চরফ্যাশনে গৃহবধূকে হত্যার ৫২ দিন পর মামলা

চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অফিস সহায়ক গৃহবধূ খাদিজা নাসরিনের মৃত্যুর ৫২ দিন পর হত্যামামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ভাই রুবেল বাদী হয়ে স্বামী কামাল দেওয়ানসহ ৬ জনকে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় মামলাটি দায়ের করেন। গত ২২ নভেম্বর পুলিশ স্বামীর দরজা বন্ধ শোয়ার ঘর থেকে নিহতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন। তখন থেকেই নিহতের পরিবার তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আসছেন। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান। ৫২ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশ এ ঘটনায় হত্যা মামলা নেয়।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ এবং মামলা সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আবুল হোসেন দেওয়ানের ছেলে কামাল দেওয়ানের সঙ্গে নাছরিন খাদিজার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর পরিবারের সদস্যরা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ চলছিল। স্বামী পরিবারের দাবিকৃত যৌতুকের ওই টাকা না দেয়ায় নাছরিন খাদিজাকে নির্যাতন করতেন স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা। গত ২২ নভেম্বর নাসরিন খাদিজার একটি নবজাতক শিশুর জন্ম হয়। পরদিন ২৩ নভেম্বর বিকেলে ১ দিন বয়সী নবজাতক শিশুসহ নাছরিনকে হাসপাতাল থেকে স্বামীর বাড়িতে নেয়ার পথে নাসরিন নবজাতক শিশুকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে বাবার বাড়ি যেতে চাইলে এ নিয়ে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়।

এর জের ধরে ওইদিন বিকেলে নাসরিন খাদিজাকে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা স্বামীর বাড়িতে দফায় দফায় মারধর করেন। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ বসতঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে খবর দেয়। এ সময় নবজাতক শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি না যেতে পেরে অভিমানে নাছরিন খাদিজা আত্মহত্যা করেছেন বলে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা জানান। পরে চরফ্যাশন থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেন এবং এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা নেন। চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়ায় হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে।

শনিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২১ , ১৮ পৌষ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত

চরফ্যাশনে গৃহবধূকে হত্যার ৫২ দিন পর মামলা

প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা)

চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অফিস সহায়ক গৃহবধূ খাদিজা নাসরিনের মৃত্যুর ৫২ দিন পর হত্যামামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ভাই রুবেল বাদী হয়ে স্বামী কামাল দেওয়ানসহ ৬ জনকে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় মামলাটি দায়ের করেন। গত ২২ নভেম্বর পুলিশ স্বামীর দরজা বন্ধ শোয়ার ঘর থেকে নিহতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন। তখন থেকেই নিহতের পরিবার তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আসছেন। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান। ৫২ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশ এ ঘটনায় হত্যা মামলা নেয়।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ এবং মামলা সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আবুল হোসেন দেওয়ানের ছেলে কামাল দেওয়ানের সঙ্গে নাছরিন খাদিজার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর পরিবারের সদস্যরা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ চলছিল। স্বামী পরিবারের দাবিকৃত যৌতুকের ওই টাকা না দেয়ায় নাছরিন খাদিজাকে নির্যাতন করতেন স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা। গত ২২ নভেম্বর নাসরিন খাদিজার একটি নবজাতক শিশুর জন্ম হয়। পরদিন ২৩ নভেম্বর বিকেলে ১ দিন বয়সী নবজাতক শিশুসহ নাছরিনকে হাসপাতাল থেকে স্বামীর বাড়িতে নেয়ার পথে নাসরিন নবজাতক শিশুকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে বাবার বাড়ি যেতে চাইলে এ নিয়ে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়।

এর জের ধরে ওইদিন বিকেলে নাসরিন খাদিজাকে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা স্বামীর বাড়িতে দফায় দফায় মারধর করেন। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ বসতঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে খবর দেয়। এ সময় নবজাতক শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি না যেতে পেরে অভিমানে নাছরিন খাদিজা আত্মহত্যা করেছেন বলে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা জানান। পরে চরফ্যাশন থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেন এবং এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা নেন। চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়ায় হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে।