রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র কিনলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়বে ভারত

রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংবলিত ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী ভারত। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিবেদনে হুঁশিয়ারি করে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ভারত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ‘কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)। বিভিন্ন বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সে ব্যাপারে সংস্থাটি গবেষণাভিত্তিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই বড় দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রতিনিধিত্ব থাকে। ট্রাম্প প্রশাসন দিল্লিকে সাফ জানিয়ে দেয়, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত। এবার কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)-এর প্রতিবেদনেও একই ধরনের হুঁশিয়ারি দেয়া হলো। সিআরএস-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরও প্রযুক্তি শেয়ারিং এবং সহ-উৎপাদনে আগ্রহী। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে তার প্রতিরক্ষা নীতিতে, এ খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবাণী উপেক্ষা করে ভারত যদি রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করে তাহলে মার্কিন আইন অনুযায়ী দিল্লির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।’ সম্ভাব্য এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিরক্ষা সহযোগীর মর্যাদা হারাতে পারে ভারত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে যৌথ প্রতিরক্ষা উৎপাদনসহ নানা সহযোগিতা সত্ত্বেও ভারত আরও দ্রুততার সঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সংগ্রহে তৎপর রয়েছে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ প্রযুক্তি কেনার জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয়, এ প্রযুক্তির সাহায্যে শত্রুর বিমান এবং ড্রোনও ধ্বংস করা যাবে। ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করলে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) এবং প্যাট্রিয়ট-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা পাবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার ট্রাম্পের সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।

২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ‘কাউন্টারিং আমেরিকাজ অ্যাডভারসারিজ থ্রো স্যাঙ্কশনস অ্যাক্ট’ আইন বলবৎ করে। এ আইন অনুযায়ী, কোনও দেশ রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জাম কিনলে সংশ্লিষ্ট দেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। এখন ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে সেটা এ আইনের আওতায়ই করা হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র কিনলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়বে ভারত

image

রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংবলিত ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী ভারত। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিবেদনে হুঁশিয়ারি করে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ভারত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ‘কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)। বিভিন্ন বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সে ব্যাপারে সংস্থাটি গবেষণাভিত্তিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই বড় দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রতিনিধিত্ব থাকে। ট্রাম্প প্রশাসন দিল্লিকে সাফ জানিয়ে দেয়, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত। এবার কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)-এর প্রতিবেদনেও একই ধরনের হুঁশিয়ারি দেয়া হলো। সিআরএস-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরও প্রযুক্তি শেয়ারিং এবং সহ-উৎপাদনে আগ্রহী। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে তার প্রতিরক্ষা নীতিতে, এ খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবাণী উপেক্ষা করে ভারত যদি রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করে তাহলে মার্কিন আইন অনুযায়ী দিল্লির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।’ সম্ভাব্য এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিরক্ষা সহযোগীর মর্যাদা হারাতে পারে ভারত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে যৌথ প্রতিরক্ষা উৎপাদনসহ নানা সহযোগিতা সত্ত্বেও ভারত আরও দ্রুততার সঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সংগ্রহে তৎপর রয়েছে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ প্রযুক্তি কেনার জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয়, এ প্রযুক্তির সাহায্যে শত্রুর বিমান এবং ড্রোনও ধ্বংস করা যাবে। ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করলে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) এবং প্যাট্রিয়ট-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা পাবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার ট্রাম্পের সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।

২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ‘কাউন্টারিং আমেরিকাজ অ্যাডভারসারিজ থ্রো স্যাঙ্কশনস অ্যাক্ট’ আইন বলবৎ করে। এ আইন অনুযায়ী, কোনও দেশ রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জাম কিনলে সংশ্লিষ্ট দেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। এখন ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে সেটা এ আইনের আওতায়ই করা হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।