সারাদেশে ১৮ হাজার ১০৪টি অগ্নিকাণ্ড

বেশি ঘটনা ঘটে রাজধানীতে : ১৫৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আলোচিত ঘটনা দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০২০ সালজুড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছিল উল্লেখ্যযোগ্য। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদরদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ হাজার ১০৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫৯ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার ৩৪১টি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে দেশের সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে রাজধানীতে। চলতি বছরের ১১ মাসে কমপক্ষে ৩০ বার রাজধানীর বস্তিগুলোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বছরের শেষের দিকেও সেটি অব্যাহত থাকে। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবনে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর ৫ জানুয়ারি সাভারের আশুলিয়া বাজারে আজিজ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে ইপিজেড ও উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আর গত ৯ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় স্টলে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আর মিরপুরে চলন্তিকা বস্তির আগুনে পারভিন (৩৫) নামে দগ্ধ এক নারীর মৃত্যু হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বনানীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি বস্তির আগুন লাগে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইস্কাটনের দিলু রোডের একটি পাঁচতলা ভবনের গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ তিনজন নিহত হন। আবার গত ১১ মার্চ মিরপুরের রূপনগর বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট। এই বস্তিতে ৮শ’ ঘর পুড়ে যায়। তাছাড়া, গত ২৭ মে গুলশান-২ এর ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জন মারা যান। তাছাড়া, ২৫ জুন পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাটের দেবিদ্বারঘাট লেনের এক পলিথিন কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আড়িয়াবো এলাকায় একটি স্টিল ফার্নিচারের গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে ১৪টি দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার ২৩ নভেম্বর রাতে মহাখালী সাত তলা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৩০০টি ঘর ও দোকানপাট আগুনে পুড়ে ছাই যায়। ২০২০ সালে দেশে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ সর্বশান্ত হয়েছেন। আশ্রয়ের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে পথে বসেছেন তারা। বহু পরিবার আগুনের ভয়াবহ লেলিহান শিখায় হারিয়েছেন পরিবারের শেষ কর্মক্ষম মানুষটিকেও। বছরজুড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুষিয়ে উঠতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও।

রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সূত্রপাতের পেছনে মানুষের অসচেতনতা, ঘনবসতি ও অপরিকল্পিত নগরায়ণকে দায়ী করেছেন নগরপরিকল্পনাবিদরা। ফায়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্টরা জানায়, দেশের ৮ বিভাগের মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আর সবচেয়ে কম অগ্নিকাণ্ড সিলেট বিভাগে। নতুন গঠিত ময়মনসিংহ বিভাগেও অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা সিলেটের চেয়ে বেশি। ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি। ঢাকায় ঘনবসতি ও অলিগলিতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় ঢাকায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। ব্যবসায়িক এলাকা পুরনো ঢাকায় সড়কগুলো একেবারেই সরু। কোন সড়কেই দুটি গাড়ি পাশ কাটানোর জায়গা নেই। পুরনো ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখন অগ্নিকাণ্ডের সময়ে ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি প্রবেশে সমস্যায় পড়ছে। জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কমিয়ে আনতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিলেও তা মানছে না। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কমছেই না। গত ২১ ডিসেম্বর মিরপুরের কালশি বস্তির অর্ধশতাধিক ঘর আগুনে ভষ্মিভূত হয়েছে। একই বস্তিতে কয়েক বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘণ্টাখানে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনলেও ততক্ষণে বস্তির ৫৫টি ঘর পুড়ে ছাই। শুধু মিরপুর কালশি বস্তি নয়, রাজধানীসহ সারাদেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই মানুষের স্বপ্নে গড়া সংসার পুড়ে হচ্ছে ছাই।

গত ১২ ডিসেম্বর চকবাজারের চুড়িহাট্টার কাছেই উর্দু রোডে নোয়াখালী বিল্ডিং নামে ৪তলা ভবনের প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরমধ্যেই অর্ধশত প্লাস্টিক কারখানা পুড়ে ছাই হয়। ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর মাতুয়াইলের কোনাপাড়ায় বৈদ্যুতিক বাতি উৎপাদন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ২৫ নভেম্বর মিরপুরে কালশি বস্তিতে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৫০টি ঘর।

অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সারাদেশের তুলনায় ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটছে। আর এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে মূল তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত মানুষের অসচেতনতা, দ্বিতীয়ত ঘনবসতি এবং তৃতীয় অপরিকল্পিত নগরায়ণ। দেখা গেছে, মানুষ অসচেতনভাবে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখছেন কিংবা বৈদ্যুতিক সংযোগে দুর্বল তার ব্যবহার করায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটছে। তিনি আরও বলেন, ঢাকায় কিভাবে অগ্নিকাণ্ড কমিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে কাজ করছে। তবে নগর পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। রাজউক যদি রাজধানীর প্রতিটি ভবনের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক ও কঠোরভাবে মনিটরিং করতে পারলে অগ্নিকাণ্ডসহ অনেক দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করনে এই নগরপরিকল্পনাবিদ।

শনিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২১ , ১৮ পৌষ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

