ধলেশ্বরীর বুকে অসংখ্য চর সংকটে বোরো সেচ, জেলেরা

এক সময়ের প্রমত্তা ধলেশ্বরী নদীতে অসংখ্য চর পড়ে বর্তমানে বোরো ধানের জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী জেলেদের চলছে দুর্দিন। এমনকি মাঝেমধ্যে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী নৌকাও আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার অসংখ্য মানুষ। কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব বাজার থেকে প্রবাহিত মেঘনা হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা ও হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম উপজেলা সীমান্তে এসে কালনী কুশিয়ারা নদীতে মিলিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নাম ধারণ করেছে। এই মেঘনা নদীর তীরবর্তী ব্রাম্মণ বাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুর, ডুবাজাইলের উত্তরদিকে বেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের হুমায়ুনপুর হয়ে অষ্টগ্রামের ভাটিরনগর, দেওঘর, কাস্তুল সদর হয়ে দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে ধলেশ্বরী নাম ধারণ করে ইকুরদিয়া মেঘনা মিলিত হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত গভীর এ নদীর বড় বড়বেশ কয়েকটি হাওড়ে বোর উৎপাদনের সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে প্রচুর পরিমাণ ধান উৎপাদন বেশ সুখেই দিনাদিপাত করত স্থানীয় কৃষকেরা। এবং সরকারিভাবেও আদায় হতো বিপুল পরিমাণের রাজস্বসহ জেলা প্রসাশক এই নদীটি উজারা দিতেন বলে জানা যায়। এই নদী দিয়ে অষ্টগ্রাম থেকে ভৈরব বাজার, কুলিারচর যাত্রী লঞ্চসহ অগণিত যন্ত্র চালিত নৌকা, কার্গো ইত্যাদি চলাচল করত। এছাড়াও ভৈরব বাজার, আশুগঞ্জ ইত্যাদি নদী বন্দরে পণ্য সরবরাহ করা হতো। গত ৫-৭ বছরে পলি পড়ে ধলেশ্বরী নদীতে মাটি ভরাট হয়ে নদীর নাব্যতা হ্রাস পেতে থাকে। বর্তমানে অষ্টগ্রামের ভাটিরনগরের উত্তরে মেঘনা ও ধলেশ্বরীর সংযোগস্থল জেগে উঠা চর হুমায়ুনপুর, কাস্তুল, ও মসদিজাম পাশ দিয়ে সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সেতুর পূর্বদিকে ইকুরদিয়া পর্যন্ত প্রায় সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে প্রভাবশালী লোকজন বোর আবাদ করছে। পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া জানান, এই নদীটি ভরাটের কারণে গতবছর বেশ কয়েকটি মৌজার ২ খেকে ৩ হাজার হেক্টর জমি পতিত ছিল এ বছরও একই অবস্থা তিনি জরুরী ভিত্তিতে নদীটি খননের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, এই নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে একদিকে নৌ যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে অন্যদিকে নদী তীরবর্তী কয়েক হাজার একর জমি সেচের অভাবে পতিত হয়ে পড়ছে তাই নদীটি দ্রুত খননের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন এই বিষয়ে দেশের বিভিন্ন জেলতে নদী খননের কাজ হচ্ছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথেও অনেকবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু সমাধান আসছে না। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, নদীটি খননের জন্য বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের জন্য পক্রিয়ায় রয়েছে। এ ব্যাপারে হাওড় অঞ্চলবাসী ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান কামরুল হাসান বাবু বলেন, হাওরের প্রচুর উন্নয়ন হচ্ছে তবে তা হচ্ছে অপরিকল্পিত এবং কতিপয় স্থানীয় স্বার্থনেশীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীগুলো এমনভাবে মরে যাচ্ছে ।

image
আরও খবর
মেয়াদ শেষের দেড় বছরেও নতুন নড়িয়া সেতুর ৩০ শতাংশ সম্পন্ন
বেদে পল্লীতে তাবিজ-কবজের আড়ালে রমরমা মাদক ব্যবসা
কুমিল্লায় সাবেক স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নিয়ামতপুরে যৌতুক দাবি গৃহবধূর চুল কর্তন স্বামী-শাশুড়ি গ্রেফতার
টিআরএম বাস্তবায়নসহ ৭ দফা দাবিতে পদযাত্রা
বগুড়ায় ধর্মঘট প্রত্যাহার : ইট বিক্রি শুরু
বাঘায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা
কিশোরগঞ্জে আ’লীগ মেয়র প্রার্থীর পক্ষে মাঠে ১৫ সাংস্কৃতিক সংগঠন
গাংনীতে ত্রিমুখী লড়াই
সৈয়দপুরে নৌকাপ্রতীকে একাট্টা আওয়ামী লীগ
ঈশ্বরদীতে আ’লীগ ঐক্যবদ্ধ, বিএনপি দ্বিধাবিভক্ত
পটকা মাছ খেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু, ৩ মেয়ে হাসপাতালে
বরিশালে বিয়ের আসরে বরের চাচা নিহত
বেলাবতে জমি বিবাদে সংঘর্ষ : হাসপাতালে ৮

