পুলিশ সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান

পুলিশের আলাদা মেডিকেল ইউনিট দরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, মানবপাচার, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মতো মারাত্মক সামাজিক অপরাধ দমনে পুলিশ সদস্যদের আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনায় বিশ্বব্যাপী স্থবির অবস্থা সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত সহসী ভূমিকা পালন করছে। তিনি পুলিশের জন্য পৃথক মেডিকেল ইউনিট গঠন করাটা একান্তভাবে দরকার বলে মনে করেন। অপরাধের ধরন বদলাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগ এবং সাইবার ক্রাইম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটাকে আমাদের দমন করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতানুগতিক অপরাধের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, মানবপাচার ইত্যাদি বৈশ্বিক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মতো মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা-নির্যাতনসহ নিত্যনতুন সামাজিক অপরাধ।

এসব অপরাধকে আরও দক্ষতার সঙ্গে দমন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৭তম ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিওলিংকের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, কেবল দেশে নয় এজন্য বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত রাখা দরকার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, একটা সময় অন্তর অন্তর তাদের প্রশিক্ষণ দিলে তারা যতক্ষণ কাজে থাকবেন তাদের কর্মদক্ষতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

সে ব্যবস্থাও করতে হবে।’ ফেসবুক, অ্যাপস বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়নো বা মিথা তথ্য প্রদানসহ কিশোর ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা নানা অপরাধে যুক্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে তাদের বের করে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণভাবে গুজব রটানো বা এ ধরনের কাজ যেন করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্যও শেখ হাসিনা আহ্বান জানান।

এসব কাজে পুলিশের শক্তিশালী ও সাহসী ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী কর্তব্য পালনকালে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি ও সমবেদনা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, মানুষের সেবা দেয়া, তাদের জীবন মান উন্নত করা-এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল খন্দকার গোলাম ফারুক, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার বিতরণ করেন। সব বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার ¯েœহাশিষ কুমার দাস ‘বেস্ট প্রবেশনার’ পুরস্কার লাভ করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয় এবং তিনি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।

প্রধানমন্ত্রী নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশকে সবাই মিলে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যদি উন্নত হয়, তবে, গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা আপনাদের আত্বীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যরাই উপকৃত হবে। তাদের জীবন সুন্দর হবে, তারাই নিরাপদে বাঁচতে পারবেন বা ভবিষ্যৎ বংশধরদের জীবনটা সুন্দর হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত অসাম্প্রদায়িক উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সরকারেরও সেটাই দায়িত্ব, বলেন তিনি।

নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনী সব সময় সরকারের পাশে রয়েছে, উল্লেখ করে সরকার প্রধান নবীন কর্মকর্তাদের ‘আগামীর কর্ণধার’ আখ্যায়িত করে দায়িত্ব পালনে আরও আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।

শেখ হাসিনা এ সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে জাতির পিতা প্রদত্ত ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্ধৃত করেন।

মৃতের সৎকার বা রোগাক্রান্তকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া বা ঘরে ঘরে রিলিফ পৌঁছে দেয়ায় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী কর্তব্য পালনকালে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে আত্বীয়স্বজন লাশ ফেলে চলে গেছে কিন্তু আমার পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’

সে কারণে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পাশাপাশি তিনি একটি হাসপাতাল ভাড়া করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশে পৃথক একটি মেডিকেল ইউনিট গঠন করাটা একান্তভাবে দরকার বলে আমি মনে করি। তাদের নিজস্ব একটি মেডিকেল ইউনিট থাকুক যারা এই চিকিৎসাসেবা দেখবে।’

তাছাড়া, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগ ও জেলাগুলোতে পুলিশ হাসপাতালগুলোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পুলিশের সেবা বিস্তৃত করার প্রয়াস হিসেবে ‘বিট পুলিশিং’ চালু করেন। যার মাধ্যমে আজ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে যাচ্ছে।

সোমবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২১ , ২০ পৌষ ১৪২৭, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

