বালিয়াকান্দিতে

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি ইসলামপুর ইউনিয়নের খালকুলা মৌজায় ওয়াকফ স্টেটের নামে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ৩ ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার দয়ালনগর গ্রামের আরশেদ আলী মোল্যার ছেলে বদরুজ্জামান মোল্যা।

তিনি অভিযোগে বলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার রায়নগর গ্রামের ছাদেক আলী মোল্যার ছেলে আবদুর রহমান একজন অসাধু, সন্ত্রাসী, পরধনলোভী, পরধন লুটপাট করে খাওয়া তার স্বভাব। পরস্পর যোগসাজশে অভিযোগকারীর নিজ স্বত্ব দখলীয় বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের খালকুলা মৌজার আর.এস ৫৮০, ৬৩৫ খতিয়ানের ৮৯৮৩ দাগে ৮৫ শতাংশ ও এস.এ ৬৮৮, ৭৫৭, ৭৫৮ খতিয়ানের ৮৯৮২ দাগে ১০০ শতাংশ জমি থেকে জোড়পূর্বক ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। ওই জমি ৩ ফসলি জমি। এ জমিতে ধান, পাট, পিয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় ফসল জন্মে থাকে। যা বাংলাদেশ সরকারের ভূমি আইন পরিপন্থী। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, মহামান্য হাইকোর্ট, সিআর ৯৮৪ ইং ১১-০৩-২০০২ তারিখে যাবতীয় কার্যক্রম হতে বিরত থাকার জন্য স্থগিত আদেশ প্রদান করে। এ অবস্থায় আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে রুল আদেশ প্রদান করে। আবদুর রহমান অভিযোগকারীর দখলীয় জমি থেকে আইন অমান্য করে জোড়পূর্বক ভেকু দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ জমি নিয়ে সিভিল ডিভিশন মামলা, যা ২য় সাব জজ, রাজবাড়ী ৪৬/৮৯ ও বর্তমান অবস্থায় দেওয়ানি ১৭/৯৪ মামলায় বিজ্ঞ জেলা প্রশাসক, রাজবাড়ী ও বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক, ঢাকা, বাংলাদেশ উভয়ই মোকাবিলা বিবাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত আছেন। ১১-৩-২০০২ ও ১৫-১২-২০০২ইং তারিখে স্ট্রে ও স্টেস্টাস্কো আদেশ হয়। নজর আলী মোল্যা গং বাদী হয়ে ওয়ারিশ দাবি করতঃ স্বত্ব স্থির করতঃ খাস দখলের নিমিত্তে অর্থাৎ ডিক্রি পাওয়ার উদ্দেশ্যে দেওয়ানী ০৭/০৫ বিজ্ঞ ২য় সাব জজ রাজবাড়ী আদালতে দাখিল করেন।

ওই মামলায় ৩নং বিবাদী হিসেবে আবদুর রহমানের নাম রয়েছে ও আমাদেরকেও পক্ষভুক্ত করা হয়েছে। হোসেন আলী মোল্যা গং বাদী হয়ে বৈধ স্বত্ব থাকাবস্থায় ঘোষণামূক ডিক্রি পাওয়ার নিমিত্তে রাজবাড়ী যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে দেওয়ানি ২০০৯ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আবদুর রহমান ৫নং বিবাদী হিসেবে রয়েছে এবং ২৩নং বিবাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বালিয়াকান্দি-এর বিরুদ্ধে কোর্ট স্টেস্টাস্কো আদেশ হয়। আবদুর রহমান ৩ ফসলি জমির মাটি ভেকু দিয়ে যাতে মাটি কাটতে না পারে এবং এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফসলি জমি রক্ষা করার দাবি জানান। এলাকাবাসী জানান, আছিরুদ্দিন মৃধা স্টেটের মোতয়াল্লি আবদুর রহমান গত বছরও একটি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করেছেন। এছাড়া মামলার পরিচালনার জন্য ১ একরের বেশি জমি বিক্রি করেছেন। এবছর আবার আরেকটি জমিতে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রি করছেন। এভাবে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রি করায় ফসলি জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। সরেজমিনে গেলে মাটিকাটা তদারকির দায়িত্বে থাকা আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই আবদুস সালাম বলেন, ভাই ঢাকা গেছে। আমি দেখাশুনা করছি। এ জমিটির মাটিকাটা শেষ হলে পাশের জমিটিতে কাটা হবে। কেন ৩ ফসলি জমিতে মাটি কেটে বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওয়াকফ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটছি। এ বিষয়ে আছিরুদ্দিন মৃধা ওয়াকফ স্টেটের মোতয়াল্লি আবদুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

শনিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২১ , ১৮ পৌষ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

