বিদায় ২০২০

আজ ৩১ ডিসেম্বর। ইংরেজি ২০২০ সালের শেষ দিন। আশা-হতাশায় ২০২০ বিদায় নিয়ে আসছে ২০২১ সাল। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে হাসি-কান্না আর আনন্দ-বেদনায় চলতি বছরের শেষ পাতাটি আজ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার থেকে ঝরে পড়বে কালের অতলে। রাতের গভীর বৃন্ত থেকে বেরিয়ে আসবে ২০২১’র আলোকিত এক সকাল। যাত্রা শুরু হবে আরও একটি নতুন বছরের। রক্তিম সূর্য পশ্চিম দিগন্তে অস্তমিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আরও একটি বছর মহাকালের গর্ভে বিলীন হয়ে জায়গা নেবে ইতিহাসের পাতায়। তবে বহু যুগান্তকারী ঘটনার কারণে কোটি মানুষের স্মৃতিতে বিদায়ী বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিদায়ী বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে এবং সাফল্যকে ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে আজ রাত ১২টায় বিশ্ববাসী বরণ করবে নতুন বছরকে। ২০২০ সাল নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। মানুষের মনে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ যে কোন দণ্ডিত ও পলাতক আসামির বক্তব্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার-সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। পরবর্তী আদেশ অথবা পিকে হালদার সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। গতকাল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

গত সোমবার রাত ১০টার খবরে পলাতক পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচারের পর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তাকে সরাসরি সংযুক্ত করে একাত্তর টিভি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি নজরে এনে লিখিত আবেদন করলে গতকাল হাইকোর্ট বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞা জারির ওই আদেশ দেয়। একাত্তর টিভির খবরে পিকে হালদারের প্রচারিত বক্তব্য এবং ‘টকশোর’ ভিডিও ক্লিপও তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে তা হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের দফতরে জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডেরও (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতে পিকে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।

বিদেশে থাকা পিকে হালদার গত ২৮ জুন আইএলএফএসএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তার দেশে ফেরার জন্য ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। আদালত তাতে অনুমতি দিলেও পিকে হালদার না ফেরায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ঢাকার জজ আদালত ইতোমধ্যে পিকে হালদারের সব স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করারও আদেশ দিয়েছে। গত সোমবার রাতে একাত্তর টিভিতে পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচার ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তার যুক্ত হওয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তিনি আদালতে বলেন, গত সোমবার রাত ১০টায় একাত্তর টিভিতে পলাতক পিকে হালদারের সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। এরপর আবার টকশোতেও ওই আসামিকে লাইভে এনেছে। আমাকেও সংযুক্ত করেছিল। আমি তার (পিকে হালদার) কথা শুনে লাইভ থেকে বেরিয়ে আসি।

আমি তো কোন পলাতক আসামির সঙ্গে টকশো করতে পারি না। প্রথম কথা হলো, পিকে হালদার পলাতক। দ্বিতীয় কথা হলো তার বিষয়ে এই আদালতে একটা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা বিচারাধীন। তাই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন পিকে হালদারের প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কী আছে। এই আদালত সেই ভিডিও, সাক্ষাৎকার তলব করে দেখতে পারে। এরপর প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারেন। দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আদালত লিখিত আবেদন করতে বললে গতকাল সেই আবেদন জমা দেয় দুদক। আবেদনে সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যে কোন প্রচার মাধ্যমে পলাতক পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচার, পুনঃপ্রচার ও সম্প্রচার বন্ধে তথ্য সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে পিকে হালদারসহ যে কোন পলাতক আসামির বক্তব্য প্রচার, বিতরণ ও সম্প্রচার বন্ধেরও নির্দেশনা চায় দুদক। এ আবেদনের শুনানির পরই আদেশ দেয় হাইকোর্ট।

জাগাবে নতুন স্বপ্ন, নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা। নতুন বছরে সাফল্যে সম্ভাবনায় অনাবিল সুখ ও শান্তির ঝর্ণাধারায় হেসে উঠুক সবার জীবন। এই হোক আমাদের শুভ কামনা।

