চালের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নেয়া হচ্ছে না

অঘ্রানী ধান উঠার মৌসুমে পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বাড়ছে চালের দাম। এক সপ্তাহ আগে যে চালের দাম ছিল প্রতি কেজি ৫৮ টাকা, গত রোববার সেই চাল বিক্রি হয়েছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকায়। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ থেকে ৭ টাকা।

রহস্যজনক কারণেই চালের দাম বাড়ছে। এটা সত্য যে, এ বছর সরকারিভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তবে এর মজুদ মোটামুটি পর্যায়ে আছে। চলতি বছর চার দফা বন্যায় আউশ ও আমন ফলনের কিছু ক্ষতি হয়েছে। সরকারিভাবে উৎপাদনের যে পরিসংখ্যান আছে, তাতে চালের এত ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, বন্যার কারণে এ বছর ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল কম উৎপাদন হতে পারে। কিন্তু যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হবে, তা দিয়ে আগামী জুন পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়েও ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকার কথা। এরপরও কেন এর দাম হু হু করে বাড়ছে সেটাই প্রশ্ন।

চালের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য আমদানি শুল্ক ৬২.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। সাধারণত দেখা যায় যে, আমদানির ঘোষণা এলে পণ্যের দাম কমে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও কোন ইতিবাচক চিত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে চালের দাম বাড়ছে। চালের দাম বাড়লে কৃষক লাভবান হয় না, ভোক্তার পকেট কাটা যায়। কেবল মধ্যস্বত্বভোগীরাই মুনাফা লোটে। চালের সিন্ডিকেটের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকার কারো হুমকিতে মাথা নত করে না। প্রশ্ন হচ্ছে, কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন? আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক। চালের অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। যারা চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শুধু হুশিয়ারিতে এতদিন কাজ হয়নি, আগামীতেও হবে না।

মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ , ১৪ পৌষ ১৪২৭, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

চালের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নেয়া হচ্ছে না

অঘ্রানী ধান উঠার মৌসুমে পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বাড়ছে চালের দাম। এক সপ্তাহ আগে যে চালের দাম ছিল প্রতি কেজি ৫৮ টাকা, গত রোববার সেই চাল বিক্রি হয়েছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকায়। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ থেকে ৭ টাকা।

রহস্যজনক কারণেই চালের দাম বাড়ছে। এটা সত্য যে, এ বছর সরকারিভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তবে এর মজুদ মোটামুটি পর্যায়ে আছে। চলতি বছর চার দফা বন্যায় আউশ ও আমন ফলনের কিছু ক্ষতি হয়েছে। সরকারিভাবে উৎপাদনের যে পরিসংখ্যান আছে, তাতে চালের এত ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, বন্যার কারণে এ বছর ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল কম উৎপাদন হতে পারে। কিন্তু যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হবে, তা দিয়ে আগামী জুন পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়েও ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকার কথা। এরপরও কেন এর দাম হু হু করে বাড়ছে সেটাই প্রশ্ন।

চালের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য আমদানি শুল্ক ৬২.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। সাধারণত দেখা যায় যে, আমদানির ঘোষণা এলে পণ্যের দাম কমে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও কোন ইতিবাচক চিত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে চালের দাম বাড়ছে। চালের দাম বাড়লে কৃষক লাভবান হয় না, ভোক্তার পকেট কাটা যায়। কেবল মধ্যস্বত্বভোগীরাই মুনাফা লোটে। চালের সিন্ডিকেটের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকার কারো হুমকিতে মাথা নত করে না। প্রশ্ন হচ্ছে, কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন? আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক। চালের অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। যারা চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শুধু হুশিয়ারিতে এতদিন কাজ হয়নি, আগামীতেও হবে না।