ডিসেম্বরে কালো টাকা সাদা করেছেন ৪২৯২ জন

মহামারীর কারণে দেশের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে আয়কর দেয়ার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দেয় সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সেই সুযোগ নিয়ে হেলাফেলা হলেও ষষ্ঠ মাস ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কালো টাকা সাদা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন কালো টাকার মালিকরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ১০ হাজার ২২০ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ জুলাই অর্থবছর শুরুর পর ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে ৩ হাজার ৩৫৮ ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করেছিলেন। কিন্তু শুধু ডিসেম্বরেই অপ্রদর্শিত আয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বা কালো টাকা সাদা করেছেন ৪ হাজার ২৯২ জন। গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৬৫০ জন কালো টাকা সাদা করেছেন। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, ফ্ল্যাট ও জমি কিনে কালো টাকা সাদা করেছেন ৩ হাজার ২২০ জন। এভাবে ডিসেম্বরে নতুন করে ৪ হাজার ২২৫ জন কালো টাকা সাদা করেছেন। ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ না করে ৭ হাজার ৪৪৫ জন কালো টাকা সাদা করেছেন।

অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছেন ১৩৮ জন। ডিসেম্বরে শেয়ারবাজারে আরও ৬৭ জন বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করেছেন। জানা যায়, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কালো টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ৭ হাজার ৬৫০ জন ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার কাছ থেকে সরকার মোট ৯৬২ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।

এনবিআর কালো টাকা সাদা করার এ সুযোগ দিচ্ছে এক বছরের জন্য। ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত উৎস না জানিয়েই টাকা সাদা করা যাবে। নতুন বিধানে করদাতারা তাদের আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত আয়ের নগদ অর্থ, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা অন্য যেকোন সম্পদের ওপর ১০ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে বৈধ করতে পারবেন। ব্যক্তি পর্যায়ে প্রদর্শিত আয়ের ওপর সর্বোচ্চ প্রদেয় কর ২৫ শতাংশ। সেখানে অপ্রদর্শিত আয়ের ওপর এ হার মাত্র ১০ শতাংশ।

এনবিআর আরও জানায়, দেশে ১৭ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকা সাদা হয়েছে ২০০৭ ও ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তখন ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ সুযোগ নিয়েছিলেন। তখন ৯ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা বৈধ করা হয়।

বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ডিসেম্বরে কালো টাকা সাদা করেছেন ৪২৯২ জন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

মহামারীর কারণে দেশের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে আয়কর দেয়ার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দেয় সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সেই সুযোগ নিয়ে হেলাফেলা হলেও ষষ্ঠ মাস ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কালো টাকা সাদা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন কালো টাকার মালিকরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ১০ হাজার ২২০ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ জুলাই অর্থবছর শুরুর পর ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে ৩ হাজার ৩৫৮ ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করেছিলেন। কিন্তু শুধু ডিসেম্বরেই অপ্রদর্শিত আয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বা কালো টাকা সাদা করেছেন ৪ হাজার ২৯২ জন। গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৬৫০ জন কালো টাকা সাদা করেছেন। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, ফ্ল্যাট ও জমি কিনে কালো টাকা সাদা করেছেন ৩ হাজার ২২০ জন। এভাবে ডিসেম্বরে নতুন করে ৪ হাজার ২২৫ জন কালো টাকা সাদা করেছেন। ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ না করে ৭ হাজার ৪৪৫ জন কালো টাকা সাদা করেছেন।

অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছেন ১৩৮ জন। ডিসেম্বরে শেয়ারবাজারে আরও ৬৭ জন বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করেছেন। জানা যায়, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কালো টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ৭ হাজার ৬৫০ জন ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার কাছ থেকে সরকার মোট ৯৬২ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।

এনবিআর কালো টাকা সাদা করার এ সুযোগ দিচ্ছে এক বছরের জন্য। ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত উৎস না জানিয়েই টাকা সাদা করা যাবে। নতুন বিধানে করদাতারা তাদের আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত আয়ের নগদ অর্থ, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা অন্য যেকোন সম্পদের ওপর ১০ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে বৈধ করতে পারবেন। ব্যক্তি পর্যায়ে প্রদর্শিত আয়ের ওপর সর্বোচ্চ প্রদেয় কর ২৫ শতাংশ। সেখানে অপ্রদর্শিত আয়ের ওপর এ হার মাত্র ১০ শতাংশ।

এনবিআর আরও জানায়, দেশে ১৭ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকা সাদা হয়েছে ২০০৭ ও ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তখন ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ সুযোগ নিয়েছিলেন। তখন ৯ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা বৈধ করা হয়।