শুক্রবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২১ , ২৪ পৌষ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ধলেশ্বরীর বুকে অসংখ্য চর সংকটে বোরো সেচ, জেলেরা

দেবপদ চক্রবতী, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ)

image

এক সময়ের প্রমত্তা ধলেশ্বরী নদীতে অসংখ্য চর পড়ে বর্তমানে বোরো ধানের জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী জেলেদের চলছে দুর্দিন। এমনকি মাঝেমধ্যে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী নৌকাও আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার অসংখ্য মানুষ। কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব বাজার থেকে প্রবাহিত মেঘনা হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা ও হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম উপজেলা সীমান্তে এসে কালনী কুশিয়ারা নদীতে মিলিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নাম ধারণ করেছে। এই মেঘনা নদীর তীরবর্তী ব্রাম্মণ বাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুর, ডুবাজাইলের উত্তরদিকে বেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের হুমায়ুনপুর হয়ে অষ্টগ্রামের ভাটিরনগর, দেওঘর, কাস্তুল সদর হয়ে দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে ধলেশ্বরী নাম ধারণ করে ইকুরদিয়া মেঘনা মিলিত হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত গভীর এ নদীর বড় বড়বেশ কয়েকটি হাওড়ে বোর উৎপাদনের সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে প্রচুর পরিমাণ ধান উৎপাদন বেশ সুখেই দিনাদিপাত করত স্থানীয় কৃষকেরা। এবং সরকারিভাবেও আদায় হতো বিপুল পরিমাণের রাজস্বসহ জেলা প্রসাশক এই নদীটি উজারা দিতেন বলে জানা যায়। এই নদী দিয়ে অষ্টগ্রাম থেকে ভৈরব বাজার, কুলিারচর যাত্রী লঞ্চসহ অগণিত যন্ত্র চালিত নৌকা, কার্গো ইত্যাদি চলাচল করত। এছাড়াও ভৈরব বাজার, আশুগঞ্জ ইত্যাদি নদী বন্দরে পণ্য সরবরাহ করা হতো। গত ৫-৭ বছরে পলি পড়ে ধলেশ্বরী নদীতে মাটি ভরাট হয়ে নদীর নাব্যতা হ্রাস পেতে থাকে। বর্তমানে অষ্টগ্রামের ভাটিরনগরের উত্তরে মেঘনা ও ধলেশ্বরীর সংযোগস্থল জেগে উঠা চর হুমায়ুনপুর, কাস্তুল, ও মসদিজাম পাশ দিয়ে সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সেতুর পূর্বদিকে ইকুরদিয়া পর্যন্ত প্রায় সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে প্রভাবশালী লোকজন বোর আবাদ করছে। পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া জানান, এই নদীটি ভরাটের কারণে গতবছর বেশ কয়েকটি মৌজার ২ খেকে ৩ হাজার হেক্টর জমি পতিত ছিল এ বছরও একই অবস্থা তিনি জরুরী ভিত্তিতে নদীটি খননের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, এই নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে একদিকে নৌ যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে অন্যদিকে নদী তীরবর্তী কয়েক হাজার একর জমি সেচের অভাবে পতিত হয়ে পড়ছে তাই নদীটি দ্রুত খননের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন এই বিষয়ে দেশের বিভিন্ন জেলতে নদী খননের কাজ হচ্ছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথেও অনেকবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু সমাধান আসছে না। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, নদীটি খননের জন্য বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের জন্য পক্রিয়ায় রয়েছে। এ ব্যাপারে হাওড় অঞ্চলবাসী ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান কামরুল হাসান বাবু বলেন, হাওরের প্রচুর উন্নয়ন হচ্ছে তবে তা হচ্ছে অপরিকল্পিত এবং কতিপয় স্থানীয় স্বার্থনেশীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীগুলো এমনভাবে মরে যাচ্ছে ।