সারাদেশে ১৮ হাজার ১০৪টি অগ্নিকাণ্ড

বেশি ঘটনা ঘটে রাজধানীতে : ১৫৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

image

আলোচিত ঘটনা দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০২০ সালজুড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছিল উল্লেখ্যযোগ্য। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদরদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ হাজার ১০৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫৯ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার ৩৪১টি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে দেশের সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে রাজধানীতে। চলতি বছরের ১১ মাসে কমপক্ষে ৩০ বার রাজধানীর বস্তিগুলোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বছরের শেষের দিকেও সেটি অব্যাহত থাকে। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবনে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর ৫ জানুয়ারি সাভারের আশুলিয়া বাজারে আজিজ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে ইপিজেড ও উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আর গত ৯ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় স্টলে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আর মিরপুরে চলন্তিকা বস্তির আগুনে পারভিন (৩৫) নামে দগ্ধ এক নারীর মৃত্যু হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বনানীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি বস্তির আগুন লাগে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইস্কাটনের দিলু রোডের একটি পাঁচতলা ভবনের গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ তিনজন নিহত হন। আবার গত ১১ মার্চ মিরপুরের রূপনগর বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট। এই বস্তিতে ৮শ’ ঘর পুড়ে যায়। তাছাড়া, গত ২৭ মে গুলশান-২ এর ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জন মারা যান। তাছাড়া, ২৫ জুন পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাটের দেবিদ্বারঘাট লেনের এক পলিথিন কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আড়িয়াবো এলাকায় একটি স্টিল ফার্নিচারের গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে ১৪টি দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার ২৩ নভেম্বর রাতে মহাখালী সাত তলা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৩০০টি ঘর ও দোকানপাট আগুনে পুড়ে ছাই যায়। ২০২০ সালে দেশে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ সর্বশান্ত হয়েছেন। আশ্রয়ের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে পথে বসেছেন তারা। বহু পরিবার আগুনের ভয়াবহ লেলিহান শিখায় হারিয়েছেন পরিবারের শেষ কর্মক্ষম মানুষটিকেও। বছরজুড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুষিয়ে উঠতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও।

রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সূত্রপাতের পেছনে মানুষের অসচেতনতা, ঘনবসতি ও অপরিকল্পিত নগরায়ণকে দায়ী করেছেন নগরপরিকল্পনাবিদরা। ফায়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্টরা জানায়, দেশের ৮ বিভাগের মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আর সবচেয়ে কম অগ্নিকাণ্ড সিলেট বিভাগে। নতুন গঠিত ময়মনসিংহ বিভাগেও অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা সিলেটের চেয়ে বেশি। ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি। ঢাকায় ঘনবসতি ও অলিগলিতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় ঢাকায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। ব্যবসায়িক এলাকা পুরনো ঢাকায় সড়কগুলো একেবারেই সরু। কোন সড়কেই দুটি গাড়ি পাশ কাটানোর জায়গা নেই। পুরনো ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখন অগ্নিকাণ্ডের সময়ে ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি প্রবেশে সমস্যায় পড়ছে। জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কমিয়ে আনতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিলেও তা মানছে না। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কমছেই না। গত ২১ ডিসেম্বর মিরপুরের কালশি বস্তির অর্ধশতাধিক ঘর আগুনে ভষ্মিভূত হয়েছে। একই বস্তিতে কয়েক বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘণ্টাখানে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনলেও ততক্ষণে বস্তির ৫৫টি ঘর পুড়ে ছাই। শুধু মিরপুর কালশি বস্তি নয়, রাজধানীসহ সারাদেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই মানুষের স্বপ্নে গড়া সংসার পুড়ে হচ্ছে ছাই।

গত ১২ ডিসেম্বর চকবাজারের চুড়িহাট্টার কাছেই উর্দু রোডে নোয়াখালী বিল্ডিং নামে ৪তলা ভবনের প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরমধ্যেই অর্ধশত প্লাস্টিক কারখানা পুড়ে ছাই হয়। ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর মাতুয়াইলের কোনাপাড়ায় বৈদ্যুতিক বাতি উৎপাদন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ২৫ নভেম্বর মিরপুরে কালশি বস্তিতে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৫০টি ঘর।

অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সারাদেশের তুলনায় ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটছে। আর এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে মূল তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত মানুষের অসচেতনতা, দ্বিতীয়ত ঘনবসতি এবং তৃতীয় অপরিকল্পিত নগরায়ণ। দেখা গেছে, মানুষ অসচেতনভাবে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখছেন কিংবা বৈদ্যুতিক সংযোগে দুর্বল তার ব্যবহার করায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটছে। তিনি আরও বলেন, ঢাকায় কিভাবে অগ্নিকাণ্ড কমিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে কাজ করছে। তবে নগর পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। রাজউক যদি রাজধানীর প্রতিটি ভবনের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক ও কঠোরভাবে মনিটরিং করতে পারলে অগ্নিকাণ্ডসহ অনেক দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করনে এই নগরপরিকল্পনাবিদ।