২০২০ সাল। জীবন নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্কের বছর। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখা এই পৃথিবীর মানুষ এ বছর যেসব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে তা আগের যেকোন মহামারীকে ছাড়িয়ে গেছে। যদিও এখনও মহামারীর বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশসহ পুরোবিশ্ব। যদিও করোনার কারণে এ বছরটিকে অনেকেই আখ্যা দিয়েছেন অভিশপ্ত বছর নামে। তাই দেখতে দেখতে কালের গর্ভে বিলীন হতে চলেছে অভিশপ্ত এ বছরটি। বিগত বছরগুলো থেকে খুবই আলাদা এই বছরটি। এ বছর করোনার কারণে অনেকেই মারা গিয়েছেন। এর বাইরেও অনেকে চলে গেছেন। সব মিলিয়ে বছরটায় একটু বেশিসংখ্যক গুণীজন হারিয়েছে। বছরের বড় একটা সময় প্রায় সব অর্থনৈতিক তৎপরতা বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল আন্তর্জাতিক যোগাযোগ। পর্যটন, বিনোদন, খেলার স্থবিরতা কাটেনি এখনও। এই এক বছরের ধাক্কা কাটাতে কত বছর লাগবে কেউ জানে না। গোটা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধ প্রায়। অনলাইন ক্লাসেই চলছে পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা। বাংলাদেশে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কবে খুলবে কেউ জানে না। পিইসি, জেএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। সবাই অটো প্রমোশন পেয়েছে। শুধু অর্থনীতি, শিক্ষা বা রাজনীতি নয়; করোনা প্রভাব ফেলেছে ব্যক্তিজীবনেও, ওলটপালট করে দিয়েছে মানুষের মনোজগত। দীর্ঘ লকডাউনে পারিবারিক সম্প্রীতি যেমন বেড়েছে, আবার কোথাও ঝগড়াও বেড়েছে। সংসার ভাঙার জারও বেড়েছে। মৃত্যুভয় অনেক অবিশ্বাসীকে বিশ্বাসী বানিয়েছে, ধর্মে-কর্মে মন দিয়েছেন অনেকে। আবার প্রবল শোকে বিশ্বাসী কারও কারও বিশ্বাস হারানোর ঘটনাও ঘটেছে। করোনা বিশ্বে বৈষম্য আরও বাড়িয়েছে। মানুষ আরও গরিব হয়েছে। প্রান্তের মানুষ প্রায় ছিটকে পড়ার দশা। আবার এরই মধ্যে অল্প কিছু মানুষের আয় বেড়েছে। দুর্নীতি করে অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। অনেকে চাকরি-ব্যবসা হারিয়ে পথে বসেছেন। করোনা আমাদের অনেককে মিতব্যয়ী বানিয়েছে। আবার অনেকে পয়সা খরচ করার রাস্তা পাননি। করোনা বৈশ্বিক মহামারীর অনেক মানবিক করেছে। একজনের বিপদে আরেকজন পাশে দাঁড়িয়েছে। আবার করোনা সন্দেহে মাকে জঙ্গলে ফেলে রাখার মতো অবিশ্বাস্য অমানবিকতাও দেখেছে বিশ্ব। কালের পরিক্রমায় বিদায় নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে আরও একটি নতুন বছর। বিদায়ী বছরের হতাশা ও বঞ্চনাকে পেছনে ফেলে ভালো কিছু প্রাপ্তির স্বপ্ন নিয়ে মানুষ বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ। দেশে ফিরে আসুক শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও গতিময়তা। এমনটিই প্রত্যাশা সবার।

বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ , ১৬ পৌষ ১৪২৭, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

বিদায় ২০২০

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

আজ ৩১ ডিসেম্বর। ইংরেজি ২০২০ সালের শেষ দিন। আশা-হতাশায় ২০২০ বিদায় নিয়ে আসছে ২০২১ সাল। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে হাসি-কান্না আর আনন্দ-বেদনায় চলতি বছরের শেষ পাতাটি আজ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার থেকে ঝরে পড়বে কালের অতলে। রাতের গভীর বৃন্ত থেকে বেরিয়ে আসবে ২০২১’র আলোকিত এক সকাল। যাত্রা শুরু হবে আরও একটি নতুন বছরের। রক্তিম সূর্য পশ্চিম দিগন্তে অস্তমিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আরও একটি বছর মহাকালের গর্ভে বিলীন হয়ে জায়গা নেবে ইতিহাসের পাতায়। তবে বহু যুগান্তকারী ঘটনার কারণে কোটি মানুষের স্মৃতিতে বিদায়ী বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিদায়ী বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে এবং সাফল্যকে ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে আজ রাত ১২টায় বিশ্ববাসী বরণ করবে নতুন বছরকে। ২০২০ সাল নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। মানুষের মনে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ যে কোন দণ্ডিত ও পলাতক আসামির বক্তব্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার-সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। পরবর্তী আদেশ অথবা পিকে হালদার সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। গতকাল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

গত সোমবার রাত ১০টার খবরে পলাতক পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচারের পর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তাকে সরাসরি সংযুক্ত করে একাত্তর টিভি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি নজরে এনে লিখিত আবেদন করলে গতকাল হাইকোর্ট বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞা জারির ওই আদেশ দেয়। একাত্তর টিভির খবরে পিকে হালদারের প্রচারিত বক্তব্য এবং ‘টকশোর’ ভিডিও ক্লিপও তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে তা হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের দফতরে জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডেরও (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতে পিকে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।

বিদেশে থাকা পিকে হালদার গত ২৮ জুন আইএলএফএসএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তার দেশে ফেরার জন্য ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। আদালত তাতে অনুমতি দিলেও পিকে হালদার না ফেরায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ঢাকার জজ আদালত ইতোমধ্যে পিকে হালদারের সব স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করারও আদেশ দিয়েছে। গত সোমবার রাতে একাত্তর টিভিতে পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচার ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তার যুক্ত হওয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তিনি আদালতে বলেন, গত সোমবার রাত ১০টায় একাত্তর টিভিতে পলাতক পিকে হালদারের সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। এরপর আবার টকশোতেও ওই আসামিকে লাইভে এনেছে। আমাকেও সংযুক্ত করেছিল। আমি তার (পিকে হালদার) কথা শুনে লাইভ থেকে বেরিয়ে আসি।

