এ অধিকার তারা কোথায় পেয়েছে

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের কলাবাগ এলাকায় সামাজিক অনুষ্ঠানে কেউ গান-বাজনা করলে তার পরিবারের সদস্যদের জানাজা ও বিয়ে না পড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বাগে জান্নাত জামে মসজিদ কমিটি। গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদের মাইকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু বকর গণমাধ্যমকে বলেন, এলাকার একাধিক বাড়িতে ‘উচ্চশব্দে রাত ২টা পর্যন্ত’ গান চলে। মসজিদ কমিটির সহসভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, ‘মধ্যরাত পর্যন্ত গান-বাজনা’ হওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা ‘বিরক্ত’ হয়। উচ্চশব্দে গান বাজানো বন্ধ করার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

উচ্চশব্দে গান বাজানোর কারণে কারো কোন অসুবিধা হলে ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে পারেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। গান-বাজনা করা হলে কারো জানাজা বা বিয়ে না পড়ানোর ফতোয়া দেয়ার অধিকার স্থানীয় পঞ্চায়েত ও মসজিদ কমিটি কোথায় পেয়েছে সেটা আমরা জানতে চাইব। গণতান্ত্রিক দেশে গান-বাজনা করার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু গান বাজানোর কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়ে ফতোয়া জারির অধিকার কোনো পঞ্চায়েত বা কমিটির থাকতে পারে না।

শব্দ দূষণের বড় একটি কারণ উচ্চশব্দের অনুষ্ঠান। এতে জনজীবনে প্রায়ই ব্যঘাত ঘটে। তবে কেবল সামাজিক অনুষ্ঠানেই শব্দদূষণ ঘটছে না। ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের নামেও নিয়মিত শব্দদূষণ ঘটে। এতে অসুবিধা হলেও ভুক্তভোগী নিরুপায় মানুষ নীরবে সহ্য করেন। ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের উচ্চশব্দ নিয়ে কাউকে কখনো কোনো ফতোয়া দিতে দেখা যায়নি।

নারায়ণগঞ্জে ফতোয়া দেয়ার ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা আশা করি, কমিটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ফতোয়াবাজদের চিহ্নিত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেবে। দেশে ফতোয়ার অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে ফতোয়াবাজদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

মঙ্গলবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২১ , ২১ পৌষ ১৪২৭, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

গান-বাজনা করলে জানাজা ও বিয়ে না পড়ানোর ঘোষণা

এ অধিকার তারা কোথায় পেয়েছে

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের কলাবাগ এলাকায় সামাজিক অনুষ্ঠানে কেউ গান-বাজনা করলে তার পরিবারের সদস্যদের জানাজা ও বিয়ে না পড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বাগে জান্নাত জামে মসজিদ কমিটি। গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদের মাইকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু বকর গণমাধ্যমকে বলেন, এলাকার একাধিক বাড়িতে ‘উচ্চশব্দে রাত ২টা পর্যন্ত’ গান চলে। মসজিদ কমিটির সহসভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, ‘মধ্যরাত পর্যন্ত গান-বাজনা’ হওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা ‘বিরক্ত’ হয়। উচ্চশব্দে গান বাজানো বন্ধ করার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

উচ্চশব্দে গান বাজানোর কারণে কারো কোন অসুবিধা হলে ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে পারেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। গান-বাজনা করা হলে কারো জানাজা বা বিয়ে না পড়ানোর ফতোয়া দেয়ার অধিকার স্থানীয় পঞ্চায়েত ও মসজিদ কমিটি কোথায় পেয়েছে সেটা আমরা জানতে চাইব। গণতান্ত্রিক দেশে গান-বাজনা করার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু গান বাজানোর কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়ে ফতোয়া জারির অধিকার কোনো পঞ্চায়েত বা কমিটির থাকতে পারে না।

শব্দ দূষণের বড় একটি কারণ উচ্চশব্দের অনুষ্ঠান। এতে জনজীবনে প্রায়ই ব্যঘাত ঘটে। তবে কেবল সামাজিক অনুষ্ঠানেই শব্দদূষণ ঘটছে না। ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের নামেও নিয়মিত শব্দদূষণ ঘটে। এতে অসুবিধা হলেও ভুক্তভোগী নিরুপায় মানুষ নীরবে সহ্য করেন। ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের উচ্চশব্দ নিয়ে কাউকে কখনো কোনো ফতোয়া দিতে দেখা যায়নি।

নারায়ণগঞ্জে ফতোয়া দেয়ার ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা আশা করি, কমিটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ফতোয়াবাজদের চিহ্নিত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেবে। দেশে ফতোয়ার অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে ফতোয়াবাজদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।