সিলেট জেলা আ’লীগ থেকে বাদ পড়ছেন ১১ নেতা

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ নেতাকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ৩ ডিসেম্বর দৈনিক সংবাদে ‘সিলেট আ’লীগ/ প্রস্তাবিত কমিটিতে বিতর্কিত নিষ্ক্রিয় ও প্রবাসীদের নাম’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়েছিল কমিটিতে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয় তাদের মধ্যে অনেকে (নাম উল্লেখ করে) নিষ্ক্রিয়, বিএনপি-জামাত ঘরনার ও প্রবাসী। সংবাদটি দলের উচ্চপর্যায়ের নজরে আসলে একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে এর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সম্প্রতি সিলেট থেকে ওই সংস্থা তদন্ত শেষে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বাদ দেয়া নেতাদের সম্পর্কে দৈনিক সংবাদে যা প্রকাশ হয়েছিল তার সত্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার দলের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদের জানানো হয়, জেলার প্রস্তাবিত কমিটি থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ১১ জনকে বাদ দিয়ে এদের স্থলে অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বাদ দেয়া নেতারা (প্রস্তাবিত কমিটি) হলেন, সাত নম্বর সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবির। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি বিএনপির পলাতক নেতা হারিছ চৌধুরীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন দুলালকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে হুমায়ুন ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করান।

দুই নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন দুলাল কানাইঘাট উপজেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনকালে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেন। বাদ পড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাকির হোসেন শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ কোন সংগঠনে ছিলেন না। জেলা সভাপতির ঘনিষ্ট হওয়ায় ওসমানী নগর উপজেলার স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের পদ পান। এর তিন মাসের মধ্যেই তাকে জেলা কমিটির একই পদে প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া পদ থেকে বাদ পড়েছেন মোস্তাক আহমদ পলাশ, ফারুক আহমদ, এসএম নুনু মিয়া, গোলাম কিবরিয়া হেলাল, শাহীদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ, জাহাঙ্গীর আলম। তবে বাদ পড়ার তালিকায় থাকা অন্য একজনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদের, শাখাওয়াত হোসেন শফিক, সদস্য ডা. মুশফিক চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।

সূত্র জানায়, উল্লেখিত ১১ জনকে কমিটি থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও হত্যা মামলার আসামি, বিতর্কিত ও ভর্তি বাণিজ্যে অভিযুক্ত আরও ক’জন বহাল রয়েছেন। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলুকে জেলা কমিটি থেকে মহানগরে রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আগামী ৬ জানুয়ারি মহানগর কমিটি নিয়ে বৈঠকের কথা রয়েছে।

শনিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২১ , ১৮ পৌষ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সংবাদের রিপোর্টের সত্যতা

সিলেট জেলা আ’লীগ থেকে বাদ পড়ছেন ১১ নেতা

বিশেষ প্রতিনিধি

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ নেতাকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ৩ ডিসেম্বর দৈনিক সংবাদে ‘সিলেট আ’লীগ/ প্রস্তাবিত কমিটিতে বিতর্কিত নিষ্ক্রিয় ও প্রবাসীদের নাম’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়েছিল কমিটিতে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয় তাদের মধ্যে অনেকে (নাম উল্লেখ করে) নিষ্ক্রিয়, বিএনপি-জামাত ঘরনার ও প্রবাসী। সংবাদটি দলের উচ্চপর্যায়ের নজরে আসলে একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে এর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সম্প্রতি সিলেট থেকে ওই সংস্থা তদন্ত শেষে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বাদ দেয়া নেতাদের সম্পর্কে দৈনিক সংবাদে যা প্রকাশ হয়েছিল তার সত্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার দলের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদের জানানো হয়, জেলার প্রস্তাবিত কমিটি থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ১১ জনকে বাদ দিয়ে এদের স্থলে অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বাদ দেয়া নেতারা (প্রস্তাবিত কমিটি) হলেন, সাত নম্বর সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবির। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি বিএনপির পলাতক নেতা হারিছ চৌধুরীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন দুলালকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে হুমায়ুন ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করান।

দুই নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন দুলাল কানাইঘাট উপজেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনকালে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেন। বাদ পড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাকির হোসেন শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ কোন সংগঠনে ছিলেন না। জেলা সভাপতির ঘনিষ্ট হওয়ায় ওসমানী নগর উপজেলার স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের পদ পান। এর তিন মাসের মধ্যেই তাকে জেলা কমিটির একই পদে প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া পদ থেকে বাদ পড়েছেন মোস্তাক আহমদ পলাশ, ফারুক আহমদ, এসএম নুনু মিয়া, গোলাম কিবরিয়া হেলাল, শাহীদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ, জাহাঙ্গীর আলম। তবে বাদ পড়ার তালিকায় থাকা অন্য একজনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদের, শাখাওয়াত হোসেন শফিক, সদস্য ডা. মুশফিক চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।

সূত্র জানায়, উল্লেখিত ১১ জনকে কমিটি থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও হত্যা মামলার আসামি, বিতর্কিত ও ভর্তি বাণিজ্যে অভিযুক্ত আরও ক’জন বহাল রয়েছেন। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলুকে জেলা কমিটি থেকে মহানগরে রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আগামী ৬ জানুয়ারি মহানগর কমিটি নিয়ে বৈঠকের কথা রয়েছে।