাল বিকাশ ও এজেন্ট বিকাশের মালিকদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। বিকাশ একাউন্ট আপডেট দেয়ার নামে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছর ধরে তারা গ্রুপ করে বিকাশ প্রতারণা করছে। করোনা মহামারীর মধ্যে এ প্রতারক চক্র বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ইউনিট আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত তিন বিকাশ প্রতারককে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে ভয়াবহ কাহিনী। তারা বিকাশ এজেন্টসহ অর্ধশতের বেশি ব্যক্তির ১৫ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ বিকাশ এজেন্টের ৬৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিম সূত্র জানায়, মামলার বাদী রায়হান আলীর ব্যবহৃত (বিকাশ এজেন্ট) একাউন্ট নং-০১৮১০-০১৭৪৪৮তে মোবাইল নং-০১৮৮৮-০১৭৯১১ থেকে ফোন আসে। বাদী ফোন রিসিভ করলে অপর প্রান্ত থেকে বিকাশ অফিসের পরিচয় দিয়ে বলে যে, আপনার বিকাশ একাউন্ট নম্বর আপডেট করতে হবে। বাদী বিকাশের নতুন ব্যবসায়ী হওয়ায় এবং এতো কিছু বুঝে ওঠতে না পারায় ফোনটা কেটে দেয়। তারপর মোবাইল নং-০১৮৩৬-৪৪৯২৫২, ০১৩১২-৭২৮৮৮৫, ০১৮২৩-৮০৮৩৩২ ও ০১৩০৬-৪০০৯৮২ থেকে বাদী ব্যবহৃত পার্সোনাল একাউন্ট নাম্বার ০১৭৬৮-৭৫২৭১৯তে কয়েক মিনিট পরপর ফোন আসলে বাদী তাদের ফোন রিসিভ করলে তারা বলে যে, আপনার একাউন্ট অপডেট করার জন্য ম্যাসেজ প্রেরণ করেছি। বাদী ম্যাসেজ দেখে তাদের বিকাশ অফিসের বিকাশ প্রতিনিধি বিশ^াস করে তার পিন নম্বর দিয়ে দেয় লটারি জেতার, বাড়ি বা গাড়ি জেতার, মোবাইলে ভুল করে টাকা গিয়াছে বলে ভুয়া বিকাশের ম্যাসেজ দিয়ে, বিকাশ একাউন্ট আপডেট করতে হবে, বিকাশ একাউন্ট আপডেট না করলে আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হবে ইত্যাদি এভাবে সর্বমোট= ৬৬,০০০/- (ছেষট্টি হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয়।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের গত ২৪ ডিসেম্বর সোয়া ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমি পল্লী আবাসিক এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে ১. মো. রুবেল মাতুব্বর (৩৩), ২. পারভেজ কবিরাজ (২০) ও ৩. মিরাজুল ইসলাম (২৪)কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছে থেকে ১৫টি মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন কোম্পানির ২০টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের এ চক্রটি দেশব্যাপী বিস্তৃত। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে ২ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে।

ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহর নেতৃতে অভিযান চালানো হয়।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিকাশ প্রতারক চক্র সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফরিদপুরে তাদের ১৫ থেকে ২০টি গ্রুপ রয়েছে। শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এলাকায়ও গ্রুপ রয়েছে। গ্রেফতারকৃত ৩ প্রতারক গত দুই বছর ধরে ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।