ওয়াসার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল এখন সঠিক সংস্থার হাতে

ন্যস্ত হয়েছে-ওয়াসার এমডি

৩২ বছর আগে পানি নিষ্কাশনে ১৯৮৮ সালের অধ্যাদেশটি ওয়াসার দায়িত্ব দেয়া ভুল ছিল। ওয়াসা কাজের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, ওয়াসার পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষ রাজউক, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সাতটি সংস্থা এই কাজে যুক্ত ছিল। এক কাজে অনেক সংস্থা যুক্ত থাকায় তা সঠিকভাবে এগিয়ে নেয়া যায়নি। এবার দায়িত্বটি ‘সঠিক সংস্থার হাতে’ ন্যস্ত হয়েছে। তারা চাইলে আগামী দু’বছরের জনবল দিয়ে সিটি করপোরেশনকে সহায়তা করা হবে।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ওয়াসার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদ হোসেন, পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম, পরিচালক (কারিগরি) শহিদ উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকার সুপেয় পানির বিপণন ও পয়ঃনিষ্কাশনকে ওয়াসার ‘মূল কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম, খুলনা ও অন্য শহরগুলোতেও তাই হয়ে আসছে। কেবল ঢাকায় এই দুই কাজের সঙ্গে বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনার কাজ যুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। একটি খালের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও ওয়াসার দায়িত্ব ছিল কেবল খাল ব্যবহার করে পানি সরিয়ে দেয়া। ফলে খালগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া খাল নিয়ে আলাদা কোন বাজেটও ওয়াসার ছিল না। আমরা কেবল খাল থেকে সলিড বর্র্জ্য নিষ্কাশন করতাম। অথচ একটা খাল হতে পারে সুন্দর জলাশয়, খাল হতে পারে নৌপথ, আবার খালের দুই ধারে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা যায়। এর কোনটিই করার অধিকার আমাদের ছিল না। এসব কারণে খালের পূর্ণাঙ্গ রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়নি।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০০৯ সাল থেকেই ঢাকা ওয়াসা তাদের ওপর অর্পিত ‘অতিরিক্ত’ এই দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়ার চিন্তা শুরু করে। ২০১২ সালে সক্রিয় উদ্যোগ নেয়ার পর আট বছরের মাথায় তা সফল হল। তাই ২০১২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয় যেন কাজটি সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের সময় কাজটি এগিয়ে গেলেও তার মৃত্যুর পর থেমে যায়। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর এ নিয়ে ওয়াসা ও দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। এই চুক্তি প্রক্রিয়ায় ঢাকা শহরের ২৬ খাল ও ৩৬০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিস্টেম ওয়াসার হাত থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে দেয়া হয়েছে। আর আগে থেকেই ২৩০০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিটি করপোরেশনের কাছে ছিল।

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘ তিন দশক পর ঢাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনের হাতে হস্তান্তর করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ সময় দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে ওয়াসা। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আমান উল্লাহ নুরী এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

মঙ্গলবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২১ , ২১ পৌষ ১৪২৭, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ঢাকার পানি নিষ্কাশনের কাজ

ওয়াসার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল এখন সঠিক সংস্থার হাতে

ন্যস্ত হয়েছে-ওয়াসার এমডি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

৩২ বছর আগে পানি নিষ্কাশনে ১৯৮৮ সালের অধ্যাদেশটি ওয়াসার দায়িত্ব দেয়া ভুল ছিল। ওয়াসা কাজের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, ওয়াসার পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষ রাজউক, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সাতটি সংস্থা এই কাজে যুক্ত ছিল। এক কাজে অনেক সংস্থা যুক্ত থাকায় তা সঠিকভাবে এগিয়ে নেয়া যায়নি। এবার দায়িত্বটি ‘সঠিক সংস্থার হাতে’ ন্যস্ত হয়েছে। তারা চাইলে আগামী দু’বছরের জনবল দিয়ে সিটি করপোরেশনকে সহায়তা করা হবে।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ওয়াসার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদ হোসেন, পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম, পরিচালক (কারিগরি) শহিদ উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকার সুপেয় পানির বিপণন ও পয়ঃনিষ্কাশনকে ওয়াসার ‘মূল কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম, খুলনা ও অন্য শহরগুলোতেও তাই হয়ে আসছে। কেবল ঢাকায় এই দুই কাজের সঙ্গে বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনার কাজ যুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। একটি খালের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও ওয়াসার দায়িত্ব ছিল কেবল খাল ব্যবহার করে পানি সরিয়ে দেয়া। ফলে খালগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া খাল নিয়ে আলাদা কোন বাজেটও ওয়াসার ছিল না। আমরা কেবল খাল থেকে সলিড বর্র্জ্য নিষ্কাশন করতাম। অথচ একটা খাল হতে পারে সুন্দর জলাশয়, খাল হতে পারে নৌপথ, আবার খালের দুই ধারে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা যায়। এর কোনটিই করার অধিকার আমাদের ছিল না। এসব কারণে খালের পূর্ণাঙ্গ রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়নি।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০০৯ সাল থেকেই ঢাকা ওয়াসা তাদের ওপর অর্পিত ‘অতিরিক্ত’ এই দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়ার চিন্তা শুরু করে। ২০১২ সালে সক্রিয় উদ্যোগ নেয়ার পর আট বছরের মাথায় তা সফল হল। তাই ২০১২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয় যেন কাজটি সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের সময় কাজটি এগিয়ে গেলেও তার মৃত্যুর পর থেমে যায়। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর এ নিয়ে ওয়াসা ও দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। এই চুক্তি প্রক্রিয়ায় ঢাকা শহরের ২৬ খাল ও ৩৬০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিস্টেম ওয়াসার হাত থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে দেয়া হয়েছে। আর আগে থেকেই ২৩০০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিটি করপোরেশনের কাছে ছিল।

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘ তিন দশক পর ঢাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনের হাতে হস্তান্তর করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ সময় দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে ওয়াসা। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আমান উল্লাহ নুরী এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।