পুলিশ সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান

পুলিশের আলাদা মেডিকেল ইউনিট দরকার

বাসস

image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, মানবপাচার, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মতো মারাত্মক সামাজিক অপরাধ দমনে পুলিশ সদস্যদের আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনায় বিশ্বব্যাপী স্থবির অবস্থা সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত সহসী ভূমিকা পালন করছে। তিনি পুলিশের জন্য পৃথক মেডিকেল ইউনিট গঠন করাটা একান্তভাবে দরকার বলে মনে করেন। অপরাধের ধরন বদলাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগ এবং সাইবার ক্রাইম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটাকে আমাদের দমন করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতানুগতিক অপরাধের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, মানবপাচার ইত্যাদি বৈশ্বিক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মতো মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা-নির্যাতনসহ নিত্যনতুন সামাজিক অপরাধ।

এসব অপরাধকে আরও দক্ষতার সঙ্গে দমন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৭তম ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিওলিংকের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, কেবল দেশে নয় এজন্য বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত রাখা দরকার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, একটা সময় অন্তর অন্তর তাদের প্রশিক্ষণ দিলে তারা যতক্ষণ কাজে থাকবেন তাদের কর্মদক্ষতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

সে ব্যবস্থাও করতে হবে।’ ফেসবুক, অ্যাপস বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়নো বা মিথা তথ্য প্রদানসহ কিশোর ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা নানা অপরাধে যুক্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে তাদের বের করে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণভাবে গুজব রটানো বা এ ধরনের কাজ যেন করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্যও শেখ হাসিনা আহ্বান জানান।

এসব কাজে পুলিশের শক্তিশালী ও সাহসী ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী কর্তব্য পালনকালে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি ও সমবেদনা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, মানুষের সেবা দেয়া, তাদের জীবন মান উন্নত করা-এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল খন্দকার গোলাম ফারুক, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার বিতরণ করেন। সব বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার ¯েœহাশিষ কুমার দাস ‘বেস্ট প্রবেশনার’ পুরস্কার লাভ করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয় এবং তিনি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।

প্রধানমন্ত্রী নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশকে সবাই মিলে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যদি উন্নত হয়, তবে, গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা আপনাদের আত্বীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যরাই উপকৃত হবে। তাদের জীবন সুন্দর হবে, তারাই নিরাপদে বাঁচতে পারবেন বা ভবিষ্যৎ বংশধরদের জীবনটা সুন্দর হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত অসাম্প্রদায়িক উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সরকারেরও সেটাই দায়িত্ব, বলেন তিনি।

নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনী সব সময় সরকারের পাশে রয়েছে, উল্লেখ করে সরকার প্রধান নবীন কর্মকর্তাদের ‘আগামীর কর্ণধার’ আখ্যায়িত করে দায়িত্ব পালনে আরও আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।

শেখ হাসিনা এ সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে জাতির পিতা প্রদত্ত ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্ধৃত করেন।

মৃতের সৎকার বা রোগাক্রান্তকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া বা ঘরে ঘরে রিলিফ পৌঁছে দেয়ায় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী কর্তব্য পালনকালে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে আত্বীয়স্বজন লাশ ফেলে চলে গেছে কিন্তু আমার পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’

সে কারণে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পাশাপাশি তিনি একটি হাসপাতাল ভাড়া করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশে পৃথক একটি মেডিকেল ইউনিট গঠন করাটা একান্তভাবে দরকার বলে আমি মনে করি। তাদের নিজস্ব একটি মেডিকেল ইউনিট থাকুক যারা এই চিকিৎসাসেবা দেখবে।’

তাছাড়া, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগ ও জেলাগুলোতে পুলিশ হাসপাতালগুলোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পুলিশের সেবা বিস্তৃত করার প্রয়াস হিসেবে ‘বিট পুলিশিং’ চালু করেন। যার মাধ্যমে আজ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে যাচ্ছে।