সালমানের ইরান প্রতিরোধের ডাক

কাতার-সৌদি আরব সংহতি চুক্তি সই

কাতারের সঙ্গে আরব দেশগুলোর বিরোধ অবসানে সংহতি চুক্তি সই হয়েছে। সৌদি আরবে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সম্মেলনে এ চুক্তি হয়। সম্মেলন উদ্বোধনকালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানের হুমকি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন। রয়টার্স

সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরবের আল-উলা শহরে যান কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। তাকে আলিঙ্গন করে সৌদি যুবরাজ সালমান যে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তা দুই দেশের বৈরিতা অবসানেরই স্পষ্ট ইঙ্গিত। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে সৌদি আরবসহ আরও তিন দেশ কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। জিসিসি সম্মেলনে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর নেতারা একটি নথিতে সই করেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ নথির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সৌদি আরব ও এর তিন আরব মিত্র দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আবার পুরোপুরি চালু করতে রাজি হয়েছে। সম্মেলনে আরব নেতারা ‘সংহতি ও স্থিতিশীলতা’ চুক্তি সই করার পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে সৌদি যুবরাজ সালমান বলেছেন, ‘এই সব প্রচেষ্টা আল-উলা চুক্তিতে পৌঁছাতে সহায়তা করেছে, যেটি আশীর্বাদপুষ্ট এই সম্মেলনে সই হবে এবং যা উপসাগরীয়, আরব এবং ইসলামি ঐক্য ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।’ একইসঙ্গে ইরানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইরান সরকারের পারমাণবিক ও ব্যালস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির হুমকি এবং দেশটির ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা মোকাবিলায় একযোগে ‘গুরুতর ব্যবস্থা’ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়েছে।’ ইরানকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় দেশগুলোকে একাট্টা হতে চাপ দিচ্ছে।

ইরানের বিরুদ্ধে একটি যৌথ ফ্রন্ট গড়ে তোলার যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টায় এরই মধ্যে প্যালেস্টাইনের সঙ্গে কয়েকটি আরব দেশের শান্তিচুক্তির পর সর্বশেষ অগ্রগতি হচ্ছে, কাতারের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক মেরামত।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্র্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতার এই শেষ সময়ে এসেও ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের স্টিল শিল্পের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া ইরানের এক ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠান এবং এক ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন।

সৌদি আরবের জিসিসি সম্মেলনে নেতারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও উপসাগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠা ইরানকে মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সৌদি যুবরাজ সালমান বলেন, তার দেশের ‘২০৩০ ভিশন’ পরিকল্পনা হচ্ছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদকে আরও একতাবদ্ধ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি আরব ও ইসলামিক সহযোগিতা এমনভাবে আরও জোরদার করা যাতে আরব দেশগুলোর পাশাপাশি গোটা অঞ্চলেরর নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে তা কাজে আসে।

বৃহস্পতিবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২১ , ২৩ পৌষ ১৪২৭, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

সালমানের ইরান প্রতিরোধের ডাক

কাতার-সৌদি আরব সংহতি চুক্তি সই

image

কাতারের সঙ্গে আরব দেশগুলোর বিরোধ অবসানে সংহতি চুক্তি সই হয়েছে। সৌদি আরবে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সম্মেলনে এ চুক্তি হয়। সম্মেলন উদ্বোধনকালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানের হুমকি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন। রয়টার্স

সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরবের আল-উলা শহরে যান কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। তাকে আলিঙ্গন করে সৌদি যুবরাজ সালমান যে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তা দুই দেশের বৈরিতা অবসানেরই স্পষ্ট ইঙ্গিত। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে সৌদি আরবসহ আরও তিন দেশ কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। জিসিসি সম্মেলনে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর নেতারা একটি নথিতে সই করেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ নথির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সৌদি আরব ও এর তিন আরব মিত্র দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আবার পুরোপুরি চালু করতে রাজি হয়েছে। সম্মেলনে আরব নেতারা ‘সংহতি ও স্থিতিশীলতা’ চুক্তি সই করার পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে সৌদি যুবরাজ সালমান বলেছেন, ‘এই সব প্রচেষ্টা আল-উলা চুক্তিতে পৌঁছাতে সহায়তা করেছে, যেটি আশীর্বাদপুষ্ট এই সম্মেলনে সই হবে এবং যা উপসাগরীয়, আরব এবং ইসলামি ঐক্য ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।’ একইসঙ্গে ইরানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইরান সরকারের পারমাণবিক ও ব্যালস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির হুমকি এবং দেশটির ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা মোকাবিলায় একযোগে ‘গুরুতর ব্যবস্থা’ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়েছে।’ ইরানকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় দেশগুলোকে একাট্টা হতে চাপ দিচ্ছে।

ইরানের বিরুদ্ধে একটি যৌথ ফ্রন্ট গড়ে তোলার যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টায় এরই মধ্যে প্যালেস্টাইনের সঙ্গে কয়েকটি আরব দেশের শান্তিচুক্তির পর সর্বশেষ অগ্রগতি হচ্ছে, কাতারের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক মেরামত।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্র্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতার এই শেষ সময়ে এসেও ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের স্টিল শিল্পের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া ইরানের এক ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠান এবং এক ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন।

সৌদি আরবের জিসিসি সম্মেলনে নেতারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও উপসাগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠা ইরানকে মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সৌদি যুবরাজ সালমান বলেন, তার দেশের ‘২০৩০ ভিশন’ পরিকল্পনা হচ্ছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদকে আরও একতাবদ্ধ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি আরব ও ইসলামিক সহযোগিতা এমনভাবে আরও জোরদার করা যাতে আরব দেশগুলোর পাশাপাশি গোটা অঞ্চলেরর নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে তা কাজে আসে।