পদ্মায় গত বছরের চেয়ে পানি কম

বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ গতকাল শুরু হয়েছে। ঈশ্বরদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ভারতের পানি পর্যবেক্ষক দল দিনভর পদ্মার পানি পরিমাপ করেন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ভারতের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলে সে দেশের কেন্দ্রীয় নদী কমিশনের উপ-পরিচালক শ্রী ভেংক্টেশ্বর লুই ওসহকারী পরিচালক (এডি) নগেন্দ্র কুমার। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এ পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ চলবে।

উত্তরাঞ্চল হাইড্রোলজি ডিপাটমেন্টের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এবার একই সময়ে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম রয়েছে। গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ি পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয় প্রতি বছরের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে। কিন্তু এবার বছরের প্রথমদিন শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল থেকে পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু করা হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোর্শেদুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে দু’জন আর বাংলাদেশ থেকে চারজনের বিশেষজ্ঞ টিম পানি পর্যবেক্ষণ শনিবার শুরু করেছেন। বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ টিমের ৪ সদস্য পশ্চিম বঙ্গের ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গার পানি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুদ্দিন আহমদ, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন মিয়া এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিব্বির হোসেন। বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় ৮৮ হাজার কিউসেক পানি বিদ্যমান। গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গায় এক লাখ ৬১ হাজার কিউসেক পানি ছিল। এরমধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬০ হাজার ৬১ কিউসেক এবং ভারতের ৪০ হাজার কিউসেক পানি। একই সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল এক লাখ দুই হাজার ৫৭৪ কিউসেক পানি।

মোর্শেদুল ইসলাম আরও জানান, চুক্তির শর্তানুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি ১০ দিন পর পর পানি প্রাপ্তির তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং তা ৩১ মে পর্যন্ত চলবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তি স্বাক্ষর হয় ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের হায়দারাবাদ হাউজে। পরবর্তী বছর ১৯৯৭ সালে ১ জানুয়ারি থেকে দু’দেশের মধ্যে ভারতের অংশে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তি কার্যকর শুরু হয়। বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের পক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগোড়ার মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

রবিবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২১ , ১৯ পৌষ ১৪২৭, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু

পদ্মায় গত বছরের চেয়ে পানি কম

হাবিবুর রহমান স্বপন, পাবনা

বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ গতকাল শুরু হয়েছে। ঈশ্বরদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ভারতের পানি পর্যবেক্ষক দল দিনভর পদ্মার পানি পরিমাপ করেন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ভারতের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলে সে দেশের কেন্দ্রীয় নদী কমিশনের উপ-পরিচালক শ্রী ভেংক্টেশ্বর লুই ওসহকারী পরিচালক (এডি) নগেন্দ্র কুমার। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এ পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ চলবে।

উত্তরাঞ্চল হাইড্রোলজি ডিপাটমেন্টের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এবার একই সময়ে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম রয়েছে। গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ি পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয় প্রতি বছরের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে। কিন্তু এবার বছরের প্রথমদিন শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল থেকে পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু করা হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোর্শেদুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে দু’জন আর বাংলাদেশ থেকে চারজনের বিশেষজ্ঞ টিম পানি পর্যবেক্ষণ শনিবার শুরু করেছেন। বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ টিমের ৪ সদস্য পশ্চিম বঙ্গের ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গার পানি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুদ্দিন আহমদ, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন মিয়া এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিব্বির হোসেন। বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় ৮৮ হাজার কিউসেক পানি বিদ্যমান। গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গায় এক লাখ ৬১ হাজার কিউসেক পানি ছিল। এরমধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬০ হাজার ৬১ কিউসেক এবং ভারতের ৪০ হাজার কিউসেক পানি। একই সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল এক লাখ দুই হাজার ৫৭৪ কিউসেক পানি।

মোর্শেদুল ইসলাম আরও জানান, চুক্তির শর্তানুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি ১০ দিন পর পর পানি প্রাপ্তির তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং তা ৩১ মে পর্যন্ত চলবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তি স্বাক্ষর হয় ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের হায়দারাবাদ হাউজে। পরবর্তী বছর ১৯৯৭ সালে ১ জানুয়ারি থেকে দু’দেশের মধ্যে ভারতের অংশে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তি কার্যকর শুরু হয়। বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের পক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগোড়ার মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।