কুমিল্লায় জলাবদ্ধতা নিরূপণে ড্রোন

কৃষিতে নতুন দিগন্ত

কুমিল্লায় জলাবদ্ধতা নিরূপণে প্রথমবারের মতো ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অধীনে কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জলাবদ্ধতা দূর করতে এ ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার বর্তমান অবস্থা এবং বাস্তবায়নের পর প্রকল্প এলাকার অগ্রগতি বিবেচনা করে প্রকল্প মূল্যায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। এ কাজে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রাস্ট সেন্টার ফর এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)। এরই অংশ হিসেবে এক সপ্তাহ আগে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি মৌজা পরিদর্শন করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে বলে জানান বিএডিসি’র কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি, বড় ও ছোট হরিনা মৌজার প্রায় ১৫০ একর জমিতে ফসল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই এলাকার মানুষ প্রায় ৪শ’ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই প্রকল্প এলাকার অনেক জায়গায় এ ধরনের জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে। মাঠপর্যায়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান করতে এবং ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিএডিসি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের উত্তর তেতৈয়ারা, গাজীপুর, সদর দক্ষিণ উপজেলার শ্রীবল্লভপুর, দাউদকান্দি উপজেলার সোনাকান্দা, বড় হরিনা বামায়েতকান্দি, খৈরাখালী, মুরাদনগর উপজেলার পরমতলা, মেটংঘর, তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি, জোয়ার গোবিন্দপুর, দড়িকান্দি, মাছিমপুর, হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বরুড়া উপজেলার ঘোষপা, বনকরা, কাশেড্ডা, পুরান কাদবা, দৌলতপুর, শুশুন্ডা, জিকুটিয়া, পদুয়ারপাড়, বেতুয়া ও বৈইশকোলা মৌজার জলাবদ্ধ স্থান চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হয়েছে।

এদিকে গত ১৯ ডিসেম্বর জলাবদ্ধ স্থানটি ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কর্মকর্তারা। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং জলাবদ্ধতার কারণে ভুক্তভোগী প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে তারা মতবিনিময় করেন।

সিইজিআইএস-এর কৃষি বিভাগের সিনিয়র স্পেশালিস্ট মো. আবদুর রশিদ জানান, ‘জলাবদ্ধ এলাকার পরিমাণ ও কারণ নির্ণয়ে আমরা ড্রোনের মাধ্যমে বিএডিসিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছি। এছাড়া কারণ অনুসন্ধান করে জলবদ্ধতা নিরসনেও পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি বলেন, জলাবদ্ধ চিহ্নিত স্থানগুলোতে স্থানীয় জনগণের মতামত নিয়ে বিগত সময়ে কি অবস্থায় ছিল, তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্যাটেলাইট মাধ্যমে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিএডিসি’র কার্যক্রমের পর আমরা পুনরায় এসব স্থান মনিটরিং করছি।’

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর মধ্যেও বাংলাদেশের কৃষিকে তথা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বিভিন্ন সাহসী উদ্যোগ ও নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য বিএডিসি কুমিল্লা পরিবার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ড্রোনের মাধ্যমে জলাবদ্ধ এলাকার পরিমাণ এবং তার কারণ চিহ্নিত করে সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য কাজ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্য স্থানেও জলাবদ্ধ স্থানগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

image
আরও খবর
বিএনপির রাজনীতি কচ্ছপের মতো কাদের
তথ্য ও প্রযুক্তির সুফল অর্থনীতির চালিকাশক্তি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবি
বিমানের ড্যাশ ৮-৪০০ ধ্রুবতারা উড়োজাহাজের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
রাষ্ট্রপতির শিল্পোন্নয়ন পুরস্কার পাচ্ছে ১৯ প্রতিষ্ঠান
পুলিশের ডিআইজি হলেন ১১ কর্মকর্তা
পুলিশে মাদকাসক্তের কোন স্থান নেই আইজিপি
সরকারি চাকরিতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে ডোপ টেস্টের নির্দেশ
মামলায় সাক্ষ্য দিলেন আরও দু’জন
বিকাশ একাউন্ট আপডেট দেয়ার নামে জালিয়াতি
দিন বদলায়, চরের মানুষের জীবন বদলায় না
৬০ কার্যদিবসের মামলা ৭ বছরেও শেষ হয় না বিলস

সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ , ১৩ পৌষ ১৪২৭, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

কুমিল্লায় জলাবদ্ধতা নিরূপণে ড্রোন

কৃষিতে নতুন দিগন্ত

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুমিল্লা

image

কুমিল্লায় জলাবদ্ধতা নিরূপণে প্রথমবারের মতো ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অধীনে কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জলাবদ্ধতা দূর করতে এ ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার বর্তমান অবস্থা এবং বাস্তবায়নের পর প্রকল্প এলাকার অগ্রগতি বিবেচনা করে প্রকল্প মূল্যায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। এ কাজে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রাস্ট সেন্টার ফর এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)। এরই অংশ হিসেবে এক সপ্তাহ আগে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি মৌজা পরিদর্শন করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে বলে জানান বিএডিসি’র কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি, বড় ও ছোট হরিনা মৌজার প্রায় ১৫০ একর জমিতে ফসল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই এলাকার মানুষ প্রায় ৪শ’ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই প্রকল্প এলাকার অনেক জায়গায় এ ধরনের জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে। মাঠপর্যায়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান করতে এবং ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিএডিসি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের উত্তর তেতৈয়ারা, গাজীপুর, সদর দক্ষিণ উপজেলার শ্রীবল্লভপুর, দাউদকান্দি উপজেলার সোনাকান্দা, বড় হরিনা বামায়েতকান্দি, খৈরাখালী, মুরাদনগর উপজেলার পরমতলা, মেটংঘর, তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি, জোয়ার গোবিন্দপুর, দড়িকান্দি, মাছিমপুর, হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বরুড়া উপজেলার ঘোষপা, বনকরা, কাশেড্ডা, পুরান কাদবা, দৌলতপুর, শুশুন্ডা, জিকুটিয়া, পদুয়ারপাড়, বেতুয়া ও বৈইশকোলা মৌজার জলাবদ্ধ স্থান চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হয়েছে।

এদিকে গত ১৯ ডিসেম্বর জলাবদ্ধ স্থানটি ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কর্মকর্তারা। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং জলাবদ্ধতার কারণে ভুক্তভোগী প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে তারা মতবিনিময় করেন।

সিইজিআইএস-এর কৃষি বিভাগের সিনিয়র স্পেশালিস্ট মো. আবদুর রশিদ জানান, ‘জলাবদ্ধ এলাকার পরিমাণ ও কারণ নির্ণয়ে আমরা ড্রোনের মাধ্যমে বিএডিসিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছি। এছাড়া কারণ অনুসন্ধান করে জলবদ্ধতা নিরসনেও পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি বলেন, জলাবদ্ধ চিহ্নিত স্থানগুলোতে স্থানীয় জনগণের মতামত নিয়ে বিগত সময়ে কি অবস্থায় ছিল, তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্যাটেলাইট মাধ্যমে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিএডিসি’র কার্যক্রমের পর আমরা পুনরায় এসব স্থান মনিটরিং করছি।’

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর মধ্যেও বাংলাদেশের কৃষিকে তথা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বিভিন্ন সাহসী উদ্যোগ ও নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য বিএডিসি কুমিল্লা পরিবার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ড্রোনের মাধ্যমে জলাবদ্ধ এলাকার পরিমাণ এবং তার কারণ চিহ্নিত করে সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য কাজ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্য স্থানেও জলাবদ্ধ স্থানগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’