আমি তো কোন পলাতক আসামির সঙ্গে টকশো করতে পারি না। প্রথম কথা হলো, পিকে হালদার পলাতক। দ্বিতীয় কথা হলো তার বিষয়ে এই আদালতে একটা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা বিচারাধীন। তাই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন পিকে হালদারের প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কী আছে। এই আদালত সেই ভিডিও, সাক্ষাৎকার তলব করে দেখতে পারে। এরপর প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারেন। দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আদালত লিখিত আবেদন করতে বললে গতকাল সেই আবেদন জমা দেয় দুদক। আবেদনে সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যে কোন প্রচার মাধ্যমে পলাতক পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচার, পুনঃপ্রচার ও সম্প্রচার বন্ধে তথ্য সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে পিকে হালদারসহ যে কোন পলাতক আসামির বক্তব্য প্রচার, বিতরণ ও সম্প্রচার বন্ধেরও নির্দেশনা চায় দুদক। এ আবেদনের শুনানির পরই আদেশ দেয় হাইকোর্ট।

জাগাবে নতুন স্বপ্ন, নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা। নতুন বছরে সাফল্যে সম্ভাবনায় অনাবিল সুখ ও শান্তির ঝর্ণাধারায় হেসে উঠুক সবার জীবন। এই হোক আমাদের শুভ কামনা।

২০২০ সাল। জীবন নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্কের বছর। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখা এই পৃথিবীর মানুষ এ বছর যেসব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে তা আগের যেকোন মহামারীকে ছাড়িয়ে গেছে। যদিও এখনও মহামারীর বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশসহ পুরোবিশ্ব। যদিও করোনার কারণে এ বছরটিকে অনেকেই আখ্যা দিয়েছেন অভিশপ্ত বছর নামে। তাই দেখতে দেখতে কালের গর্ভে বিলীন হতে চলেছে অভিশপ্ত এ বছরটি। বিগত বছরগুলো থেকে খুবই আলাদা এই বছরটি। এ বছর করোনার কারণে অনেকেই মারা গিয়েছেন। এর বাইরেও অনেকে চলে গেছেন। সব মিলিয়ে বছরটায় একটু বেশিসংখ্যক গুণীজন হারিয়েছে। বছরের বড় একটা সময় প্রায় সব অর্থনৈতিক তৎপরতা বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল আন্তর্জাতিক যোগাযোগ। পর্যটন, বিনোদন, খেলার স্থবিরতা কাটেনি এখনও। এই এক বছরের ধাক্কা কাটাতে কত বছর লাগবে কেউ জানে না। গোটা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধ প্রায়। অনলাইন ক্লাসেই চলছে পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা। বাংলাদেশে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কবে খুলবে কেউ জানে না। পিইসি, জেএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। সবাই অটো প্রমোশন পেয়েছে। শুধু অর্থনীতি, শিক্ষা বা রাজনীতি নয়; করোনা প্রভাব ফেলেছে ব্যক্তিজীবনেও, ওলটপালট করে দিয়েছে মানুষের মনোজগত। দীর্ঘ লকডাউনে পারিবারিক সম্প্রীতি যেমন বেড়েছে, আবার কোথাও ঝগড়াও বেড়েছে। সংসার ভাঙার জারও বেড়েছে। মৃত্যুভয় অনেক অবিশ্বাসীকে বিশ্বাসী বানিয়েছে, ধর্মে-কর্মে মন দিয়েছেন অনেকে। আবার প্রবল শোকে বিশ্বাসী কারও কারও বিশ্বাস হারানোর ঘটনাও ঘটেছে। করোনা বিশ্বে বৈষম্য আরও বাড়িয়েছে। মানুষ আরও গরিব হয়েছে। প্রান্তের মানুষ প্রায় ছিটকে পড়ার দশা। আবার এরই মধ্যে অল্প কিছু মানুষের আয় বেড়েছে। দুর্নীতি করে অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। অনেকে চাকরি-ব্যবসা হারিয়ে পথে বসেছেন। করোনা আমাদের অনেককে মিতব্যয়ী বানিয়েছে। আবার অনেকে পয়সা খরচ করার রাস্তা পাননি। করোনা বৈশ্বিক মহামারীর অনেক মানবিক করেছে। একজনের বিপদে আরেকজন পাশে দাঁড়িয়েছে। আবার করোনা সন্দেহে মাকে জঙ্গলে ফেলে রাখার মতো অবিশ্বাস্য অমানবিকতাও দেখেছে বিশ্ব। কালের পরিক্রমায় বিদায় নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে আরও একটি নতুন বছর। বিদায়ী বছরের হতাশা ও বঞ্চনাকে পেছনে ফেলে ভালো কিছু প্রাপ্তির স্বপ্ন নিয়ে মানুষ বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ। দেশে ফিরে আসুক শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও গতিময়তা। এমনটিই প্রত্যাশা সবার।