বালিয়াকান্দিতে

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি

প্রতিনিধি, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)

image

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি ইসলামপুর ইউনিয়নের খালকুলা মৌজায় ওয়াকফ স্টেটের নামে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ৩ ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার দয়ালনগর গ্রামের আরশেদ আলী মোল্যার ছেলে বদরুজ্জামান মোল্যা।

তিনি অভিযোগে বলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার রায়নগর গ্রামের ছাদেক আলী মোল্যার ছেলে আবদুর রহমান একজন অসাধু, সন্ত্রাসী, পরধনলোভী, পরধন লুটপাট করে খাওয়া তার স্বভাব। পরস্পর যোগসাজশে অভিযোগকারীর নিজ স্বত্ব দখলীয় বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের খালকুলা মৌজার আর.এস ৫৮০, ৬৩৫ খতিয়ানের ৮৯৮৩ দাগে ৮৫ শতাংশ ও এস.এ ৬৮৮, ৭৫৭, ৭৫৮ খতিয়ানের ৮৯৮২ দাগে ১০০ শতাংশ জমি থেকে জোড়পূর্বক ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। ওই জমি ৩ ফসলি জমি। এ জমিতে ধান, পাট, পিয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় ফসল জন্মে থাকে। যা বাংলাদেশ সরকারের ভূমি আইন পরিপন্থী। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, মহামান্য হাইকোর্ট, সিআর ৯৮৪ ইং ১১-০৩-২০০২ তারিখে যাবতীয় কার্যক্রম হতে বিরত থাকার জন্য স্থগিত আদেশ প্রদান করে। এ অবস্থায় আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে রুল আদেশ প্রদান করে। আবদুর রহমান অভিযোগকারীর দখলীয় জমি থেকে আইন অমান্য করে জোড়পূর্বক ভেকু দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ জমি নিয়ে সিভিল ডিভিশন মামলা, যা ২য় সাব জজ, রাজবাড়ী ৪৬/৮৯ ও বর্তমান অবস্থায় দেওয়ানি ১৭/৯৪ মামলায় বিজ্ঞ জেলা প্রশাসক, রাজবাড়ী ও বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক, ঢাকা, বাংলাদেশ উভয়ই মোকাবিলা বিবাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত আছেন। ১১-৩-২০০২ ও ১৫-১২-২০০২ইং তারিখে স্ট্রে ও স্টেস্টাস্কো আদেশ হয়। নজর আলী মোল্যা গং বাদী হয়ে ওয়ারিশ দাবি করতঃ স্বত্ব স্থির করতঃ খাস দখলের নিমিত্তে অর্থাৎ ডিক্রি পাওয়ার উদ্দেশ্যে দেওয়ানী ০৭/০৫ বিজ্ঞ ২য় সাব জজ রাজবাড়ী আদালতে দাখিল করেন।

ওই মামলায় ৩নং বিবাদী হিসেবে আবদুর রহমানের নাম রয়েছে ও আমাদেরকেও পক্ষভুক্ত করা হয়েছে। হোসেন আলী মোল্যা গং বাদী হয়ে বৈধ স্বত্ব থাকাবস্থায় ঘোষণামূক ডিক্রি পাওয়ার নিমিত্তে রাজবাড়ী যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে দেওয়ানি ২০০৯ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আবদুর রহমান ৫নং বিবাদী হিসেবে রয়েছে এবং ২৩নং বিবাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বালিয়াকান্দি-এর বিরুদ্ধে কোর্ট স্টেস্টাস্কো আদেশ হয়। আবদুর রহমান ৩ ফসলি জমির মাটি ভেকু দিয়ে যাতে মাটি কাটতে না পারে এবং এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফসলি জমি রক্ষা করার দাবি জানান। এলাকাবাসী জানান, আছিরুদ্দিন মৃধা স্টেটের মোতয়াল্লি আবদুর রহমান গত বছরও একটি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করেছেন। এছাড়া মামলার পরিচালনার জন্য ১ একরের বেশি জমি বিক্রি করেছেন। এবছর আবার আরেকটি জমিতে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রি করছেন। এভাবে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রি করায় ফসলি জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। সরেজমিনে গেলে মাটিকাটা তদারকির দায়িত্বে থাকা আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই আবদুস সালাম বলেন, ভাই ঢাকা গেছে। আমি দেখাশুনা করছি। এ জমিটির মাটিকাটা শেষ হলে পাশের জমিটিতে কাটা হবে। কেন ৩ ফসলি জমিতে মাটি কেটে বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওয়াকফ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটছি। এ বিষয়ে আছিরুদ্দিন মৃধা ওয়াকফ স্টেটের মোতয়াল্লি আবদুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।