শেখ হাসিনা অনন্যতায় ভাস্বর

শামসুজ্জামান খান

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের চল্লিশ বছর পূর্ণ হলো আজ। বৃহৎ সাফল্যে এই চারটি দশকই অনন্যতায় ভাস্বর। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার নজিরবিহীন ঐতিহাসিক অর্জনসমূহ আমাদের বিষ্মিত ও অভিভূত করে। তার ঐতিহাসিক দৈশিক ও বৈশ্বিক অর্জনের জন্য দেশে যেমন তিনি দেশরতœ অভিধায় ভূষিত হয়েছেন, তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নন্দিত বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে বরণীয় হয়েছেন। এ শুধু তার এরকার নয়, তার দলের নয়, গোটা বাঙ্গালি জাতির শ্লাঘার বিষয়।

সমগ্র বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে আর কোন নারী এমন বিশ্ব মর্যাদায় অভিষিক্ত হননি। আন্তর্জাতিকভাবে তাকে ত্রিশতম সেরা বিশ্বনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে অভিসিক্ত হয়ে পুরো একযুগ স্থিত আছেন সগৌরবে অনন্য মহিমায়।

তার জনপ্রিয়তা এত দীর্ঘ সময়েও কমেনি। বরং, তার জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে স্থায়ী শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলে তিনি বাংলাদেশের বিকল্পহীন নেত্রী হিসেবে স্থায়ী আসন লাভ করেছেন।

কিন্তু শেখ হাসিনার এ সাফল্যের উৎস কী? আমার বিবেচনায় এর প্রথম কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। শুধু এ কারণেই তার এই স্বর্ণ সাফল্য আসেনি। তিনি বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসুরি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন বলেই এ সাফল্য এসেছে। এটা সম্ভব হয়েছে কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর মতোই সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, আস্থা জয় করেছেন এবং পরম মমতায় তাদের আপন করে নিয়েছেন বলে। তার রাজনৈতিক বিশ্বাস ও কর্ম-পরিকল্পনায় আন্তরিকতা এবং মানব ভাগ্য উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার আছে বলেই এমন সাফল্য এসেছে। সেই সঙ্গে তার অসম্ভবকে সম্ভব করার নেতৃত্বগুণ ও দৃঢ়তা আছে বলে সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের জন্য আশ্রায়ণ প্রকল্প যেমন করেছেন তেমনি তার নানা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষের কিছু না কিছু স্বস্তি, সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক লাভ হয়েছে। এ হলো তার সামাজিক অগ্রগতির কয়েকটি উদাহরণ মাত্র ।

তার সাহসী নেতৃত্বের পরিচয় পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারে তার সাহস, প্রজ্ঞা এবং তা বাস্তবায়নে অসাধারণ দক্ষতায়। শুধু জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারই নয়, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে সমস্ত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামশ পাকিস্তানিদের সাহায্য করেছে- তাদের বিচারও তার এক অসামান্য কীর্তি।

শুধু এখানেই তিনি থেমে থাকেননি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক অগ্রগতির লক্ষ্যে তিনি যে সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তাতে শুধু দেশের প্রবৃদ্ধির হারই তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়নি ব্যক্তি মানুষের আয়ও ১০৯০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ সাফল্য সুচিন্তিত পরিকল্পনারই ফসল। কৃষিক্ষেত্রে তার সরকার যে সব পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে দেশে একটি কৃষি বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছে।

কিন্তু আর একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা বলতে গেলে আমাদের বুক স্ফীত হয়ে যায়। সেটা হলো নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ এবং স্বল্প সময়ে এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। এটা বাঙ্গালি জাতির জন্য এক অনন্য গৌরব ও অহংকারের প্রতীক। এর মাধ্যমে বাঙ্গালি জাতি বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য প্রাশ্চাত্যের দেশসমূহের অর্থ সহায়তা দানকারী সংস্থাগুলোর বাধার প্রাচীর ভেঙ্গে হজার বছরের শ্রেষ্ঠ এক গৌরবগাথার সৃষ্টি করেছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বগুণের কথা বলতে গেলে এমন শত শত সাফল্যের কথা বলা যায়। আজকের আলোচনা শেষ করব একটি বিশেষ কীর্তির কথা উল্লেখ করে- সেটা হলো বছরখানেকের মধ্যেই জনগণের জন্য রাজধানী ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হবে মেট্রোরেল, এও তো সমান্য অর্জন নয়।

উপসংহারে বলি, যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা তিনখানি গ্রন্থ প্রকাশ করে বাঙ্গালির ইতিহাসকে পরিপূর্ণতা দিয়েছেন। এসব মহামূল্যবান গ্রন্থ পাঠ করলে বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের মাথা শ্রদ্ধায় নুয়ে আসে। একই সঙ্গে এটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঐতিহাসিক কর্মটি সম্পূর্ণ করার জন্য তাকে আমাদের প্রশংসা ধন্য করতে অনুপ্রাণিত করে।

বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

শেখ হাসিনা অনন্যতায় ভাস্বর

শামসুজ্জামান খান

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের চল্লিশ বছর পূর্ণ হলো আজ। বৃহৎ সাফল্যে এই চারটি দশকই অনন্যতায় ভাস্বর। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার নজিরবিহীন ঐতিহাসিক অর্জনসমূহ আমাদের বিষ্মিত ও অভিভূত করে। তার ঐতিহাসিক দৈশিক ও বৈশ্বিক অর্জনের জন্য দেশে যেমন তিনি দেশরতœ অভিধায় ভূষিত হয়েছেন, তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নন্দিত বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে বরণীয় হয়েছেন। এ শুধু তার এরকার নয়, তার দলের নয়, গোটা বাঙ্গালি জাতির শ্লাঘার বিষয়।

সমগ্র বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে আর কোন নারী এমন বিশ্ব মর্যাদায় অভিষিক্ত হননি। আন্তর্জাতিকভাবে তাকে ত্রিশতম সেরা বিশ্বনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে অভিসিক্ত হয়ে পুরো একযুগ স্থিত আছেন সগৌরবে অনন্য মহিমায়।

তার জনপ্রিয়তা এত দীর্ঘ সময়েও কমেনি। বরং, তার জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে স্থায়ী শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলে তিনি বাংলাদেশের বিকল্পহীন নেত্রী হিসেবে স্থায়ী আসন লাভ করেছেন।

কিন্তু শেখ হাসিনার এ সাফল্যের উৎস কী? আমার বিবেচনায় এর প্রথম কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। শুধু এ কারণেই তার এই স্বর্ণ সাফল্য আসেনি। তিনি বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসুরি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন বলেই এ সাফল্য এসেছে। এটা সম্ভব হয়েছে কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর মতোই সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, আস্থা জয় করেছেন এবং পরম মমতায় তাদের আপন করে নিয়েছেন বলে। তার রাজনৈতিক বিশ্বাস ও কর্ম-পরিকল্পনায় আন্তরিকতা এবং মানব ভাগ্য উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার আছে বলেই এমন সাফল্য এসেছে। সেই সঙ্গে তার অসম্ভবকে সম্ভব করার নেতৃত্বগুণ ও দৃঢ়তা আছে বলে সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের জন্য আশ্রায়ণ প্রকল্প যেমন করেছেন তেমনি তার নানা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষের কিছু না কিছু স্বস্তি, সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক লাভ হয়েছে। এ হলো তার সামাজিক অগ্রগতির কয়েকটি উদাহরণ মাত্র ।

তার সাহসী নেতৃত্বের পরিচয় পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারে তার সাহস, প্রজ্ঞা এবং তা বাস্তবায়নে অসাধারণ দক্ষতায়। শুধু জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারই নয়, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে সমস্ত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামশ পাকিস্তানিদের সাহায্য করেছে- তাদের বিচারও তার এক অসামান্য কীর্তি।

শুধু এখানেই তিনি থেমে থাকেননি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক অগ্রগতির লক্ষ্যে তিনি যে সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তাতে শুধু দেশের প্রবৃদ্ধির হারই তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়নি ব্যক্তি মানুষের আয়ও ১০৯০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ সাফল্য সুচিন্তিত পরিকল্পনারই ফসল। কৃষিক্ষেত্রে তার সরকার যে সব পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে দেশে একটি কৃষি বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছে।

কিন্তু আর একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা বলতে গেলে আমাদের বুক স্ফীত হয়ে যায়। সেটা হলো নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ এবং স্বল্প সময়ে এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। এটা বাঙ্গালি জাতির জন্য এক অনন্য গৌরব ও অহংকারের প্রতীক। এর মাধ্যমে বাঙ্গালি জাতি বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য প্রাশ্চাত্যের দেশসমূহের অর্থ সহায়তা দানকারী সংস্থাগুলোর বাধার প্রাচীর ভেঙ্গে হজার বছরের শ্রেষ্ঠ এক গৌরবগাথার সৃষ্টি করেছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বগুণের কথা বলতে গেলে এমন শত শত সাফল্যের কথা বলা যায়। আজকের আলোচনা শেষ করব একটি বিশেষ কীর্তির কথা উল্লেখ করে- সেটা হলো বছরখানেকের মধ্যেই জনগণের জন্য রাজধানী ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হবে মেট্রোরেল, এও তো সমান্য অর্জন নয়।

উপসংহারে বলি, যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা তিনখানি গ্রন্থ প্রকাশ করে বাঙ্গালির ইতিহাসকে পরিপূর্ণতা দিয়েছেন। এসব মহামূল্যবান গ্রন্থ পাঠ করলে বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের মাথা শ্রদ্ধায় নুয়ে আসে। একই সঙ্গে এটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঐতিহাসিক কর্মটি সম্পূর্ণ করার জন্য তাকে আমাদের প্রশংসা ধন্য করতে অনুপ্রাণিত করে।