সিসিআইঅ্যান্ডই ও সোনালী ব্যাংকের চুক্তি

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ই-পেমেন্ট চালু

আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমে ই-পেমেন্ট চালু করল সোনালী ব্যাংক ও আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতর (সিসিআইঅ্যান্ডই)। সময় ও গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে এই সুবিধা চালু করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। চুক্তি স্বাক্ষরকালে সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান এবং আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রক সোলেমান খান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ই-পেমেন্ট চালুর কারণে গ্রাহকরা সনাতন ধারার ব্যাংকে গিয়ে ম্যানুয়াল পেমেন্টের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে। ফলে তাদের সময়, যাতায়াত ও খরচ সাশ্রয় হবে। ঘরে বসেই এই পেমেন্ট করা যাবে। অন্যদিকে সিসিআইঅ্যান্ডই-এর কর্মকর্তারা বাস্তব সময়ে ই-চালানের তথ্য পাবেন। ফলে আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত সেবাগুলো আবেদনের সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে। এর মধ্যদিয়ে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত হবে। ই-পেমেন্ট সুবিধার কারণে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে গ্রাহক ক্যাশ অন কাউন্টার (ব্যাংক ব্রাঞ্চ), অনলাইন অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, রকেট, নগদ, ইউক্যাশ ইত্যাদি) ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডসহ (ভিসা, মাস্টার, এমেক্স, নেক্সাস ইত্যাদি) অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে অনলাইনে পেমেন্ট দিতে পারবেন।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে আমদানি নিবন্ধন সনদ, রপ্তানি নিবন্ধন সনদ, শিল্প আমদানি নিবন্ধন সনদ, ইন্ডেন্টিং নিবন্ধন সনদ ইত্যাদি সেবা অনলাইনে অনলাইন লাইসেন্সিং মডিউল (ওএলএম) সফটওয়্যার দিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সেবা পেতে নির্ধারিত ফি টিআর চালানের মাধ্যমে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ম্যানুয়ালি জমা করতে হতো গ্রাহকদের। এরপর সেই চালানের স্ক্যান কপি আপলোড করে সিসিআইঅ্যান্ডই সেবার জন্য আবেদন করতে হয়। এর ফলে টিআর চালান জমা হওয়ার পরদিন দুপুর ১২টার পরে সিজিএ অফিসের ওয়েবসাইট হতে অনলাইনে যাচাই করা হয়। এতে সেবাগ্রহীতাকে চালানে অর্থ জমা দেয়ার পরও কাক্সিক্ষত সেবার জন্য একদিন অপেক্ষা করতে হতো। এর অন্যতম কারণ পেমেন্ট ব্যবস্থা ছিল সনাতনী ধাঁচের। আর সেই ভোগান্তি ঘোচাতে চালু করা হয়েছে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা।

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ৫০ বছর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি। এই দুটো বড় ঘটনা একসঙ্গে দেখছি এবার। সেজন্য আমরা এই বছরটা স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্নভাবে কাজ করছি। সবাই জানেন ১২ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। আমরা শতভাগ অর্জন করেছি সেটা বলছি না। তবে সে লক্ষ্যে আমরা এগোচ্ছি। করোনাকালে আমাদের অনেক সমস্যা হয়েছে অনেক কিছু বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে একটা বিষয়ে ভীষণ রকমের উন্নতি হয়েছে সেটা হলো ডিজিটাল প্লাটফর্মের। এই করোনায় একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে, আমরা কখনও চিন্তা করিনি বাড়িতে বসে অনলাইনে পিয়াজ কিনতে পারব। এটা শুভ লক্ষণ।

তিনি আরও বলেন, সিসিআইঅ্যান্ডই গত জুন থেকে ডিজিটাল কার্যক্রম শুরু করেছে। আজকে সেটার সোনালী অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা চাই সবাই ঘরে বসে সব রকমের সুবিধা উপভোগ করুক। অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা চালু হলে ইজ ডুইং বিজনেস অনেকখানি এগিয়ে যাবে। মানুষের সময় বাঁচবে, ঘরে বসে সেবা পাবে ও ভোগান্তি কমবে। এই ধারাবাহিকতায় সব ব্যাংক এই পথে এগিয়ে আসবে বলে আমি আশা করছি। আমরা সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব সময় সবার সঙ্গে আছে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে দেশের সেরা মন্ত্রণালয় হতে পারব। এজন্য সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেন, এটি টিম কমার্সের একটি প্রয়াস। এর মধ্যদিয়ে ব্যবসায়ীদের কাজ সহজ হবে। আমরা বাণিজ্য পরিবার একসঙ্গে কাজ করলে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব।

