কয়েকটি ব্যাংকের দখলে সিংহভাগ আমানত

করোনার মধ্যে আমানত সংকটে পড়েছে একাধিক ব্যাংক। এরমধ্যে গুটি কয়েক ব্যাংকের দখলেই রয়েছে সিংহভাগ আমানত। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৫৮টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ২২টির কাছে রয়েছে ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ৭২ দশমিক ৮৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যা ৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, অধিক পরিমাণে আমানত থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দেশের প্রাচীনতম সোনালী ব্যাংকে রয়েছে মোট আমানতের ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ১ লাখ ১৫ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে রয়েছে ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি আমানত। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বা ১ লাখ ৭ হাজার ৮০২ কোটি টাকা রয়েছে ইসলামী ব্যাংকে। সোনালী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও আরও ২০টি ব্যাংকেরও ব্যাংকিং ব্যবস্থার আমানতের ২ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত তহবিল ছিল। ২২টি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকসহ পাঁচটি ইসলামিক শরীয়াভিত্তিক ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আরও পাঁচটি ব্যাংক রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ৭৭ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকে ৭১ হাজার ১০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকে আমানত রয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, পূবালী ব্যাংকে রয়েছে ৪১ হাজার ১৫২ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে রয়েছে ৪০ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকে রয়েছে ৩৯ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ৩৭ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা, ডাচ বাংলা ব্যাংকে রয়েছে ৩৫ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংকে ৩৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংকে ৩২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে রয়েছে ৩২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে রয়েছে ৩১ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকে ২৯ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ায় আমানতের পরিমাণ ২৯ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকে রয়েছে ২৮ হাজার ৭২৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, সিটি ব্যাংকে রয়েছে ২৮ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে রয়েছে ২৮ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে রয়েছে ২৭ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা, ট্রাস্ট ব্যাংকে রয়েছে ২৭ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা এবং এবি ব্যাংকে রয়েছে ২৬ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, করোনার মধ্যে ব্যাংকে জমা আমানত তুলে নিয়েছে অনেক গ্রাহক। এতে কিছু ব্যাংকে আমানত সংকটে পড়ছে। তবে আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে আস্থার সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। তবে শরীয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহে এগিয়ে রয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা বেশি। এজন্য ইসলামী ব্যাংক বা এর পাশাপাশি শরীয়াভিত্তিতে কার্যপরিচালনা করা ব্যাংকগুলোর কাছে বেশি আমানত রয়েছে। এই কারণে বর্তমানে অনেক ব্যাংক ইসলামী উইন্ডো খুলছে।

রবিবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২১ , ১৯ পৌষ ১৪২৭, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

কয়েকটি ব্যাংকের দখলে সিংহভাগ আমানত

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

করোনার মধ্যে আমানত সংকটে পড়েছে একাধিক ব্যাংক। এরমধ্যে গুটি কয়েক ব্যাংকের দখলেই রয়েছে সিংহভাগ আমানত। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৫৮টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ২২টির কাছে রয়েছে ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ৭২ দশমিক ৮৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যা ৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, অধিক পরিমাণে আমানত থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দেশের প্রাচীনতম সোনালী ব্যাংকে রয়েছে মোট আমানতের ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ১ লাখ ১৫ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে রয়েছে ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি আমানত। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বা ১ লাখ ৭ হাজার ৮০২ কোটি টাকা রয়েছে ইসলামী ব্যাংকে। সোনালী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও আরও ২০টি ব্যাংকেরও ব্যাংকিং ব্যবস্থার আমানতের ২ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত তহবিল ছিল। ২২টি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকসহ পাঁচটি ইসলামিক শরীয়াভিত্তিক ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আরও পাঁচটি ব্যাংক রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ৭৭ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকে ৭১ হাজার ১০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকে আমানত রয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, পূবালী ব্যাংকে রয়েছে ৪১ হাজার ১৫২ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে রয়েছে ৪০ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকে রয়েছে ৩৯ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ৩৭ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা, ডাচ বাংলা ব্যাংকে রয়েছে ৩৫ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংকে ৩৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংকে ৩২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে রয়েছে ৩২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে রয়েছে ৩১ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকে ২৯ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ায় আমানতের পরিমাণ ২৯ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকে রয়েছে ২৮ হাজার ৭২৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, সিটি ব্যাংকে রয়েছে ২৮ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে রয়েছে ২৮ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে রয়েছে ২৭ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা, ট্রাস্ট ব্যাংকে রয়েছে ২৭ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা এবং এবি ব্যাংকে রয়েছে ২৬ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, করোনার মধ্যে ব্যাংকে জমা আমানত তুলে নিয়েছে অনেক গ্রাহক। এতে কিছু ব্যাংকে আমানত সংকটে পড়ছে। তবে আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে আস্থার সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। তবে শরীয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহে এগিয়ে রয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা বেশি। এজন্য ইসলামী ব্যাংক বা এর পাশাপাশি শরীয়াভিত্তিতে কার্যপরিচালনা করা ব্যাংকগুলোর কাছে বেশি আমানত রয়েছে। এই কারণে বর্তমানে অনেক ব্যাংক ইসলামী উইন্ডো খুলছে।