শুক্রবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২১ , ২৪ পৌষ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

সিসিআইঅ্যান্ডই ও সোনালী ব্যাংকের চুক্তি

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ই-পেমেন্ট চালু

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমে ই-পেমেন্ট চালু করল সোনালী ব্যাংক ও আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতর (সিসিআইঅ্যান্ডই)। সময় ও গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে এই সুবিধা চালু করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। চুক্তি স্বাক্ষরকালে সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান এবং আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রক সোলেমান খান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ই-পেমেন্ট চালুর কারণে গ্রাহকরা সনাতন ধারার ব্যাংকে গিয়ে ম্যানুয়াল পেমেন্টের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে। ফলে তাদের সময়, যাতায়াত ও খরচ সাশ্রয় হবে। ঘরে বসেই এই পেমেন্ট করা যাবে। অন্যদিকে সিসিআইঅ্যান্ডই-এর কর্মকর্তারা বাস্তব সময়ে ই-চালানের তথ্য পাবেন। ফলে আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত সেবাগুলো আবেদনের সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে। এর মধ্যদিয়ে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত হবে। ই-পেমেন্ট সুবিধার কারণে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে গ্রাহক ক্যাশ অন কাউন্টার (ব্যাংক ব্রাঞ্চ), অনলাইন অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, রকেট, নগদ, ইউক্যাশ ইত্যাদি) ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডসহ (ভিসা, মাস্টার, এমেক্স, নেক্সাস ইত্যাদি) অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে অনলাইনে পেমেন্ট দিতে পারবেন।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে আমদানি নিবন্ধন সনদ, রপ্তানি নিবন্ধন সনদ, শিল্প আমদানি নিবন্ধন সনদ, ইন্ডেন্টিং নিবন্ধন সনদ ইত্যাদি সেবা অনলাইনে অনলাইন লাইসেন্সিং মডিউল (ওএলএম) সফটওয়্যার দিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সেবা পেতে নির্ধারিত ফি টিআর চালানের মাধ্যমে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ম্যানুয়ালি জমা করতে হতো গ্রাহকদের। এরপর সেই চালানের স্ক্যান কপি আপলোড করে সিসিআইঅ্যান্ডই সেবার জন্য আবেদন করতে হয়। এর ফলে টিআর চালান জমা হওয়ার পরদিন দুপুর ১২টার পরে সিজিএ অফিসের ওয়েবসাইট হতে অনলাইনে যাচাই করা হয়। এতে সেবাগ্রহীতাকে চালানে অর্থ জমা দেয়ার পরও কাক্সিক্ষত সেবার জন্য একদিন অপেক্ষা করতে হতো। এর অন্যতম কারণ পেমেন্ট ব্যবস্থা ছিল সনাতনী ধাঁচের। আর সেই ভোগান্তি ঘোচাতে চালু করা হয়েছে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা।

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ৫০ বছর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি। এই দুটো বড় ঘটনা একসঙ্গে দেখছি এবার। সেজন্য আমরা এই বছরটা স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্নভাবে কাজ করছি। সবাই জানেন ১২ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। আমরা শতভাগ অর্জন করেছি সেটা বলছি না। তবে সে লক্ষ্যে আমরা এগোচ্ছি। করোনাকালে আমাদের অনেক সমস্যা হয়েছে অনেক কিছু বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে একটা বিষয়ে ভীষণ রকমের উন্নতি হয়েছে সেটা হলো ডিজিটাল প্লাটফর্মের। এই করোনায় একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে, আমরা কখনও চিন্তা করিনি বাড়িতে বসে অনলাইনে পিয়াজ কিনতে পারব। এটা শুভ লক্ষণ।

তিনি আরও বলেন, সিসিআইঅ্যান্ডই গত জুন থেকে ডিজিটাল কার্যক্রম শুরু করেছে। আজকে সেটার সোনালী অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা চাই সবাই ঘরে বসে সব রকমের সুবিধা উপভোগ করুক। অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা চালু হলে ইজ ডুইং বিজনেস অনেকখানি এগিয়ে যাবে। মানুষের সময় বাঁচবে, ঘরে বসে সেবা পাবে ও ভোগান্তি কমবে। এই ধারাবাহিকতায় সব ব্যাংক এই পথে এগিয়ে আসবে বলে আমি আশা করছি। আমরা সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব সময় সবার সঙ্গে আছে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে দেশের সেরা মন্ত্রণালয় হতে পারব। এজন্য সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেন, এটি টিম কমার্সের একটি প্রয়াস। এর মধ্যদিয়ে ব্যবসায়ীদের কাজ সহজ হবে। আমরা বাণিজ্য পরিবার একসঙ্গে কাজ করলে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব।